এক সপ্তাহ পরেই মহালয়া। পুজোর বেশ কয়েকদিন আগে থেকেই ‘পুজো এসে গেছে’ ভাবনা মাথায় এলেও, পুজোর প্ল্যান শুরু হয়ে গেলেও মহালয়ার দিন থেকেই অফিশিয়ালি পুজোর দিন গোনার শুরু হয়।
তারপর কখন যেন চতুর্থী চলে গিয়ে পঞ্চমী, ষষ্ঠী এসে গিয়ে বিজয়া দশমীও এসে পড়ে, সে খেয়ালই আমরা রাখি না। মহালয়ার দিন থেকে পুজো গোনা শুরু হলেও এই দিনটার একটা আলাদা বাড়তি তাৎপর্য আছে। মহালয়াকে বলা হয় পিতৃপক্ষের শেষ ও দেবীপক্ষের সূচনা। এই দিনে আমরা পিতৃপুরুষের উদ্দেশ্যে তর্পণ করে থাকি, তাঁদের জলদান করি ও তাঁদের উদ্দেশ্যে শ্রদ্ধা জানিয়ে থাকি।
হিন্দু পুরাণে থেকে আমরা জানতে পারি যে জীবিত ব্যক্তির তিন পুরুষ পর্যন্ত পিতৃলোকে বাস করেন। এই পিতৃলোক স্বর্গ ও মর্ত্যের মধ্যবর্তী স্থানে অবস্থিত একটি স্থান যার অধিষ্ঠাতা দেবতা হলেন স্বয়ং যম। এই মৃত্যুর দেবতা যমই কার্যত মৃত ব্যক্তির আত্মাকে মর্ত্য বা পৃথিবী থেকে তাঁর মৃত্যুর পর পিতৃলোকে নিয়ে যান। আর তারপর বংশের পরবর্তী প্রজন্মের কারুর যখন মৃত্যু হয়, তখন সেই ব্যক্তি পিতৃলোক ছেড়ে স্বর্গে গিয়ে ঈশ্বর বা পরমাত্মায় মিশে যান।
অন্যান্য নানা হিন্দু শাস্ত্রগ্রন্থ অনুযায়ী পিতৃপক্ষের সূচনা তখনই হয় যখন সূর্য কন্যারাশিতে প্রবেশ করে। হিন্দুরা বিশ্বাস করে থাকেন, পিতৃপক্ষের এই সূচনায় তাঁদের পূর্বপুরুষরা পিতৃলোক ত্যাগ করে তাঁদের পরবর্তী প্রজন্মের গৃহে গিয়ে সেখানে অবস্থান করেন। পরে যখন সূর্য আবার যথাসময়ে বৃশ্চিকরাশিতে প্রবেশ করে তখন তাঁরা আবার পিতৃলোকে পুনর্গমন করেন। আর পূর্বপুরুষরা যেহেতু তাঁদের গৃহে অবস্থান করেন তাই তর্পণের উদ্দেশ্যে এইসময় তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন হিন্দুরা।
হিন্দুধর্মের বিশ্বাস অনুযায়ী কোনো শুভ কাজ করতে গেলেই প্রয়াত পূর্বপুরুষদের উদ্দেশ্যে তর্পণ করতে হয়, তাঁদের প্রণাম জানিয়ে কাজটি শুরু করতে হয়। রামচন্দ্র যখন লঙ্কা বিজয়ের আগে দেবীকে অকালবোধনে মর্ত্যে আনেন, তখনও তিনি পূর্বপুরুষদের উদ্দেশ্যে তর্পণ করেন। এই দিনে প্রয়াত আত্মারা মর্ত্যে আসেন। প্রয়াত আত্মাদের এই মর্ত্যে আগমনকে বলা হয় মহালয়, সেই থেকেই কিন্তু এসেছে মহালয়া কথাটি। মহালয়া আবার পিতৃপক্ষের শেষ দিনও বটে!
তর্পণ সম্পর্কে মহাভারতে আমরা একটি কাহিনী পাই। দাতা কর্ণের মৃত্যুর পর তাঁর আত্মা স্বর্গে গেলে তাঁকে সোনা ও মূল্যবান ধনরত্ন খাদ্য হিসেবে দেওয়া হয়। যথারীতি কর্ণ অবাক হয়ে দেবরাজ ইন্দ্রকে এর কারণ জিজ্ঞেস করেন। তখন দেবরাজ জানান যে কর্ণ তাঁর সারাজীবনে অনেক দানকর্ম করলেও প্রার্থিত ব্যক্তিকে শুধুমাত্র মূল্যবান ধনরত্নই দিয়ে গেছেন। কিন্তু তাঁর পিতৃপুরুষের উদ্দেশ্যে কখনও খাবার দেননি।
জীবদ্দশায় পিতৃপুরুষের প্রতি অবহেলা দেখানোর জন্য তাঁকে সোনা ও ধনরত্ন খাদ্য হসেবে দেওয়া হয়েছে। কর্ণ তখন তাঁর অনিচ্ছাকৃত ভুল স্বীকার করে নিলে তাঁকে ষোলো দিনের জন্য আবার পৃথিবীতে ফিরে গিয়ে পূর্বপুরুষদের উদ্দেশ্যে খাদ্য ও জল দান করার অনুমতি দেন ইন্দ্র। আর সেই থেকে এই ষোল দিনের পর্ব নাকি পিতৃপক্ষ নামে পরিচিত হয়। কোনো কোনো জায়গায় এখানে দেবরাজ ইন্দ্রের স্থানে মৃত্যু দেবতা যমকেও আমরা দেখি।
আর গরুড় পুরাণে আছে ‘পুত্র ছাড়া মুক্তি নেই’। তাই তর্পণের মাধ্যমে পুত্রের পিতা ও পূর্বপুরুষের উদ্দেশ্যে নিবেদন করা অন্ন ও জলই কার্যত পূর্বপুরুষের মুক্তির উপায় বা মাধ্যম হয়ে দাঁড়ায়। তাই হিন্দুধর্মে মহালয়ার দিনে পিতৃপুরুষের উদ্দেশ্যে যে তর্পণ করা হয়, তা এত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে।
আপনার মুখের রোমকূপ বা পোরসগুলি কি খুবই বড় বড়? আপনি টেকনিক্যালি এইসমস্ত পোর্স ছোট করতে…
পরিষ্কার নিটোল মুখ, অথচ থুঁতনিতে কালো কালো ব্ল্যাকহেডস! কেমন লাগে বলুন তো! সৌন্দর্যটাই নষ্ট হয়ে…
আগেকার দিনে বলা হত, লজ্জা নাকি নারীর ভূষণ। না, আজকের দিনে আমরা ওইসব কথা বলব…
বাড়ির দেয়ালে রকমারী রঙের ছ্বটা অনেকেরই সাধ ও শখের পরিচয় বহন করে। কিন্তু কিছু বছর…
ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা উচিত এই কথাটা আমরা সবাই জানি কম বেশি। কিন্তু কেন? কি উপকার…
প্রাচীনকালে যখন রূপচর্চার এত উপকরণ হাতের কাছে ছিল না, সেই সময় থেকেই রূপচর্চার অন্যতম উপকরণ…