পাহাড়ে বেড়াতে যেতে কার ই বা মন্দ লাগে! একটা সময়ই ছিল যখন ছুটিতে ঘুরতে যাবার গন্তব্য সাধারণ বাঙ্গালীর ছিল দার্জিলিং। কিন্তু, বিগত কয়েকবছর ধরে এই পাহাড়ে যেতেই মানুষ ভয় পাচ্ছে, পর্যটন শিল্প ধ্বংস হচ্ছে। সমতলের মানুষও নানা কারণে বিরক্ত হচ্ছে। আর এই সবই হচ্ছে শুধুমাত্র গোর্খাল্যান্ড নিয়ে রাজনীতির জন্য।
আলাদা রাজ্য হিসাবে গোর্খাল্যান্ডের দাবী নতুন নয়। ১৯০৭ সালেই মর্লে-মিন্টো শাসন সংস্কারে এই অঞ্চলের প্রস্তাব নাকি ছিল। কিন্তু, ১৯৮০ নাগাদ এই নিয়ে বৃহত্তর আন্দোলন শুরু হয়। ১৯৮৬ সালে সুভাষ ঘিসিঙ্গের নেতৃত্বে Gorkha National Liberation Front’র ছাতার তলায় এই আন্দোলন শুরু হয়। ১২০০ মতো মানুষ মারা যায়। ফলে শেষ পর্যন্ত ১৯৮৮ সালে Darjeeling Gorkha Hill Council গঠিত হয় একটি অর্ধ-স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা হিসাবে। কিন্তু, বিষয়টা এখানেই শেষ হল না। ২০০৭ সাল নাগাদ G.N.L.F’র মধ্যে থেকেই বিমল গুরুং বেরিয়ে এসে স্বতন্ত্র একটি দল গঠনের কথা ভাবেন। তিনি এই কাজে প্রশান্ত তামাঙ্গের সাহায্য পান। খুব শীঘ্রই তারা জনগণের সমর্থন লাভ করে। এরই মাধ্যমে আস্তে আস্তে গঠিত হয় Gorkha Janmukti Morcha ও আরও ব্যাপক আন্দোলনের দিকে এগিয়ে যায় বিষয়টা।
এর মধ্যেই আবার আরেকটি বড় বিষয় হয় যা এই রাজনীতিকে আরও খানিকটা ঘোলা করে। Akhil Bharatiya Gorkha League’র নেতা মদন তামাং যখন ২০১০ সালে নিহত হন ও এমন ধরে নেওয়া হয়েছিল যে Gorkha Janmukti Morcha’র সমর্থকরাই এই কাজ করেছে।
তাদের বিরুদ্ধে FIR করা হয়। দার্জিলিং, কালিংপং, কার্শিয়াঙ্গে বিদ্যুৎ পরিসেবা বন্ধ হয়ে যায়। আবার G.N.L.F নেতা নিরজ জিম্বা বলেন যে মোর্চারা বিধায়ক পদ নিয়েই কীভাবে আন্দোলন করছে। এদিকে মোর্চাদের তরফেও বলা হচ্ছে যে G.N.L.F’র এক নেতার পুত্র উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন পর্ষদের সহ-সভাপতি। তাহলে তাঁরাও বা কীকরে লড়াই করেন!
এই এতগুলো কথা বলতে হল একটাই কারণে। এইটুকু দেখে আমরা বুঝতে পারলাম যে এই আন্দোলনটা সবসময়ে এক নেতৃত্বের হাতে ছিল না। নেতৃত্ব মাঝে মাঝে একটা বড় বিষয় হয়ে দেখা দিচ্ছিল। ক্ষমতার প্রসঙ্গটাও এর মধ্যে ঢুকে যাচ্ছিল। পাহাড়ের নিজস্ব রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যেই দলাদলি, অন্তর্ঘাত কিছু কম ছিল না। এর সঙ্গেই সমতলের রাজনীতি যুক্ত হচ্ছিল ধীরে ধীরে এই আন্দোলনকে কেন্দ্র করে।
২০১১ সালের ১৮ জুলাই রাজ্য সরকার ও বিমল গুরুঙ্গদের মধ্যে Gorkhaland Territorial Administration স্বাক্ষরিত হয়।
এর মাধ্যমে পাহাড়ের ভালো মন্দ খানিকটা দেখার দায়িত্ব বর্তায় তাদের ওপর। খানিক ঠিকঠাক চললেও ২০১৩ সালে অন্ধ্র প্রদেশ থেকে তেলেঙ্গানা আলাদা হয়ে যাওয়ায় গোর্খাল্যান্ড দাবী আবার জেগে ওঠে। ফলে খানিকটা হলেও কংগ্রেস এর মধ্যে ঢুকে যায়।
আবার বিজেপি ২ বার দার্জিলিং লোকসভা আসন জেতে ২০০৯ ও ২০১৪ সালে G.J.M’র সাহায্যে। এর ফলে বিজেপি কোন নির্দিষ্ট পক্ষ নিতে পারছে না। কারণ, গোর্খাল্যান্ডের দাবী মানলে সমতলের সমর্থন হারাতে হবে,আর, গোর্খাদের দাবী সমর্থন না করলে G.J.M’র সমর্থন হারাবে। তবুও, বিজেপি ডিস্ট্রিক্ট জেনারেল সেক্রেটারি শান্তকিশোর গুরুং সমর্থনের পথে না যাবার কথাই বলেন। বিজেপি স্টেট প্রেসিডেন্ট দিলীপ ঘোষ, ন্যাশনাল সেক্রেটারি রাহুল সিনহাও এই গোর্খাল্যান্ডের দাবী সমর্থন করেন না। এর মধ্যে আবার বিজেপি’র এক নেতা কৈলাশ বিজয়বর্গীয় বলেন যে যদিও গোর্খাল্যান্ডের দাবী সমর্থন যোগ্য নয়, তবুও G.T.A বিষয়ে খানিক নমনীয় মনোভাব নেওয়া উচিৎ। এছাড়া, যখনই সরকারী সম্পত্তি ভাঙ্গা, দীর্ঘ বন্ধ, আগুন লাগানো এই সবের বিরুদ্ধে সরকার কোন কঠোর পদক্ষেপ নিতে গেছে, তখনই অন্যান্য দল অনেকসময় তার বিরোধিতা করেছেন। এর ফলে মাঝে মাঝে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়েছে। অনেক দল এমনও বলেন যে সরকার নাকি এই সমস্যার সমাধান করতেই চান না, বরং এর থেকে রাজনৈতিক ফায়দা তুলতে চান, যা ঠিক নয়। পাহাড়ের উন্নতির জন্য সেখানে আলাদা প্রশাসনিক ভবন উত্তরকন্যা তৈরি হয়।
তাই, গোর্খাল্যান্ড নিয়ে সমস্যা, যেটা খুব একটা সরল সমাধানের পথে এখনও নেই, তা অনেকসময় নানা দলের নানা মনোভাব পোষণে ও পাহাড়ের আভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি ও দলাদলিতেও বিপর্যস্ত হচ্ছে কারণ পাহাড়টা আসলে শুধু গোর্খাদের নয়, সবারই।
আপনার মুখের রোমকূপ বা পোরসগুলি কি খুবই বড় বড়? আপনি টেকনিক্যালি এইসমস্ত পোর্স ছোট করতে…
পরিষ্কার নিটোল মুখ, অথচ থুঁতনিতে কালো কালো ব্ল্যাকহেডস! কেমন লাগে বলুন তো! সৌন্দর্যটাই নষ্ট হয়ে…
আগেকার দিনে বলা হত, লজ্জা নাকি নারীর ভূষণ। না, আজকের দিনে আমরা ওইসব কথা বলব…
বাড়ির দেয়ালে রকমারী রঙের ছ্বটা অনেকেরই সাধ ও শখের পরিচয় বহন করে। কিন্তু কিছু বছর…
ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা উচিত এই কথাটা আমরা সবাই জানি কম বেশি। কিন্তু কেন? কি উপকার…
প্রাচীনকালে যখন রূপচর্চার এত উপকরণ হাতের কাছে ছিল না, সেই সময় থেকেই রূপচর্চার অন্যতম উপকরণ…