আজকাল মানুষের মধ্যে নেতিবাচক চিন্তাভাবনা যেন অনেকটাই প্রকট হয়ে উঠেছে। মানুষ যেহেতু সমাজবদ্ধ জীব, তাই সমাজে থাকতে থাকতে খারাপ জিনিসটাই সবার আগে তাই মাথায় আসে। তাই মাঝে মাঝে মনে হয় মানুষ যেন পজেটিভ ভাবতেই ভুলে গিয়েছে।
তীব্র নেতিবাচক পরিস্থিতিতেও যে মানুষরা পজেটিভ ভাবতে পারেন, তিনি কিন্তু জীবনের লড়াইয়ে সফল হন। তাই সবসময় নেগেটিভ ভাবনা থেকে দূরে থাকুন।
১) কী কী খারাপ হতে পারে ভাববেন না
প্রথম থেকেই যদি আপনি চিন্তা করেন যে এই এই বিষয়গুলি খারাপ হতে পারে, তাহলে কিন্তু নেতিবাচক চিন্তা আপনিই আপনার মনের মধ্যে বাসা বাধবে। কিন্তু তা না ভেবে যদি কী কী ভালো হতে পারে এই চিন্তা করেন, তাহলে নেগেটিভ ভাবনার নাগপাশ থেকে কিন্তু সহজেই বেরিয়ে আসতে পারবেন।
২) নেতিবাচক মানুষের দ্বারা প্রভাবিত হবেন না
আপনার চারিপাশে এমন অনেক মানুষ লক্ষ্য করবেন, যারা সারাদিন নেতিবাচক কথা বলতে থাকে। কোনটা খারাপ, কার কী খারাপ হল, কী থেকে কী খারাপ হতে পারে! ইত্যাদি সবকিছু নিয়েই নেতিবাচক মন্তব্য করে থাকেন। এমন মানুষের সান্নিধ্য এড়িয়ে চলুন। তাদের কথাবার্তায় একেবারেই প্রভাবিত হবেন না। বরং চেষ্টা করুন আপনার মনের পজেটিভ এনার্জি কিছুটা হলেও তাদের মনে সঞ্চালিত করতে।
৩) টেনশন কম করুন, ধৈর্য্য ধরতে শিখুন
কোনও বিষয়ে লাগাতার ভাবলে কিন্তু মনের মধ্যে নেতিবাচক চিন্তা বাসা বাধে। দুশ্চিতা সকল মানুষের মধ্যেই হয়। কিন্তু কোনও কাজে যদি ধৈর্য ধরতে শেখেন তাহলে দেখবেন মনের নেগেটিভ চিন্তাভাবনা অনেকটাই দূরে রয়েছে।
৪) খারাপ ভাবনাকে চিহ্নিত করুন
কোন কোন বিষয়গুলি আপনার মনে নেগেচিভ ভাবনার জন্ম দেয়, তা আপনার সন্তানের পড়াশোনা, স্বামীর চাকরিতে সমস্যা, প্রেমঘটিত কোনও বিষয়- যা-ই কারণ হয়ে থাক না কেন, কোন কোন বিষয়ে নেগেটিভ ভাবনা আপনার মাথায় আসে, সেই বিষয়গুলি চিহ্নিত করে সেগুলি নিয়ে আলোচনা করুন। আলোচনার মাধ্যমেই নেগেটিভ চিন্তা দূর করা সম্ভব।
৫) নিখুঁত হওয়ার চেষ্টা করবেন না
কোনও মানুষই ১০০% নিখুঁত হতে পারেন না। দোষে-গুণে মিলিয়ে মানুষ। তাই অযথা নিজে নিখুঁত হওয়া বা কাউকে নিখুঁত আশা করা ছেড়ে দিন। মানুষের ভালো এবং মন্দ দুই গ্রহণ করতে পারলে দেখবেন মনে আর নেগেটিভ ভাবনা আসছে না।
৬) ভবিষ্যত ভাবনা বন্ধ করুন
মনে রাখবেন আপনি জ্যোতিষি নন। তাই ভূত-ভবিষ্যত-বর্তমান নিয়ে আগে থেকে কিছু একটা ভেবে নিয়ে নিজের মনে নেগেটিভ চিন্তাভাবনার জন্ম দেবেন না দয়া করে। তাই ভবিষ্যতে কী খারাপ হতে পারে, সেটা না ভেবে আজকে কী ভাল করতে পারেন সেই নিয়েই চিন্তা করুন।
৭) সমস্যার সমাধানে মনোযোগী হন
সমস্যা সকল মানুষের জীবনেই রয়েছে। কিন্তু কোনও একটা সমস্যা নিয়ে মাত্রাতিরিক্ত চিন্তাভাবনা করলে কিন্তু নেতিবাচক চিন্তাভাবনা আপনিই আপনার মনে বাসা বাধবে। তার চেয়ে বরং সমস্যা যা-ই হোক না কেন তার থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করুন, সমস্যার সমাধান সূত্র বের করুন। দেখবেন নেগেটিভ চিন্তা আর মাথায় আসবে না।
৮) আপনি যেমন তেমনভাবেই নিজেকে মেনে নিন
আপনি এই কাজের উপযুক্ত নন, আপনি ওমুকের চেয়ে ভালো নন, আপনার যোগ্যতা কম-ইত্যাদি নানা বিষয়ে অনেকেই চিন্তা করেন। তবে যেদিন থেকে এটা বিশ্বাস করা শুরু করবেন যে, আপনি যা পারেন, অন্যকেউ সেই কাজটা আপনার মতো করে করতে পারে না। তাহলে দেখবেন নেতিবাচক ভাবনাও দূরে রয়েছে।
৯) ব্যর্থতাকে মেনে নিতে শিখুন
ব্যর্থ না হলে সাফল্যের সুখ অনুভব করা যায় না। তাই কোনও কাজে ব্যর্থ হলে সেই ব্যর্থতা থেকে শিক্ষা নিন। আবার উঠে দাঁড়ান, পরবর্তী লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিন। এইভাবে ট্রায়াল আর এরর-এর মাধ্যমে নিজেকে চালিত করুন নেগেটিভ চিন্তা ভাবনার সময়ই পাবেন না।
১০) ধ্যান করুন
ধ্যান করার অর্থ মনোসংযোগ ও একাগ্রতা বাড়ানো। কোনও কাজে মনোসংযোগ ও একাগ্রতা যতই বাড়বে সেই কাজে ভুল তত কম হবে, ফলে দেখবেন নেগেটিভ ভাবনা আর মনে আসবে না।