কলকাতা এমন এক শহর যাকে ‘সিটি অফ জয়’ বলে সম্বোধিত করে বিশ্ব। কলকাতা ভারতের ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ স্থান অধিকার করে আছে। ইংরেজরা যখন ভারত অধিগ্রহণ করে তখন কলকাতাই ছিল তাদের রাজধানী। বহু বছর ধরে কলকাতা বিভিন্ন ধরনের সাংস্কৃতিক কেন্দ্র হিসেবে চিহ্ণিত হয়েছে। সংস্কৃতির সাথে সাথে কলকাতা একটি ঐতিহাসিক শহর হিসেবেও বিশ্বে গুরুত্বপূর্ন স্থান অর্জন করেছে। তাহলে আজ আমরা কলকাতার কিছু ঐতিহাসিক এবং গৌরবান্বিত স্থান দেখে নি।
ফোর্ট উইলিয়াম হল ইংরেজদের দ্বারা নির্মিত কলকাতার সবচেয়ে প্রাচীনতম ইমারত। ১৬৯৬ সাল থেকে ১৭০৬ সালের মধ্যে ফোর্ট উইলিয়ামটি নির্মাণ করা হয়। এই ঐতিহাসিক ইমারতটি তৃতীয় উইলিয়াম নামে নামকরণ করা হয়। ১৭৫৬ সালে নবাব সিরাজ উদ দৌল্লা ফোর্ট উইলিয়ামে আক্রমন করেন। তারপর ইংরেজরা ইমারতটি ময়দানে অপসরণ করে। পুরোনো ইমারতটি আবার ১৭৫৬ সালে দখল করে ইংরেজরা। এখন সেই ফোর্ট উইলিয়ামটি ময়দানের কাছে দেখা যায়। সেটি আসলে ভারতীয় সেনা দ্বারা অধিকৃত। সাধারণ মানুষজন ফোর্ট উইলিয়ামে ঢুকতে পারেন না কিন্তু হুগলী ঘাট থেকে ফোর্ট উইলিয়ামের এক অপরূপ দৃশ্য দেখা যায়।
মহাকরণ অর্থাৎ রাইটার্স বিল্ডিংটি ১৭৭৭ সালে ইংরেজদের দ্বারা নির্মান শুরু হয়েছিল। ইংরেজরা যখন এই দেশে শাসন করতে আসে তখন রাজকর্মচারীদের কাজ কর্মের জন্যে এই ইমারতটি স্থাপিত করা হয়। বর্তমানে এইটি মহাকরণ নামে নামাঙ্কিত হয়। এই রাইটার্স বিল্ডিং বিখ্যাত হয়ে আছে ১৯৩০ সালের বাংলার বিপ্লবী বিনয়-বাদল-দীনেশ কর্তৃক অলিন্দ যুদ্ধের জন্য। ৮ ডিসেম্বর ১৯৩০ সালে কুখ্যাত ইন্সপেক্টর জেনারেল-ইন-চিফ কর্নেল এন. এস.সিমসনকে হত্যা করেন বিনয় -বাদল-দীনেশ। এই যুদ্ধের ফলে ইংরেজরা উৎখাত নাহলেও তাদের সাম্রাজ্যবাদী ভীত নড়ে গিয়েছিল। তাদের সেই ঐতিহাসিক এবং আত্মবলিদানকে স্মরণীয় করে রাখার জন্য বিনয়-বাদল-দীনেশের মূর্তি স্থাপন করা হয়েছে। এই স্থানটি বি-বা-দি বাগ নামে পরিচিত। স্বাধীনতার পরে এই রাইটার্স বিল্ডিং মন্ত্রী,আমলা এবং সরকারি কর্মচারীদের কর্মস্থল রূপে পরিগণিত হয় এবং নামকরণ হয় মহাকরণ। যদিও ২০১৩ সাল থেকে মহাকরণের সংস্কারের জন্য এটি স্থানান্তরিত হয়েছে হাওড়া জেলার ‘নবান্ন’তে।
ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল সৌধটি ইংরেজ আমলে রানী ভিক্টোরিয়ার স্মৃতির উদ্দেশ্যে নির্মিত হয়েছে। সেই সময়কার ভাইসরয় লর্ড কার্জনের মস্তিষ্ক প্রসূত হলো ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল। এই স্মৃতি সৌধটি মাকরানা মারবেল পাথর দিয়ে বানানো। বৃহৎ সবুজ বাগানের মাঝে এই স্মৃতি সৌধটি এক মনোরম দৃশ্য যোগায় দর্শনার্থীদের জন্য। ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের ভিতরে একটি বিরাট সংগ্রহশালা রয়েছে যার মধ্যে ইংরেজ আমলের মুদ্রা,বিভিন্ন ধরণের অস্ত্র,মানচিত্র,তৈলচিত্র,ভাস্কর্য ইত্যাদি সংরক্ষিত আছে।
১৮৩৫ সালে রাজা রাজেন্দ্র মল্লিক দ্বারা নির্মিত এই মার্বেল প্যালেস। প্রাসাদটি দুগ্ধ স্বরূপ সাদা মার্বেল দিয়ে নির্মিত। প্রাসাদটির ভিতর একটি ছোট চিড়িয়াখানাও আছে যা ভারতের প্রথম চিড়িয়াখানা। প্রাসাদটি সেই সময়কার বাংলার আভিজাত্যের সাক্ষ্য বহন করে। মার্বেল প্যালেসের ভিতর অভিজ্ঞ এবং বিখ্যাত শিল্পীদের দ্বারা অঙ্কনচিত্র প্রদর্শিত আছে। বর্তমানে রাজপরিবারের বংশধরেরা এই মার্বেল প্যালেসে বসবাস করে। এই মার্বেল প্যালেসের ঢোকার জন্য ২৪ ঘন্টা আগে থেকে ওয়েস্ট বেঙ্গল ট্যুরিজমের দপ্তর থেকে অনুমতি নেওয়া দরকার।
আলিপুরে অবস্থিত ন্যাশনাল লাইব্রেরি হলো ভারতের বৃহত্তম গ্রন্থাগার। ন্যাশনাল লাইব্রেরি ১৯৫৩ সালে পুনঃ স্থাপন হয় করা হয়। ন্যাশনাল লাইব্রেরিতে অন্তত ২.২ মিলিয়ন বই সংরক্ষিত করা আছে। স্বাধীনতার পর ন্যাশনাল লাইব্রেরি হলো পশ্চিম বাংলার এল.টি. গভর্নর জেনারেলের বাসস্থান। এই গ্রন্থাগারে ভারতের মোটামুটি সবকটি ভাষার বইয়ের অগাধ ভান্ডার। বিভিন্ন ধরণের বই সংরিক্ষিত করা আছে ন্যাশনাল লাইব্রেরিতে।
কলকাতার মত শহরে প্রচুর ঐতিহাসিক জায়গার মধ্যে গুটিকয়েক স্থানের বিষয়ে লিখলাম। কলকাতার অনেক ঐতিহাসিক স্থান রক্ষনা বেক্ষনের অভাবে জীর্ণ হয়ে পরে আছে। এই সব স্থানের সঠিক দেখভালের প্রয়োজন আছে যাতে এই স্থানগুলি দেখে আমাদের প্রজন্ম গৌরবান্বিত বোধ করে। কিন্তু যাই হোক না কেন আমরা সহজেই কলকাতাবাসী হিসেবে বলতে পারি যে কলকাতা আমাদের ভালোবাসার এবং প্রাণের শহর।
আপনার মুখের রোমকূপ বা পোরসগুলি কি খুবই বড় বড়? আপনি টেকনিক্যালি এইসমস্ত পোর্স ছোট করতে…
পরিষ্কার নিটোল মুখ, অথচ থুঁতনিতে কালো কালো ব্ল্যাকহেডস! কেমন লাগে বলুন তো! সৌন্দর্যটাই নষ্ট হয়ে…
আগেকার দিনে বলা হত, লজ্জা নাকি নারীর ভূষণ। না, আজকের দিনে আমরা ওইসব কথা বলব…
বাড়ির দেয়ালে রকমারী রঙের ছ্বটা অনেকেরই সাধ ও শখের পরিচয় বহন করে। কিন্তু কিছু বছর…
ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা উচিত এই কথাটা আমরা সবাই জানি কম বেশি। কিন্তু কেন? কি উপকার…
প্রাচীনকালে যখন রূপচর্চার এত উপকরণ হাতের কাছে ছিল না, সেই সময় থেকেই রূপচর্চার অন্যতম উপকরণ…