গরম মানেই ঘাম। আপনি দেখবেন আপনার যত্ন করে গড়ে তোলা সুন্দর ত্বক ঘামের সঙ্গে সব হারিয়ে ফেলছে। আর কিছু প্রোডাক্ট যে ব্যবহার করবেন, সেটাও তো ওই ঘামের সঙ্গে বেরিয়ে যাবে। কিন্তু গরমকালেও আপনার ত্বকের সমস্যা সমাধানের সহজ উপায় আছে।
এতোদিন তো ঠাণ্ডা জল খাওয়ার জন্য অনেক বার ফ্রিজের কাছে গেছেন। এবার আরেকবার যান আর ফ্রিজ থেকে বরফ বা আইস কিউব বের করুন। এই বরফই পারে আপনার ত্বকের সব সমস্যা মেটাতে। আপনার কী স্কিন টাইপ জানার দরকার নেই, শুধু বরফে ভরসা রাখুন।
সারাদিন কাজের পর আপনি ক্লান্ত হবেন সেটাই স্বাভাবিক। আর সেই ক্লান্তির ছোঁয়া আপনার ত্বকেও ফুটে উঠবে। এই সময় আপনি যদি মুখে আইস কিউব ঘষেন তাহলে খুবই উপকার পাবেন। আইস কিউব মুখে রক্ত সঞ্চালন বাড়িয়ে দেয়। ফলে মুখে অক্সিজেনের জোগান বেশি হয়ে মুখ ফ্রেস হয়ে ওঠে। আর আপনারা জানেন কি না জানি না, ‘আইস ফেসিয়াল’ কিন্তু খুব ভালো একটা থেরাপি, যা কোরিয়ায় খুব বিখ্যাত। তাই আর না ভেবে দেখে নিন কী কী উপকার আপনি পেতে পারেন আইস কিউব ব্যবহার করে।
আমরা প্রত্যেকেই খুব সুন্দর উজ্জ্বল ত্বক চাই। আর উজ্জ্বল ত্বকের জন্য সবচেয়ে দরকারী কি জানেন? ত্বকে রক্ত সঞ্চালন। রক্ত সঞ্চালন হলে আপনার ত্বকে অক্সিনের প্রবাহ বেড়ে যায়। আর এই অক্সিজেনই ভিতর থেকে ত্বক সুন্দর রাখে। ত্বকের কোষে রক্ত সঞ্চালন কমে গেলে তাই আইস কিউব ব্যবহার করুন।
আইস কিউব কিন্তু আমাদের ব্যবহার করা প্রোডাক্টের কার্যকারিতা বাড়িয়ে দেয়। অনেক দিন ধরেই নিশ্চয়ই শুনে এসেছেন যে কোনও কিছু মুখে লাগালে তার উপর আইস কিউব দেওয়া ভালো। আসলে আইস কিউব পোর্স খুলে ক্রিম বা সিরাম যাই হোক না কেন তা ত্বকের ভিতরে যেতে সাহায্য করে। তাই কাজও ভালো হয়। এখন থেকে সেই জন্য রাতে নাইট ক্রিম মেখে তার উপর একটা আইস কিউব ঘষুন। দেখবেন উপকার পাবেন।
চোখের নিচে কালি কিন্তু খুব সাধারণ আর খারাপ সমস্যা। মুখের তো বারোটা বাজিয়েই দেয়, আর সহজে উঠতেও চায় না। কিন্তু আইস কিউব পারে এটা দূর করতে।
গোলাপ জল অল্প গরম করে নিন। এর মধ্যে এবার শসার রস মিশিয়ে খানিক ঠাণ্ডা করে ফ্রিজে জমান। এবার যে আইস কিউবটা তৈরি হল, সেটা চোখের নিচে কালির উপর ঘষুন। এটা নিয়মিত করুন রোজ রাতে, উপকার পাবেনই।
অনেক দিন ধরে ব্রণর সমস্যায় ভুগছেন? ব্রণর দাগ একদমই যাচ্ছে না? আইস কিউব ব্যবহার করে দেখুন। ব্রণ হয় বেশি তেল নিঃসরণের ফলে। তাই যদি সেটাই বন্ধ করা যায় তাহলেই ব্রণ হওয়া কমবে। আইস কিউব এই তেল নিঃসরণটাই অনেক কমিয়ে দেয়। আর ব্রণর ফলে যে মুখে হওয়া গরম ভাব বা জ্বালা, তার থেকেও রেহাই দেয়।
অনেক সময়ে আমাদের চোখের ফোলা ভাব আমাদের খুবই ভাবায়। এবার সব ভাবনা কমাবে আইস কিউব। চোখের নিচে ফুলে যায় অতিরিক্ত ফ্লুইড জমা হলে। বরফ সেই ফ্লুইড জমা থেকে তরল করতে পারে। তাই ফোলা ভাব অনেক কমে যায়।
আমাদের স্কিন পোর্স থেকে যে ন্যাচারাল তেল নিঃসরণ হয়, তা আমাদের ত্বকের যত্নের জন্য খুবই দরকার। কিন্তু যখন বাইরের ধুলো নোংরা সেই পোর্সের মুখে জমতে থাকে তখন পোর্স বন্ধ হয়ে যায়। ব্রণের মতো সমস্যা হয় আর ত্বক হয়ে যায় খারাপ। আইস কিউব ব্যবহার করলে ওই জমতে থাকা ময়লা সরে যায় আর পোর্স সাধারণভাবে কাজ করতে থাকে।
মেকআপ করলে প্রথম চিন্তা থাকে কীভাবে মেকআপ অনেক ক্ষণ ধরে রাখা যায়। এক্ষেত্রেও আইস কিউব ম্যাজিকের মতো কাজ দেয়। মেকআপ করার আগে ভালো করে মুখ ধুয়ে আগে কিছু ক্ষণ আইস কিউব দিয়ে মুখে ঘষুন। তারপর মেকআপ করুন। অন্যদিনের মেকআপের সঙ্গে পার্থক্য নিজেই বুঝতে পারবেন।
বয়স হলে মুখে বয়সের ছাপ পড়বেই। কিন্তু বয়সের আগেই যদি মুখে বয়সের ছাপ পড়তে থাকে? আমাদের ত্বকের অকাল বার্ধক্যের একটা বড় কারণ কিন্তু বলিরেখা। আইস কিউব মুখে ঘষলে মুখে যেমন বলিরেখা সহজে হয় না, তেমনিই হয়ে থাকলে তা কমে যায়। অক্সিজেনের অভাবেই ত্বকের চামড়া কুঁচকে যায়। বরফ সেই অক্সিজেনের জোগান দিয়ে স্কিন আবার টানটান করে।
ঠোঁট শুকিয়ে যাচ্ছে? তাহলে কিন্তু আপনার সৌন্দর্য ওখানেই শেষ। অনেক জেল দিয়েও তো ঠিক হচ্ছে না ঠোঁট ফাটা! এবার আইস কিউব ব্যবহার করে দেখুন। ঠোঁট ফাটাও বন্ধ হবে, ঠোঁট নরমও থাকবে।
আমাদের তো রোদে বেরোতেই হয়। আর গরমে তো সমস্যা চূড়ান্ত জায়গায় যায়। রোদে সবচেয়ে বেশি যে ক্ষতিটা হয় সেটা হল ত্বক পুড়ে যায়। অনেক কিছু ব্যবহার করেও এই পোড়া ভাব কমতেই চায় না। কিন্তু আইস কিউব এখানে ম্যাজিকের মতো কাজ করে। সহজেই দাগ হাল্কা করে দেয়।
আমাদের ত্বকের ন্যাচারাল তেল ত্বকের জন্য খুবই দরকারী। কিন্তু অতিরিক্ত তেল আবার আমাদের ঔজ্জ্বল্য কেড়ে নেয়। সবাই তখন দেখে বলে পাঁপড় ভাজা। সেটা নিশ্চয়ই শুনতে আপনার ভালো লাগে না। তাহলে আইস কিউব ব্যবহার করুন। বরফ পোর্স বেশি আলগা করে না, বরং টাইট রাখে। ফলে তেল অতিরিক্ত নিঃসরণ হয় না।
মেয়েরা কিন্তু ভুরু প্লাক না করে থাকতেই পারেন না। আর করাটা দরকারও। কিন্তু একটা ব্যথার পদ্ধতির মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। সেটার থেকে সহজে মুক্তিও মেলে না। ভুরু প্লাক করার পর যদি আপনি ওখানে আইস কিউব ঘষেন তাহলে যন্ত্রণা অনেক কমে যাবে।
ত্বককে এক্সফোলিয়েট করা খুবই দরকার। এক্ষেত্রে আমরা বাজার চলতি জিনিস ব্যবহার না করে যদি মিল্ক কিউব ব্যবহার কি খুব ভালো হয় তাহলে। কিছুই না, শুধু দুধ জমিয়ে সেটার কিউব করে নিন। আর সেটা দিয়ে মুখ ঘষুন। দুধের ল্যাকটিক অ্যাসিড ভিতর থেকে ত্বক পরিষ্কার করে, ত্বক হয় উজ্জ্বল।
তাড়াতাড়ি কোথাও যেতে হবে? মেকআপ করার সময় নেই? শুধু দু মিনিট দিয়ে নিজের মুখে ঘষে নিন বরফ। এটা সঙ্গে সঙ্গে মুখে উজ্জ্বলতা আনবে, মুখ পরিষ্কার ঝকঝকে করবে। আর তাতেই আপনি করবেন বাজিমাত।
আপনার মুখের রোমকূপ বা পোরসগুলি কি খুবই বড় বড়? আপনি টেকনিক্যালি এইসমস্ত পোর্স ছোট করতে…
পরিষ্কার নিটোল মুখ, অথচ থুঁতনিতে কালো কালো ব্ল্যাকহেডস! কেমন লাগে বলুন তো! সৌন্দর্যটাই নষ্ট হয়ে…
আগেকার দিনে বলা হত, লজ্জা নাকি নারীর ভূষণ। না, আজকের দিনে আমরা ওইসব কথা বলব…
বাড়ির দেয়ালে রকমারী রঙের ছ্বটা অনেকেরই সাধ ও শখের পরিচয় বহন করে। কিন্তু কিছু বছর…
ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা উচিত এই কথাটা আমরা সবাই জানি কম বেশি। কিন্তু কেন? কি উপকার…
প্রাচীনকালে যখন রূপচর্চার এত উপকরণ হাতের কাছে ছিল না, সেই সময় থেকেই রূপচর্চার অন্যতম উপকরণ…