জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষা মাধ্যমিক পরীক্ষা। একটা হালকা ভয় ভয় ভাব, টেনশন এই সব তো কাজ করেই থাকে। সঙ্গে থাকে একটা আলাদা উত্তেজনাও, কি বল! আর এই সব নিয়েই আমাদের প্রথম সম্মুখীন হতে হয় যে বিষয়ের সেটা হল বাংলা। আর বাংলা তো আমাদের মাতৃভাষাও বটে। তাই বাংলায় কিন্তু সুন্দর নম্বর না তুললেই নয়। তাছাড়া যেহেতু বাংলায় ভাষার প্রয়োগ, লেখার দক্ষতা এই সব ব্যাপার কাজ করে, তাই নম্বর তোলার ক্ষেত্রে একটু সমস্যা হয়ই। তাই এসো, আজ তোমাদের বলে দিই কীভাবে তোমরা বাংলাতেও খুব সুন্দর আর বেশী নম্বর তুলতে পারবে।
সঠিকভাবে প্রস্তুতির জন্য তোমায় প্রথমে জানতে হবে কোন ক্ষেত্র থেকে কত নম্বরের প্রশ্নের উত্তর তোমায় করতে হবে। মোট নম্বর তো ৯০। তার মধ্যে গল্প থেকে আসবে ১৫ নম্বর, কবিতা থেকে আসবে ১৫ নম্বর, প্রবন্ধ থেকে আসবে ১০ নম্বর, নাটক থেকে আসবে ৫ নম্বর, পূর্ণ সহায়ক গ্রন্থ থেকে আসবে ১০ নম্বর, ব্যাকরণ থেকে আসবে ১৫ নম্বর আর রচনা এবং প্রবন্ধ রচনা, অনুবাদ বা সংলাপ রচনার ক্ষেত্রে থাকবে মোট ২০ নম্বর, যার মধ্যে প্রবন্ধে থাকবে ১০ নম্বর।
➡ মাধ্যমিকে অঙ্কে ভালো ফলাফলের জন্য টিপস
পরীক্ষার হলে বসে অনেক লেখার সময় তোমার নেই। অনেকে যেটা করবে সেটা হল, প্রথম দিকের উত্তরগুলো ধরে ধরে অনেক সময় নিয়ে লিখে তারপর অন্য প্রশ্নগুলো কোনোরকমে লিখে ছেড়ে দিতে হয়, সময়ের অভাবে। কিন্তু পরীক্ষায় ভালো নম্বরের জন্য সব প্রশ্নের উত্তরই ধরে ধরে লেখা উচিত। তাই আগে জেনে নাও কত নম্বরের জন্য কত শব্দ বরাদ্দ। ১০ নম্বরের জন্য বরাদ্দ ৪০০ শব্দ, ৫ নম্বরের জন্য ১৫০ শব্দ, ৩ নম্বরের জন্য ৬০ শব্দ আর ১ নম্বরের জন্য ২০ টি শব্দ। তাহলে তোমার উত্তর মোটামুটি এই শব্দ সংখ্যা মেনেই করতে হবে। তাই বেশী লেখার জায়গা নেই। কম কথায় গুছিয়ে লিখতে হবে।
আগেই বলেছি বাংলা একটা ভাষার পরীক্ষা। তাই এখানে তোমাকে ভালো নম্বরের জন্য ভাষার প্রতি, তার ব্যবহারের প্রতি যথেষ্ট সচেতন হতে হবে। খুব সুন্দর করে লিখতে জানতে হবে। সুন্দর সুন্দর শব্দ জেনে সেগুলো সুন্দর ভাবে প্রয়োগ করতে জানতে হবে। তার জন্য তোমাকে নিয়মিত কিছু না কিছু একটা লেখার প্রক্রিয়ার মধ্যে থাকতে হবে। যেকোনো বিষয় নিয়ে ভেবে অল্প অল্প করে লিখো। খুব বেশী সময় না, দিনে আধ ঘন্টা দাও। দেখবে পরীক্ষায় এর ফল পাবেই।
সব বিষয়ের ক্ষেত্রেই ঠিক সময়ের মধ্যে লেখা শেষ করতেই হয়, তাই অভ্যেসটা সব বিষয়ের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। কিন্তু বাংলার ক্ষেত্রে ব্যাপারটা একটু হলেও আলাদা। বাংলায় অন্য বিষয়ের মতো তথ্য ভিত্তিক প্রশ্ন ছাড়াও খানিক লিখতে হয় নিজের ভাষায় গুছিয়ে। সেখানে খানিক ভাবনা-চিন্তার পরিসর থাকে। তাই তোমাকে বাড়িতে ভেবে ভেবে লিখে ঠিক সময়ের মধ্যে উত্তর শেষ করার অভ্যেস করতে হবে। সে জন্যই আগেই বলেছি এর জন্য একটাই উপায়। কিছু না কিছু ভেবে ভেবে লেখা। এতে সময়ের জ্ঞানও হবে, আবার ভেবে লেখার ক্ষমতাও বাড়বে।
পরীক্ষার হলে কোন প্রশ্নের উত্তর আগে করবে সেই সিদ্ধান্ত নেওয়া কিন্তু খুব জরুরী। এটা নম্বরের ওপর অনেকসময় প্রভাব ফেলে। দেখো, আগেই রচনা বা অনুবাদ এইসব করতে যেও না। অনেক সময় লাগে এখানে। আগে বরং সংক্ষিপ্ত প্রশ্নের উত্তর দাও। বাংলাতেও এখন ১ নম্বরের প্রশ্ন থাকে, তাও ৪০ টা মতো। তাই আগে এই ৪০ নম্বরের উত্তর করে ফেলো। তারপর বরং ব্যাকরণের ক্ষেত্রে যাও। ব্যাকরণ আগে করলে ভালো কারণ এখানে সূত্র বা নিয়ম মনে রেখে করতে হয়। তাই মাথা ঠান্ডা রেখে সময় নিয়ে করা উচিত। আর ঠিক করলেই পুরো নম্বর। তাই ব্যাকরণ ভালো করে উত্তর দিয়ে ফেলো। এবার সবার শেষে রচনা বা বড় প্রশ্নের উত্তর দাও যেখানে একটু ভেবে-চিন্তে লিখতে হবে।
তোমরা ব্যাকরণের ওপর আলাদা জোড় দাও। এই অংশটা কিন্তু সম্পূর্ণ অনুশীলন নির্ভর। তাই যত অভ্যেস করবে তত ভালো হবে। আর অভ্যেসের ক্ষেত্রে একটা বড় জায়গা হল টেস্ট পেপার সল্ভ করা। রোজ নিয়ম করে টেস্ট পেপার অভ্যাস করো। আর কোনোভাবেই ব্যাকরণ মুখস্থ করা যাবে না, ওটি খুব খারাপ। বুঝে ব্যাকরণ করো।
অনেকসময় আমাদের গুলিয়ে যায় কবিতার সঙ্গে কবির নাম, বা নাটকের নাম বা প্রবন্ধের নাম। এই জন্য তোমরা একটা জায়গায় কবিতার তালিকা বানিয়ে তার পাশে কবির নাম লেখো। এভাবে নাটকের পাশে নাটকের লেখকের নাম আর প্রবন্ধের পাশে প্রবন্ধের লেখকের নাম লিখে ফেলো। তারপর সেটা নিয়ম করে দেখতে থাকো। এইটা করলে আর গুলিয়ে যাবে না এই নামগুলো।
অন্য সব বিষয়ের ক্ষেত্রেই সাজেশন বাদ দেওয়াই উচিত। সাজেশন ব্যাপারটা কোনোভাবেই একটা বিষয়কে ভেতর থেকে ভালো ভাবে আয়ত্ত করতে দেয় না। ওপর ওপর একটা ধারণা তৈরি করে যা খুব একটা ভালো নয় পরীক্ষার জন্য। তাই সাজেশন বাদ দাও। গোটা বই ভালো করে পড়। খুব খুঁটিয়ে পড়। শুধু আগের বারের প্রশ্নগুলো সম্পূর্ণ না ছেড়ে হাল্কা করে দেখে নাও। এর ফলে তোমার ব্যাপারটা সম্বন্ধে একটা সম্পূর্ণ ধারণা হবে যা পরীক্ষায় ভালো ফল দেবে।
আমি বলব, অন্য বিষয়ের ক্ষেত্রে সহায়ক বই দেখলেও বাংলার ক্ষেত্রে দেখো না। অন্য বইতে উত্তর যেভাবে লেখা আছে সেটা আয়ত্ত করে পরীক্ষার হলে লিখে ফেলার কোনো মানে হয় না। সেই উত্তর তো অন্য অনেকেই লিখবে। তাহলে তোমার উত্তর আলাদা কোথায়? আলাদা উত্তরের জন্য তোমায় নিজের উত্তর নিজেকেই তৈরি করতে হবে। নিজে ভেবে লেখো, তারপর সেটা শিক্ষককে দেখাও। দেখবে নিজে লিখলে একটা আত্মবিশ্বাস আসবে। আর পরীক্ষার হলে যদি প্রশ্ন কমন নাও আসে, তাহলেও কিন্তু তোমার চিন্তার কোনো কারণ নেই। তোমার লেখার ক্ষমতা তোমায় সাহায্য করবে। তাই উত্তর মুখস্থ করবে না।
অনেকে ভাবে যে রচনা আবার আগে থেকে কী দেখব! পরীক্ষার হলে গিয়ে লিখে দেওয়াই যাবে। কিন্তু এখানেই ভুল। বাড়িতে রচনা লেখা অভ্যেস কর। টেস্ট পেপার দেখে রচনা লেখো আর তা লেখো ঠিক সময় ধরে। টেস্ট পেপার সল্ভ করতে করতেই তুমি বুঝতে পারবে কেমন ধরণের রচনা আসে। আর কী কী সাম্প্রতিক বড় ঘটনা ঘটেছে, সেগুলোর যাবতীয় তথ্য নিজের কাছে তৈরি কর। এখান থেকে রচনা আসলে যাতে তুমি লিখতে পারো।
বাংলা প্রথম পরীক্ষা। তাই যাবতীয় চাপ নিয়ে প্রথম দিনের এই পরীক্ষা দিতে হয়। তাই এই পরীক্ষা ভালো করে দেওয়ার জন্য চাপ কাটাতে হবে। একটু গল্পের বই পড়, খানিক গান শোন। দেখবে বেশ ভালো লাগবে। নিজের ওপর কনফিডেন্স রাখো।
এইবার আশা করি তোমাদের বাংলা পরীক্ষা খুব ভালো হবে। তোমাদের জন্য সাফল্য কামনা করি।
আপনার মুখের রোমকূপ বা পোরসগুলি কি খুবই বড় বড়? আপনি টেকনিক্যালি এইসমস্ত পোর্স ছোট করতে…
পরিষ্কার নিটোল মুখ, অথচ থুঁতনিতে কালো কালো ব্ল্যাকহেডস! কেমন লাগে বলুন তো! সৌন্দর্যটাই নষ্ট হয়ে…
আগেকার দিনে বলা হত, লজ্জা নাকি নারীর ভূষণ। না, আজকের দিনে আমরা ওইসব কথা বলব…
বাড়ির দেয়ালে রকমারী রঙের ছ্বটা অনেকেরই সাধ ও শখের পরিচয় বহন করে। কিন্তু কিছু বছর…
ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা উচিত এই কথাটা আমরা সবাই জানি কম বেশি। কিন্তু কেন? কি উপকার…
প্রাচীনকালে যখন রূপচর্চার এত উপকরণ হাতের কাছে ছিল না, সেই সময় থেকেই রূপচর্চার অন্যতম উপকরণ…