শীত হোক বা গ্রীষ্ম খুশকি হওয়ার আলাদা করে কোনও মরশুম হয় না। স্ক্যাল্প অতিরিক্ত মাত্রায় শুষ্ক হলে মাথায় খুশকির প্রাদুর্ভাব দেখা যায়। বিশেষত মাথার রোমকূপে ধুলো-ময়লা জমে ব্যাকটেরিয়া বাসা বাধলে মাথায় খুশকি জন্ম নেয়। তাই নাছোড়বান্দা এই সমস্যার হাত থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য অব্যর্থ হল অ্যাপেল সিডার ভিনিগার।
খুশকি নিরাময়ে অ্যাপেল সিডার ভিনিগার অসাধারণ কাজ করে। তবে আজ অ্যাপেল সিডার ভিনিগার নিয়ে এমন কিছু ঘরোয়া টোটকার কথা বলব যেগুলি ব্যবহার করলে খুশকির হাত থেকে চিরতরে পাবেন মুক্তি।
১) ট্রি টি অয়েলের সঙ্গে অ্যাপেল সিডার ভিনিগার
- ট্রি টি অয়েল এমনিতেই চুলের স্বাস্থ্য সুন্দর রাখতে বিশেষভাবে সাহায্য করে। এর প্রাকৃতিক অ্যান্টিসেপ্টিক ফর্মুলা স্ক্যাল্প থেকে খুশকি দূর করতে বিশেষভাবে সাহায্য করে।
- এর জন্য লাগবে ৩ টেবিল চামচ অ্যাপেল সিডার ভিনিগার এবং ৩ ফোঁটা ট্রি টি অয়েল।
- ভালো করে মিশিয়ে নিন। এবার এই মিশ্রণটি সারা স্ক্যাল্পে ম্যাসাজ করুন।
- ১০ মিনিট মতো রেখে মাইল্ড শ্যাম্পু এবং কন্ডিশনার দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন।
- সপ্তাহে তিন দিন এটি ব্যবহার করুন তফাৎ নিজেই বুঝতে পারবেন এক সপ্তাহের মধ্যে।
২) অ্যাপেল সিডার ভিনিগার ও মধু
মধুর গুণাগুণ বলে শেষ করা যাবে না, আর এবার সেই মধুর সঙ্গে যদি অ্যাপেল সিডার ভিনিগার মেশানো যায়, তাহলে খুশকি দূর করার ক্ষেত্রে তা বিশেষভাবে কার্যকরী হবে। মধু চুলের আর্দ্রতা ধরে রাখতে বিশেষভাবে সাহায্য করে। এর জন্য লাগবে-
উপকরণঃ
- ১/৩ কাপ অ্যাপেল সিডার ভিনিগার
- ২ টেবিল চামচ মধু
- একটি স্প্রে বোতল
- শাওয়ার ক্যাপ
ব্যবহার করবেন কি ভাবে?
- সবকটি উপকরণ একটি স্প্রে বোতলে নিয়ে ভালো করে ঝাঁকিয়ে নিন।
- এবার চুলের সেকশন করে নিয়ে চুলের ভাঁজে ভাঁজে যেখানে খুশকি রয়েছে সেখানে স্প্রে করুন।
- এবার মাথা শাওয়ার ক্যাপ দিয়ে ঢেকে রেখে ১৫ মিনিট অপেক্ষা করুন।
- এরপর শ্যাম্পু করে ধুয়ে নিন। সপ্তাহে একদিন এই সলিউশন ব্যবহার করতে পারেন।
- দুবার করার পর নিজেই বুঝতে পারবেন তফাৎ।
৩) অ্যালোভেরা ও অ্যাপেল সিডার ভিনিগার
অ্যালোভেরা স্ক্যাল্পে হওয়া ফাঙ্গাল ইনফেকশনের বিরুদ্ধে লড়াই করে, যার ফলে স্ক্যাল্পে খুশকি হওয়া রোধ করে। এর জন্য লাগবে-
উপকরণঃ
- ৫ টেবিল চামচ নারকেলের দুধ
- ৬ টেবিল চামচ অ্যালোভেরা জেল
- ১ চেবিল চামচ অ্যাপেল সিডার ভিনিগার
- ১ কাপ জল
ব্যবহার করবেন কি ভাবে?
- প্রথমে একটি বাটিতে নারকেল দুধ আর অ্যালোভেরা জেল ভালো করে মিশিয়ে নিন।
- এবার এই মিশ্রণ দিয়ে চুল মাসাজ করা শুরু করুন। এরপর মিশ্রণটি মাথায় ৫ মিনিট রেখে জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
- এরপর ১ চামচ অ্যাপেল সিডার ভিনিগার এক কাপ জলে মিশিয়ে নিয়ে সেই জল দিয়ে চুল ধুয়ে নিন।
- সপ্তাহে ২দিন করে এই সলিশান এক মাস ব্যবহার করুন তারপর তফাতটা নিজেই বুঝেতে পারবেন। খুশকির নাম ও নিশান থাকবে না।
৪) অ্যাপেল সিডার ভিনিগার ও বেকিং সোডার মিশ্রণ
- বেকিং সোডা এক অসাধারণ ক্লিনজিং এজেন্ট, এর ব্যবহারে খুশকি খুব সহজেই দূর হয়।
- এর জন্য ২ টেবিল চামচ বেকিং সোডা ও ২ টেবিল চামচ অ্যাপেল সিডার ভিনিগার ভালো করে মিশিয়ে নিতে হবে।
- মিশ্রনটি ঘন হয়ে এলে এটি স্ক্যাল্পে লাগিয়ে আলতো হাতে মাসাজ করে নিন।
- ৫ মিনিট মতো মাসাজ করে জল দিয়ে চুল ধুয়ে নিন।
- এই সলিউশনটিও সপ্তাহে ২ করে ব্যবহার করতে পারেন।
৫) লেবু ও অ্যাপেল সিডার ভিনিগার সলিউশন
লেবু মাথার খুশকি দূর করতে খুব সাহায্য করে। এর জন্য লাগবে-
উপকরণঃ
- ১/৪ কাপ অ্যাপেল সিডার ভিনিগার
- ১/ ২ চা-চামচ অলিভ অয়েল
- ৫ ফোঁটা ট্রি টি অয়েল
- একটি অর্ধেক পাতিলেবুর রস
- ১ কাপ জল
- একটি স্প্রে বোতল
ব্যবহার করবেন কি ভাবে?
- সমস্ত উপকরণ একসঙ্গে একটি স্প্রে বোতলে ভরে নিয়ে ভাল করে ঝাঁকিয়ে নিন।
- এবার চুলে সেকশন করে সারা স্ক্যাল্পে মিশ্রণটি স্প্রে করে নিন।
- এরপর চুল তোয়ালেতে মুড়িয়ে আধ ঘণ্টা রেখে দিন।
- এরপর মাইল্ড শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে নিন।
- সপ্তাহে তিন দিন এটি ব্যবহার করুন তফাৎ নিজেই বুঝতে পারবেন এক সপ্তাহের মধ্যে।
খেয়াল রাখার বিষয়ঃ
- মাথায় যদি অতিরিক্ত মাত্রায় অ্যাপেল সিডার ভিনিগার ব্যবহার করেন তাহলে এটি আপনার স্ক্যাল্প থেকে প্রাকৃতিক তেল বের করে দেবে, যার ফেল আপনার স্ক্যাল্প অতিরিক্ত শুষ্ক বলে মনে হতে পারে। তাই ঘন ঘন এইসব সলিউশন ব্যবহার না করাই ভালো।
- অ্যাপেল সিডার ভিনিগার ট্রিটমেন্ট করার সময়ে যদি মাথায় নিয়মিত তেল মাসাজ না করেন তাহলে চুল দুর্বল হয়ে ভেঙে যেতে পারে। তাই ব্যবহারের সময়ে এটি অল্প পরিমাণে নেবেন এবং অবশ্যই তেল মাসাজ করবেন।