স্কিন মেন্টেনিং করার প্রথম ধাপই হলো কমপ্লেক্সন বা ঔজ্জ্বল্য। সাধারণত স্কিনে আমরা যে ইস্যুগুলো নিয়ে বিব্রত থাকি তা হলো – ব্রেক আউট, বলিরেখা, ফ্যাকাসে ত্বক ইত্যাদি। কিন্তু আনইভেন স্কিন টেক্সচার বা অসম ত্বকগঠন বিন্যাস এক নতুন সমস্যা হিসেবে উদয় হয়েছে।
আসলে সময় যত যাচ্ছে ততই নিত্যনতুন ত্বকের অসুবিধে দেখা দিচ্ছে। এর জন্য চাই নতুন ট্রিটমেন্ট। তবে আনইভেন স্কিন টেক্সচারকে আনইভেন স্কিন টোনের সাথে গুলিয়ে ফেলবেন না যেন, যা কিনা ব্রণ, সানবার্ন বা পিগমেন্টেশন এর ফলে হয়ে থাকে। অপরদিকে স্কিনের অসম গঠন বিন্যাস ত্বকের সার্বিক কোমলতা ও মসৃণতার উপর নির্ভরশীল।
আনইভেন স্কিন টেক্সচার এর কারণ:
- মাত্রাতিরিক্ত মৃতকোষ স্কিন সারফেসে জমা হয় ও স্কিনে বাম্প তৈরি করে।
- এর ফলে স্কিন দেখায় ম্যাড়ম্যাড়ে ও ডাল।
- বেশি সময় ধরে সূর্যরশ্মির সংস্পর্শে থাকলে স্কিনে পোর সৃষ্টি হয় এবং একজিমা হয়ে স্কিন টোন ও টেক্সচার বিগড়ে যায়।
- পিম্পল হলে অনেকসময় গর্ত হয়ে যায় সেখানে তৈরি হয় স্কার। ফলে স্কিনে অসামঞ্জস্য দেখা দেয়।
- আবার অনেকসময় হরমোনাল ডিসব্যালেন্সের জন্য ও এটা হতে পারে।
স্কিন ইভেন করার উপায়:
আনইভেন স্কিন টেক্সচারকে ঠিক করার জন্য সামান্য সময় দিন নিজেকে, যাতে সঠিক উপায়ে স্কিনের যত্ন নিতে পারেন। এখন থেকে এই যত্ন নেওয়া শুরু করলে আগামী দিনে স্কিনের সমস্যা থেকে দূরে তো থাকবেনই, পাশাপাশি ত্বকের হারানো জেল্লা ধরা দেবে সহজেই।
এক্সফোলিয়েশন:
- সপ্তাহে একবার এক্সফোলিয়েশন করান মৃতকোষ তাড়াতে। এর জন্য স্ক্রাব ব্যবহার করুন যাতে অতিরিক্ত তেল না জমতে পারে স্কিনে।
- প্রাকৃতিক স্ক্রাব হিসেবে চিনি, জোজোবা বিডস, আমন্ড ডাস্ট বা বেসন ব্যবহার করতে পারেন ফেসিয়াল ক্রিমের সাথে মিশিয়ে।
- কেমিক্যাল স্ক্রাব থেকে অবশ্যই দূরে থাকুন।
ক্লিঞ্জার ও ময়েশ্চারাইজারের প্রয়োগ:
- চড়া মেকআপ করা ছেড়ে স্কিনের প্রবলেমের দিকে নজর দিন। স্কিন টেক্সচার খারাপ হলে দিনে দুবার ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে। যা স্কিন সেলকে দেবে পুষ্টি ও স্কিনকে করবে হাইড্রেটেড।
- ময়েশ্চারাইজার ত্বকের গভীরে গিয়ে একটা সুরক্ষা বলয়ের প্রলেপ দেয় যা আর্দ্রতা লক করে। মুখের টি জোনের জন্য খুব উপকারী।
- ক্লিঞ্জার স্কিনের এপিডার্মিক লেভেলে তার প্রোটিনের গঠন মেরামত করে ও এজিং সমস্যা করে দূরীভূত।
- তবে মেকআপ করে শোবেন না কখনোই।
ভিটামিন সি বুস্টার:
- স্কিন টেক্সচার মোলায়েম করতে ভিটামিন সি এর মত উপযোগী উপাদান কমই আছে। স্কিন কেয়ার বিশেষজ্ঞ লিং চ্যান বলছেন – “ত্বকের যত্নে রোজকার রুটিনে ভিটামিন সি যোগ করুন।
- এটি অত্যন্ত শক্তিশালী এন্টিঅক্সিডেন্ট যা পারিপার্শ্বিক পরিবেশ থেকে ত্বকের নমনীয়তা রক্ষা করে পিগমেন্টেশন ও এজ স্পট কমিয়ে।
- এতে থাকা এস্কর্বিক এসিড ও ফেরুলিক এসিড ফাইন লাইন ও রিঙ্কেল কমায়।
সানস্ক্রিনের ব্যবহার:
- রোদের ফলেই স্কিনে ছোপ ছোপ দাগের আধিক্য দেখা যায়। সূর্যের ক্ষতিকারক ইউভি বি রশ্মি থেকে বাঁচতে এস পি এফ এর মাত্রা ন্যূনতম ০ হওয়া প্রয়োজন।
- তাই সানবার্ন থেকে বাঁচতে ভরসা হোক সানস্ক্রিন। তবে ছাতা, টুপি ইত্যাদি নিয়ে বেরোন বাইরে।
টোনারের সুরক্ষাকবচ:
- স্কিন টোনার অবশ্যই ব্যবহার করুন যা ত্বকে পি এইচ এর মাত্রা রক্ষা করবে।
- শুষ্কতা রুক্ষতা ধারে কাছে ঘেঁষবেনা আপনার স্কিনের। পাশাপাশি গঠন সামঞ্জস্য ও ধরে রাখবে।
- সংক্রমণ এর হাত থেকেও রক্ষা পাবেন টোনার জাদুমন্ত্রে। এর এন্টি ব্যাকটেরিয়াল ফর্মুলা ম্যাজিক এর মত কাজ করে। ফলে একনে হতে পারবেনা ও লাম্প ও হবেনা।
- গোলাপ জলের টোনারই উৎকৃষ্ট কিন্তু এলকোহল যুক্ত যেকোনো টোনার দেখলে তা থেকে শত হস্ত দূরে থাকুন।
বায়ো অয়েল ট্রিটমেন্ট:
- বায়ো অয়েল ভিটামিন ই সমৃদ্ধ তাই ত্বকে কোলাজেন উৎপাদন এর হার বাড়াবে ও টেক্সচার এ সাম্যতা আনতে সহায়তা করবে।
- ক্ষত হলে স্কার টিস্যুকে সরিয়ে রিজেনেরেট করে ও স্কিনের লাবণ্য ফিরিয়ে আনে।
এছাড়াও স্কিন নিডলিং পদ্ধতি আছে যা স্কিনে সূচ দিয়ে পাংকচার করে তার টেক্সচার ট্রিটমেন্ট করা হয়ে থাকে। তাই দেরি না করে আজই শুরু করুন নিজের স্কিন টেক্সচারের যত্ন।