ট্রেন পরিবহনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। তাই দূরপাল্লার বেড়ানো হোক কি জরুরি চিকিৎসা মধ্যবিত্তের ট্রেনই ভরসা। আর ভ্রমণ হবে তাও ব্যাগপত্র ছাড়া এটাও কি সম্ভব! তাই মালপত্র নিয়ে যাতায়াতটাই স্বাভাবিক হলেও অনেকসময় অন্যমনস্ক হয়ে কিংবা ক্ষণিক এর অসাবধানতাবশত আমরা আমাদের লাগেজ ভুলে যাই ট্রেনের কামরাতেই।
এরকম সংকটে পড়লে একজন যাত্রীর কি কি করা উচিত সেটাই জানানো হবে এই লেখাতে। পড়ে রাখুন কথায় বলে সাবধানের মার নেই!
যে যে কাজগুলো করবেন ব্যাগ ট্রেনে রেখে নেমে পড়লে–
ভয় পাবেন না:
- ৮০% যাত্রীর ক্ষেত্রে এইরকম অবস্থায় পড়লে যে রিএক্সান প্রথমে দেখা যায় তা হলো বেদম ভয় পেয়ে প্যানিক হয়ে জ্ঞানবুদ্ধি হারিয়ে ফেলা।
- যদি এরকম ঘটনার মুখোমুখি হন সবার প্রথমে মাথা ঠান্ডা রাখুন তা সে নিজের লাগেজে যত টাকা কিংবা গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্টস থাকুক না কেন। নিজেকে বোঝান মাথা ঠিক রাখলে তবেই উদ্ধার করতে পারবেন।
- বাড়ির অন্যান্য সদস্যরা সাথে থাকলে তাদের ও শান্ত থাকতে বলুন ও ভয় পেতে বারণ করুন। সংযত হয়ে ভাবুন এবার কি করবেন। হুড়োহুড়ি করলে স্টেশনে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হবে ও আপনার আসল কাজটাই আর হবে না।
অ্যাপের সাহায্য নিন:
- দেখুন দুর্ঘটনা তো সব মানুষের সাথেই ঘটে থাকে। তাই এইসময় যে কাজটি সবার প্রথমে করতে পারেন তা হলো ভারতীয় রেলের নিজস্ব অ্যাপের সাহায্য নেয়া।
- যদি নিজের ফোন নিজের কাছে থাকে তাহলে তো ভালোই না হলে স্টেশন যে কারোর ফোন ধার নিয়ে প্লে স্টোর থেকে “Where is my train” এই অ্যাপ ডাউনলোড করে নিজের ট্রেনের কারেন্ট স্টেটাস চেক করে নিতে পারবেন।
- অনলাইনে এবার সার্চ করে যে স্টেশনে ব্যাগ হারিয়েছেন তার ডিটেলস ও আপনি যে স্টেশনে আছেন তার ডিটেলস পার্শ্ববর্তী জিআরপিকে দিন।
আরপিএফ এর সাহায্য:
- স্টেশনে এইসময় কোনো অজানা ব্যক্তির কাছে না গিয়ে সোজা যান সরকারী সাহায্যে। রেলওয়ে আপনাদের সুবিধের জন্য ১০০০০ এর ও বেশি স্টাফ নিয়োগ করেছে যাতে সুরক্ষিত হয় আপনার সফর।
- আরপিএফ বা রেলওয়ে পুলিশ ফোর্স এর অফিস, যে স্টেশনে আপনি আছেন ওখানেই পাবেন। সেখানে গিয়ে নিজের ব্যাগ এর কালার, সাইজ ও তাতে কি কি ছিল সব খুলে বলুন। তাদের প্রশ্নের উত্তর দিয়ে সহযোগিতা করবেন।
- উদ্ধার হলে সেই স্টেশনের প্ল্যাটফর্ম ইন্সপেক্টর তা তুলে দেবে আরপিএফকে। তাদের কাছ থেকে আপনি সেটা সংগ্রহ করে নেবেন।
- রিপোর্টে ট্রেনের নাম, কালার, পিএনার নম্বর ও সমস্ত নথির খুঁটিনাটি তথ্য পরিবেশন করুন। সাথে নিজের টিকিট এর ফটোকপি দিতে ভুলবেন না।
কল করুন ১৮২:
- এটা ভারতীয় রেলওয়ের সুরক্ষা হেল্পলাইন নম্বর। এটাতে যোগাযোগ করে আপনার ট্রেন নম্বর, বার্থ ও কোচ নম্বর ইত্যাদি সম্পর্কে তাদের অবগত করুন।
- কন্ট্রোল রুম থেকে নির্দিষ্ট স্টাফের দ্বারা অফিসিয়াল ভাবে যোগাযোগ করা হবে যে আপনার ট্রেন নেক্সট কোথায় হল্ট করছে। সেখান থেকে তা রেলওয়ে কর্মীরা উদ্ধার করবেন।
- আপনি ফোনে আপনার লাগেজের আপডেট পেতে থাকবেন। তবে এসি কামরা হলে উদ্ধার এর চান্স বেড়ে যায়।
সোশ্যাল মিডিয়া:
- আপনার সারাদিনের সঙ্গী সোশ্যাল মিডিয়াই এই ঘোর বিপদ থেকে উদ্ধার করে দিতে পারে। ইন্ডিয়ান রেলওয়ে টুইটার গভর্নেন্স এ সহায়তা প্রদান করছে।
- তাই অথরিটিকে সরাসরি নিজের অভাব অভিযোগ জানাতে পারেন দ্রুত সুরাহা পেতে। ইন্ডিয়ান রেল মিডিয়া বা #Indianrailmedia এই হ্যাশট্যাগ এ আপনার সমস্যার কথা জানিয়ে টুইট করতে পারেন।
- কুইক একশন টিম অভিযোগ খতিয়ে দেখে দ্রুত ব্যবস্থা নেবে।
স্টেশনমাস্টারকে জানান:
- মনে রাখুন ট্রেন পরিষেবা ও তার লোকজন আপনাদের সেবা ও নিরাপত্তার কাজেই নিয়োজিত। তাই নিজের প্রবলেম ব্যক্ত করতে কুন্ঠিত হবেন না যেন।
- যে স্টেশনে নেমেছেন সেখানকার মাস্টারকে যোগাযোগ করে আপনার অসুবিধে খুলে বলুন। তিনি আপনাকে জিআরপি অফিসে নিয়ে যাবেন ও সেখানে এফ আই আর দাখিল করতে বলবেন।
- কমপ্লেন লজ করে দিন। এটা তাদের দায়িত্ব যে তারা আপনার খোয়া যাওয়া সম্পত্তি উদ্ধার করে আপনার হাতে তুলে দেবে।
- খুঁজে পেল নিজের পরিচয় এর ভেরিফিকেশন করে নিজের জিনিস নিয়ে যেতে পারেন। তাই সতর্ক থাকুন ও সাবধানে সফর উপভোগ করুন।