পৌষ সংক্রান্তি বা মকর সংক্রান্তি বাঙালি সংস্কৃতির একটি বিশেষ উৎসব বা বিশেষ ঐতিহ্যবাহী দিন।বাংলা মাস অনুযায়ী পৌষ মাসের শেষ দিনটিতে এই উৎসব পালন করা হয়।শুধু বাংলায় বাঙালিরাই নয়,আমাদের দেশের নানা প্রান্তে এই দিনটিকে নানা ভাবে বিশেষ বিশেষ উৎসবের সাথে পালন করা হয়।বাঙালিরা এই দিনটিতে পুজো করে পিঠে পুলি বানিয়ে খাওয়া দাওয়া করে এবং সকাল থেকে ঘুড়ি ওড়ায়।মকর সংক্রান্তির দিন সূর্য নিজের কক্ষপথ বদল করে মকর রাশিতে প্রবেশ করে।তাই এই দিনটিকে মকর সংক্রান্তি বলে।এই বিশেষ দিনটিতে কি কি করণীয় এবং কি কি করণীয় নয় তাই আজ আমাদের আলোচ্য বিষয়।তাই আজকের লেখাটি পড়া কিন্তু অবশ্য কর্তব্য।
মকর সংক্রান্তি বাঙালির একটি অতি প্রিয় পার্বন।তাই বিশেষ দিনটি নানা রকম অনুষ্ঠান ও আনন্দের মধ্যে দিয়ে পালিত হয়।এই দিনটিকে কিছু বিশেষ নিয়মকানুনের মধ্যে দিয়ে পালন করা হয় প্রাচীনকাল থেকেই।
১. মকর সংক্রান্তির দিন যাত্রা করা উচিত নয়
মকর সংক্রান্তির দিন দূর যাত্রা করা শুভ নয় বলে মনে করা হয়।কোথাও গেলেও কিন্তু নিজের বাড়িতে ফিরে আসা উচিত বলে মনে করা হয়।কথিত আছে প্রাচীনকালে এক মুনি নিজের বাড়ি থেকে ওই দিন যাত্রা শুরু করেন এবং তিনি আর কোনো দিন ফিরে আসেননি।তার পর থেকেই এই যাত্রা না করার প্রচলন।এটি প্রাচীন কথকথা যা লোকমুখে প্রচলিত।আমার মতে আসলে এই দিনটিতে যাতে সকলে মিলে একসাথে আনন্দ করা যায় সেই কারণেই এই নিয়মটি পালন করা হয়।
➡ হিন্দু মহিলারা কেন সিঁথিতে সিঁদুর পরেন?
২. ঘর বাড়ি বিশেষ করে রন্ধন সামগ্রী ও রান্না ঘর অপরিষ্কার রাখা উচিত নয়
মকর সংক্রান্তির দিন সাধারণত সূর্যদেবের পুজো করা হয়।তার আশীর্বাদে আমাদের সকল রকম রোগ ব্যাধি দূর হয়।তাই এই বিশেষ দিনটিতে সকলেই নিজের ঘর বাড়ি বিশেষ করে রান্নাঘর ও রন্ধন দ্রব্যাদি পরিষ্কার করে,যাতে সমস্ত রকম অপরিশুদ্ধতা দূর হয়।ওই একটি দিন আসলে নিজের ঘরবাড়ি ও আশপাশ পরিষ্কার করে সুস্থতা বজায় রাখার জন্যই এই নিয়মটি পালন করা হয় বলে মনে করা হয়।
৩. কাউকে খালি হাতে ফেরানো উচিত নয়
মকর সংক্রান্তি আনন্দ ও উৎসবের সাথে পালন করা হয়।তাই ওই দিন কোনো গরীব,দুঃখী বা ভিক্ষার্থী আসলে তাকে খালি হাতে ফেরাতে নেই।বিশেষ করে তাকে না খাইয়ে ফেরানো উচিত নয় বলে মনে করা হয়।এর ফলে গৃহে অন্নের অভাব হয় না এবং সুখ শান্তি বজায় থাকে বলে মনে করা হয়।
মকর সংক্রান্তির কিন্তু কিছু অবশ্য পালনীয় নিয়ম আছে যা কিন্তু বেশ মজাদার।আসুন জেনে নেওয়া যাক সেগুলি কি কি।
১. সূর্যদেবের পুজো
মকর সংক্রান্তির দিন সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে স্নান করে উঠোনে বা ঘরে আলপনা দিয়ে কিন্তু সূর্যদেবের পুজো করার নিয়ম প্রচলিত আছে।সূর্যদেবের আশীর্বাদে ঘরে রোগমুক্তি এবং ফসল ভালো হয়।তাই এই দিন সূর্যদেবের পুজো করার প্রচলন আছে।
২. মিষ্টি মুখ
মকর সংক্রান্তি বাঙালির প্রিয় একটি উৎসব হয়ে ওঠার কারণ ওই দিন ভোজন প্রিয় বাঙালির রসনার তৃপ্তি ঘটে।ওই দিন গুড়,চাল,দুধ ইত্যাদি সহকারে নানা ধরনের উপাদেয় মিষ্টি,পিঠা পায়েস ইত্যাদি বানানো হয় এবং খাওয়া হয়।কেউ বাড়িতে আসলে তাকে মিষ্টি মুখ করানো হয়।কথিত আছে এই বিশেষ দিনটিতে সূর্যদেব তার পুত্র শনি দেবতার প্রতি তার ক্ষোভ ভুলে যান এবং তার গৃহে সূর্যদেবের আগমন ঘটে।তাই এই দিনে সকলে মিলিত হয় এবং মিষ্টি মুখ করানোর মাধ্যমে মিষ্টি সম্পর্ক বজায় রাখার অঙ্গীকার করে।
৩. ঘুড়ি ওড়ানো
মকর সংক্রান্তির দিনের আরেকটি বিশেষ আকর্ষণ হলো ঘুড়ি উৎসব।এই দিন কিন্তু প্রত্যেকটি বাড়ির ছাদে ছোট বড় সকল সদস্য মিলে ঘুড়ি ওড়াতে দেখা যায়।এ পাড়া ও পাড়ার মধ্যে রীতিমত ঘুড়ি ওড়ানোর কম্পিটিশন চলে।আসলে সকাল সকাল এই ঘুড়ি ওড়ানোর মাধ্যমে সূর্যের আলো আমাদের শরীরে লাগানোর জন্যই কিন্তু এই রেওয়াজ প্রচলিত ছিল।সকালের সূর্যের আলো আমাদের শরীরের জন্য ভালো।তাই ছুটির আমেজে সূর্যের আলোয় শরীর ও মন দুইয়েরই সুস্থতা বজায় রাখার জন্যই এই ঘুড়ি ওড়ানোর প্রচলন শুরু হয়।
মকর সংক্রান্তি একটি আনন্দের উৎসব।তাই এই দিন বেশ করে মিষ্টি মুখ নিজে করুন এবং অপরকেও করান এবং ঘুড়ি উৎসবের আনন্দ নিন।শুধু মনে রাখবেন আপনার নিয়ম যেন অন্যের অসুবিধার কারণ না হয়।
আপনার মুখের রোমকূপ বা পোরসগুলি কি খুবই বড় বড়? আপনি টেকনিক্যালি এইসমস্ত পোর্স ছোট করতে…
পরিষ্কার নিটোল মুখ, অথচ থুঁতনিতে কালো কালো ব্ল্যাকহেডস! কেমন লাগে বলুন তো! সৌন্দর্যটাই নষ্ট হয়ে…
আগেকার দিনে বলা হত, লজ্জা নাকি নারীর ভূষণ। না, আজকের দিনে আমরা ওইসব কথা বলব…
বাড়ির দেয়ালে রকমারী রঙের ছ্বটা অনেকেরই সাধ ও শখের পরিচয় বহন করে। কিন্তু কিছু বছর…
ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা উচিত এই কথাটা আমরা সবাই জানি কম বেশি। কিন্তু কেন? কি উপকার…
প্রাচীনকালে যখন রূপচর্চার এত উপকরণ হাতের কাছে ছিল না, সেই সময় থেকেই রূপচর্চার অন্যতম উপকরণ…