দেখতে দেখতে হলিডে সিজিনের দোরগোড়ায় এসে পৌঁছেছি আমরা। থ্যাংকস গিভিং থেকে আরম্ভ করে ক্রিসমাস পার্টি আর নিউ ইয়ারের অপেক্ষা – এরমাঝে অপেক্ষা করছে হাজারো পার্টির জাঁকজমকপূর্ণ আহ্বান। যেখানে না বলবার জো নেই!
এমত অবস্থায় নিজের মেকআপ আর হেয়ারস্টাইল যেমন ধোপদুরস্ত চাই তেমনি শরীরের পরিচর্যা ও চাই ষোলআনা। নাহলে পুরো মরশুম জুড়ে নিজেকে ক্যারি করবেনই বা কিভাবে?
তাই নিজের যত্ন নিতে ফলো করুন এই টিপস গুলো।
ব্যালেন্স ডায়েট:
- ড্রিঙ্ক কাউন্টার ও বুফে টেবিলের মায়া এড়ানো সত্যই দুষ্কর হয়ে ওঠে। এ যেন উইল পাওয়ার এর এক নিদারুণ পরীক্ষা।
- পার্টির অস্বাস্থ্যকর খাবারকে ম্যানেজ করতে শরীরকে দিন ব্যালেন্সড ডায়েট। অনেকে সারাদিন কম খেয়ে পার্টিতে ক্যালোরি উসুল করার প্ল্যান করে। এই ফাঁদে মোটেই পা দেবেন না।
- পার্টিতে যাবার আগে হেলদি স্ন্যাক নিন যেগুলোতে ওমেগা থ্রি ফ্যাট বা পলিস্যাচুরেটেড কার্বন থাকবে না।
- সারাদিনের জন্য একটা তুল্যমূল্য বিচার করে খাবার তালিকা প্রস্তুত করুন। যেগুলোতে এই আইটেমগুলো রাখতে পারেন – স্পিন্যাচ, ব্রকোলি, ফ্রেঞ্চ বিন, ব্রাউন রাইস, আটার রুটি, ডিমের সাদা অংশ, মাইল্ড হ্যাম এবং ছোট মাছ। এগুলো লিন প্রোটিন, কার্ব ও রিচ ফাইবার এ সমৃদ্ধ।
বারে বারে খান:
- একবারে খাবার গোগ্রাসে খেলে তা শরীরের প্রভূত ক্ষতি করে। তার বদলে খাবার অল্প অল্প করে বারে বারে খাওয়া অভ্যাস করুন। ঘুম থেকে উঠেই ১-২ ঘন্টার মধ্যে ব্রেকফাস্ট করুন। তারপর থেকে প্রত্যেক ২-৩ঘন্টায় কম কম করে খান।
- কখনোই ওভারইটিং করবেন না। শরীরের ভারসাম্য বিগড়ে দিতে এর জুড়ি নেই। বডির মেটাবলিজম রেট ও কমে যায় এর ফলে।
- অল্প অল্প করে খেলে মেদ ঝরার গতি ও দ্রুত হয় যার ফলে আপনি থাকতে পারবেন পুরো স্লিম এবং ট্রিম। এসিডিটির মাত্রা ও কমে যায়। ফলে পার্টিতে গিয়ে আপনাকে উদ্বেগে পড়তে হবেনা।
লেট নাইট সাবধানবাণী:
- পার্টিতে লোভনীয় পদ দেখে জিভে জল আসলেও আপনাকে থাকতে হবে সংযত যদি লংটার্মে নিজেকে সুস্থ রেখে এনজয় করতে চান।
- তাই পার্টিতে এলকোহল একদম ছোঁবেন না। সাপ্লিমেন্ট হিসাবে জুস বা মকটেল নিন। এলকোহল আপনাকে করে ডিহাইড্রেট যা পরের দিন আপনাকে হ্যাংওভার দিয়ে অফিসের বারোটা বাজাবে।
- মিট ও চিজ জাতীয় জিনিস এড়ানোর চেষ্টা করুন। শরীরে কোলেস্টেরল ও ট্রাইগ্লিসারিয়েড এর মাত্রাকে বাড়িয়ে চরম সর্বনাশ ডেকে আনে।
- নিজের পরিপাকক্রিয়াকে বাড়াতে ও ওয়েট গেন না করতে চাইলে শুতে যাবার ১ ঘন্টা আগে কিছু খাবেন না। স্টু বা সুপ অবশ্য চলতে পারে।
এক্সারসাইজ চলুক ডেলি:
- পার্টি লোকেশন কাছেপিঠে হলে হেঁটে চলে যান আরামসে। পার্টি করে জমা ফ্যাট বার্ন করতে ও নিজেকে ফিট রাখতে এর চেয়ে ভালো কিছু হয় না।
- কার্ডিও কিকবক্স ট্রেনিং, বুট ক্যাম্প ওয়ার্ক আউট, ট্রেডমিল ইত্যাদি ট্রাই করতে পারেন।
- সকালে কফি বানাতে বা দাঁত মাজতে মাজতে স্কোয়াটিং বা হিল প্রেস এর মত এক্সারসাইজ গুলো করে নিতে পারেন জিমে যাবার সময় না থাকলে।
হাইড্রেটেড রহো হামেশা:
- জল কতটা খাবেন সেই নিয়ে সবসময়ই ধন্ধে থাকেন আপনি। এমনিতে ৭-৮গ্লাস জল খাওয়া দিনে স্বাস্থ্যকর বলে ধরা হয়।
- কিন্তু পারফেক্ট হিসেব পেতে নিজের বডি ওয়েট নিন। সেটাকে হাফ করুন। এবার হাফ এর চার ভাগ করে নিন। সেই চারভাগ এর একভাগ পরিমান জল আপনার শরীরের নিত্যদিন প্রয়োজন হয়।
- পার্টি সিজিনে দৌড়ঝাঁপ চলতেই থাকে সাথে রাত জাগার জন্য চোখের নিচে ডার্ক সার্কেল। শরীরে পাল্লা দিয়ে বাড়ে টক্সিন। তাই এইসব ঝঞ্ঝাট থেকে দূরে থাকতে জল পান করুন প্রাণ ভরে।
থাকুন রিল্যাক্সড ও উপভোগ করুন ভরপুর:
- পার্টিতে ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট বা কেনাকাটার দায়িত্ব থাকলে এমনিতেই স্ট্রেস বেড়ে যায়।অতিরিক্ত স্ট্রেস না নিয়ে বন্ধু ও ফ্যামিলির সাথে মোমেন্ট এনজয় করুন।
- ব্যাক টু ব্যাক পার্টি পড়লে শরীরে আস্তে পারে অবসাদ। এগুলো এড়াতে আধ বা একঘন্টার পাওয়ার ন্যাপ নিয়ে নিন।
- খাবারদাবার বা রাত জাগা বা অন্য কারণে অসুস্থ হলে নিজে থেকে গাদা গাদা বড়ি না খেয়ে ডাক্তারি পরামর্শ নিন।
- সর্বোপরি নিজের শরীরের চাহিদা কেমন এবং কনজিউম এর ক্ষমতা, আপনার থেকে ভালো কেউ জানেনা। তাই সেদিকে লক্ষ দিয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করুন।