আর কয়েক মাস পরেই শীতকাল। আর শীতকাল মানেই ঠোঁট ফাটা, ঠোঁট থেকে রক্ত বেরোনো। এখনই আমাদের অনেকের ঠোঁট টানছে। আবার অনেক সময়ে কিন্তু অন্য অনেক কারণেও ঠোঁট ফেটে রক্ত পড়ে। আপনি যতই ভালো ঠোঁটের জন্য প্রোডাক্ট বেছে নিন না কেন, কিছু জিনিস না মানলে কিন্তু ঠোঁট ফাটা বা রক্ত পড়া বন্ধ হবে না।
শীত ছাড়াও কিন্তু আরও কিছু কারণে ঠোঁট ফাটে। আর বেশি ঠোঁট ফাটা মানেই রক্ত পড়া। ঠোঁট ফাটার অন্যতম বড় কারণ বারবার ঠোঁট চাটা। অনেকেই আছেন যারা জিভ দিয়ে বারবার ঠোঁট চাটেন। এতে ঠোঁট পাতলা হয়ে যায়। আর পাতলা ঠোঁট সহজেই ফেটে যায়। আরেকটা কারণ হল ডিহাইড্রেশন। আমাদের শরীরে জল কমে গেলে ঠোঁট তাড়াতাড়ি শুকিয়ে যায়। আমাদের শরীরের অনেক অং-প্রত্যঙ্গের মধ্যে ঠোঁট তো অন্যতম জলীয় অঙ্গ।
শরীরে জলের পরিমাণ কমে গেলে ঠোঁট শুকিয়ে তাই ফেটে যায়। আবার আমরা অনেকেই মুখ দিয়ে শ্বাস নিই। রাতে শোয়ার সময়ে এটা অনেকে বেশি করেন। মুখ দিয়ে শ্বাস নেওয়ার সময়ে হাওয়া বারবার মুখে ঢোকা আর বেরোবার সময়ে ঠোঁটের আর্দ্রতা নিয়ে যায়। ফলে ঠোঁট ফাটা আর রক্ত পড়ার সমস্যায় ভুগি আমরা। এছাড়াও কিছু কিছু প্রোডাক্ট যা আমরা মুখে ব্যবহার করি তার থেকেও ঠোঁট শুকিয়ে যেতে পারে। তাই এই কারণগুলির দিকে নজর রাখতে হবে অবশ্যই।
বিশেষ কিছু ট্রিটমেন্ট না করেও কিন্তু ঠোঁট ফাটার সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যেতে পারে।
একটা ছোট ব্যায়াম বলি আগে। আপনার দুটো ঠোঁট মুড়িয়ে দাঁতের কাছে নিয়ে গিয়ে দাঁতের ওপরে রাখুন। এবার ওই অবস্থায় ঠোঁট এ পাশ থেকে আরেক পাশ অবধি ঘোরান। একটু জোর দিয়ে ঘোরাবেন। এমন জোর দিয়েই ঘোরাবেন যেন আপনার সামান্য অসুবিধে হয়, কিন্তু খুব বেশি না ব্যথা লাগে। এভাবে এক মিনিট মতো করুন। আসলে এভাবে আপনি আপনার দাঁতের উপরের জলীয় অংশ আপনার ঠোঁটকে দিলেন। ঠোঁট ওই জলীয় অংশ শুষে নিল। আর এখানেই আপনারা ঠোঁট শুকিয়ে গেলে জিভ দিয়ে সহজে চেটে নেওয়ার ভুল করে ফেলেন। যেভাবে বললাম সেভাবে করলে কিন্তু প্রায় সঙ্গে সঙ্গে বুঝবেন ঠোঁট ফাটা জায়গাটা ঠিক হয়ে গেছে।
এবার এরেকটা ব্যায়ামের কথা বলি। রিল্যাক্স করে বসুন আর ঠোঁট দুটো একসঙ্গে জোড়া করুন। দাঁত দিয়ে জিভ চাপবেন না। এবার ঠোঁটের মাঝখানটা এভাবে গোল করুন যেন একটা পেনসিল ঢুকিয়ে ফেলতে পারেন। এবার আপনার ঠোঁট দিয়ে প্রেসার দিন এমন ভাবে যেন আপনি ওই পেনসিল ভাঙছেন। কিন্তু এমন প্রেসার দেবেন না যাতে ঠোঁট কুঁচকে যায় বা ভাঁজ পড়ে। কুঁচকে যাওয়া বা ভাঁজ পড়লে হবে না কিন্তু। এটা দিনে দু’বার করে করুন। এর ফলে ঠোঁটের ওপরের পাতলা মরা চামড়া উঠে যাবে। আর সহজে ঠোঁট ফাটবে না।
প্রথমে মুখ ভালো করে ধুয়ে নিন। একটা শুকনো তোয়ালে দিয়ে ভালো করে মুছে নিন শুকনো করে। এবার গ্লাইকোলিক অ্যাসিড ব্যবহার করুন। গ্লাইকোলিক অ্যাসিড পুরনো কোষ তুলে দেয়। এর সঙ্গেই ফাটা জায়গা নতুন করে ভরে দেয়। পুরনো কোষ উঠে আসলেই সেখানে নতুন কোষ তৈরি হয়। তখন ফাটা অংশ এমনিতেই ঢাকা পড়ে যায়। এই গ্লাইকোলিক অ্যাসিড লিপ লাইন বরাবর ব্যবহার করবেন। ঠোঁটে সরাসরি অবশ্যই দেবেন না এই অ্যাসিড। এতে ঠোঁট জ্বালা করতে পারে।
একটি ভালো ময়েশ্চারাইজার কিন্তু ঠোঁট ফাটার সমস্যা অনেক কম করতে পারে। ওপরের ঠোঁটে ময়েশ্চারাইজার লাগান। খানিক হাল্কা হাতে ম্যাসাজ করে নিন। দুটো ঠোঁট একসঙ্গে এনে দুই ঠোঁটেই এই ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে নিন। অন্তত এস.পি.এফ ১৫ আছে এমন ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন। এতে বর্তমান ফাটা জায়গা তো ঠিক হবেই। তার পাশাপাশি নতুন করে ঠোঁট ফেটে যাওয়াও বন্ধ হবে।
গবেষণায় দেখা গেছে, অ্যান্টি-এজিং লিপ প্রোডাক্ট কিন্তু খুব সহজেই ঠোঁটের এই ফাইন লাইন বা ঠোঁট ফাটা কমিয়ে আনতে পারে। আপনি যদি রোজ ব্যবহার নাও করে, মাঝে মাঝে ব্যবহার করলেও ভাল উপকারে আসে এই অ্যান্ট- এজিং লিপ প্রোডাক্ট। যখনই লিপস্টিক বা লিপ বাম ব্যবহার করবেন, দেখে নেবেন তাতে অ্যান্টি- এজিং উপাদান আছে কিনা। থাকলে সেটাই ব্যবহার করবেন।
এই কয়েকটা সামান্য জিনিস খেয়াল রাখলে আর এখন থেকেই এইগুলি মেনে চললে এই শীতে আপনার ঠোঁট ফাটার বা রক্ত পড়ার কোনও কারণই নেই।
আপনার মুখের রোমকূপ বা পোরসগুলি কি খুবই বড় বড়? আপনি টেকনিক্যালি এইসমস্ত পোর্স ছোট করতে…
পরিষ্কার নিটোল মুখ, অথচ থুঁতনিতে কালো কালো ব্ল্যাকহেডস! কেমন লাগে বলুন তো! সৌন্দর্যটাই নষ্ট হয়ে…
আগেকার দিনে বলা হত, লজ্জা নাকি নারীর ভূষণ। না, আজকের দিনে আমরা ওইসব কথা বলব…
বাড়ির দেয়ালে রকমারী রঙের ছ্বটা অনেকেরই সাধ ও শখের পরিচয় বহন করে। কিন্তু কিছু বছর…
ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা উচিত এই কথাটা আমরা সবাই জানি কম বেশি। কিন্তু কেন? কি উপকার…
প্রাচীনকালে যখন রূপচর্চার এত উপকরণ হাতের কাছে ছিল না, সেই সময় থেকেই রূপচর্চার অন্যতম উপকরণ…