কোনো অনুষ্ঠান পার্বনে বেরোলে আমরা মেয়েরা নিজেদেরকে সাজিয়ে গুছিয়ে সুন্দর করে তৈরি করে নিই আর মনে মনে আশা করি যে আমাদের যেন সকলেই প্রশংসা করেন। আমাদের মুখের সাথে সাথে আমরা আমাদের হাত পা গুলোকেও যখন পরিচর্যা করে সুন্দর করে তুলতে পারি তখনই আমাদের সাজটা সম্পন্ন হয়। কিন্তু অনেকেই মুখে মেকআপ করে চলে যান কিন্তু হাত পায়ের দিকে সেভাবে নজর দেন না, অনেকে আবার জানেনই না যে কীভাবে হাত পায়ের পরিচর্যা করা উচিত। তাই আজ হাত-পা মসৃণ রাখতে ১৪ টি ঘরোয়া প্যাকের কথাই আমি আপনাদের বলব, যেগুলো ব্যবহার করলে আপনারা হাতেনাতে ফল পাবেন।
বাদামি চিনি ও অলিভ অয়েল এই দুটি উপাদান সমপরিমাণে মিশিয়ে নিন, এরপর হাতে চামড়ার ওপর এই দুটি উপাদান মাখতে থাকুন। এমনটা করতে থাকলে আস্তে আস্তে মরা চামড়া ও মৃত কোষের অপসারণ ঘটবে ও একই সাথে হাত হয়ে উঠবে তুলতুলে ও মসৃণ।
এই প্যাকটি বানানোর জন্য
তিন থেকে চারটে ডিমের কুসুম ভালোভাবে ফেটিয়ে নিন, এরপর তার মধ্যে কয়েক ফোঁটা গোলাপ জল মিশিয়ে দিন। এই মিশ্রণের মধ্যে হাত ডুবিয়ে ১০ মিনিট ধরে দুই হাত ভালোভাবে ডলতে থাকুন, এরফলে এই মিশ্রণটি হাতের প্রত্যেকটি অংশে ভালোমতো পৌঁছে যাবে, এরপর হাতটা ধুয়ে শুকিয়ে নিন।
হাতের মসৃণতা পেতে চাইলে ননীযুক্ত দুধের দই ও একটু মধু মিশিয়ে দুই হাতে ভালো করে মেখে নেবেন। তারপর কিছুক্ষণ রেখে দিন, দুই হাত শুকিয়ে গেলে হাতদুটো হালকা গরম জলে ধুয়ে নিলেই দেখবেন দুইহাত মসৃন ও সুন্দর হয়ে গেছে। এই প্যাকটি সপ্তাহে দুই বার ব্যবহার করতে পারলে ভালো ফলাফল দেখতে পাবেন ।
একটি পাত্রে আধ কাপ আনারস, আধ কাপ পাকা পেঁপে ও সমপরিমাণ মধু নিয়ে নিন। এরপর এই গুলিকে একসাথে মিশিয়ে একটা পেস্ট তৈরি করে নিন। এরপর এই মিশ্রণ হাতের কনুই ও বাহুতে লাগিয়ে রাখুন কিছুক্ষণের জন্য। প্যাকটি শুকিয়ে গেলে হালকা গরম জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। প্রতি সপ্তাহে দুইদিন এই প্যাকটি ব্যবহার করুন, এতে ত্বক যেমন উজ্জ্বল হবে তেমনি মসৃণ হবে।
প্রথমে একটি পাকা পেঁপে ভালো করে হাত দিয়ে মেখে পেস্ট বানিয়ে নিন, তারপর এর মধ্যে এক চা চামচ মধু ও এক চা চামচ কাঁচা দুধ মিশিয়ে একটি প্যাক তৈরি করুন। এবার এই মিশ্রণটি হাতে লাগিয়ে স্ক্রাবিং করুন তারপর মিনিট পনেরো কুড়ি এভাবেই রেখে দিন। হাতে এই মিশ্রণটি শুকিয়ে গেলে হালকা গরম জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এই প্যাকটি সপ্তাহে একবার ব্যবহার করলেই ত্বক মসৃণ হবে, এছাড়া রাতে সমস্ত কাজ সারবার পরে ঘুমানোর ঠিক আগে পেট্রোলিয়াম জেলি মাখিয়ে নিতে পারেন, এর ফলেও উপকার পাবেন, হাত মসৃন হয়ে যাবে।
একটি পাত্রে সমপরিমাণে টমেটোর রস ও শসার রস নিয়ে নিন এরপর এরমধ্যে দিন পরিমাণমতো ব্যাসন, তারপর একসাথে মিশিয়ে পেস্ট করে দিন। সামান্য পরিমাণ লেবুর রস এর মধ্যে দিতে পারেন, এর পর এই মিশ্রণটি আপনার পায়ে লাগিয়ে নিন, শুকিয়ে গেলে জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে ১ থেকে ২ বার এই প্যাক টি ব্যবহার করলে হাতেনাতে পার্থক্য বুঝতে পারবেন।
নারকেল তেল আর নুন একসাথে মিক্সড করে পায়ের ত্বকে মেসেজ করে লাগিয়ে নিন। চাইলে এর মধ্যে লেবুর রস ও নিতে পারেন। এরপর হালকা গরম জলে আপনার পা দুটি কিছুক্ষণ ভিজিয়ে রাখুন ও আস্তে আস্তে পায়ের ত্বক থেকে প্যাকটি উঠিয়ে ফেলুন। এরপর পরিষ্কার জল দিয়ে পা ধুয়ে ফেলুন। পরপর কয়েক দিন এই প্যাকটি যদি ব্যবহার করেন তাহলে পায়ের ত্বকের মধ্যে রুক্ষ ভাব চলে যাবে ও পায়ের ত্বক মসৃন হয়ে যাবে। কারণ নারকেল তেল যেমন ময়েশ্চারাইজার হিসেবে খুব ভালো কাজ করে তেমনি নুনও মৃত কোষগুলিকে স্কার্বিংয়ের মাধ্যমে দূর করে ফেলে।
একটি পাত্রে পরিমাণমতো বেসন নিন এরপর তারমধ্যে পরিমাণমতো মধু , সামান্য পরিমাণ লেবুর রস ও ১ থেকে ২ চামচ মত অলিভ অয়েল মিশিয়ে একটা প্যাক তৈরি করে নিন। এরপর এটা পায়ে লাগান। প্যাকটি শুকিয়ে গেলে ঠান্ডা জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এতে পায়ের ত্বক মসৃণ হয়ে যাবে। এই প্যাকটি দুই থেকে তিন দিন অন্তর ব্যবহার করুন।
একটি পাত্রে আন্দাজমতো চালের গুঁড়ো নিন, এরপর এই পাত্রের মধ্যে পরিমাণমতো শসা ও গাজরের রস মিশিয়ে নিন। তিনটিকে একসাথে মিক্সড করুন এরপর পায়ের ত্বকে মালিশ করুন। কিছুক্ষণ রেখে হালকা গরম জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন ও একটা তোয়ালে জাতীয় কিছু দিয়ে পা টা মুছে নিন। এই প্যাকটি সপ্তাহে দুই থেকে তিনবার ব্যবহার করলেই তফাৎ নিজের চোখে দেখতে পাবেন।
আধ কাপ টক দই ও আধ চা চামচ সিরকা (ভিনেগার) একটি পাত্রে নিয়ে ভালো মতো মিশিয়ে নিন তারপর এই মিশ্রণটি পা ও গোড়ালিতে ভালো মতো মালিশ করুন। তারপর হালকা গরম জলে পা ধুয়ে নিয়ে পায়ে মশ্চারাইজার লাগিয়ে নিন। যেকোনো ধরনের ত্বকে এই প্যাক ব্যবহার করা যাবে।
হাতে ও পায়ে ব্যবহার করা যাবে এমন দুটি ঘরোয়া প্যাকঃ
একটি পাত্রে এক চামচ নারকেল তেলের সাথে আধ চামচ লেবুর রস মিশিয়ে নিন ও হাতে মালিশ করুন। এটি স্ক্রাবিংয়ের কাজ করে ফলে এটির ব্যবহারে ত্বক উজ্জ্বল হয়ে ওঠে। যাদের ড্রাই স্কিন বা নর্মাল স্কিন তারা এই প্যাকটির ব্যবহার করলে ভালো ফল পাবেন। তবে তৈলাক্ত ত্বকের ক্ষেত্রে এই প্যাকটি ব্যবহার না করলেই ভালো। এই প্যাকটি হাতের সাথে সাথে পায়েও ব্যবহার করতে পারেন, তাতে পা মসৃণ হবে।
যাদের ত্বক অত্যন্ত পরিমাণে তৈলাক্ত তারা নারকেল তেলের বদলে অ্যালোভেরা জেলের সাথে চিনি মিশিয়ে একটি প্যাক তৈরি করতে পারেন, তারপর সেই দিয়ে হাতে মালিশ করতে পারেন। এই স্ক্রাবিংয়ের ফলে ত্বকের রোদে পোড়া ভাব যেমন দূরে চলে যাবে তেমনি ত্বক মসৃণ ও হবে আর এই প্যাকটিও হাতের সাথে সাথে পায়ে ব্যবহার করা যাবে।
প্রথমে পরপর কয়েক দিন রোদে কমলার খোসা গুলোকে রেখে ভালো করে শুকিয়ে নিতে হবে। এইভাবে কমলার খোসা গুলোকে শুকিয়ে নেওয়ার পর সে গুলোকে ভাল করে গুঁড়ো করে নিতে হবে তারপর সেই গুঁড়োটুকুকে কোন একটি পাত্রে দীর্ঘদিন সংরক্ষণ করে রাখতে পারবেন। প্যাক তৈরি করবার জন্য এই গুঁড়োর থেকে ৪ টেবিল চামচ কমলার শুকনো খোসার গুঁড়ো নিয়ে তার সাথে কাঁচা দুধ মিশিয়ে খুব ভালোভাবে একটা মিশ্রণ বানিয়ে নিতে হবে এরপর এই মিশ্রণটি আপনার হাতে ও পায়ে ভালো করে লাগিয়ে নিন। মিনিট কুড়ি পর এই মিশ্রণটি হাতে-পায়ে শুকিয়ে গেলে ঠান্ডা জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে তিনদিন এই প্যাকটি ব্যবহার করলে খুব ভালো ফলাফল পাবেন।
একটি পাত্রে দুই টেবিল চামচ ব্যাসন, ১ চা চামচ হলুদ গুঁড়ো ও দুই টেবিল চামচ গোলাপজল মিশিয়ে একটা মিশ্রণ তৈরি করুন। তারপর এই মিশ্রণটি হাতে-পায়ে লাগিয়ে নিন, কিছুক্ষণ রেখে জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। হাত-পা মসৃণ হওয়ার সাথে সাথে উজ্জ্বল ও হয়ে উঠবে।
আপনার মুখের রোমকূপ বা পোরসগুলি কি খুবই বড় বড়? আপনি টেকনিক্যালি এইসমস্ত পোর্স ছোট করতে…
পরিষ্কার নিটোল মুখ, অথচ থুঁতনিতে কালো কালো ব্ল্যাকহেডস! কেমন লাগে বলুন তো! সৌন্দর্যটাই নষ্ট হয়ে…
আগেকার দিনে বলা হত, লজ্জা নাকি নারীর ভূষণ। না, আজকের দিনে আমরা ওইসব কথা বলব…
বাড়ির দেয়ালে রকমারী রঙের ছ্বটা অনেকেরই সাধ ও শখের পরিচয় বহন করে। কিন্তু কিছু বছর…
ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা উচিত এই কথাটা আমরা সবাই জানি কম বেশি। কিন্তু কেন? কি উপকার…
প্রাচীনকালে যখন রূপচর্চার এত উপকরণ হাতের কাছে ছিল না, সেই সময় থেকেই রূপচর্চার অন্যতম উপকরণ…