দুর্গাপুজো আমাদের বাঙালীদের কাছে খুব বড় একটা উৎসব। আমরা গোটা বছর জুড়ে এই সময়টার জন্য অপেক্ষা করি। যারা বাড়ির বাইরে থাকেন তাদের বাড়িতে আসার সময় হয় অনেকদিন পর। একটা মিলনক্ষেত্র তৈরি হয়। কিন্তু, তাও ইচ্ছে থাকলেও অনেকসময় বাইরে যারা থাকেন তারা এসে উঠতে পারেন না। তাদেরও তো ইচ্ছে হয় দুর্গাপুজো করতে। তাই তারা যেখানে থাকেন সেখানেই দুর্গাপুজো করেন। কিন্তু, মনে হয়ত থেকেই যায় বাড়ির প্রতি টান।
অকল্যান্ডের পুজো, সিঙ্গাপুরের পুজো, লন্ডনের পুজো এই সবই আমরা টিভিতে দেখে থাকি। আসলে বাঙালীর যেখানেই যান সেখানেই তো একটা বাঙালীটোলা তৈরি হয়ে যায়।
আর বাঙালী আছে কিন্তু দুর্গাপুজো নেই এটা হতেই পারে না। কুমোরটুলি থেকে ঠাকুর নিয়ে যাওয়া হয়। বেশিরভাগ ঠাকুরই মাটির হয় না, ফাইবারের হয়। এখান থেকে পুরোহিতও নিয়ে যাওয়া হয়। প্যাকড খাবার ছেড়ে ওই কয়েকদিন বঙ্গসন্তানরা ডায়েট দূরে সরিয়ে একটু খিচুড়ি, লুচি ইত্যাদি খেয়েই থাকে। সেটা অবশ্য এখানেও। কিন্তু, সব করলেও কোথাও গিয়ে কলকাতার পুজোর ধারে কাছে যায় না প্রবাসের পুজো। কত কী হাতছাড়া হয় বলুন তো!
আমার কাছে দুর্গাপুজো শুরু হয় বিশ্বকর্মা পুজো থেকে। কারণ আর কয়েকদিন পরেই তো মহালয়া শুরু হয়ে যায়, মানে দেবীপক্ষ। বিশ্বকর্মা পুজোর দিন ঘুড়ি ওড়ানো,তার আগে থেকে মাঞ্জা দেওয়া এগুলো বিদেশে হয় না, সময়ই নেই কারোর। মহালয়ার দিন একসঙ্গে বসে ভোরবেলা রেডিওতে শোনা, বাড়ির বড়দের দেখা গঙ্গায় তর্পণ করতে যাচ্ছে, অর্থাৎ যে কাজগুলো পুজো আসছে এই জানান টা দেয় সেগুলো বিদেশের মাটিতে হয় না। আমার কাছে পুজোর গন্ধ মানেই শিউলির গন্ধ। ছোটবেলা কয়েকবার ভোরবেলা গেছিলাম শিউলি ফুল কুড়াতে। বাড়িতেও ছিল শিউলি ফুলের গাছ। শিউলির গন্ধ নিয়ে ঘুম থেকে ওঠা টেমস নদীর ধারের মানুষদের হয় না।
পুজো মানেই প্যান্ডেল হপিং, আড্ডা, খাওয়া, সে রেস্টুর্যান্ট হোক কী পথ চলতে চলতে খানিক স্ট্রীট ফুড। এবার বলুন দেখি আপনি কীকরে বিদেশের মাটিতে প্যান্ডেল পাবেন। একটা কী দুটো তো পুজো হয়। কলকাতা ওই ক’দিন আসলে কার্নিভাল দেখে। নানারকম চিন্তা, সৃজনশীল ভাবনার রূপ আমরা দেখি। আর হাঁটতে হাঁটতে রাস্তার রোল খাবার কথা নয় বাদ ই রাখলাম। না প্যান্ডেলে গিয়ে জামাকাপড় দেখানোর হাল্কা মিষ্টি লড়াই, না নতুন জুতো পায়ে নিয়ে ব্যথা, কিছুই ওখানে সম্ভব না। গোটা ম্যাডক্স স্কোয়ারটাই তো বিদেশে বাঙ্গালীরা পায় না বলুন।
প্যান্ডেল হপিং দিয়ে মনে এল, সাউথ আর নর্থের লড়াই। নাকতলা উদয়নের পুজোই হোক কী চেতলা অগ্রণী, একবার বাগবাজার সার্বজনীন না গেলে পুজোটা ঠিক মনে হয় না। একডালিয়ার মূর্তিটা বরাবর একইরকম হয়, তাও খুব মন টানে একবার দেখে আসতে, ওদিকে সন্তোষ মিত্র স্কোয়ারের ঝার, আলোকসজ্জা। আর ভালো লাগে বেলুড় মঠের থিমের বাইরে বিশুদ্ধ নিয়মে পুজো। সঙ্গে বনেদী বাড়িগুলোতে ঘুড়ে বেড়ানো। প্যান্ডেলে লাইনটা বা দড়ি ফেলাটা ওই সময়ে বিরক্তিকর লাগলেও কিছু টুকরো মজা বন্ধুদের সঙ্গে, খানিক খুনসুটি, খানিক চোখে চোখ মন্দ লাগে না। প্রবাসে ওরা খুব মিস করে এগুলো।
শব্দদূষণ নিয়ে অনেকে অনেক কথাই বলেন। সিঙ্গাপুরে নাকি রাত ১২টার পর ঢাক বাজানো বন্ধ। এখানে ভাবুন তো, রাতে ঢাক হাল্কা বেজেই থাকে। পুজোর চারদিন এগুলো মানুষজন মেনেই নেন। তবে হ্যাঁ, অবশ্যই বাড়ির বয়স্কদের কথা ভেবে আস্তেই বাজানো উচিৎ। আর বিসর্জনের দিনে নাচ। বিদেশে এই শোভাযাত্রা আর উদ্দাম নাচের সঙ্গে বিসর্জন হচ্ছে ভাবাই যায় না।
আসলে প্রবাসে দুর্গাপূজা হল পুজো, কাজের ফাঁকে কয়েকদিনের আনন্দ। কলকাতার পুজো আসলে উৎসব। আসল পার্থক্যটা এখানেই। কলকাতা ছেড়ে তাই ওই ক’দিন অন্য কোথাও যাবার কথা ভাবাই যায় না।
আপনার মুখের রোমকূপ বা পোরসগুলি কি খুবই বড় বড়? আপনি টেকনিক্যালি এইসমস্ত পোর্স ছোট করতে…
পরিষ্কার নিটোল মুখ, অথচ থুঁতনিতে কালো কালো ব্ল্যাকহেডস! কেমন লাগে বলুন তো! সৌন্দর্যটাই নষ্ট হয়ে…
আগেকার দিনে বলা হত, লজ্জা নাকি নারীর ভূষণ। না, আজকের দিনে আমরা ওইসব কথা বলব…
বাড়ির দেয়ালে রকমারী রঙের ছ্বটা অনেকেরই সাধ ও শখের পরিচয় বহন করে। কিন্তু কিছু বছর…
ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা উচিত এই কথাটা আমরা সবাই জানি কম বেশি। কিন্তু কেন? কি উপকার…
প্রাচীনকালে যখন রূপচর্চার এত উপকরণ হাতের কাছে ছিল না, সেই সময় থেকেই রূপচর্চার অন্যতম উপকরণ…