ঘরে বসেই বানিয়ে নেওয়া যায় ত্বকের জন্য পারফেক্ট প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজার, যাতে থাকবে না কোনো ক্ষতিকর উপাদান কিংবা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া। প্রাকৃতিক এই উপাদানগুলো ত্বকের জন্যেও নিরাপদ আর অনেক বেশি কার্যকরও। ঘরে বসেই কিভাবে ময়েশ্চারাইজার তৈরি করা সম্ভব তা তো আমরা আজ জানবোই, তার আগে চলুন জেনে নেই আমাদের ত্বকের জন্য ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার কেন গুরুত্বপূর্ণ।
ত্বকে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহারের অন্যতম প্রধান কারন হচ্ছে ত্বককে আর্দ্র রাখা। শীতের ঠান্ডা আবহাওয়া কিংবা গরমের হাওয়া – আবহাওয়া যেমনই হোক বাতাস আমাদের ত্বকের আর্দ্রতা শুষে নেয়। তাই ত্বককে হাইড্রেটেড রাখতে নিয়মিত ময়েশ্চারাইজার লাগানো উচিত। তাছাড়া ত্বক হাইড্রেটেড থাকলে ত্বকে ব্রণ কম ওঠে, বলিরেখা দেখা দেয় না, স্কিন সফট রাখে এবং সূর্যের ক্ষতিকর আল্ট্রাভায়োলেট রশ্নি থেকে ত্বককে সুরক্ষা প্রদান করে।
অ্যালোভেরাতে থাকা অ্যামিনো অ্যাসিড ও অ্যান্টি ইনফ্ল্যামেটরি উপাদান ত্বকের জন্য খুবই উপকারী। প্রথমেই অ্যালোভেরার পাতা থেকে শ্বাস ছাড়িয়ে নিন। এক কাপ পরিমান অ্যালোভেরার শ্বাস সমপরিমান পানিতে ফুটিয়ে ছেঁকে নিন। ঠান্ডা হয়ে গেলে এর সাথে দুই চা চামচ পরিমান গ্লিসারিন, তিনটা ভিটামিন ই ক্যাপসুল, কয়েক ফোঁটা মধু ও তিন চামচ গোলাপজল ভালোভাবে মিশিয়ে নিন।
ব্যাস তৈরি হয়ে গেলো ঘরোয়া ময়েশ্চারাইজার। এবারে মুখ বন্ধ কাচের বোতলে এই ময়েশ্চারাইজার সংরক্ষন করুন। প্রতিদিন রাতে ঘুমানোর আগে হাত, পা ও মুখমন্ডলে এই ময়েশ্চারাইজারটি লাগালে পার্থক্য বুঝবেন অল্প কদিনেই।
আধা কাপ পরিমান নারকেল তেল গরম করে নিন। বেশ গরম থাকা অবস্থাতেই এতে কয়েকটা নিমপাতা পিষে দিন। ঠান্ডা হয়ে আসলে এতে দুই চা চামচ ল্যাভেন্ডার অয়েল, পাঁচটি ভিটামিন ই ক্যাপসুল ও চার/পাঁচ ফোঁটা ক্যাস্টর অয়েল মিশিয়ে নিন। মিশানো হয়ে গেলে মিশ্রণটি ছেঁকে ছোট স্প্রে বোতল অথবা মুখ বন্ধ কাঁচের বোতলে সংরক্ষন করুন।
প্রতিদিন স্নানের পর সারা শরীরে এই ময়েশ্চারাইজারটা ব্যবহার করুন। শুষ্ক ত্বকে এবং শীতকালে ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখতে এটি খুবই কার্যকরী একটি ঘরোয়া ময়েশ্চারাইজার। এই ময়েশ্চারাইজারটি ত্বকের পোরস কমায় ও চামড়ায় ভাঁজ পরা রোধ করে।
আমন্ড অয়েল ত্বকের জন্য খুবই উপকারী। বিশেষ করে সেনসেটিভ ত্বক হলে তো কথাই নেই। আমন্ড অয়েলের সাথে কোকো বাটার ভালোভাবে মিশিয়ে নিন। মিশ্রণটি ভালোভাবে মিশাতে সামান্য গরম করে নিন। ঠান্ডা হয়ে এলে এবার এতে তিন চামচ গোলাপজল ও এক চামচ মধু মিশিয়ে নিন।
ব্যাস। এবার মিশ্রণটি ছোট কাঁচের শিশিতে সংরক্ষন করুন। বেশি দিন রাখতে চাইলে কাঁচের শিশি ফ্রিজের নরমালে রাখতে পারেন। ত্বক হাইড্রেট রাখতে ও ত্বক কোমল রাখতে আমন্ড অয়েলের জুড়ি নেই।
অ্যাভোক্যাডোতে থাকা ভিটামিন এ ত্বককে উজ্জ্বল ও মসৃণ করে। এতে আরো রয়েছে পটাশিয়াম, আয়রণ, কপার ও ক্যালসিয়াম যা ত্বকের ময়েশ্চারাইজার হিসেবে কাজ করে। তাই প্রথমেই অ্যাভোক্যাডো পিষে এর রসটা আলাদা করে নিন।
অ্যাভোক্যাডোর রসের সাথে সমপরিমান ল্যাভেন্ডার অয়েল ও কয়েক ফোঁটা ক্যাস্টর অয়েল মিশিয়ে নিন। এবার মিশ্রণটি ছোট বোতলে ভরে নিন। ত্বক পরিষ্কার করে যে কোনো সময়ে লাগিয়ে নিতে পারেন ঘরে তৈরি এই প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজারটি।
এক কাপ পরিমান অলিভ অয়েলে কিছু নিমপাতা, টুকরো করে কাটা অ্যালোভেরার পাতা, মেথি ও সূর্যমুখী ফুলের বীজ দিয়ে জ্বাল করুন। মেথি, নিমপাতা ও সূর্যমুখী ফুলের বীজ একটু পিষে দিলে ভালো হয়। ভালো মত জ্বাল হয়ে গেলে চুলা থেকে নামিয়ে রাখুন। কয়েক ফোঁটা অ্যাসেন্সিয়াল অয়েল ও দুটো ভিটামিন ই ক্যাপসুল যোগ করুন।
ভালোভাবে মিশিয়ে ছেঁকে নিয়ে বোতলে ভরে রাখুন। প্রতিদিনই একটু সময় নিয়ে শরীর, হাত, পা ও মুখমন্ডলে এই ময়েশ্চারাইজারটা ম্যাসাজ করুন। এটি ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখার পাশাপাশি ত্বককে কোমল রাখবে এবং চামড়ার ঝুলে যাওয়া, উঠে যাওয়া রোধ করবে।
তো আর দেরি কেন? ঘরে বসেই তৈরি করে ফেলুন প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজার এবং ব্যবহার করে ফলাফল দেখুন।
আপনার মুখের রোমকূপ বা পোরসগুলি কি খুবই বড় বড়? আপনি টেকনিক্যালি এইসমস্ত পোর্স ছোট করতে…
পরিষ্কার নিটোল মুখ, অথচ থুঁতনিতে কালো কালো ব্ল্যাকহেডস! কেমন লাগে বলুন তো! সৌন্দর্যটাই নষ্ট হয়ে…
আগেকার দিনে বলা হত, লজ্জা নাকি নারীর ভূষণ। না, আজকের দিনে আমরা ওইসব কথা বলব…
বাড়ির দেয়ালে রকমারী রঙের ছ্বটা অনেকেরই সাধ ও শখের পরিচয় বহন করে। কিন্তু কিছু বছর…
ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা উচিত এই কথাটা আমরা সবাই জানি কম বেশি। কিন্তু কেন? কি উপকার…
প্রাচীনকালে যখন রূপচর্চার এত উপকরণ হাতের কাছে ছিল না, সেই সময় থেকেই রূপচর্চার অন্যতম উপকরণ…