ত্বকের সবচেয়ে মারাত্মক সমস্যাগুলোর মধ্যে মেচেতা অন্যতম। এটি রীতিমত দুশ্চিন্তার কারণও বটে, কেননা মেচেতার স্থায়ী কোনো চিকিৎসা নেই। এটি বারে বারে ফিরে আসার সম্ভাবনা থেকে যায়।
সিঙ্গাপুরে ন্যাশনাল স্কীন সেন্টার-এর চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ সি. এল. গুহ বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত এক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে এমন মতামতই ব্যক্ত করেন। এর চিকিৎসা সাময়িক, স্থায়ী নয়। বিভিন্ন লেজার ট্রিটমেন্টের মাধ্যমে মেচেতার সমস্যা সাময়িকভাবে রহিত করা যেতে পারে।
তবে খুব বেশি ভাবনারও কারণ নেই, যদি মেচেতায় আক্রান্ত হওয়ার শুরুর দিকে ত্বকের বিশেষ যত্ন নেওয়া শুরু হয়, তাহলে অনেক বড় সমস্যা থেকে রেহাই পাওয়া যেতে পারে।
এজন্য প্রথমেই খেয়াল রাখতে হবে যেন এর প্রভাব খুব বেশি না হয়। এছাড়া ত্বককে নিয়মিত পরিষ্কার রাখা খুবই জরুরী। নারীরা এ বিষয়ে যথেষ্ট সচেতন হলেও কিন্তু পুরুষরা খুব বেশি গুরুত্ব দেয় না। শুরুতেই চেহারায় ব্যবহার্য তোয়ালে ইত্যাদির পরিচ্ছন্নতার দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। ময়লা হাতে চেহারায় বারবার হাত দেওয়া যাবে না। অতিরিক্ত মেকআপ ব্যবহার এড়িয়ে চলা উচিত যদিও এটি কঠিন।মেকআপ তোলার পর মুখ অবশ্যই ভালো করে ফেসওয়াশ ব্যবহার করে পরিষ্কার করুন।
ত্বকে মেচেতা হওয়ার প্রধান কারণ হলো চেহারা অপরিষ্কার রাখা এবং সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি। সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি সরাসরি চেহারায় পড়লে এ ধরনের ত্বকজনিত সমস্যা হয়। এছাড়াও হরমোনের তারতম্য, থাইরয়েড সমস্যায়, অনিদ্রা, জন্মনিয়ন্ত্রণ পিল সেবন ইত্যাদি কারণে মেচেতার সমস্যা সৃষ্টি হয়।
প্রাথমিক পর্যায়ে চিকিৎসার মাধ্যমে মেচেতার সমস্যা একবারে দূর করা সম্ভব। নারী-পুরুষ সকলকেই এ বিষয়ে প্রথম থেকেই গুরুত্ব দেওয়া উচিত।
ঘৃতকুমারী বা অ্যালোভেরার শাঁস ত্বকে উৎপাদিত বিষাক্ত উপাদান নির্মূলে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। এটি মেচেতার কালো দাগ দূর করে।
অ্যালোভেরার একটি পাতার শাঁস, পরিমাণ মতো মধু।
ঘৃতকুমারীর একটি পাতার শাঁস, এর সাথে সামান্য মধু নিয়ে মিশ্রণ তৈরি করুন। নিয়মিত সপ্তাহে ৩/৪ বার ব্যবহার করুন (মুখে মেখে ১০-১৫ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন।
দারুচিনি ত্বকের জন্য উপকারী। কাঁচা দুধ ত্বকের দাগ দূর করতে সাহায্য করে।
পরিমাণ মতো দারুচিনি গুঁড়ো, সামান্য কাঁচা দুধ।
এক চা-চামচ দারুচিনি গুঁড়ো এবং ১ বা ১.৫ টেবিল চামচ কাঁচা দুধ মিশিয়ে মুখে ব্যবহার করুন। নিয়মিত এক সপ্তাহে অনেক পরিবর্তন লক্ষ্য করবেন।
কাঁচা ছোলার অনেক উপকার রয়েছে। মেচেতা দূর করতেও ছোলার ডাল উপকারী। ছোলার ডাল বেটে লাগিয়ে অথবা খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করুন।
১ কাপ ছোলা, ১ চা-চামচ মধু।
এক কাপ ছোলা সারারাত ভিজিয়ে রাখুন এবং এর সাথে এক চা-চামচ মধু মিশিয়ে ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করুন। মিশ্রণটি মুখে লাগিয়ে ১৫/২০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন।
মেচেতা দূর করতে টক দইয়ের জুড়ে নেই। এটি মুখের কালো দাগ দূর করা সহ ত্বকের উজ্জ্বলতাও বৃদ্ধি করে।
২/৩ চামচ টক দই, সামান্য মধু।
২/৩ চা-চামচ পরিমাণ টক দই নিযে আধা চা-চামচ মধু এর সাথে মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। পেস্টটি মুখে লাগিযে ১৫/২০ মিনিটি অপেক্ষা করতে হবে, এরপর ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে ৩-৪ বার ব্যবহারে আগের চেয়ে অনেক পরিবর্তন আসবে।
লেবুতে রয়েছে ভিটামিন ‘সি,’ এটি ত্বকের জন্য উপকারী। এটি ত্বকের কালো দাগ দূর করে। লেবুতে থাকা বিভিন্ন অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ভাঁজ ও ছোপ ছোপ দাগ নির্মূল করে ।
পরিমাণ মতো চিনি, লেবুর রস।
লেবুর রস আর চিনি একটি পাত্রে সংগ্রহ করুন। তুলার সাহায্যে ত্বকের কালো দাগগুলোর উপর প্রলেপ দিন। এরপর ১০/১৫ মিনিট রেখে, একটি টুকরো লেবু নিয়ে ত্বকে কিছু সময় ঘষুন যতক্ষণ না চিনি গলে যাচ্ছে। এতে দাগ দূর হয়ে যাবে।
তাহলে দেখলেন তো, মেচেতার দাগ সরানো কোনো ব্যাপারই না। শুধু ওপরের ঘরোয়া উপায়গুলো নিয়ম করে ব্যবহার করুন, উপকারের গ্যারান্টি আমাদের।
আপনার মুখের রোমকূপ বা পোরসগুলি কি খুবই বড় বড়? আপনি টেকনিক্যালি এইসমস্ত পোর্স ছোট করতে…
পরিষ্কার নিটোল মুখ, অথচ থুঁতনিতে কালো কালো ব্ল্যাকহেডস! কেমন লাগে বলুন তো! সৌন্দর্যটাই নষ্ট হয়ে…
আগেকার দিনে বলা হত, লজ্জা নাকি নারীর ভূষণ। না, আজকের দিনে আমরা ওইসব কথা বলব…
বাড়ির দেয়ালে রকমারী রঙের ছ্বটা অনেকেরই সাধ ও শখের পরিচয় বহন করে। কিন্তু কিছু বছর…
ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা উচিত এই কথাটা আমরা সবাই জানি কম বেশি। কিন্তু কেন? কি উপকার…
প্রাচীনকালে যখন রূপচর্চার এত উপকরণ হাতের কাছে ছিল না, সেই সময় থেকেই রূপচর্চার অন্যতম উপকরণ…