কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে, পেট ঠান্ডা রাখতে, শরীরে পুষ্টি জোগাতে পেঁপের যেমন জুড়ি নেই, তেমনি সব ধরণের ত্বকের পরিচর্যায় পেঁপের ক্ষমতা টেক্কা দিতে পারবে এমন ফল বা সবজির সংখ্যা খুব কম। কাঁচা পেঁপে মূলত ত্বকের ঘা বা স্কিন আলসার প্রতিরোধে ব্যবহৃত হয়। তেমনি পাকা পেঁপে ত্বকের যেকোন সমস্যায় চমৎকার সমাধান এনে দেয়।
স্কিন গ্লো করতে চান? শুধু পেঁপে দিয়েই স্কিন গ্লো করতে পারবেন, দেখে নিন এই ১০টি ফেসপ্যাক যা আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছি আজকে। তবে তার আগে চলুন জেনে নেই কি জাদু আছে পেঁপের ফেসপ্যাকে।
চটকানো পেঁপের সাথে মধু ও দুধ ভালো করে মিশিয়ে পেস্ট বানিয়ে নিন। এরপর এই মিশ্রণটি সারা মুখ আর ঘাড়ে মাসাজ করুন। দুধে অ্যালার্জি থাকলে দুধের পরিবর্তে আরো ১ টেবিল চামচ মধু মিশিয়ে নিন। শুষ্ক ত্বকের জন্য উপযোগী পেঁপের এই ফেসপ্যাকটি সপ্তাহে ১-২ বার ব্যবহার করুন।
অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল ও হাইড্রেটিং প্রপার্টি সমৃদ্ধ মধু ত্বককে রাখে নরম, কোমল, ও মসৃণ।
সব উপকরণ একসাথে মিশিয়ে মুখে ও ঘাড়ে মাসাজ করে ১০-১৫ মিনিট অপেক্ষা করুন। এরপরে ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এই প্যাকটা ব্রণ নির্মূলের জন্য ভালো। প্রতি ৩ দিন পরপর এটা ব্যবহার করবেন।
মধু ত্বকে পুষ্টি জোগায়। লেবু লোমকূপ পরিষ্কার রাখে, সূর্যরশ্মি থেকে হওয়া ক্ষতি থেকে ত্বককে সারায়, ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করে।
পেঁপে, শসা, কলা একসাথে ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করে মসৃণ পেস্ট বানিয়ে নিন। এবার এই মিশ্রণ মুখে ও ঘাড়ে মাসাজ করে ১৫ মিনিট রেখে দিন। এরপরে প্রথমে কুসুম গরম পানিতে মুখ ও ঘাড় পরিষ্কার করে সবশেষে ঠান্ডা পানিতে ধুয়ে ফেলুন। ত্বকে তাৎক্ষণিক শীতল অনুভূতি আনবে এই প্যাকটি। প্রতি সপ্তাহে ১ বার ব্যবহার করবেন।
শসা ত্বককে আর্দ্র রাখে, ত্বকের রং উজ্জ্বল করে, তেলতেলে ভাব কমায়, এবং ব্রণের সমস্যা নির্মূল করে। কলা ত্বককে ময়েশ্চারাইজ করে।
প্রথমে ডিমের সাদা অংশটাকে ফেটাতে হবে। যতক্ষণ না পর্যন্ত সাদা ডিমের অংশটা ফেনায় পরিণত হচ্ছে ততক্ষণ পর্যন্ত ফেটতে থাকুন। ফেটানো হয়ে গেলে পেঁপে মিশিয়ে দিন। মুখে ও ঘাড়ে মাসাজ করে ১৫ মিনিট অপেক্ষা করুন, এরপরে ঠান্ডা পানিতে ধুয়ে ফেলুন। ত্বকের লোমকূপ বন্ধ করতে এই ফেসপ্যাকটি খুবই কার্যকরী। সপ্তাহে একবার এই প্যাকটি ব্যবহার করবেন।
ডিমের সাদা অংশ লোমকূপ বন্ধ করে ও ত্বককে টানটান রাখে।
পেঁপে কুচির সাথে কমলার রস ভালোমতো মিশিয়ে মুখে লাগিয়ে ১৫ মিনিট রেখে দিন, সবশেষে ঠান্ডা পানিতে ধুয়ে ফেলুন। এই ফেসপ্যাকটা তৈলাক্ত ত্বকের জন্য বিশেষভাবে উপযোগী তাই সপ্তাহে ২ বার এটা ব্যবহার করুন।
কমলা ভিটামিন সি-র একটি চমৎকার উৎস। ভিটামিন সি অতিরিক্ত তেল নিঃসরণ নিয়ন্ত্রণে আনে, ত্বকের জ্বালাপোড়া কমায়, প্রাকৃতিক অ্যাস্ট্রিনজেন্ট হিসেবে কাজ করে, এবং ত্বককে উজ্জ্বল করে।
পেঁপের সাথে লেবুর রস ভালো করে মিশিয়ে মুখে মাসাজ করে ১০ মিনিট রেখে দিন। এরপর ঠান্ডা পানিতে মুখ ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে ২-৩ বার এই প্যাক ব্যবহারে ত্বক হবে উজ্জ্বল ও প্রাণবন্ত।
ভিটামিন সি ও সাইট্রিক অ্যাসিড সমৃদ্ধ লেবু ত্বক উজ্জ্বল করে ও প্রাকৃতিক ব্লিচের কাজ করে।
এই ফেসপ্যাকটি মূলত থেরাপির কাজ করে। পেঁপে আর হলুদ গুঁড়া মিশিয়ে ত্বকের যে জায়গায় সমস্যা সেই জায়গায় লাগিয়ে শুকিয়ে যাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। শুকিয়ে গেলে আলতো করে ঘষে প্যাকটা তুলে এরপর জায়গাটা ঠান্ডা পানিতে ধুয়ে ফেলুন। প্রতি সপ্তাহে একবার করে এভাবে পেঁপে-হলুদ গুঁড়া লাগাবেন।
ত্বকের যত্নে হলুদ একটি প্রাচীন ওষুধ। এতে আছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল, এবং অ্যান্টিইনফ্লেমেটরি উপাদান। এছাড়াও এটা ত্বকের সুস্বাস্থ্য সুনিশ্চিত করে।
পেঁপে চটকে এর সাথে টমেটোর রস মিশিয়ে নিন। তারপর মুখে ও ঘাড়ে ভালো করে মাসাজ করে শুকিয়ে যাওয়া পর্যন্ত রেখে দিন এবং শুকিয়ে গেলে ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। রোদে পোড়া চেহারা সারাতে এই প্যাকটা সপ্তাহে ২-৩ বার ব্যবহার করতে পারেন।
টমেটো শুধু পোড়াভাব কমায় না, তার সাথে সাথে লোমকূপ বন্ধ করতে সাহায্য করে, এবং ত্বকের স্বাভাবিক রং ফিরিয়ে আনে।
পেঁপে চটকে কাঁচা দুধ মিশিয়ে পেস্ট বানিয়ে মুখে ও ঘাড়ে মাসাজ করে ১৫-২০ মিনিট রেখে দিন। শুকিয়ে আসলে পরে ধুয়ে ফেলুন। এটা দিয়ে মুখের কালো ছোপ ছোপ দাগ দূর করতে পারবেন। সপ্তাহে ৩ বার ব্যবহার করুন।
দুধে ল্যাকটিক অ্যাসিডের পাশাপাশি ক্লিনজিং ও এক্সফোলিয়েটিং উপাদান আছে। পেঁপে আর দুধের মিলিত অ্যাকশনে মেছতার দাগ দূর হয়, ত্বক থাকে ঝকঝকে।
পেঁপে চটকে প্রথমে মুলতানি মাটি এরপরে পানি/গোলাপজল মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে নিন। এবার এটা সারা মুখে লাগিয়ে শুকিয়ে যাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুন এবং সবশেষে ধুয়ে ফেলুন। ত্বকের গভীর থেকে ময়লা পরিষ্কার করার জন্য দারুণ এই ফেসপ্যাকটি ত্বকের ধরণ বুঝে ব্যবহার করবেন। শুষ্ক ত্বক হলে সপ্তাহে ১ বার আর তৈলাক্ত ত্বক হলে সপ্তাহে ২ বার ব্যবহার করুন পেঁপে-মুলতানির ফেসপ্যাক।
মুলতানি মাটি ত্বকের গভীর থেকে তেল, ময়লা, এবং যাবতীয় জীবাণু বের করে ত্বককে বানায় উজ্জ্বল। পরিষ্কারের কারণে ত্বকে ইরিটেশনও কমে যায় অনেকখানি।
পেঁপেতে প্রচুর উপকারী এনজাইম থাকলেও পেপেইন নামক এনজাইমটি অ্যালার্জির উদ্রেক করতে পারে। তাছাড়া পেঁপেতে থাকা ল্যাটেক্সও অ্যালার্জির কারণ হতে পারে। পেঁপের ফেসপ্যাক ব্যবহারে ত্বকে র্যাস, শ্বাসকষ্ট, হাঁচি, মাথা ঘোরা, মাথাব্যথা, চুলকানি, চামড়া ফুলে যেতে পারে, যা অ্যালার্জির লক্ষণ। তাই এই ফল রূপচর্চায় ব্যবহারের আগে অ্যালার্জি টেস্ট করে নেয়া অত্যাবশ্যক।
আপনার মুখের রোমকূপ বা পোরসগুলি কি খুবই বড় বড়? আপনি টেকনিক্যালি এইসমস্ত পোর্স ছোট করতে…
পরিষ্কার নিটোল মুখ, অথচ থুঁতনিতে কালো কালো ব্ল্যাকহেডস! কেমন লাগে বলুন তো! সৌন্দর্যটাই নষ্ট হয়ে…
আগেকার দিনে বলা হত, লজ্জা নাকি নারীর ভূষণ। না, আজকের দিনে আমরা ওইসব কথা বলব…
বাড়ির দেয়ালে রকমারী রঙের ছ্বটা অনেকেরই সাধ ও শখের পরিচয় বহন করে। কিন্তু কিছু বছর…
ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা উচিত এই কথাটা আমরা সবাই জানি কম বেশি। কিন্তু কেন? কি উপকার…
প্রাচীনকালে যখন রূপচর্চার এত উপকরণ হাতের কাছে ছিল না, সেই সময় থেকেই রূপচর্চার অন্যতম উপকরণ…