নামে ঢ্যাঁড়শ হলেও কাজে কিন্তু সে একদম পাকা খেলোয়াড়। যারা ভাবেন ঢ্যাঁড়শের তেমন কোন গুণ হয়তো নেই তারা মারাত্মক ভুল করছেন। অনেকে আবার ঢ্যাঁড়শ খুব একটা খেতে পছন্দ করেন না। কিন্তু শরীর সুস্থ রাখতে একে পাতে রাখুন। কারণ এই সবজীর রয়েছে দারুণ কিছু গুণ। দেখুন।
সুগারের সমস্যায় ঢ্যাঁড়শ বেশ উপকারী একটি সবজী। এটি রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রনে রাখে। এতে রয়েছে উচ্চ মাত্রায় ফাইবার যা অনেকক্ষণ পেট ভর্তি রাখে। যেটা কিনা সুগারের ক্ষেত্রে বিশেষ ভাবে দরকার হয়। বিশেষত ঢ্যাঁড়শের দানাগুলি খুব উপকারী। ওগুলো বাদ দিয়ে দেবেন না।
ঢ্যাঁড়শ ভেজানো জলও খেতে পারেন প্রতিদিন সকালে। দারুণ ফল পাবেন। এক্ষেত্রে আগেরদিন রাতে এটি করে ফেলতে পারেন। ৩ – ৪টি ঢ্যাঁড়শ নিন। ওপরের এবং নীচের অংশ বাদ দিয়ে ঢ্যাঁড়শ গুলো চিড়ে নিন বা লম্বা করে কেটেও নিতে পারেন। এবার এক গ্লাস জলে ওগুলো ভিজিয়ে রাখুন সারারাত। সকালে খেয়ে নিন।
ওজনকে কাবু করতে চান? তাহলে ডায়েটে অবশ্যই ঢ্যাঁড়শ রাখুন। এতে থাকা ফাইবার পেট ভর্তির অনুভূতি আনে। ঢ্যাঁড়শ খেলে অনেকক্ষণ পর্যন্ত খিদে পায় না। যেটা ওজন নিয়ন্ত্রনে দরকার।
ঢ্যাঁড়শে রয়েছে ভিটামিন সি,এ, বি-৯ । ভিটামিন সি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ। শরীরের ইমিউনিটি সিস্টেমকে শক্তিশালী করে তোলে ঢ্যাঁড়শ। আবার এতে থাকা কার্বোহাইড্রেট এনার্জি ধরে রাখতেও সাহায্য করে। এছাড়াও রয়েছে ক্যালসিয়াম যা হাড় ভালো ও মুজবুত রাখতে সাহায্য করে। সাথে স্কিন সুন্দর রাখতেও কিন্তু ঢ্যাঁড়শ সমান উপকারী।
ঢ্যাঁড়শে রয়েছে প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। যেটি ক্যান্সার থেকে আপনাকে দূরে রাখবে। মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করে। শরীরকে সতেজ রাখতে সাহায্য করে। এতে থাকা ম্যাগনেসিয়াম, পটাশিয়াম নার্ভাস সিস্টেমকে ভালো রাখে। ভালো ঘুমোতে সাহায্য করে। আবার হাড়ের সুস্থতার জন্যও এগুলি দরকার। তবে শুধু শরীর নয় অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থেকে স্কিনও উপকার পায়। স্কিনের এজিং প্রসেস অনেক ধীর গতিতে হয়। মানে আপনার স্কিন থাকবে সুন্দর তরতাজা।
রক্তাল্পতার সমস্যায় ভুগছেন? অ্যানিমিয়ার সমস্যায় অনেকটা আপনাকে সাহায্য করবে ঢ্যাঁড়শ। কারণ এতে রয়েছে ভিটামিন কে, ফলিক অ্যাসিড। যা আপনার শরীরের এই ঘাটতি অনেকটা পূরণ করবে। এইজন্য গর্ভাবস্থায় ঢ্যাঁড়শ খেতে বলা হয়।
এটি গর্ভবতী মহিলাদের জন্য খুব উপকারী একটি সবজী। এই সবজী গর্ভপাতের সম্ভবনা থেকে অনেক দূরে রাখে। এতে থাকা ভিটামিন সি শিশুর সঠিক বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তোলে। ফলিক অ্যাসিড শিশুদের জন্মগত বিভিন্ন সমস্যার হাত থেকে অনেকটা দূরে রাখে। গর্ভাবস্থায় কোষ্ঠকাঠিন্যর থেকে দূরে রাখে ঢ্যাঁড়শে থাকা আঁশ। এছাড়াও ভ্রূণের বৃদ্ধির উন্নতি ঘটায়। ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমায়।
খুশকির সমস্যায় ভুগছেন? কিছুতেই যাচ্ছে না? তাহলে কাজে লাগবে ঢ্যাঁড়শ। ঢ্যাঁড়শ সেদ্ধ করা জলে চুল ধুতে পারেন। কিংবা সময় অল্প থাকলে ঢ্যাঁড়শ কেটে দেবার পর তার ওপরের ও নীচের অংশ ফেলে দেবেন না। ওগুলো জলে বেশ অনেকক্ষণ ভিজিয়ে রাখুন। সারারাত রাখতে পারলে ভালো। এরপর এই জলে অল্প পাতিলেবুর রস মিশিয়ে স্নানের পর চুল এই জলে ধুয়ে ফেলুন। উপকার পাবেন। এটি চুলকে খুব ভালো কন্ডিশনিংও করবে। চুলকে প্রয়োজনীয় ময়েশ্চার দেয়। রুক্ষ হতে দেয় না।
হার্টকে ভালো রাখতে ঢ্যাঁড়শকে বন্ধু করে নিন। কারণ ঢ্যাঁড়শে থাকা পেকটিন শরীরে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে দিয়ে হার্টকে ভালো রাখে।
আপনার পেটের সমস্যা থাকলে খেতেই হবে ঢ্যাঁড়শ। কারণ এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আঁশ। যেটার ফলে পেট থাকবে একদম পরিষ্কার। খাবারও হজমও হবে ঠিকঠাক। তাই হজমের গ্যাসের সমস্যায় ভুগলে কিংবা কোষ্ঠকাঠিন্যর সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে অবশ্যই ঢ্যাঁড়শ খান।
আজকাল সারাক্ষণ কম্পিউটার বা ফোনে সময় কাটানোর ফলে চোখের ওপর খুব চাপ পড়ে। কিন্তু চোখকে ভালো রাখা তো ভীষণ জরুরী। তাই ঢ্যাঁড়শ সেদ্ধ খান। এতে থাকা ভিটামিন আপনার চোখকে ভালো রাখবে। বিশেষ করে এতে থাকা ভিটামিন এ দৃষ্টিশক্তি উন্নত করবে।
তাহলে দেখলেন তো ঢ্যাঁড়শের খাদ্যগুণ কতটা? সুস্থ ও সুন্দর থাকতে পরম বন্ধু এই ঢ্যাঁড়শ। তাই রোজ খেতে ভালো না লাগলেও, সপ্তাহে অন্তত তিনদিন পাতে ঢ্যাঁড়শ রাখুন। তবে খুব বেশি তেল ঝাল দিয়ে উচ্চ তাপমাত্রায় রান্না করবেন না। এতে খাদ্যগুণ কিছুটা কমে যায়। অল্প আঁচে ঢ্যাঁড়শ রান্না করবেন। অল্প আঁচে ঢ্যাঁড়শ সেদ্ধ করে খেতে পারলে খুব ভালো। কাটার ক্ষেত্রেও আগে ধুয়ে নিয়ে তারপর কাটবেন। কাটার পর ধুলে গুণ কিছুটা বেড়িয়ে যায়।
আপনার মুখের রোমকূপ বা পোরসগুলি কি খুবই বড় বড়? আপনি টেকনিক্যালি এইসমস্ত পোর্স ছোট করতে…
পরিষ্কার নিটোল মুখ, অথচ থুঁতনিতে কালো কালো ব্ল্যাকহেডস! কেমন লাগে বলুন তো! সৌন্দর্যটাই নষ্ট হয়ে…
আগেকার দিনে বলা হত, লজ্জা নাকি নারীর ভূষণ। না, আজকের দিনে আমরা ওইসব কথা বলব…
বাড়ির দেয়ালে রকমারী রঙের ছ্বটা অনেকেরই সাধ ও শখের পরিচয় বহন করে। কিন্তু কিছু বছর…
ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা উচিত এই কথাটা আমরা সবাই জানি কম বেশি। কিন্তু কেন? কি উপকার…
প্রাচীনকালে যখন রূপচর্চার এত উপকরণ হাতের কাছে ছিল না, সেই সময় থেকেই রূপচর্চার অন্যতম উপকরণ…