ত্বকের জন্য অ্যালোভেরা যতোটা উপকারী, চুলের জন্যও ঠিক ততোটাই উপকারী। এতে আছে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা নতুন চুল গজাতে ভীষণভাবে কার্যকরী। এছাড়াও এটি মাথার ত্বকের ক্ষত সারাতে সক্ষম। অ্যালোভেরা দিয়ে হেয়ার অয়েল বানিয়ে সপ্তাহে দুই-তিনদিন ব্যবহার করলে সুফল পাবেন অল্পদিনেই। আজকের আর্টিকেল থেকে জানতে পারবেন অ্যালোভেরা অয়েল চুলের জন্য কিভাবে ঘরে বানাবেন সে সম্পর্কে।
অ্যালোভেরা চুল পড়া বন্ধ করে ও চুলের গোড়া শক্ত করে। নারিকেল তেল চুলের জন্য ভালো ও সহজলভ্য একটি ট্রিটমেন্ট যা বহুকাল ধরে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এতে যদি যোগ হয় পেঁয়াজের রস, তাহলে তা হেয়ার ফলিকল পুনরুজ্জীবিত করবে ও ইনফেকশন ঠেকাবে। নারিকেল তেলের সাথে অ্যালোভেরা মিশিয়ে বিভিন্নভাবে অ্যালোভেরা অয়েল বানাতে পারবেন।
প্রথমে অ্যালোভেরার পাতাগুলো টুকরা টুকরা করে কেটে একটি কাচের বাটিতে রাখুন। তারপর বড় একটি সসপ্যান পানিভর্তি করে চুলায় বসিয়ে দিন। পানি ফুটে উঠতে শুরু করলে অ্যালোভেরার বাটিটা সসপ্যানের উপরে বসিয়ে দিন। এবারে এতে নারিকেল তেল দিয়ে নাড়তে থাকুন। ১০ মিনিট পরে বাটিটা নামিয়ে ঠান্ডা হতে দিন। আরেকটি বাটিতে মিশ্রণটি ছাঁকনির সাহায্যে ছেঁকে তেল আলাদা করুন।
এই তেল স্ক্যাল্পে ও চুলে মেখে ১ঘন্টা রেখে দিন। সবশেষে শ্যাম্পু করে ফেলুন।
অ্যালোভেরার পাতা থেকে সাবধানে জেল বের করে কিউব করে কেটে নিন। কাটা জেল আলাদা করে রাখুন। চুলায় সসপ্যান বসিয়ে গরম করে নিন। গরম হয়ে গেলে নারিকেল তেল দিয়ে মাঝারি আঁচে ১০-১৫ মিনিট জ্বাল দিন। এরপরে এতে অ্যালোভেরার জেল ও পেঁয়াজের রস দিয়ে আরো ১০ মিনিট জ্বাল দিন। মিশ্রণটি লালচে হয়ে আসলে চুলা বন্ধ করে ঠান্ডা হতে দিন। সবশেষে কাচের বোতলে ঢেলে ঠান্ডা ও শুষ্ক স্থানে সংরক্ষণ করুন।
দুই হাতের আঙ্গুলের ডগায় তেল লাগিয়ে স্ক্যাল্পে ভালো করে মাসাজ করে নিন। এতে স্ক্যাল্পের রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পাবে। ১ ঘন্টা পরে শ্যাম্পু করে ফেলুন। রাতে ঘুমানোর আগে অ্যালোভেরা তেল মাসাজ করতে পারেন, ভালো ফল পাবেন। সকালে শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলবেন।
এই তেলটা বানানোর জন্য আপনাকে নিতে হবে অ্যালোভেরার সবুজ অংশ, জেল নয়। পাতা থেকে সবুজ অংশ আলাদা করে ছোট সাইজের টুকরা করে কেটে নিন। এরপরে পাতার টুকরাগুলো ভালো করে ধুয়ে স্টেরিলাইজড বোতলে ভরে নারিকেল তেল ঢেলে দিন। বোতলের মুখ এয়ারটাইট করে ঠান্ডা ও শুষ্ক স্থানে ১ মাস রেখে দিন। পেয়ে যাবেন ডিসলভড অ্যালোভেরা অয়েল।
চুলের পাশাপাশি ত্বকেও ব্যবহার করতে পারেন এই তেলটি। এটি মূলত ত্বকের সার্বিক যত্ন নিতে বেশি ব্যবহৃত হয়। বলিরেখা ও মেছতার দাগ দূর করতে সপ্তাহে দুইদিন এই তেল মুখে মাসাজ করবেন।
অ্যালোভেরার গ্লাইকোপ্রোটিন চুলের খুশকি ও ইরিটেশন দূর করে। প্রচুর আয়রন ও ফসফরাসে সমৃদ্ধ কারি পাতা চুলের ঝরে পড়া আটকায় এবং চুল ঘন করে। এছাড়া মেথির নিকোটিনিক অ্যাসিড চুলের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করে।
অ্যালোভেরার পাতাগুলো ভালো করে ধুয়ে পানি ঝরিয়ে নিন। তারপর ছোট টুকরা করে কেটে নিন। ভিতরের জেল যেন বের হয়ে না যায় সেদিকে খেয়াল রাখবেন। কারি পাতাগুলো ধুয়ে শুকিয়ে নিন।
চুলায় সসপ্যান বসিয়ে ৫-৭ মিনিট গরম করে নারিকেল তেল দিন। মাঝারি আঁচে কিছুক্ষণ নেড়ে গরম করে নিন, তারপর মেথিদানা দিয়ে আবার ১০ মিনিট নাড়তে থাকুন। সুন্দর গন্ধ বেরোতে শুরু করবে। মিশ্রণে কারি পাতা গুলো অল্প অল্প করে দিয়ে নাড়তে থাকুন।
সবশেষে অ্যালোভেরার টুকরাগুলো ঢেলে নাড়তে থাকুন। যতক্ষণ না পর্যন্ত নারিকেল তেল ও অ্যালোভেরা শুকিয়ে যাচ্ছে ততক্ষণ পর্যন্ত নাড়তে থাকুন। এরপরে যখন মিশ্রণ থেকে হালকা তেল ছাড়বে তখন জ্বাল দেয়া বন্ধ করুন। ঠান্ডা করে ছেঁকে কাচের বোতলে ভরে সংরক্ষণ করুন।
সপ্তাহে দুইদিন এই তেল গোসলের ১ ঘন্টা আগে স্ক্যাল্পে মাসাজ করবেন। তারপর শ্যাম্পু ও কন্ডিশনার দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলবেন।
অ্যালোভেরা ও অলিভ অয়েলের কম্বিনেশনে আপনার স্ক্যাল্পের ব্লাড সার্কুলেশন বাড়বে এবং সেল ড্যামেজ বন্ধ হবে। তাছাড়া চুলের স্বাভাবিক কালো রং নষ্ট হয়ে গেলে এই তেল সেই রং পুনরুদ্ধার করতে সাহায্য করবে। এতে পিপারমিন্ট তেল ও ল্যাভেন্ডার এসেন্স যোগ করলে সুন্দর গন্ধ হবে আর তেলটাও অনেকদিন ভালো থাকবে।
অ্যালোভেরার জেল বের করে চামচ দিয়ে ভালো করে নেড়ে গলিয়ে নিন। ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করতে যাবেন না, তাতে জেলের জলীয় অংশ বেড়ে যাবে। এবারে সমপরিমাণ অ্যালোভেরা জেল ও অলিভ অয়েল ভালো করে মিশিয়ে নিন৷ যোগ করুন ল্যাভেন্ডার এসেন্স ও পিপারমিন্ট অয়েল, তারপরে স্বচ্ছ কাচের জারে তেলটা সংরক্ষণ করুন।
সপ্তাহে একদিন বা দুইদিন গোসলের আগে মাথায় তেল মাসাজ করবেন। ১ ঘন্টা পরে শ্যাম্পু করে ফেলবেন। রাতে ঘুমানোর আগে মাসাজ করলে আরো ভালো।
আপনার মুখের রোমকূপ বা পোরসগুলি কি খুবই বড় বড়? আপনি টেকনিক্যালি এইসমস্ত পোর্স ছোট করতে…
পরিষ্কার নিটোল মুখ, অথচ থুঁতনিতে কালো কালো ব্ল্যাকহেডস! কেমন লাগে বলুন তো! সৌন্দর্যটাই নষ্ট হয়ে…
আগেকার দিনে বলা হত, লজ্জা নাকি নারীর ভূষণ। না, আজকের দিনে আমরা ওইসব কথা বলব…
বাড়ির দেয়ালে রকমারী রঙের ছ্বটা অনেকেরই সাধ ও শখের পরিচয় বহন করে। কিন্তু কিছু বছর…
ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা উচিত এই কথাটা আমরা সবাই জানি কম বেশি। কিন্তু কেন? কি উপকার…
প্রাচীনকালে যখন রূপচর্চার এত উপকরণ হাতের কাছে ছিল না, সেই সময় থেকেই রূপচর্চার অন্যতম উপকরণ…