পুজোয় ফেসিয়াল ছাড়া কীভাবে বেরবেন ভেবেই কি মুষড়ে পড়ছেন? তাহলে আপনার মনখারাপের দিন এবার শেষ। এবার পুজোয় উজ্জ্বল আর গ্লোয়িং স্কিনের জন্য পুজো স্পেশাল ফেসিয়ালের সন্ধান দিলেন স্বয়ং কেয়া শেঠ। আজকের লেখায় রইল তারই হদিশ।
কেয়া শেঠের এই স্পেশাল ফেসিয়ালের পাঁচটি ধাপ। এর প্রত্যেকটি ধাপ আপনি কীভাবে সহজে করতে পারবেন, সে নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব আমরা।
ক্লিনজিং অর্থাৎ ফেসিয়াল শুরুর আগে মুখ, গলার ত্বক ভাল করে পরিষ্কার করে নেওয়া। এর জন্য প্রথমে খানিকটা কাঁচা দুধ পাত্রে নিয়ে সেখানে কটন বল ভিজিয়ে ভাল করে মুখে বুলিয়ে মুখটা পরিষ্কার করে নিন। কাঁচা দুধ মুখকে ভিতর থেকে পরিষ্কার করে তোলে এবং মৃত কোষ দূর করে নতুন কোষের জন্ম নিতে সহায়তা করে।
এছাড়া ইচ্ছে করলে আপনার বাড়িতে থাকা যে-কোনও ক্লিনজারও ব্যবহার করতে পারেন। কেয়া শেঠ অ্যারোমাথেরাপি ক্লিনজিং মিল্কটিও মুখ পরিষ্কার করার ক্ষেত্রে ব্যবহার করতে পারেন। উপকার পাবেন।
এর পরের ধাপ স্ক্রাবিং খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি ধাপ। মুখের মরা কোষ দূর করে মুখে নতুন ত্বকের জন্ম দিতে স্ক্রাবিংয়ের জুড়ি নেই। এছাড়া মুখে ছোটখাটো দাগ থাকলে সেগুলিও স্ক্রাবিংয়ের ফলে দূর হয়ে যায়। বাড়িতে বসে প্রাকৃতিক উপাদানের সাহায্যে স্ক্রাবিংয়ের ক্ষেত্রে দুর্দান্ত একটি টোটকা দিলেন কেয়া শেঠ। এর জন্যে একটা পাকা কলা, চিনি ও মধু নিয়ে ভাল করে চটকে নিন।
কলা ও মধু আপনার ত্বককে ভিতর থেকে হাইড্রেট করে গ্লোয়িং করে তোলে এবং চিনি প্রাকৃতিক স্ক্রাবারের কাজ করে। পুরো মুখ ও গলায় এই পাকা কলা, চিনি ও মধুর চটকানো মিশ্রণটি ভাল করে লাগিয়ে হালকা হাতে ৩০ সেকেন্ড থেকে এক মিনিটের মতো স্ক্রাব করে নিন। তারপর ঈষদুষ্ণ জলে মুখ ভাল করে ধুয়ে নিন। যাদের স্কিন অতিরিক্ত সংবেদনশীল, তাঁদের ক্ষেত্রে ৩০ সেকেন্ডেরও কম সময় স্ক্রাব করা ভাল, আর মুখে ব্রণ থাকলে এই স্টেপটিকে এড়িয়ে চলুন।
আপনি ইচ্ছে করলে আপনার স্কিনের সঙ্গে খাপ খেয়ে যায়, এমন যে-কোনও বাজারচলতি স্ক্রাবারও ব্যবহার করতে পারেন। তাছাড়া কেয়া শেঠেরও নানারকম স্ক্রাবার রয়েছে। আপনার স্কিনের সঙ্গে সুট করে এমন স্কিন ইরেজার অরেঞ্জ স্ক্রাব, লিকুইড নিম স্ক্রাব বা ওয়ালনাট পাওডার স্ক্রাব ব্যবহার করতে পারেন।
স্ক্রাবিংয়ের পর টোনিং মাস্ট। টোনিং পদ্ধতি মুখকে ভিতর থেকে হাইড্রেটেড রাখে। বাড়িতে ফেসিয়াল করতে হলে কেয়া শেঠের পরামর্শ অনুযায়ী ভাতের ফ্যান ব্যবহার করতে পারেন। এটি কিন্তু দুর্দান্ত টোনারের কাজ করে। ভাতের ফ্যান কটন বল দিয়ে গোটা মুখে, গলায় লাগিয়ে নিন। ১০ মিনিট রেখে জল দিয়ে ধুয়ে নিন। এছাড়া বাড়িতে যে-টোনার ব্যবহার করেন, সেটিকেও অনায়াসে এক্ষেত্রে ব্যবহার করতে পারেন।
শুধু দেখে নেবেন, টোনারটি আপনার ফেসিয়াল এবং স্কিনের ধরনের সঙ্গে যাচ্ছে কিনা। আপনি এর জন্যে কেয়া শেঠের স্কিন হাইড্রেটিং কোকোনাট টোনার, কিউকাম্বার টোনার, ল্যাভেন্ডার টোনার, নিম টোনার, অরেঞ্জ টোনার, রোজ টোনার ইত্যাদির মধ্যে থেকে বেছে যে-কোনও একটি ব্যবহার করলেও উপকার পাবেন।
ফেসিয়ালের ক্ষেত্রে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হল ম্যাসাজ। এই ম্যাসাজই কিন্তু ফেসিয়ালের কার্যকারিতাকে বাড়িয়ে তোলে। এর জন্য দরকার ম্যাসাজ ক্রিম। কেয়া শেঠের টোটকা অনুযায়ী খানিকটা ছানার সঙ্গে মধু মিশিয়ে নিন। তারপর ভাল করে ব্লেন্ডারে পেস্ট করে নিন। এবার এই ক্রিম দিয়ে ম্যাসাজ করলে ম্যাজিকের মতো ফল পাবেন। তবে ইচ্ছে হলে কেয়া শেঠের স্টপেজ, অরেঞ্জ ক্রিম, ডে বা নাইট ক্রিম, যেটি আপনি ব্যবহার করেন, সেটিকেও অনায়াসে ম্যাসাজ ক্রিম হিসেবে কাজে লাগাতে পারেন।
উপযুক্ত ফল পেতে ম্যাসাজ অন্তত ১৫-২০ মিনিট ধরে করা বাঞ্ছনীয়। যদি মনে করেন নিজে ম্যাসাজ ভাল করতে পারছেন, সেক্ষেত্রে অন্য কারওর শরণাপন্ন হতে পারেন। আর ম্যাসাজ করার আগে কীভাবে করলে ফল পাবেন, সেটি ইউটিউবে সার্চ করে দেখে নিতে পারেন। তবে মনে রাখবেন, ম্যাসাজ সবসময় নীচ থেকে উপরের দিকের স্ট্রোকেই ম্যাসাজ করবেন। ম্যাসাজের পর হালকা গরম জলে বা ঠান্ডা জলে মুখ ধুয়ে নিন।
এবার প্যাক লাগানোর পালা। সব ধরনের স্কিনেই পেঁপে খুব ভালভাবে যায়। পেঁপে ভাল করে পেস্ট করে ওর মধ্যে সামান্য মধু মিশিয়ে নিন। তারপর মুখে ভাল করে লাগিয়ে ১৫-২০ মিনিট রেখে ধুয়ে নিন। দেখবেন মুখে আলাদাই একটা গ্লো এসেছে। বাজার চলতি কোনও ফেস প্যাকও ব্যবহার করতে পারেন। তবে সেখানে কোনও কেমিক্যাল রয়েছে কিনা, তা দেখে নেবেন। এছাড়া ব্যবহার করতে পারেন কেয়া শেঠের ফেয়ারি প্যাক।
স্কিনের প্রয়োজন অনুযায়ী দু’-তিন চামচ ফেয়ারি প্যাক নেওয়ার পর কয়েক ফোঁটা ফেয়ারি প্যাক সলিউশন ও সাধারণ জল নিয়ে মিশিয়ে সেটি মুখে অ্যাপ্লাই করুন। ১০-১৫ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন।
তাহলে দেখতেই পাচ্ছেন, কেয়া শেঠের এই পুজো স্পেশাল ফেসিয়ালের প্রত্যেকটি উপকরণই কিন্তু সহজলভ্য। তাই পার্লারে যেতে না পারার দুঃখ ভুলে আর দেরি না করে আজই সেরে ফেলুন এই চটজলদি ফেসিয়াল আর গ্লোয়িং স্কিনে চমকে দিন আপনার কাছের মানুষদের।
এছাড়া বাজারচলতি যে-কোনও প্রোডাক্ট যদি আপনার স্কিনের সঙ্গে সুট করে, তাহলে সেগুলিকেও ব্যবহার করতে পারেন। কেয়া শেঠেরও গোল্ড ফেসিয়াল ও ফেয়ারনেস ফেসিয়াল কিট রয়েছে। রেডি মেড এই ফেসিয়াল প্রোডাক্ট ব্যবহার করেও কিন্তু সুন্দর ফল পাবেন।
আপনার মুখের রোমকূপ বা পোরসগুলি কি খুবই বড় বড়? আপনি টেকনিক্যালি এইসমস্ত পোর্স ছোট করতে…
পরিষ্কার নিটোল মুখ, অথচ থুঁতনিতে কালো কালো ব্ল্যাকহেডস! কেমন লাগে বলুন তো! সৌন্দর্যটাই নষ্ট হয়ে…
আগেকার দিনে বলা হত, লজ্জা নাকি নারীর ভূষণ। না, আজকের দিনে আমরা ওইসব কথা বলব…
বাড়ির দেয়ালে রকমারী রঙের ছ্বটা অনেকেরই সাধ ও শখের পরিচয় বহন করে। কিন্তু কিছু বছর…
ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা উচিত এই কথাটা আমরা সবাই জানি কম বেশি। কিন্তু কেন? কি উপকার…
প্রাচীনকালে যখন রূপচর্চার এত উপকরণ হাতের কাছে ছিল না, সেই সময় থেকেই রূপচর্চার অন্যতম উপকরণ…