মানুন আর নাই মানুন,মেয়েদের গোটা দিনের একটা বড় অংশ কাটে রান্নাঘরে আর ঠাকুরঘরে। আজকের ব্যস্ত মহিলারা চাকরী,অফিস সব সামলে নিয়মিত ঠাকুরঘরে গিয়ে নিত্য পুজো হয়ত করতে পারেন না,কিন্তু বাড়িতে কোনো বড় পুজোর ব্যবস্থা হলে দেখুন,সব দায়িত্ব গিয়ে পড়ে সেই মহিলাদের ওপরেই।কিন্তু এত কিছুর পরেও একটু খেয়াল করে দেখেছেন কী!একটা পুজো কিন্তু মেয়েরা করতে পারে না।সেটা হল নারায়ণ পুজো।আজ্ঞে হ্যাঁ,অবাক হবেন না।একটু খেয়াল করুন,আপনি আপনার মা-ঠাকুমাকে কখনোই নারায়ণ পুজো করতে দেখেছেন কিনা!অথচ লক্ষ্মী পুজোয় মেয়েদেরই আধিপত্য।কেন মেয়েরা নারায়ণ পুজো করতে পারেন না জানেন?না জানলেও কোনো ক্ষতি নেই।আমরা অনেকেই জানি না।তাই আজ আমরা এই বিষয়ে একটু আলোচনা করব।
শাস্ত্রে কিন্তু বলছে যে মেয়েরা নারায়ণ পুজো করতেই পারে।তাই মেয়েরা নারায়ণ পুজো করতেই পারে।শুধু মাসিকের দিনগুলোতে সাধারণ যেমন মেয়েরা পুজো করে না,তেমনই পুজো করবে না।আমরা শাস্ত্র থেকে প্রমাণও দাখিল করতে পারি।স্কন্দ পুরাণে ভগবান ব্রক্ষ্মা আর নারদ মুণির কথোপকথনের একটা অংশ আছে।সেখানে একটা শ্লোকে বলা হচ্ছে,
“স্ত্রীয়ো বা যদি বা শূদ্রা ব্রাহ্মণঃ ক্ষত্রিয়োঃ বৈষ্ণবম
পূজায়ীত্ত্ব শিলা চক্র লভন্তে শাশ্বতম পাদম”।।
অর্থাৎ স্ত্রী বা শূদ্র বা ব্রাহ্মণ,ক্ষত্রিয় বা বৈষ্ণব যে কেউ নারায়ণ বা শালগ্রাম পুজো করুক না কেন,তারা সকলেই ঈশ্বরের আশীর্বাদ ধন্য হবে আর বৈকুন্ঠে স্থান পাবে।তাই মেয়েদের পুজো কিন্তু শাস্ত্র সমর্থন করছে।
আজ্ঞে হ্যাঁ।মেয়েরা যে পুজো করতে পারে না নারায়ণের সেই সপক্ষেও কিন্তু মত আছে।এই নিয়ে অবশ্য দুটো মত আছে।আসুন জেনে নেওয়া যাক কী বলছে সেই মত।
একটি মত বলছে যেহেতু মেয়েদের উপনয়ন নেই,তাই নারায়ণ পুজোতে মেয়েদের অধিকার নেই।আমরা জানি নারায়ণ পুজোতে উপবীত বা পৈতা লাগে।বৈদিক যুগে মেয়েদের উপনয়ন হত।আমরা তো জানি মেয়েরা সেইসময় কত পড়াশোনা করতেন এবং অধ্যাপনাও করতেন।তাই পুজোটাও যে তারা অনায়াসে করতে পারবেন তাতে আর সন্দেহ কী!বৈদিক যুগের শেষ দিক থেকে মেয়েদের এই উপনয়ন প্রথা বন্ধ হয়ে আসে।পৌরাণিক যুগে সেটা একদমই বন্ধ হয়ে যায়।শুধু তাইই বা কেন!মেয়েদের ওপর অনেক নিষেধাজ্ঞা চলে আসে সামাজিকভাবে।তাই পুজোর অধিকারও তাঁরা হারান।
আরেকটি মত বলছে অন্য একটি দিকের কথা।শালগ্রাম শিলা,যা কিনা নারায়ণের প্রতীক,তা তো একটা প্রাকৃতিক জিনিস।মূলত এটা একটা প্রাণীর ফসিল।নেপালের গন্ডকী নদীর তীরে এখনও শালগ্রাম শিলা পাওয়া যায়।আমরা জানি যে নারীকে প্রকৃতির অংশ ধরা হয়।সাংখ্য দর্শনে পুরুষ আর প্রকৃতি হিসাবেই সকল সৃষ্টিকে ভাগ করা হয়েছে।নারী প্রকৃতির অংশ হয়ে কীভাবেই বা একটা প্রকৃতিজাত বিষয়ের পুজো করতে পারে!এটা কোথাও গিয়ে যেন নিজেকে পুজো করারই সামিল।
জানি আপনারা তাও তর্ক করবেন,প্রশ্ন তুলবেন,কেন,মেয়েরা তো উপবীত ছাড়াই এখনও দিব্যি শিব পুজো করতে পারেন।তাহলে নায়ারণ পুজোয় বাধা কীসের?আসলে শিবকে তো আপনারা জানেন,ভোলাভালা দেবতা তিনি,দেবতা হয়েও আমাদের অনেক বেশী কাছের,আপন,দেবতা সুলভ গুরুগম্ভীর ব্যাপারও শিবের মধ্যে তেমন নেই।তাই সবার সব পুজোই তিনি গ্রহণ করেন অনায়াসে।অন্যদিকে নারায়ণ একটু রাশভারী দেবতা,তাই তাঁর পুজো সবার জন্য মুক্ত নয়।সবার পুজোও তিনি গ্রহণ করেন না।আর সেই ‘সবাই না’-র মধ্যেই পড়ে যান মেয়েরাও!
তাই আজও মেয়েরা নারায়ণ পুজো করতে পারেন না।কিন্তু মন দিয়ে ডাকলে ঈশ্বর তো সবারই।নাই বা রইল পুজোর শাস্ত্রীয় অধিকার।কথায় বলে মন তুলসী ভক্তি চন্দন।সেই পুজো করার অধিকার তো সবারই আছে।
আপনার মুখের রোমকূপ বা পোরসগুলি কি খুবই বড় বড়? আপনি টেকনিক্যালি এইসমস্ত পোর্স ছোট করতে…
পরিষ্কার নিটোল মুখ, অথচ থুঁতনিতে কালো কালো ব্ল্যাকহেডস! কেমন লাগে বলুন তো! সৌন্দর্যটাই নষ্ট হয়ে…
আগেকার দিনে বলা হত, লজ্জা নাকি নারীর ভূষণ। না, আজকের দিনে আমরা ওইসব কথা বলব…
বাড়ির দেয়ালে রকমারী রঙের ছ্বটা অনেকেরই সাধ ও শখের পরিচয় বহন করে। কিন্তু কিছু বছর…
ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা উচিত এই কথাটা আমরা সবাই জানি কম বেশি। কিন্তু কেন? কি উপকার…
প্রাচীনকালে যখন রূপচর্চার এত উপকরণ হাতের কাছে ছিল না, সেই সময় থেকেই রূপচর্চার অন্যতম উপকরণ…