লক্ষ্মী পুজো আমাদের বাঙালীদের কাছে স্পেশাল একটা জিনিস। বাড়িতে লক্ষ্মীর ঘট পেতে পুজো করা—বাঙালীর ঐতিহ্যে এটা বহু প্রাচীন একটা প্রথা। আপনার বাড়িতেও নিশ্চয়ই লক্ষ্মী পুজো হবে?
সারাবছর জিন্স-টপ বা কুর্তি-লেগিংসে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করলেও লক্ষ্মী পুজোর মতো এমন একটা স্পেশাল অকেশনে আপনি নিশ্চয়ই শাড়িতেই অনন্যা হয়ে উঠতে চাইবেন? কিন্তু রোজকার একঘেয়ে শাড়ি পড়া নয়।
আপনি যদি শাড়িতেই আপনার কামাল দেখাতে চান, যদি চান পুজোর দিনে আত্মীয়-স্বজন সবাই আপনারই দিকে তাকিয়ে থাকবে, তাহলে জেনে নিন এই লক্ষ্মী পুজোয় শাড়ি পড়ার ১০টি স্টাইল।
বাড়িতে পুজো মানেই যেকোনো বাঙালী মেয়েরই পছন্দের তালিকায় প্রথম থাকবে এই আটপৌরে করে পড়া শাড়ির স্টাইল। যে আপনি সারাক্ষণ জিন্স বা টপে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন সেই আপনিই লক্ষ্মী পুজোর ওই একটা দিন ট্র্যাডিশনাল বাঙালী লুকে আটপৌরে করে সেজে উঠতে চাইবেন।
আটপৌরে করে শাড়ি পড়ার জন্য কোমরের ডানদিকে শাড়ি গুঁজে একপাক পেঁচিয়ে নিন। এরপর নর্মাল শাড়ি পড়ার থেকে একটু চওড়া করে প্লিট করুন। তারপর বাঁদিকে যেভাবে নর্মালি আঁচল করেন, সেভাবেই করুন। তারপর পেছনের বড় অংশটাকে সামনে ঘুরিয়ে এনে ডান কাঁধের ওপর ফেলে রাখুন। ডান কাঁধের আঁচলে একটা চাবির রিং ঝুলিয়ে নিন। ব্যাস। একটা ভারিক্কি লুকে আপনি একদম গিন্নি গিন্নি হয়ে উঠবেন।
গুজরাটি কায়দায় শাড়ি পড়ার যে মেন ব্যাপারটা, সেটা হল আঁচলটা। এই স্টাইলে সামনে আঁচল এনে পড়া হয়, একে বলা হয় ‘সিদ্ধা পাল্লু’। এই স্টাইলে বাঁদিকে প্রথমে প্লিট করে আটকে দেওয়া হয়। সেই জন্য দেখবেন এই শাড়িতে বাঁদিকটা খোলা থাকে। এরপর আঁচলটাকে এনে ডান কাঁধে ফেলে পিন করে দিন। আপনার শাড়ির পাড়ে যদি দারুণ জমকালো কিছু কাজ করা থাকে, তাহলে এই লক্ষ্মী পুজোয় এই স্টাইলটা আপনার জন্যে একদম পারফেক্ট।
শাড়ি পড়ার অত্যন্ত ট্র্যাডিশনাল একটা উপায় হল এই কাপ্পুলু স্টাইল। লক্ষ্মী পুজো মানেই আপনার বাড়ির পুজোও বটে। বাড়ির পুজোয় আপনাকেও তো কাজ করতেই হবে। তাই বেশী কায়দা করে শাড়ি না পড়ে ট্র্যাডিশনাল উপায়ে শাড়ি পরাই বেস্ট। কাপ্পুলু স্টাইলে শাড়ি ডানদিক থেকে বাঁদিকে পড়া হয়। আপনার সুন্দর সেক্সি কার্ভকে ভালো করে ফুটিয়ে তোলার জন্য কাপ্পুলুর থেকে ভালো কিন্তু আর কিছুই হতে পারে না। সরু করে প্লিট করে পেছনে আঁচল করুন আর শাড়ির শেষটা দু’বার ঘুরিয়ে পড়ুন। এটাই কাপ্পুলুর বিশেষত্ব। এরপর ডান কাঁধে আঁচল ফেলে পিন করে নিন। ট্র্যাডিশনাল লুকে দেখবেন পুজোর দিন আপনাকে ফাটাফাটি লাগছে!
আসামের মেয়েরা যে এইভাবেই ট্র্যাডিশনাল পদ্ধতিতে শাড়ি পড়ে তা নিশ্চয়ই আপনি জানেনই। পুজোয় যদি আসামিজ হ্যান্ডলুমের শাড়ি কিনে থাকেন, তাহলে সেটা পড়ার বেস্ট স্টাইল কিন্তু এই মেখলা চাদর। মেখলা চাদর শাড়ির আবার দুটো পার্ট থাকে। নীচের অংশটি কুঁচি দিয়ে প্লিট করে পড়তে হয়। আর ওপরের অংশটির শেষভাগটা কোমরের কাছে বাঁদিকে গুঁজতে হয় ত্রিভুজের মতো করে। ওপর শেষভাগ কাঁধে শালের মতো করে ফেলে রাখতে হয়।
গুজরাত, উত্তরপ্রদেশের মেয়েদের দেখবেন এই কায়দায় ওরা রোজকার শাড়ি পড়ে থাকে। আর আপনি রোজকার শাড়ি পড়া ছেড়ে বরং লক্ষ্মী পুজোর দিন এই স্পেশাল কায়দায় শাড়ি পড়ে নিন।
দেখবেন পুজোর দিনে একটু ঘরোয়া ট্র্যাডিশনালও হয়েছে আর লেহেঙ্গা-চোলির মতো নতুন কায়দাও হয়েছে। এই শাড়ি পড়ার ধরণ খুবই সহজ। আঁচলটাকে জাস্ট ঘুরিয়ে সামনে নিয়ে এসে পড়ে ফেলুন। ‘সিধা পাল্লু’ শাড়ি আপনাকে পুজোর কাজেও সাহায্য করবে আর যেকোনো ভারী শাড়িই আপনি এই স্টাইলে পড়তে পারবেন।
তামিলনাড়ুর মহিলারা এই কায়দায় শাড়ি পড়ে থাকেন। লক্ষ্মী পুজোর দিনে গরমে কাজ করতে করতে ঘামবেন তো নিশ্চয়ই, তাই এই শাড়ি পড়ার স্টাইল আপনার জন্য পারফেক্ট হতে পারে। শায়া ছাড়াই আপনি এই ধরণের শাড়ি সহজে পড়তে পারবেন।
‘পিনকোসু’ কথার অর্থ হল পেছনে প্লিট। এই কায়দায় শাড়ি শরীরের সাথে দেড় বার ঘুরিয়ে পড়ুন। এই কায়দায় শাড়ির বাইরের অংশটাই আপনি দেখতে পাবেন। তাই সেই অনুযায়ী আপনি যত্ন করে শাড়ি সিলেক্ট করে পড়ুন। দেখবেন আপনার এই নতুন শাড়ি পড়ার স্টাইল দেখে সব্বাই চমকে যাবেন।
কেরালায় শাড়ি পড়ার সবথেকে পুরনো কায়দা এটাই। পুজোর ট্র্যাডিশনাল ধাঁচে শাড়ি তো পড়তেই হবে। বিশেষ করে পুজো যদি আপনারই বাড়িতে হয়! এই শাড়ি শুধু আপনার শরীরের নীচের অংশকেই কভার করবে। ব্লাউজে গুঁজে এই শাড়ি পড়া হয়। তবে আজকাল কেরালাতেও এই ধাঁচে শাড়ি খুবই কম পড়া হয়।
তামিলনাড়ুর শাড়ি পড়ার অত্যন্ত ট্র্যাডিশনাল কায়দা হল এই মাদিসারু। তামিলনাড়ুর সম্ভ্রান্ত ঘরের মহিলারা এইভাবে শাড়ি পড়ে থাকেন। তবে মাদিসারু কায়দায় শাড়ি পড়া একটু কঠিন। ঠিকভাবে যদি পড়তে পারেন, দেখবেন কোনো ব্লাউজ বা শায়া আপনার লাগছে না। নীচের অংশ ধুতির কায়দায় আর ওপরের অংশ শাড়ির কায়দায় পড়তে হয়। তবে ঠিকভাবে যদি পড়তে পারেন, দেখবেন সবাই ওইদিন আপনার দিকেই হাঁ করে তাকিয়ে আছে!
এই শাড়ি পড়ার কায়দার নামই যখন বুঝতে পারছেন রাজরানী, তখন শাড়ি পড়ার স্টাইলও যে বেশ জবরদস্ত হবে বুঝতেই পারছেন। পুজোর দিন যদি সিল্কের শাড়ি পড়ার প্ল্যান থাকে, তাহলে এই রাজরানী কায়দা আপনার জন্য বেস্ট অপশন হতেই পারে। এটাও একটা গুজরাটি শাড়ি পড়ারই ধরণ। যেরকম ভাবে আমরা শাড়ি পড়ি সেভাবেই প্রথমে পড়ে নিন। প্লিট তো সামনে করা হয়ই, তার সাথে শাড়ির আঁচলও বাঁদিক থেকে ডানদিকে এনে ‘ভি’ শেপে এনে পিন করে নিন।
শাড়ি পড়ে লক্ষ্মী পুজোর দিনে আপনি তো আর পটের বিবি হয়ে বসে থাকবেন না। কাজও তো করবেন। তাই এই স্টাইলটা আপনার জন্যে একদম পারফেক্ট হতে পারে। সাধারণত ফুল হাতা ব্লাউজের সাথে পড়া হয়, এবং পেছনে প্লিট করা হয়। শাড়ির শেষ অংশটা বাঁ কাঁধে এনে তারপর ডান কাঁধে ঘুরিয়ে এনে একটা শক্ত গিঁট বেঁধে নিন।
তাহলে লক্ষ্মী পুজোর দিনে শাড়ি পড়ার ১০ টি দারুণ স্টাইল দেখে নিলেন। বুঝতেই পারছেন, আপনার বাড়িতে যদি পুজো হয়, আপনাকে ট্র্যাডিশনাল কায়দাতেই শাড়ি পড়লে ভালো লাগবে। সেই বুঝেই আপনার জন্য ট্র্যাডিশনাল কায়দায় শাড়ি পড়ার স্টাইলই থাকল। আপনি শুধু দেখে নিন, আর পুজোয় যেকোনো একটা ট্রাই করে ফেলুন। দেখবেন আপনার শাশুড়ি মা তো চমকে গেছেনই, সেইসাথে কর্তাবাবুও দেখবেন আবার নতুন করে আপনার প্রেমে পড়ে গেছেন!
আপনার মুখের রোমকূপ বা পোরসগুলি কি খুবই বড় বড়? আপনি টেকনিক্যালি এইসমস্ত পোর্স ছোট করতে…
পরিষ্কার নিটোল মুখ, অথচ থুঁতনিতে কালো কালো ব্ল্যাকহেডস! কেমন লাগে বলুন তো! সৌন্দর্যটাই নষ্ট হয়ে…
আগেকার দিনে বলা হত, লজ্জা নাকি নারীর ভূষণ। না, আজকের দিনে আমরা ওইসব কথা বলব…
বাড়ির দেয়ালে রকমারী রঙের ছ্বটা অনেকেরই সাধ ও শখের পরিচয় বহন করে। কিন্তু কিছু বছর…
ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা উচিত এই কথাটা আমরা সবাই জানি কম বেশি। কিন্তু কেন? কি উপকার…
প্রাচীনকালে যখন রূপচর্চার এত উপকরণ হাতের কাছে ছিল না, সেই সময় থেকেই রূপচর্চার অন্যতম উপকরণ…