ভারতীয় মহিলাদের সৌন্দর্যের আসল রহস্য কি! সেই কবে রানী পদ্মিনীর হাত ধরে ভারতীয় নারীর সৌন্দর্যের কথা জগত জুড়ে ছড়িয়ে পড়েছিল। তারপর রিতা ফারিয়ার হাত ধরে সেই যে বিশ্ব জোড়া বিউটি পিজেন্টে ভারতের শ্রেষ্ঠ হওয়া শুরু হল, সেই জয়যাত্রা এখনও চলছে। সবাই ভাবে এখনও এভাবে মিস ইউনিভার্স, মিস ওয়ার্ল্ড এই সব শ্রেষ্ঠ জায়গায় ভারতীয় নারী কোন সৌন্দর্যের জোরে এতটা এগিয়ে থাকে!
টিপ ভারতীয় নারীর সৌন্দর্যের আসল রহস্য। সারা বিশ্বে আর কোনও নারী কিন্তু টিপ পরেন না। কপালের মাঝখানে একটা সুন্দর টিপ, এটা কিন্তু মেয়েদের সুন্দর করে তোলার একটা মূল কারণ। এই টিপ পরার মূলে বিজ্ঞানসম্মত কারণও কিন্তু আছে। আমাদের থার্ড আই বা কনসেন্ট্রেশন পাওয়ারের মূল জায়গা এই কপালের মাঝের অংশ। এখানে টিপ পরা মানে এই অংশে ব্লাড সার্কুলেশন বাড়ে। এতে সৌন্দর্য বাড়ে।
এটি ভারতীয় নারীদের সৌন্দর্যের আরেকটি বড় কারণ। চন্দনের গন্ধ তো আমাদের মন ভাল রাখেই। কিন্তু রূপচর্চার ক্ষেত্রে এই চন্দনের ব্যবহার ভারতীয় নারীদের অন্য মাত্রা দিয়েছে। নানারকম ভাবে বিভিন্ন ফেস প্যাকে আমরা চন্দন গুঁড়ো ব্যবহার করে থাকি। এই চন্দন ব্রণ, ব্রণর দাগ, অ্যাকনে এই সব থেকে স্কিনকে ভাল রাখে। তাই স্কিন পায় ঝকঝকে দাগহীন উজ্জ্বলতা।
সেই কবে থেকে হলুদ আমাদের দেশের নারীরা ব্যবহার করছেন। হলুদ আমাদের স্কিনের ভিতর থেকে সমস্ত অশুদ্ধি দূর করে রাখে। হলুদের ভিতরে থাকা অ্যান্টি ইনফ্লেমেটরি আর অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল উপাদান স্কিন ঝকঝকে রাখে আর স্কিনে আনে প্রাকৃতিক উজ্জ্বলতা। অন্য কোনও জিনিস কিন্তু এই স্বাভাবিক উজ্জ্বলতা আনতে পারে না।
হাতের সামনে কিছু নেই? মুখ পরিষ্কার করতে হবে? কোনও ব্যাপার নেই। শুধু একটু বেসন ব্যবহার করুন। আমাদের মা-ঠাকুমারা ছোটবেলা থেকে আমাদের এই বেসন ব্যবহার করতে শিখিয়েছেন। এই বেসন আপনি স্ক্রাবিং করার জন্যেও ব্যবহার করতে পারেন। বিশেষ করে বেসনের মধ্যে যদি মধু, দুধ, ক্রিম বা পাতিলেবুর রস দেওয়া হয়, তাহলে স্কিন হাইড্রেটেড থাকে।
সুন্দর স্কিনের অর্থ হল কোমল, হাইড্রেটেড সফট স্কিন। এই স্কিন আপনি পেতে পারেন টক দইয়ের সাহায্যে। টক দইতে থাকা ল্যাকটিক অ্যাসিড স্কিন কোমল রাখতে সাহায্য করে। স্কিনের পি.এইচ লেভেল বজায় রাখে। তাই যাদের ড্রাই স্কিন, তাঁদের বলা হয় বিভিন্ন ফেস প্যাকে টক দই ব্যবহার করতে।
রাজকীয় সৌন্দর্যচর্চার উপাদান। কত রাজপরিবারে রূপচর্চার জন্য কেশর ব্যবহার করা হত। গরমের দেশে ট্যান পড়া তো স্বাভাবিক। সেই ট্যান খুব তাড়াতাড়ি তুলতে চান? তাহলে কেশর ব্যবহার করুন। মধু আর কেশরের মিশ্রণ ট্যান খুব তাড়াতাড়ি তুলতে পারে। শুধু ট্যান কেন! খাবারের ঠিক পরিমাণে কেশর ব্যবহার করলে বা দুধের মধ্যে কেশর ভিজিয়ে সেই দুধ খেলে রক্ত পরিষ্কার হয়। ত্বকের উজ্জ্বলতা দ্বিগুণ বেড়ে যায়।
আমরা ভারতীয়রা খুবই সৌভাগ্যবান যে আমাদের কাছে নিমগাছের মতো একটি গাছ আছে। এই গাছের প্রত্যেকটি অংশ ঔষধি গুণে সম্পন্ন। ব্রণ হলে নিমপাতা বেটে লাগান, অনেক তাড়াতাড়ি কমে যাবে। তেলতেলে স্কিনের জন্য নিমের ফেসপ্যাক অনবদ্য। ড্রাই স্কিন হলে নিমতেল ব্যবহার করুন, ফল পাবেন হাতেনাতে। নিমপাতা জলে দিয়ে ফুটিয়ে সেই জল চুলে দিলে চুল ভাল থাকে। এরকম কত কিছুই না উপকারে লাগে এই নিমপাতা।
স্কিন টোনার হিসেবে সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করা জিনিস হল গোলাপজল। সেই কবে থেকে এই গোলাপ জল ব্যবহার করা হচ্ছে স্কিনের উজ্জ্বলতা, পেলবতা বজায় রাখার জন্য। আগেকার দিনে তো গোলাপের পাপড়ি বেটে সেটি প্যাক হিসেবে ব্যবহার করা হত। ভারতের নারীদের সৌন্দর্যে কিন্তু এই গোলাপের অবদানও খুব বেশি।
দুধ আমাদের সকলের ঘরেই প্রায় থাকে রোজ। আর তাই দুধ দিয়ে মুখ পরিষ্কার করা ভারতীয়দের রূপচর্চার অঙ্গের মধ্যে পড়ে। দুধ স্কিনের ভিতর থেকে অশুদ্ধি যেমন দূর করে, তেমন এই শীতে দুধ স্কিনে হাইড্রেশন বজায় রাখে। অনেকে মালাই ব্যবহার করেন ফেস প্যাকে, সেটিও আমাদের স্কিনের জন্য খুব ভাল।
বিদেশীরা ভাবতেই পারবে না এই ধরণের জিনিস আমরা ব্যবহার করি রূপচর্চার জন্য। মুলতানি মাটিও আরেকটি জিনিস যেটা আমরা ত্বকের যত্নের জন্য অনেক দিন ধরে ব্যবহার করে আসছি। কিছু যদি নাও মেশাই, তাও শুধু মুলতানি মাটি দিয়েই ত্বক পরিষ্কারের যে গুণ পাওয়া যায় তা সত্যিই বিরল। রোজ মুলতানি মাটির পেস্ট দিয়ে মুখ পরিষ্কার করলে অনেক দামী প্রোডাক্টই আর ব্যবহার করার দরকার হয় না।
দেখলেন তো, হাতের কাছে থাকা খুব সাধারণ জিনিস, যা হয়তো আমরা রান্নায় ব্যবহার করি মূলত, তাই দিয়েই ভারতীয় নারী খুব সুন্দর করে নিজেকে মেলে ধরে বিশ্বে। এই সাধারণ জিনিস দিয়ে অসাধারণ হয়ে ওঠাই আমাদের সৌন্দর্যের রহস্য।
আপনার মুখের রোমকূপ বা পোরসগুলি কি খুবই বড় বড়? আপনি টেকনিক্যালি এইসমস্ত পোর্স ছোট করতে…
পরিষ্কার নিটোল মুখ, অথচ থুঁতনিতে কালো কালো ব্ল্যাকহেডস! কেমন লাগে বলুন তো! সৌন্দর্যটাই নষ্ট হয়ে…
আগেকার দিনে বলা হত, লজ্জা নাকি নারীর ভূষণ। না, আজকের দিনে আমরা ওইসব কথা বলব…
বাড়ির দেয়ালে রকমারী রঙের ছ্বটা অনেকেরই সাধ ও শখের পরিচয় বহন করে। কিন্তু কিছু বছর…
ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা উচিত এই কথাটা আমরা সবাই জানি কম বেশি। কিন্তু কেন? কি উপকার…
প্রাচীনকালে যখন রূপচর্চার এত উপকরণ হাতের কাছে ছিল না, সেই সময় থেকেই রূপচর্চার অন্যতম উপকরণ…