জি বাংলার অন্দর মহল সিরিয়ালটা নিশ্চয়ই আপনারা সবাই দেখেন।দেখুন এটা তো অস্বীকার করার কোনো জায়গা নেই যে রিল লাইফের প্রভাব আমাদের রিয়েল লাইফেও পড়ে।আমাদের প্রত্যেকেরই বাড়ির বউ নিয়ে একটা ধারণা থাকে।কেমন হবে বাড়ির বউ,তার স্বভাব কেমন হবে এই নিয়ে আমাদের অনেক মাথাব্যথা।আমাদের দেখা সিরিয়ালেও আমরা কিছু বউমাদের দেখি,যাদের স্বভাব,আচরণ আমাদের ভাবনার সঙ্গে মিলে যায়।তখনই তারা হয়ে ওঠে সেরা বাঙ্গালী বউয়ের প্রতীক।আমরা সেইরকম বউই ঘরে ঘরে চাই।আপনাদের কি মনে হয়,অন্দর মহল সিরিয়ালের পরমেশ্বরী বা পরমা সেই সেরা প্রতীকে যেতে পারে?আসুন দেখা যাক।
বাড়িতে নতুন বউ আসলে সে তখনও থাকে শুধু একটা মেয়ে।সংসার করতে করতে সে তিলে তিলে হয়ে ওঠে বউমা,যার কাঁধে থাকে সংসারের দায়িত্ব।সংসার আসলে একটা মেয়েকে বউ’এর স্থানে পৌছে দেবার একটা মাধ্যম বলা যায়।পরমেশ্বরীও আসলে মেয়ে থেকে বউ কিভাবে হয়েছে সেটাই দেখানো হয়েছে এই সিরিয়ালে।লেবু চা দেওয়া ঠিক সময়ে,ঠাকুর মশাইয়ের সঙ্গে পুজোর কাজে হাত লাগানো,সংসারের খুঁটিনাটি সবকিছুর খেয়াল রাখার দায়িত্ব সামলাতে সামলাতে কখন সে শুধুই বউমা হয়ে গেছে, সেটা সে নিজেই বোঝে না।আমরা দিনের পর দিন ধরে আমাদের বাড়িতে চেনা মানুষদের সঙ্গে তো এটাই হতে দেখেছি।এই বাস্তবটা পরমেশ্বরী চরিত্রের মধ্যে দিয়ে ফুটিয়ে তুলে আম-বাঙ্গালী বউমার সেরা প্রতীক হয়ে ওঠার দিকে এগিয়ে গেছে পরমেশ্বরী অনেকটাই।
একটা মেয়েকে বিয়ের পর দুটো অস্তিত্ব বয়ে নিয়ে যেতে হয়।একটা মেয়ের অস্তিত্ব আর আরেকটা হল বাড়ির বউয়ের অস্তিত্ব।এই দুইয়ের জাঁতাকলে আটকেই কেটে যায় মেয়ের জীবন আমাদের প্রত্যেকের বাড়িতেই।শ্বশুরবাড়ীর পরিচয়ই হয়ে ওঠে মেয়েটির পরিচয়।এই সিরিয়ালেও পরমেশ্বরী বাড়ির সকলের ফরমাশ খাটতে খাটতে নিজের বাবা-মায়ের দেওয়া নামটারই অবলুপ্তি ঘটতে দেখেছে।পার্সেল আসার পর তার নাম জানতে চাওয়ায় বাড়ির কেউই বলতে পারলো না কে পরমেশ্বরী।সে যে এখন শুধুই বাড়ির বউ।এই বউ আর মা-বাবার দেওয়া নাম,মানে যা শুধুমাত্র একটা মেয়ের পরিচয়ই বহন করে,দুটোর সংঘাত কীভাবে মেয়েদের ক্ষতবিক্ষত করে সেটা পরমেশ্বরী চরিত্রের মধ্যে দিয়ে প্রকাশ পেয়েছে ভালো ভাবে।
আসলে কারোর মা,কারোর বউ হতে হতে একটা মেয়ে এক সময় নিজে এটাই ভেবে বসে যে তার নিজস্ব কোনো সত্ত্বা নেই।বউ হতে গেলে ছাড়তে হবে অনেক কিছু।নিজস্ব কিছু মূল্যবোধ,নিজস্ব ইচ্ছে,নিজস্ব চাহিদা ছাড়তে হতে পারে।এই পোশাক পরা যাবে না,চাকরি করা যাবে না,এই এই কাজ করতেই হবে,সবদিক থেকে সার্থক বউ বানানোর প্রচেষ্টা আর এর মাঝেই হারিয়ে যায় মেয়েটা।হারিয়ে যায় নিজের থেকেও।এটাই হয়ে যায় আমাদের মেয়েদের প্রধান সমস্যা।তাদের মধ্যে বউ’এর বাইরে নিজের নাম খোঁজার ইচ্ছেটাই চলে যায়।কিন্তু বর্তমানে সেটা অবশ্য হয় খুব কম।পরমেশ্বরীও বউ হওয়ার পাশাপাশি নিজের নামটাকে বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে,যেটাই উচিৎ বর্তমান মেয়েদের।আজকালকার মেয়েরা করেও তাই।পরমেশ্বরী নিজেও নিজের নাম শুনে চমকে উঠেছিল,কারণ এটা তার হারিয়ে যাওয়া সত্ত্বার মুখোমুখি করেছিল তাকে।আজকের বউরা এই মুখোমুখি হওয়াটা সচেতনভাবেই বয়ে নিয়ে বেড়ায়।পরমেশ্বরী তাই আজকের বউ’এরই প্রতীক।
রিল লাইফের চরিত্র তো রিয়েল লাইফ থেকেই উঠে আসে।আমাদের বউমারাও কোথাও গিয়ে নিজেদের একাত্ম করতে পারে পরমেশ্বরীর সঙ্গে।সেই কবে থেকেই তো মেয়েরা মুক্তি চেয়ে এসেছে।সামাজিক অতিরিক্ত অনুশাসন,বৈষম্য আর আরোপিত পরিচয়ের থেকে মুক্তি।অন্দর মহল আসলে এই মুক্তির আখ্যান হয়ে ওঠে আর আখ্যানটা শুরু হয় অন্দর মহল থেকেই।আর এটাই হয়তো এই সিরিয়ালের জনপ্রিয় হয়ে ওঠার ইউ.এস.পি।
আপনার মুখের রোমকূপ বা পোরসগুলি কি খুবই বড় বড়? আপনি টেকনিক্যালি এইসমস্ত পোর্স ছোট করতে…
পরিষ্কার নিটোল মুখ, অথচ থুঁতনিতে কালো কালো ব্ল্যাকহেডস! কেমন লাগে বলুন তো! সৌন্দর্যটাই নষ্ট হয়ে…
আগেকার দিনে বলা হত, লজ্জা নাকি নারীর ভূষণ। না, আজকের দিনে আমরা ওইসব কথা বলব…
বাড়ির দেয়ালে রকমারী রঙের ছ্বটা অনেকেরই সাধ ও শখের পরিচয় বহন করে। কিন্তু কিছু বছর…
ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা উচিত এই কথাটা আমরা সবাই জানি কম বেশি। কিন্তু কেন? কি উপকার…
প্রাচীনকালে যখন রূপচর্চার এত উপকরণ হাতের কাছে ছিল না, সেই সময় থেকেই রূপচর্চার অন্যতম উপকরণ…