ভারত ও মধ্য ভারতে নাগদেবতার পুজো বহুল রূপে প্রচলিত আছে। একটা সময় সাপের দংশনের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য ভয়ের থেকে বহু মানুষ নাগেদের পুজো করতেন আর পরবর্তীতে মনস্কামনা পূরণের জন্য, সন্তান লাভ ও ঐশ্বর্য প্রাপ্তির জন্য নাগেদের পুজো করা চালু হলো।
বছরের যেকোনো সময় সর্প কুলের আরাধনা করা যায় তবে প্রতিবছর শ্রাবণ মাসের শুক্লপক্ষের পঞ্চমী তিথিতে অষ্টনাগের পুজো অধিক ফলপ্রসূ হয়। তাই শ্রাবণ মাসের শুক্লপক্ষের পঞ্চমী তিথিকে নাগ পঞ্চমী বলা হয়। কথিত আছে নাগ পঞ্চমীর দিন অষ্টনাগের পুজো করলে গ্রহ দোষ কেটে যাওয়ার সাথে সাথে সর্বমনস্কামনা পূরণ হয়। তবে নাগকুল যেমন অতি অল্পেই সন্তুষ্ট হন তেমনি তিনি আবার অল্পেই কুপিত হন, তাই আজকের প্রতিবেদন বন্ধুদের বলবো নাগ পঞ্চমীর দিন কী করা উচিত এবং কী করা উচিত নয়।
পুরাণে এই নাগ পঞ্চমী পর্ব শুরু হওয়া প্রসঙ্গে দুটি কাহিনীর প্রচলন আছে-একটি পরীক্ষিত পুত্র জন্মেঞ্জয়ের প্রসঙ্গ, অপরটি শ্রীকৃষ্ণের প্রসঙ্গ।
কথিত আছে যে অর্জুনের পৌত্র জন্মেঞ্জয় তার পিতার সর্পদংশনে মৃত্যুর প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য একটি যঞ্জের আয়োজন করেছিলেন সেই যঞ্জের লক্ষ্যই ছিল নাগ বংশকে একেবারে ধ্বংস করা। মন্ত্র বলে এবং সেই যজ্ঞের ফলে যজ্ঞের অগ্নিতে এক এক করে নাগেরা এসে পরছিলেন ও প্রাণ হারাচ্ছিলেন।
এদেরকে রক্ষা করবার জন্যই তখন দেবী মনসা ও জরৎকারু মুনির পুত্র আস্তিক মুনি উপস্থিত হন এবং তিনি নিজের বুদ্ধি ও যুক্তি দ্বারা জন্মেঞ্জয়কে এই নাগ বংশধ্বংসকারী যজ্ঞ করার হাত থেকে আটকান। যেদিন এই যঞ্জ থেমেছিল সেই দিনটি ছিল শ্রাবণ মাসের শুক্লপক্ষের পঞ্চমী তিথি। আস্তিক মুনির সেই যঞ্জে পৌঁছনোর ফলে তক্ষক নাগ ও নাগ বংশ বেঁচে যায়। তাই সেই সময় থেকেই নাগ পঞ্চমীর পর্ব শুরু হয়েছিল।
অনেকে আবার বলেন কালীয় নাগকে পরাজিত করে শ্রীকৃষ্ণ যেদিন বিজয়ী হন সেই দিনটি ছিল শ্রাবণ মাসের শুক্লপক্ষের পঞ্চমী তিথি এবং সেই থেকেই নাগ পঞ্চমী পালিত হয়।
নাগ পঞ্চমীর দিন নাগ দেবতার মূর্তির সামনে দুধ, চন্দন, হলুদ ও সিঁদুর রাখা হয়। এরপর নাগ দেবতার মূর্তির সামনে কর্পূরের প্রদীপ জ্বালানো হয়। এরপর নাগেদের আরতী করা হয় ও আরতী শেষে নাগ পঞ্চমীর ব্রতকথা (কদ্রু বিনতার কাহিনী, জন্মেঞ্জয়ের সর্পযঞ্জের আখ্যান) পাঠ করা হয়।
গরুর পুরাণ মতে ব্রহ্মপুত্র মহামুনি কাশ্যপের তৃতীয় স্ত্রী কদ্রুই হলেন নাগ বংশের জননী। অন্যদিকে কাশ্যপের অপর স্ত্রী বিনতার পুত্র গরুড়। বিনতার প্রতি কদ্রু সবসময় বিদ্বেষ ভাবাপন্ন ছিলেন, যার ফলে তিনি বিনতাকে কষ্ট দিতেন।
ছোটবেলা থেকেই মায়ের এই কষ্ট দেখে দেখে গরুড় প্রতিজ্ঞা করেন যে, তিনি সর্পদের ধ্বংস করবেন কিন্তু পরবর্তীকালে এই প্রতিজ্ঞার থেকে তিনি বিরত হলেও সর্পদের সাথে তার শত্রুতা থেকেই যায় তবে এই পুণ্যজন্মের কারণে এবং দেবাদিদেব মহাদেব ও ভগবান বিষ্ণুর পরম ভক্ত হওয়ার কারণে নাগেরা চিরপূজিত হয়ে থাকেন। (মহাভারতের জন্মেঞ্জয়ের সর্পযঞ্জের কাহিনীটি পূর্বেই বলেছি)
নাগপঞ্চমী ব্রত নিষ্ঠাভরে পালন করলে নাগলোক ও পাতাললোকের সর্প কুল মর্তের মানুষকে আশীর্বাদ করেন আর এই আশীর্বাদের ফলে মর্তের মানুষের জীবনে অভাব-অনটনে ঘুছে গিয়ে সুখ ও সমৃদ্ধি আসে।
এছাড়া বলা হয় নাগপঞ্চমী করলে দেবাদিদেব মহাদেব এবং ভগবান বিষ্ণু সেই ব্যক্তির প্রতি অত্যন্ত প্রসন্ন হন। নাগপঞ্চমী যে ব্যক্তি করে তার সর্পদংশন হতে আর কোন ভয় থাকেনা। দেবী মনসার কৃপায় তার সংসারেও সুখ শান্তি বিরাজ করে।
আপনার মুখের রোমকূপ বা পোরসগুলি কি খুবই বড় বড়? আপনি টেকনিক্যালি এইসমস্ত পোর্স ছোট করতে…
পরিষ্কার নিটোল মুখ, অথচ থুঁতনিতে কালো কালো ব্ল্যাকহেডস! কেমন লাগে বলুন তো! সৌন্দর্যটাই নষ্ট হয়ে…
আগেকার দিনে বলা হত, লজ্জা নাকি নারীর ভূষণ। না, আজকের দিনে আমরা ওইসব কথা বলব…
বাড়ির দেয়ালে রকমারী রঙের ছ্বটা অনেকেরই সাধ ও শখের পরিচয় বহন করে। কিন্তু কিছু বছর…
ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা উচিত এই কথাটা আমরা সবাই জানি কম বেশি। কিন্তু কেন? কি উপকার…
প্রাচীনকালে যখন রূপচর্চার এত উপকরণ হাতের কাছে ছিল না, সেই সময় থেকেই রূপচর্চার অন্যতম উপকরণ…