নারীদের জীবনে গর্ভাবস্থার সময়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই সময়ে তারা নিজেদের মধ্যে একটি নতুন প্রাণকে লালন করে। আর তাই কিছু কিছু পরিবর্তনও তার মধ্যে আসে। এই সময়ে সবচেয়ে বেশি যে পরিবর্তন আসে তার মধ্যে সেটি হল হরমোনের পরিবর্তন। আর তার জন্য চুলের ক্ষেত্রেও কিছু পরিবর্তন আসে। অনেকেই দেখে তাদের চুল হয়তো ড্রাই হয়ে যাচ্ছে। আর ডেলিভারির পরে চুল পড়ে যাওয়ার সমস্যা তো খুবই কমন। কিন্তু আপনি যদি ওই ন’মাস আপনার চুলের যত্ন নেন তাহলে কিন্তু এই সমস্যা খুবই কম হবে। আসুন দেখে নিই তাহলে কীভাবে প্রেগন্যান্সির সময়ে আপনি আপনার চুলের যত্ন নিতে পারেন।
গর্ভাবস্থার সময়ে মেয়েদের মধ্যে ইস্ট্রোজেন হরমোনের প্রভাব বেড়ে যায়। আর এই হরমোনের জন্য চুলের বৃদ্ধিও বেশ ভালো হয়। তখন অনেকের মনে হয় চুল যেন বেশ ঘন লাগছে, বেশ কালো লাগছে। এই সবই কিন্তু ওই ইস্ট্রোজেন হরমোনের ফলে। কিন্তু ডেলিভারির পরেই ইস্ট্রোজেনের মাত্রা কমতে শুরু করে আর তখনই চুল পড়া শুরু হয়। চুল শুষ্ক হয়ে যায়, অনেক সময়ে পাকা চুলও আসতে থাকে।
সমস্যার কথা তো বললাম। এবার দেখা যাক সমাধান কী কী হতে পারে।
শুধু এই সময়ে কেন, যে কোনও সময়েই চুলের যত্ন নেওয়ার জন্য তেল মালিশের বিকল্প নেই। তেল আমাদের চুলের আবশ্যিক খাদ্য বলতে পারেন। তাই সব সময়ে চেষ্টা করুন ভালো তেল ব্যবহার করার। রাসায়নিক উপাদান থাকবে এমন তেল ব্যবহার না করাই ভালো। প্রাকৃতিক উপাদান, যেমন নারকেল, আমন্ড, অলিভ, জোজোবা এই সব উপাদান আছে এমন তেল ব্যবহার করা উচিৎ। রাতে শুতে যাওয়ার আগে তেল নিয়ে গরম করতে হবে। তারপর চুলে আর স্ক্যাল্পে ব্যবহার করতে হবে। সারা রাত রেখে সকালে শ্যাম্পু করতে হবে। এভাবে সপ্তাহে তিন দিন কম করে করতেই হবে। তাহলেই চুল ভালো থাকবে।
আপনাকে দেখতে হবে সপ্তাহে যেন অন্তত দু দিন শ্যাম্পু করা হয়ই। আর খুব ভালো হয় যদি শ্যাম্পু মাইল্ড হয় বা হার্বাল হয়। প্রতি বার শ্যাম্পু করার সময়ে কন্ডিশনার ব্যবহার করতেই হবে। বিশেষ করে খেয়াল রাখবেন যেন চুলের গোঁড়ায় ভালো করে কন্ডিশন করা হয়। না হলে চুল ফেটে যেতে পারে। দিনে দিনে যত ডেলিভারির সময় এগিয়ে আসবে ততই শ্যাম্পু করতে সমস্যা হবে। তখন কারোও সাহায্য নিতেই হবে।
এই সময়ে চুলে রঙ না করাই ভালো। চুলে এই সময়ে রঙ করলে কোনও খারাপ কিছু হবে এমন কথা কোথাও বলা নেই। কিন্তু তাও অনেক সময়ে চুলে রঙ করলে অ্যালার্জি বা ইনফেকশন হতে পারে। সেখান থেকে সমস্যা দেখা দিতে পারে। অ্যালার্জি হলে অনেক বার হাঁচি পায় আর হাঁচতে গেলে পেটে চাপ পড়তে পারে। তাই রঙ ব্যবহার করবেন না এই সময়ে। চুলকে নিজের রঙেই থাকতে দিন।
আপনার চুল যখন ভিজে থাকবে তখন চিরুনি ব্যবহার করবেন না। এতে চুল পড়ে অনেক বেশি। আর চুলের ড্রায়ার ব্যবহার না করে সাধারণ ভাবে চুল শুকোতে দিন। আর ড্রায়ার একান্ত ব্যবহার করতে হলে মিডিয়াম হিট ব্যবহার করুন। ব্যবহার করুন কাঠের চিরুনি আর মোটা দাগের চিরুনি। এভাবে চুলে চিরুনির ব্যবহার করুন। তবে দিনে দু থেকে তিন বারের বেশি চিরুনি ব্যবহার না করাই ভালো।
সন্তানের জন্য আপনি ভালো খাবার খাচ্ছেন সেটা তো ঠিকই। কিন্তু চুলের যত্নের জন্য ব্যাল্যান্স ডায়েট মেনে চলুন। দুধ, ফল, সবজি, মাছ, মাংস এই সবই ভালো করে খেতে হবে। এই সব উপাদানই কোনও না কোনও ভাবে আপনার চুলের উপকার করবে। প্রোটিন খেতে হবে কারণ চুলের প্রধান উপাদানই কিন্তু প্রোটিন। তবে সব সময়েই খাওয়ার আগে ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করবেন।
গবেষণায় দেখা গেছে যে দুশ্চিন্তার সঙ্গে চুল পড়ার সম্পর্ক কিন্তু খুব কাছাকাছি। তাই এই সময়ে চিন্তা কম করুন। এটি আপনার সন্তান আর চুল দুই ক্ষেত্রেই ভালো থাকার জন্য খুব দরকার। যতটা সম্ভব রিল্যাক্স করুন। আর যেহেতু হরমোনের পরিবর্তন হয়, তাই এই সময়ে মুড হেরফের হতে পারে। তাই বিশ্রাম খুব দরকার। রিল্যাক্স করার জন্য ভালো করে স্নান করুন, ঘরে ভালো গন্ধের ফুল বা অ্যারোমেটিক ক্যান্ডেল রাখুন, গান শুনুন। রোজ সকালে প্রাণায়াম করুন। লোকের সঙ্গে ভালো করে মন খুলে কথা বলুন।
এই কয়েকটা জিনিস শুনতে মনে হবে হয়তো খুব সামান্য। কিন্তু এগুলি আপনার চুলের জন্য আর সার্বিক ভালো থাকার জন্য খুব দরকার। এখন থেকেই এগুলি মানতে শুরু করুন আর দেখুন মা হওয়ার পরেও আপনার চুলে একটুও ভাটা পড়বে না।
আপনার মুখের রোমকূপ বা পোরসগুলি কি খুবই বড় বড়? আপনি টেকনিক্যালি এইসমস্ত পোর্স ছোট করতে…
পরিষ্কার নিটোল মুখ, অথচ থুঁতনিতে কালো কালো ব্ল্যাকহেডস! কেমন লাগে বলুন তো! সৌন্দর্যটাই নষ্ট হয়ে…
আগেকার দিনে বলা হত, লজ্জা নাকি নারীর ভূষণ। না, আজকের দিনে আমরা ওইসব কথা বলব…
বাড়ির দেয়ালে রকমারী রঙের ছ্বটা অনেকেরই সাধ ও শখের পরিচয় বহন করে। কিন্তু কিছু বছর…
ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা উচিত এই কথাটা আমরা সবাই জানি কম বেশি। কিন্তু কেন? কি উপকার…
প্রাচীনকালে যখন রূপচর্চার এত উপকরণ হাতের কাছে ছিল না, সেই সময় থেকেই রূপচর্চার অন্যতম উপকরণ…