সক্কাল সক্কাল উঠেই কি ব্যাড নিউজ? মুড অফ, কারণ আপনার পিরিয়ড হয়ে গেছে, তাই তো? এদিকে পিরিয়ডের ঝামেলায় আপনার পার্টনারের সাথে ঘোরার সুন্দর প্ল্যানটাই বানচাল হয়ে যাওয়ার যোগাড়! আর আপনি খুলে আপনার বয়ফ্রেন্ডকে বলতেও পারছেন না যে আপনার পিরিয়ড হয়েছে। ফলে প্ল্যান ক্যানসেল, আর আপনারও বয়ফ্রেন্ডের সাথে ঝামেলা।
দেখুন, আমাদের সমাজে কিন্তু ছোট থেকেই পিরিয়ড নিয়ে বেশ একটা ঢাক গুড়গুড় ব্যাপার আছেই। মাসের ওই বিশেষ ৩-৪ দিন আসা মানেই আপনার চাপ। রাস্তায় বেরিয়ে কোনো সমস্যা হলেও পার্টনারকে বলতে লজ্জা পান। কারণ পিরিয়ড নিয়ে শেষে কিনা একটা ছেলের সাথে কথা বলবেন, তার সাথে পরামর্শ করবেন! ইসস, কি লজ্জা! এর থেকে খারাপ আর কি হতে পারে!
নাকি আপনার পার্টনারকে আপনার পিরিয়ড, পিরিয়ডের সমস্যার কথা বলতে চেয়েও বলতে পারেননি? আমাদের মেয়েদের কাছে পিরিয়ড যেমন খুব একটা গোপন জিনিস, লুকিয়ে রাখার জিনিস, কারণ ছোট থেকে আমরা সেটাই জেনে এসেছি। পিরিয়ড মানেই নোংরা, খারাপ, বাজে। ওই কদিন মন্দিরে যেতে নেই, ঠাকুর প্রণাম করতে নেই, আর কত গুচ্ছ ‘না’-এর লিস্টি! পিরিয়ড হওয়া মানেই তুমি কার্যত একটা ভিন গ্রহের জীব হয়ে গেলে! তাই গার্লস স্কুল হলে তো ভালো। কিন্তু যদি কো-এড স্কুল হয়? তাহলে মাসের ওই কটা দিন চিন্তার শেষ নেই। এই বুঝি জামায় লেগেই গেল! আর সবাই খেপাতে শুরু করলো! তার থেকে তো না যাওয়াই ভালো বাবা!
পিরিয়ড নিয়ে ছেলেদের এত কৌতূহল কীসের জানেন? পিরিয়ড নিয়ে মেয়েদের এত লুকোছাপা বলেই! ভেবে দেখুন, পিরিয়ড কিন্তু খুব স্বাভাবিক একটা শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়া। ভাবুন, গোটা পৃথিবীতে ১২ থেকে ৪৮—মোটামুটি প্রায় ৮ মিলিয়ন মহিলা এখন মেন্সট্রুয়াল সাইকেলের মধ্যে আছেন। তাও নাকি পিরিয়ড নিয়ে কথা বলা যায় না! ব্রিটেনের মতো দেশে এক সাম্প্রতিক সমীক্ষায় জানা গেছে সে দেশের প্রায় ৬৪% মেয়েই তাঁদের পুরুষ বন্ধুদের সাথে পিরিয়ড নিয়ে কথা বলতে লজ্জা পান। তাহলে খানিক আন্দাজ করেই নিন ভারতের হাল!
➡ পিরিয়ডের সময় পার্টনার খেয়াল রাখে তো?
পিরিয়ড খুব ‘স্বাভাবিক’ একটা ঘটনা। সেটাকে নিজেই মেনে নিন। ভেবে দেখুন, পিরিয়ড নিয়ে অযথা লুকোছাপা করে আমরা মেয়েরাই কি ব্যাপারটাকে ‘অ-স্বাভাবিক’ করে তুলছি না? ব্যাপারটাকে খাওয়া-শোয়া—ইত্যাদি নর্মাল আর পাঁচটা ঘটনার মতোই নর্মালি নিন। বিষয়টাকে কনফিডেন্টলি ফেস করুন। না লুকিয়ে নর্মালি অ্যাডমিট করুন আপনার পিরিয়ড হয়েছে।
মানছি আপনার পার্টনারের, বা সাধারণভাবেই ছেলেদের এই বিষয়ে খানিক বাড়তি আগ্রহ, কৌতূহল আছে। সেটা কেন জানেন? কারণ তাদের এ সম্পর্কে ‘স্বাভাবিক’ ধারণা নেই বলেই। তাই আপনি যদি কনফিডেন্স নিয়ে নর্মাল ভাবে পিরিয়ড কী, কেন হয়, ইত্যাদি আপনার পার্টনারের কাছে এক্সপ্লেন করতে পারেন, বা করতে শুরু করেন, দেখবেন ব্যাপারটা সম্পর্কে খানিক আন্দাজ পেলে কিন্তু আপনার পার্টনার আপনাকে বুঝবেন। আজব প্রশ্ন তো করবেনই না, উল্টে পিরিয়ডের ওই বিশেষ দিনগুলোতে দেখবেন তিনি কেমন কেয়ারিং হয়ে গেছেন!
আর পিরিয়ড নিয়ে খোলাখুলি সব কথা, আপনার সমস্যার কথা আপনার পার্টনারকে জানালে দেখবেন, আপনাদের সম্পর্ক কিন্তু একটা অন্য জায়গায় যাবে, যেখানে দুজনেই দুজনের সব গুরুত্বপূর্ণ কথাই শেয়ার করতে পারবেন।
আর হ্যাঁ, ছেলেদের কিন্তু বুঝতে হবে যে পিরিয়ড একটা স্বাভাবিক জিনিস। আর ওই বিশেষ দিনেও মেয়েরা অছ্যুত বা আলাদা ‘নোংরা’ থাকে না। আপনার গার্লফ্রেন্ড যদি আপনাকে তাঁর পিরিয়ড নিয়ে কিছু জানাতে আসেন, মন দিয়ে শুনুন, তাঁর সমস্যা বুঝুন। অযথা ইয়ার্কি করবেন না একদম। ওই বিশেষ দিনগুলোতে মেয়েদের কষ্টটা খানিক হলেও বুঝুন। কেয়ারিং অ্যাটিটিউড দেখান আপনার পার্টনারের প্রতি। মনে রাখবেন, উনি কিন্তু ওটাই চান।
মন খুলে, কনফিডেন্স নিয়ে শেয়ার করুন। আমাদের সমাজে পিরিয়ডকে এখনও ‘স্বাভাবিক’ ভাবে দেখা হয় না। এর দায় যতটা না ছেলেদের, তার থেকেও বেশী কিন্তু মেয়েদের। আপনি স্বাভাবিক জিনিসকে মেনে নিয়ে খোলাখুলি কথা বলুন। প্রথমে খানিক লজ্জা লাগতে পারে। কিন্তু ভেবে দেখুন, টি.ভি.-তে স্যানিটারি ন্যাপকিনের অ্যাড যখন একসাথে বসে দেখতে পারেন, তখন কেন পিরিয়ড নিয়ে একসাথে কথা বলবেন না? মনে রাখবেন, খোলামেলা সুস্থ পরিবেশই কিন্তু আমাদের সমাজকে ‘না বলার’ ট্যাবু থেকে বের করে উন্নতির দিকে নিয়ে যেতে পারে।
আপনার মুখের রোমকূপ বা পোরসগুলি কি খুবই বড় বড়? আপনি টেকনিক্যালি এইসমস্ত পোর্স ছোট করতে…
পরিষ্কার নিটোল মুখ, অথচ থুঁতনিতে কালো কালো ব্ল্যাকহেডস! কেমন লাগে বলুন তো! সৌন্দর্যটাই নষ্ট হয়ে…
আগেকার দিনে বলা হত, লজ্জা নাকি নারীর ভূষণ। না, আজকের দিনে আমরা ওইসব কথা বলব…
বাড়ির দেয়ালে রকমারী রঙের ছ্বটা অনেকেরই সাধ ও শখের পরিচয় বহন করে। কিন্তু কিছু বছর…
ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা উচিত এই কথাটা আমরা সবাই জানি কম বেশি। কিন্তু কেন? কি উপকার…
প্রাচীনকালে যখন রূপচর্চার এত উপকরণ হাতের কাছে ছিল না, সেই সময় থেকেই রূপচর্চার অন্যতম উপকরণ…