আজকাল অনেকেই চুল রাঙাতে চান, কিন্তু কেমিক্যালের রঙ ব্যবহার করতে চান না। স্বাভাবিক। কেমিক্যাল রঙগুলো চুলে নানান রকমের রঙ এনে দেয় ঠিকই, কিন্তু চুলের স্থায়ী ক্ষতিও করে রেখে যায়। সে কারনে প্রাকৃতিকভাবে চুলকে রঙিন করতেই মানুষ এখন স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে।
প্রাকৃতিকভাবে চুল রঙিন করার ক্ষেত্রে যে প্রক্রিয়াটি সবার আগে মাথায় আসে সেটি হচ্ছে মেহেদী। কোনো রকম ক্ষতিকর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ছাড়াই চুলকে রঙিন করে তোলে মেহেদী। সেই সাথে খুশকি দূর করে, আগা ফাটা রোধ করে, চুলকে ঝলমলে ও মজবুত করে, চুলের ঝরে পরা কমায়।
মেহেদী ছাড়াও আরও কিছু প্রাকৃতিক উপাদান রয়েছে যার মাধ্যমে আপনি চুলকে রাঙিয়ে তুলতে পারেন কোনো রকম পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কিংবা ক্ষতি ছাড়াই। আমাদের আজকের আয়োজন সেসব উপাদান নিয়েই। চলুন তবে জেনে নিই চুল রাঙানোর প্রাকৃতিক উপাদান সমূহের কথা।
বীট রুট আমাদের দেশে খুব জনপ্রিয় সবজি না হলেও অপ্রচলিত নয়। এটি শরীরের এতটাই উপকার করে যে একে ‘সুপার ফুড’ আখ্যা দেয়া হয়। এই বীট রুটের রস হতে পারে আপনার চুলের প্রাকৃতিক রঙ।
বীট রুট ছেঁচে বা ব্লেন্ড করে ছেকে এর রসটা চিপে বের করে নিন। এই রস জ্বাল দিয়ে ঘন করে ঠান্ডা করুন। এবার জ্বাল দেওয়া বীট রুটের রসের সঙ্গে পরিমানমত নারকেল তেল ভালোভাবে নেড়ে মিশিয়ে নিন।
চুলের যে অংশটা রঙ করতে চান সে অংশে নারকেল তেল আর বীট রুটের রসের এই মিশ্রণটি লাগিয়ে রাখুন। এক থেকে দেড় ঘন্টা পর শ্যাম্পু করে ধুয়ে কন্ডিশনার লাগিয়ে কিছুক্ষন রেখে ধুয়ে ফেলুন। চুল তো ঝলমলে হবেই, সেই সাথে সুন্দর একটা লাল রঙও আসবে। এই মিশ্রণটি আপনি চাইলে চুলের আগা থেকে গোড়া পর্যন্তও লাগাতে পারবেন নির্ভয়ে।
চুল রঙ করার ক্ষেত্রে অন্যতম জনপ্রিয় প্রাকৃতিক উপাদান হচ্ছে কফি। এটি চুলে খুব সুন্দর একটা খয়েরী ভাব এনে দেয়। কফি দিয়ে চুল রঙ করতে চাইলে প্রথমেই সামান্য গরম পানিতে কফি গুলিয়ে ভালোভাবে মিশিয়ে খানিকটা ব্ল্যাক কফিই বানিয়ে ফেলুন।
এবার আপনার চুলে স্যুট করে এমন একটি হেয়ার কন্ডিশনার এই ব্ল্যাক কফির সাথে মিশিয়ে গাঢ় একটি মিশ্রণ তৈরি করে নিন। চুলের যে অংশ রঙ করতে চান সে অংশে একটু ভারী করে এই মিশ্রণটির প্রলেপ লাগিয়ে নিয়ে দেড় থেকে দুই ঘন্টা অপেক্ষা করুন। এরপর শুধু পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। পাবেন খয়েরী রঙের আকর্ষণীয় চুল।
সৌন্দর্য চর্চায় চায়ের ব্যবহার চলে আসছে সেই আদ্যিকাল থেকেই। চা ত্বকের দাগ দূর করে, চুলের ন্যাচারাল কন্ডিশনার হিসেবে কাজ করে এসব তো আপনারা জানেনই। কিন্তু এই সাধারণ চা-ই যে আপনার চুলকেও রঙিন করতে পারে সেটা কি জানতেন?
চুলের জন্য চা কিন্তু এমনিতেই উপকারী। সুতরাং চা দিয়ে চুল রঙ করতে আর ক্ষতি হবার ভয় নেই। চায়ে থাকা ট্যানিন আপনার নিষ্প্রাণ, অনুজ্জ্বল চুলকে দেবে উজ্জ্বল কালো রঙ।
তিন কাপ পানিতে হাফ কাপ চা পাতা দিয়ে জ্বাল হতে দিন। পানি ফুটে শুকিয়ে এক কাপ বা এর কম পরিমান হয়ে এলে নামিয়ে ঠান্ডা করে নিন। এবার এই জ্বাল দেওয়া চা পাতা পানিসহই চুলে মেখে চল্লিশ মিনিট অপেক্ষা করুন। শুকিয়ে এলে শ্যাম্পু করে নিন। প্রাকৃতিকভাবে চুল কালো করতে চাইলে চা পাতার চেয়ে উপকারী জিনিষ আর কিছুই নেই।
নাম শুনে ভাবছেন নিশ্চয়ই মশলা কিভাবে চুলের রঙ করবে? চিন্তা নেই। চুলে বাদামী রঙ করতে চাইলে এই মশলাই আপনাকে দেবে নিশ্চয়তা। লবঙ্গ ও দারুচিনি গুড়ো করে নিন। এতে সামান্য নারকেল তেল মিশিয়ে পেস্ট করে ফেলুন।
এবারে চুলের যে অংশটা বাদামী করতে চান সে অংশে এই পেস্ট লাগিয়ে ফেলুন। শুকিয়ে যাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করে শ্যাম্পু করে ফেলুন। ব্যাস, পেয়ে যাবেন মনের মত রঙ।
সবজি কিংবা স্যালাড হিসেবে গাজর তো অনেক খেয়েছেন। এবার চুল রাঙাতেও ব্যবহার করে দেখুন। চুলে যদি প্রাকৃতিক উপায়ে কমলা রঙ আনতে চান তবে গাজরই ভরসা।
প্রথমেই গাজর ছেঁচে কিংবা ব্লেন্ড করে ছেকে রস বের করে নিন। এর সাথে নারকেল তেল সামান্য গরম করে মিশিয়ে নিন। মিশ্রণটি পুরোপুরি ঠান্ডা হয়ে এলে এতে সামান্য আপেল সিডার ভিনেগার মিশিয়ে নিন।
এবার মিশ্রণটি চুলে লাগিয়ে শাওয়ার ক্যাপ দিয়ে ঢেকে রাখুন। ঘন্টা পার হলেই শ্যাম্পু করে ফেলুন। দেখবেন চুল হয়েছে সুন্দর কমলা রঙা।
চুলে সোনালী বর্ণ আনতে চান? চিন্তা কিসের? লেবু তো আছেই ঘরে। লেবু কিন্তু প্রাকৃতিক ব্লিচের কাজ করে। লেবু চিপে রস বের করে নিন। এতে নারকেল তেল মিশিয়ে চুলে লাগান। ঘন্টা দুয়েক পর শ্যাম্পু করে ফেলুন। এই মিশ্রণটি একটানা কিছুদিন ব্যবহার করলেই চুলে চলে আসবে সোনালী আভা।
তবে মনে রাখবেন, কখনোই স্ক্যাল্পে লেবু দিয়ে দীর্ঘ সময় রাখবেন না। এতে কিন্তু হিতে বিপরীত হতে পারে। লেবু দিয়ে চুলে সোনালী রঙ পেতে একটু ধৈর্য ধরে টানা কয়েকদিন লেবু- নারকেল তেলের মিশ্রণটি ব্যবহার করতে হবে।
খুব দ্রুত ফল পেতে চাইলে এর সাথে ক্যামোমাইল চায়ের লিকার মিশিয়ে নিতে পারেন এবং চুল ধোয়ার সময় শ্যাম্পুর সাথে চিনি মিশিয়ে নিন।
আপনার মুখের রোমকূপ বা পোরসগুলি কি খুবই বড় বড়? আপনি টেকনিক্যালি এইসমস্ত পোর্স ছোট করতে…
পরিষ্কার নিটোল মুখ, অথচ থুঁতনিতে কালো কালো ব্ল্যাকহেডস! কেমন লাগে বলুন তো! সৌন্দর্যটাই নষ্ট হয়ে…
আগেকার দিনে বলা হত, লজ্জা নাকি নারীর ভূষণ। না, আজকের দিনে আমরা ওইসব কথা বলব…
বাড়ির দেয়ালে রকমারী রঙের ছ্বটা অনেকেরই সাধ ও শখের পরিচয় বহন করে। কিন্তু কিছু বছর…
ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা উচিত এই কথাটা আমরা সবাই জানি কম বেশি। কিন্তু কেন? কি উপকার…
প্রাচীনকালে যখন রূপচর্চার এত উপকরণ হাতের কাছে ছিল না, সেই সময় থেকেই রূপচর্চার অন্যতম উপকরণ…