সব সফল ব্যক্তির পেছনে একজন নারীর হাত আছে এই তথ্য কতটা সত্য তা নিয়ে তর্কবিতর্ক চলতেই পারে কিন্তু বাড়ির প্রতিটা টিউবলাইট এর পেছনে একটি করে টিকটিকি আছে একথা সবাই একবাক্যে স্বীকার করেন। আপাতভাবে ক্ষতিকর মনে হলেও ঘরের জন্য আস্ত আপদ এই প্রাণী।
টিকটিকির ত্বক ও বর্জ্য থেকে নানা বিষক্রিয়া ছড়ায়। গায়ের উপর পড়লে ত্বকে নানা সংক্রমণের সম্ভাবনা ও রয়ে যায়। বাজারে উপলব্ধ রাসায়নিক স্প্রে দিয়ে এগুলিকে সাময়িক ঠেকানো গেলেও ফের শুরু হয়ে যায় এদের উপদ্রব। তাই শক্তিশালী ও দীর্ঘস্থায়ী সমাধানের জন্য কাজে লাগান এই ঘরোয়া উপায়গুলি।
তামাক:
- খুবই কার্যকরী একটি উপাদান হলো তামাক। কিন্তু শুধু তামাক দিয়ে কার্যসিদ্ধি হবেনা। কিছুটা তামাকের গুঁড়ো নিয়ে মিশিয়ে একটা গাঢ় পেস্ট বানান।
- এবার সেটা হাতে করে নিয়ে গোল গোল বল তৈরি করুন। সেই বল গুলো গেঁথে দিন টুথপিক এর উপরে।
- যেখানে টিকটিকি বেশি যাতায়াত করে সেখানে রেখে দিন। খেলেই কেল্লা ফতে।
ন্যাপথলিন:
- আমাদের সবার ঘরেই রয়েছে এই উপকরনটি। ন্যাপথলিন বল নিয়ে টিকটিকির নিবাসস্থলে রেখে দিন।
- টিকটিকি ন্যাপথলিন এর উগ্র গন্ধ সহ্য করতে পারেনা। তাই ঝটপট পালাবে সাথে আপনার বাড়ি অন্যান্য পোকামাকড় এর উৎপাত থেকেও সুরক্ষিত থাকবে।
রসুন ও পেঁয়াজ:
- রসুনের ঝাঁঝালো গন্ধ টিকটিকির মোটেই পছন্দ না। তাই জানালা বা ঘরের কোণে রসুন এর ছোট কোয়া ফেলে রাখতে পারেন। মন্ত্রবৎ কাজ হবে।
- পেঁয়াজে থাকে সালফার যা টিকটিকির মাথা ঘুরিয়ে দেয়। তাই খানিকটা পেঁয়াজ কেটে ছড়িয়ে দিতে পারেন ভেন্টিলেটরে। কারণ ওই জায়গা দিয়েই টিকটিকি ঘরে প্রবেশ করে বেশি।
মরিচ দাওয়াই:
- একটা বোতলে জল ভরে নিয়ে তাতে কয়েক চামচ গোলমরিচের গুঁড়ো ও কয়েক চামচ শুকনো লঙ্কার গুঁড়ো একসাথে মিশিয়ে নিন।
- এবার মিশ্রণটা যেখানে যেখানে টিকটিকিদের দেখতে পাওয়া যায়, সেখানে স্প্রে করে দিন। তবে সাবধানে করবেন যাতে চোখে না ছিটকে লাগে।
ডিমের খোসা:
- জানালা ও দরজার কর্নারে ডিমের খোসা রেখে দেখুন এটির গুন খুবই ফলদায়ী।
- এটি টিকটিকির ইন্দ্রিয় দুর্বল করে দেয়। ফলে সে আর ঘুরে আসেনা। রাখার কয়েকদিনের মধ্যেই রেজাল্ট পাবেন। কিছুদিন ছাড়া খোসা বদল করে দেবেন।
ময়ূরের পালক:
- অনেকঘরেই ডেকোরেশন আইটেম হিসেবে ময়ূরের পালক ব্যবহৃত হয়। এটি টিকটিকি তাড়ানোর জন্য পারফেক্ট।
- ফুলদানিতে সাজিয়ে ময়ূর এর পালক রেখে দিন বা দেয়ালে চিটিয়েও দিতে পারেন। টিকটিকি ময়ূরে ভীতি পায়। তাই ঘর ছেড়ে পগার পার। তবে জায়গা বদল করতে ভুলবেন না।
ঠাণ্ডাজল:
- টিকটিকি শীতল রক্তের সরীসৃপ। তাই টিকটিকি দেখতে পেলে এটির উপর ঠাণ্ডাজলের ছিটে দিতে পারেন।
- ঠান্ডা জল এর স্নায়ু অবশ করে দেবে। ফলে এটি জমে যাবে। বডি স্টিফ হলে তুলে বাইরে ফেলে দিয়ে আসুন।
ফিনাইল ট্যাবলেট:
- যেসব জায়গায় টিকটিকি লুকিয়ে থাকে আলমারির তলায়, টেবিল এর ফাঁকে সোফার নীচে সেখানে ফিনাইল ট্যাবলেট দিয়ে রাখতে পারেন।
- টিকটিকি পালানোর পথ পাবে না।
যে বিষয় গুলি খেয়াল করবেন:
- বাড়ির ভেতরে সমস্ত জিনিস পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখুন। এন্টি জার্ম সল্যুশন দিয়ে ঘর মুছে ফেলুন ও জানালা দরজা সাফ সুতরো রাখুন।
- উজ্জ্বল আলো পোকামাকরকে উদ্দীপিত করে। তাই টিকটিকি ও ঘরে চলে আসে। তাই বেশি প্রয়োজন না হলে তা নিভিয়ে দিতে পারেন।
- পোকামাকড় এর বিনাশ ঘটান। খাদ্য না পেলে টিকটিকি ঘরে আসবেনা।
- বাড়িতে সম্ভব হলে বেড়াল পুশুন। বেড়াল টিকটিকি মেরে খেতে খুব ভালোবাসে।
- দেয়াল ঘেঁষে আসবাব পত্র রাখবেন না। কিছুটা দূরে রাখুন নাহলে সে ফাঁকে টিকটিকি আস্তানা গাড়বে।
- দেয়ালে ফাটল ধরলে তৎক্ষণাৎ সারান।
- বাথরুমে ভালো স্যানিটেশন ব্যবস্থা বজায় রাখুন।
ঘর থেকে আরশোলা তাড়ানোর উপায়