ছোট্ট সোনামণি খুব করে ধরেছে কেক খাবে বলে, অথচ বাড়িতে মাইক্রোওয়েভ ওভেন নেই। ওভেন ছাড়া কেক কল্পনা করা যায় না বললেই চলে। আপনি হয়তো ভাবছেন মাইক্রোওয়েভ না থাকলে বাড়িতে কেক বানানোর উপায় কি। ওভেন ছাড়া কেক বানানো কিন্তু খুব কঠিন কিছু না। শুধু বানানোর জিনিস আর পদ্ধতি জানা থাকলে প্রফেশনালদের মত কেক বানানো সম্ভব।
মাইক্রোওয়েভ ছাড়া কেক বানানো যায় ননস্টিক প্যান, বড় কোন হাঁড়ি বা প্রেসার কুকার দিয়ে। তার জন্য অবশ্যই হিটপ্রুফ কুকিং স্ট্যান্ড বা র্যাক থাকতে হবে। আপনি স্টিমের সাহায্যে বা বালু দিয়েও ওভেনের সমান তাপমাত্রা তৈরি করতে পারবেন। তবে প্রেসার কুকারে কেক বানানোর সময়ে অবশ্যই ঢাকনায় থাকা রাবারের আবরণ আর হুইসেলটা খুলে আলাদা করে ফেলবেন।
আজকের আয়োজনে থাকছে ৮টি হোমমেইড কেকের রেসিপি যা ওভেন ছাড়া সহজেই বানিয়ে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিতে পারবেন।
প্রথমে একটি চালুনিতে ময়দা, গুঁড়া দুধ, বেকিং পাউডার একসাথে মিশিয়ে চেলে নিন। এরপরে একটি বাটিতে চিনি আর তেল একসাথে ভালোভাবে মিশিয়ে তারপরে ডিম ভেঙে দিয়ে আবারও মিশিয়ে নিন। এখন এই লিকুইড মিশ্রণে ময়দা-দুধ-বেকিং পাউডারের মিশ্রণ একটু একটু করে মিশিয়ে নাড়তে থাকুন।
ময়দা মেশানো হয়ে গেলে ভ্যানিলা এসেন্স আর লেবুর রস মিশিয়ে দিন। সম্পূর্ণ মিশ্রণ বানানো হলে পাত্রে ঢালতে হবে। যে পাত্রে কেক বেক করবেন সেটাতে আগে তেল ব্রাশ করে নিন এবং পাত্রের তিন ভাগের দুই ভাগ অংশ পর্যন্ত মিশ্রণ ঢেলে দিন। এবারে কিসমিসগুলো শুকনা ময়দায় গড়িয়ে মিশ্রণে ছিটিয়ে দিন। তারপর বাকি মিশ্রণটা ঢেলে দিন।
বড় একটি হাঁড়ির ভিতরে হিটপ্রুফ স্ট্যান্ড রেখে অল্প আঁচে ১০ মিনিট গরম করে নিন। তারপরে মিশ্রণের পাত্রটা স্ট্যান্ডের উপর রেখে হাঁড়িটা ঢাকনা দিয়ে ঢেকে ফেলুন এবং ঐ আঁচেই ৩৫ মিনিট রেখে দিন। মাঝে একবার টুথপিক দিয়ে পরীক্ষা করে দেখতে পারেন।
টুথপিকে কিছু উঠে আসলে বুঝবেন কেক হয়নি এখনো, তখন হয়তো ৩৫ মিনিটের পরেও আরো ৫-৭ মিনিট রাখতে হতে পারে। কেক পুরোপুরি বেকড হলে পাত্র থেকে ঢেলে পছন্দমতো শেপে কেটে পরিবেশন করুন।
মালাই বানানোর জন্য প্রথমে আপনাকে কাঁচা দুধ ফুটিয়ে নিতে হবে৷ এরপর এর সাথে গুঁড়া দুধ আর কনডেন্সড মিল্ক দিয়ে জ্বাল দিতে থাকুন আর নাড়তে থাকুন। ভালোভাবে জ্বাল দেয়া হলে চুলার আঁচ কমিয়ে এলাচ গুঁড়া আর কেশর মিশিয়ে আরো কিছুক্ষণ জ্বাল দিয়ে নামিয়ে ফেলুন।
একটি বাটিতে ময়দা, বেকিং পাউডার, বেকিং সোডা, চিনি একসাথে ভালো করে মিশিয়ে দই, তেল, এবং অর্ধেকটা মালাই দিয়ে নেড়ে মিশ্রণ বানিয়ে ফেলুন। চুলায় একটি ডিপ ননস্টিক প্যান বসিয়ে গরম করে নিন। এরপর প্যানের ভিতর হিটপ্রুফ স্টিলের স্ট্যান্ড বসিয়ে দিন।
এবারে কেক বানানোর পাত্র স্ট্যান্ডে রেখে মিশ্রণ ঢেলে পাত্রটি প্যানের ঢাকনা দিয়ে ঢেকে দিন। কেক তৈরি হতে সর্বোচ্চ ২০ থেকে ২৫ মিনিট সময় লাগবে, না জমলে আরো কিছুক্ষণ চুলায় রাখবেন। কেক জমে গেলে ঠান্ডা করে প্লেটে বা চওড়া বাটিতে ঢেলে নিন। ঢালার পরে বাকি অর্ধেক মালাই আর বাদাম গুঁড়া উপরে ছিটিয়ে দিলেই তৈরি সুস্বাদু মালাই কেক।
প্রথমে বিস্কুটগুলো মিক্সারে ভালো করে পিষে গুঁড়া করে নিন। যদি বিস্কুটে ক্রিম থাকে তাহলে আলাদা করে নিবেন। এরপরে বিস্কুট গুঁড়ার সাথে দুধ আর ইনো ভালো করে মিশিয়ে নিন। একটি অ্যালুমিনিয়ামের বাটিতে তেল ব্রাশ করে তার উপর ব্যাটার পেপার বিছিয়ে নিন, এখানেই মিশ্রণটা ঢালবেন।
চুলায় একটি বড় হাঁড়িতে পানি গরম করে নিন। এবারে মাঝে স্ট্যান্ড বসিয়ে অ্যালুমিনিয়ামের বাটিটা রেখে বড় প্লেট দিয়ে ঢেকে দিন। অল্প আঁচে ১৫ মিনিট রেখে দিন। ১৫ মিনিট পরে দেখুন কেকটা জমেছে কিনা। জমে গেলে সাবধানে বাটি নামিয়ে কেকটা প্লেটে ঢেলে ফেলুন এবং পছন্দমতো সাজিয়ে নিন।
চলুন জেনে নেই কিভাবে প্রেসার কুকারে মজাদার ফ্রুট কেক তৈরি করা যায়। দুধ জ্বাল দিয়ে গরম করে এর সাথে ময়দা, চিনি, গলানো মাখন, ডিম ভালো করে মিশাতে হবে। একটু পরে কাজুবাদাম, পেস্তাবাদাম, আমন্ড, কিসমিস, ভ্যানিলা এসেন্স আর বেকিং পাউডার দিয়ে ঘন মিশ্রণ বানাতে হবে।
প্রেসার কুকারে শুকনা ঝরঝরে বালু ঢেলে কুকারের ঢাকনা দিয়ে ঢেকে ১৫ মিনিট গরম করে নিন। প্রি-হিট করার পরে বালু না ফেলে স্ট্যান্ডটা মাঝখানে বসাবেন। এবারে একটি অ্যালুমিনিয়ামের বাটিতে ভেজিটেবল অয়েল ব্রাশ করে ব্যাটার পেপার বিছিয়ে দিন। ব্যাটার পেপার না থাকলে খবরের কাগজও দিতে পারেন।
এরপরে মিশ্রণটি ঢেলে বাটিটা স্ট্যান্ডের উপর রেখে কুকারের ঢাকনা দিয়ে ঢেকে ৩০ মিনিট রেখে দিন। যদি কেক না জমে তাহলে আরো ১৫ মিনিট কেক চুলায় রাখতে হবে। পরীক্ষা করে যখন দেখবেন কেক তৈরি হয়ে গেছে তখন বের করে নিন। যেকোন উৎসবে এভাবে সহজে ফ্রুট কেক বানিয়ে খেতে পারবেন।
একটি বাটিতে কনডেন্সড মিল্ক, গরম দুধ, তেল, ভ্যানিলা এসেন্স, আর ভিনেগার মিশিয়ে নিন। এরপরে এতে ময়দা, কোকো পাউডার, বেকিং সোডা, বেকিং পাউডার, এবং লবণ দিয়ে ভালো করে নেড়ে নিন। নাড়ানোর সময়ে মিশ্রণের উপর-নিচ সমানভাবে মিশিয়ে নাড়বেন।
দরকার মনে হলে আরেকটু কাঁচা দুধ দিতে পারেন৷ মিশ্রণটা যাতে বেশি আঠালো বা রাবারের মত বা পাতলা না হয়ে যায় সেদিকে খেয়াল রাখবেন। প্রেসার কুকারে বালু বা লবণ ঢেলে উপরে স্ট্যান্ড বসিয়ে ঢাকনা দিয়ে ঢেকে ৫ থেকে ১০ মিনিট প্রি-হিট করে নিন।
এবারে কেক বানানোর মোল্ডে মিশ্রণটা ঢেলে স্ট্যান্ডের উপর বসিয়ে ঢেকে দিন এবং ৪০ মিনিট অপেক্ষা করুন। চুলার অাঁচটা অবশ্যই অল্প রাখবেন। মাঝে একবার ঢাকনা তুলে কেকের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করুন। কেক হয়ে আসলে চুলা বন্ধ করুন, কেক ঠান্ডা হতে দিন, এবং বাটি থেকে বের করে পরিবেশন করুন।
প্রথমে একটি বাটিতে ময়দা আর চিনি মিশিয়ে নিন, এরপর এতে ডিমগুলো দিয়ে তারপর মাখন আর গরম দুধ মিশিয়ে নিন। মিশ্রণে মাখন আর দুধ মেশানোর সময়ে প্রথমে একটু মাখন আবার একটু দুধ আবার একটু মাখন এভাবে করে মেশাবেন। এবার এই মিশ্রণটি ছয়টি ছোট ছোট কাপে ঢেলে নিন। প্রতি কাপে এক একটি ফুড কালার মিশিয়ে নাড়তে থাকুন যতক্ষণ না পর্যন্ত মিশ্রণ রঙিন হয়।
চুলায় মাঝারি আঁচে একটি ননস্টিক প্যান বসান। এখন প্রথমে বেগুনি ক্রেপ ব্যাটার ঢেলে প্যানটা একটু গড়িয়ে নিন যাতে ব্যাটারটা পুরো প্যানজুড়ে ছড়িয়ে যায়। ব্যাটারে যখন ছোট ছোট বুদবুদি উঠা শুরু করবে তখন এটাকে উল্টে দিন এবং কিছুক্ষণ পরে নামিয়ে ফেলুন। এভাবে প্রতিটি রঙিন ব্যাটার রান্না করে নিন।
ছয় রঙের ছয়টি ক্রেপ তৈরি হয়ে গেলে সাজিয়ে নিতে হবে রঙধনুর প্যাটার্নে। অর্থাৎ প্রথমে বেগুনি ক্রেপ প্লেটে বিছিয়ে তার উপর এক পরত হুইপড ক্রিম দিন। তারপরে নীল ক্রেপ বিছিয়ে আবার ক্রিম দিন, এভাবে করে সবুজ, হলুদ, কমলা, লাল ক্রেপ সাজিয়ে নিন। ছয়টা ক্রেপ সাজানো হলে বাকি হুইপড ক্রিম দিয়ে পুরো ডেকোরেশনটা ঢেকে দিন। পছন্দসই শেপে কেটে পরিবেশন করুন। বাইরে সাদা দেখালেও ভিতরটা রঙিন দেখলে সবাই চমকে যাবে।
বড় একটি পাত্রে টকদই, চিনি আর ভ্যানিলার নির্যাস মিশিয়ে নাড়তে থাকুন যতক্ষণ না পর্যন্ত চিনিটা পুরোপুরি গলে যাচ্ছে। এরপরে তেল মিশিয়ে আবারও নাড়ুন যাতে তেলটা মিশ্রণের সাথে ভালোভাবে মিশে যায়। এবার এতে কোকো পাউডার, বেকিং পাউডার, বেকিং সোডা, লবণ দিয়ে ভালোভাবে মিশিয়ে নিন।
লাগলে দুধ আরো দিতে পারেন, তবে মিশ্রণটা যেন ঘন মসৃণ হয় সেদিকে খেয়াল রাখবেন। গোলাকার একটি মোল্ডে গলানো মাখন ব্রাশ করে ব্যাটার পেপার বিছিয়ে দিন। এবারে মোল্ডে মিশ্রণটা ঢেলে সমান করে দিন। মোল্ডের গায়ে হালকা কয়েকটা আঘাত করুন যাতে মিশ্রণের ভিতরে বাতাস থাকলে বেরিয়ে যায়।
ফয়েল পেপার বা বড় কোন প্লেট দিয়ে মোল্ডটা এমনভাবে ঢাকুন যাতে ভিতরে পানি না ঢুকতে পারে। প্রেসার কুকারের অর্ধেক পর্যন্ত পানি দিয়ে ভরে একটি স্ট্যান্ড বসান এবং মোল্ডটা স্ট্যান্ডের উপরে রাখুন। সবশেষে কুকারটা ঢাকনা দিয়ে ঢেকে মৃদু আঁচে ৭০ মিনিট রেখে দিন।
এর মাঝে এক ফাঁকে ফ্রস্টিংয়ের সব উপকরণ মিশিয়ে ফ্রস্টিংটা বানিয়ে রাখবেন। মাখন, কোকো পাউডার আর ক্রিম একসাথে বিট করতে থাকবেন, ফাঁকে ফাঁকে আইসিং সুগার আর ভ্যানিলা একটু একটু করে দিতে থাকবেন। ঘন মিশ্রণ ফ্রিজে ৩০ মিনিট রেখে দিলেই ঠান্ডা এবং আঠালো ফ্রস্টিং তৈরি হয়ে যাবে।
কেক তৈরি হয়ে গেলে প্রথমে ঠান্ডা করে নিবেন এবং পরে ফ্রস্টিং কেকের উপরে ছড়িয়ে দিবেন। ফ্রস্টিং বানানোর সাথে সাথেই ব্যবহার করবেন নাহলে গলে যাবে। ব্যস, তৈরি হয়ে গেল আপনার সুস্বাদু চকলেট স্মুদ কেক।
আপনার মুখের রোমকূপ বা পোরসগুলি কি খুবই বড় বড়? আপনি টেকনিক্যালি এইসমস্ত পোর্স ছোট করতে…
পরিষ্কার নিটোল মুখ, অথচ থুঁতনিতে কালো কালো ব্ল্যাকহেডস! কেমন লাগে বলুন তো! সৌন্দর্যটাই নষ্ট হয়ে…
আগেকার দিনে বলা হত, লজ্জা নাকি নারীর ভূষণ। না, আজকের দিনে আমরা ওইসব কথা বলব…
বাড়ির দেয়ালে রকমারী রঙের ছ্বটা অনেকেরই সাধ ও শখের পরিচয় বহন করে। কিন্তু কিছু বছর…
ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা উচিত এই কথাটা আমরা সবাই জানি কম বেশি। কিন্তু কেন? কি উপকার…
প্রাচীনকালে যখন রূপচর্চার এত উপকরণ হাতের কাছে ছিল না, সেই সময় থেকেই রূপচর্চার অন্যতম উপকরণ…