ঝলমলে সুন্দর স্বাস্থ্যোজ্জ্বল চুল আমরা সকলেই চাই। কিন্তু আমাদের দেশের আবহাওয়া, পানির সমস্যা, আমাদের অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা, পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহন না করা, হরমোনের সমস্যা, উঁকুন, খুশকি ইত্যাদি নানা কারনে চুল পরে যায়। বর্তমানে একদম শিশু থেকে বৃদ্ধ পর্যন্ত সব বয়েসী মানুষেরই এটি একটি প্রধান সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে চিন্তা নেই, এই সমস্যা সমাধানেরও উপায় আছে।
চুল পরে যাওয়া ঠেকাতে ব্যবহার করুন হেয়ার প্যাক। হেয়ার প্যাক সাধারণত তৈরি হয় ভেষজ উপাদান দিয়ে, যার বেশিরভাগ উপকরন আপনার ঘরেই আছে। এসব প্রাকৃতিক উপাদানের ব্যবহারে কোনো ধরনের সাইড ইফেক্ট দেখা যায় না। বরং ধৈর্য ধরে নিয়মিত ব্যবহার করলে খুব দ্রুতই রোধ হবে আপনার চুল পরা। সেই সাথে চুলের রুক্ষতা ও ভেঙ্গে পরা দূর হয়ে চুল হয়ে উঠবে কোমল, মজবুত ও উজ্জ্বল। পুরনো চুল তো পরবেই না, সাথে নতুন চুলও গজাবে।
তো আসুন জেনে নেই পাঁচটি কার্যকরী হেয়ার প্যাক সম্পর্কে, যার যে কোনো একটির নিয়মিত ও যথাযথ ব্যবহারে আপনার চুল পরা রোধ হবে মাত্র দুই সপ্তাহেই। আমি নিজেও এই হেয়ার প্যাকগুলো ব্যবহার করেছি।
এই হেয়ার প্যাকটির সব সরঞ্জামই একটু খুঁজলে আপনার ঘরেই পেয়ে যাবেন। এটি তৈরি করতে আপনার দরকার হবে ডিম, টকদই, নারকেল তেল, মধু আর একটি কলা। দুটো ডিমের সাদা অংশ ভালো ভাবে ফেটিয়ে নিন। একটি পাকা কলা হাত দিয়ে চটকে নিন যেন পুরোটা নরম পেস্টের মত হয়ে যায়। কলার সাথে তিন টেবিল চামচ মধু ও আপনার চুল অনুযায়ী নারকেল তেল মিশিয়ে নিন। এবার ফেটানো ডিমের সাথে টকদই এবং কলা, মধু ও নারকেল তেলের মিশ্রণটি খুব ভালো করে মিশিয়ে নিন।
এতে একটি পাতলা পেস্ট তৈরি হবে। এবার এই পেস্ট চুলের গোড়া থেকে শুরু করে আগা পর্যন্ত আলতো হাতে বিলি কেটে কেটে লাগিয়ে নিন। এক ঘন্টা পর শ্যাম্পু করে ফেলুন। এক দিন পরপর এই প্যাকটি ব্যবহার করুন। মধু যদি আপনার স্ক্যাল্পে স্যুট না করে তাহলে মধুর পরিবর্তে গোলাপজল অথবা অ্যালোভেরা জেল ব্যবহার করতে পারেন। কিংবা না করলেও সমস্যা নেই।
এই হেয়ার প্যাকটি তৈরি করতে লাগবে কাঁচা দুধ, ক্যাস্টর অয়েল, ভিটামিন ই ক্যাপসুল এবং পাঁকা পেঁপে। প্রথমেই পাঁকা পেঁপে হাত দিয়ে কচলে নরম পেস্ট করে নিন। চাইলে ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করে নিতে পারেন, এতে পেস্ট আরো মিহি হবে। এতে আপনার চুলের পপিমান অনুযায়ী কাঁচা দুধ মিশিয়ে নিন। পেস্ট বেশি পাতলা করবেন না।
এবারে এই পেস্টে ক্যাস্টর অয়েল এবং দুটি ভিটামিন ই ক্যাপসুলের নির্যাস নিয়ে ভালো করে মিশিয়ে ফেলুন। মাথার স্ক্যাল্পে ঘষে ঘষে চুলের গোড়ায় এই পেস্ট লাগিয়ে ফেলুন। এক থেকে দেড় ঘন্টা পর পেস্ট শুকিয়ে গেলে শ্যাম্পু করে ফেলুন। এক সপ্তাহ নিয়মিত ব্যবহারেই দেখবেন চুল পরা কমে গেছে।
পেঁয়াজের এই হেয়ার প্যাকটি তৈরি করতে আপনার লাগবে লেবুর রস, অ্যালোভেরা জেল এবং অবশ্যই পেঁয়াজ। পেঁয়াজ খোসা ছাড়িয়ে ধুয়ে পরিষ্কার করে কুঁচিয়ে নিন। এবার ব্লেন্ডারে দিয়ে অথবা শিল-পাটায় বেটে পেস্ট করে নিন। এই পেস্টের সাথে সামান্য কয়েক ফোঁটা লেবুর রস এবং পরিমানমত অ্যালোভেরা জেল মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। এবারে একটি পরিস্কার হাতে ঘষে ঘষে চুলের গোড়ায় পেস্টটি লাগিয়ে ফেলুন।
আপনি চাইলে পেঁয়াজের পেস্ট ছেঁকে রস করে সেই রসের সাথে লেবুর রস ও অ্যালোভেরা জেল মিশিয়ে লাগাতে পারেন। সেক্ষেত্রে হেয়ার ব্রাশ দিয়ে মিশ্রণটি চুলের গোড়ায় লাগাবেন। এরপর শাওয়ার ক্যাপ দিয়ে চুল ঢেকে শুকিয়ে যাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। এবারে মাইল্ড শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে তিন দিন এই প্যাক ব্যবহার করেই দেখুন তো কমে কিনা আপনার চুল পরা।
এই হেয়ার প্যাকটি দ্রুত চুল পরা বন্ধ করতে খুবই কার্যকর। এটি তৈরি করতে আপনার প্রয়োজন হবে মেথি, গোলাপজল এবং কালোজিরার তেল। প্রথমেই মেথি পরিস্কার করে নিন। হালকা কুসুম গরম পানিতে মেথি দশ থেকে বার ঘন্টা ভিজিয়ে রাখুন। যেদিন প্যাক লাগাবেন তার আগের রাতে ভিজিয়ে রাখলেই হবে। সকালে পানি ছেঁকে নিন, তবে মেথি ভেজানো পানিটা ফেলবেন না।
মেথি বেটে অথবা ব্লেন্ডারে পেস্ট করে নিন। এর সাথে অল্প কালোজিরার তেল এবং গোলাপজল মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। মাথার স্ক্যাল্পে এবং পুরো চুলে এই প্যাকটি লাগিয়ে এক ঘন্টা অপেক্ষা করে শ্যাম্পু করে নিন। শ্যাম্পু করার পর মেথি ভেজানো পানি দিয়ে চুল ধুয়ে নিন। তিন দিন পরপর এই প্যাকটি ব্যবহার করুন। তৃতীয়বার ব্যবহারের আগেই কমে যাবে চুল পরা।
চা জ্বাল দিয়ে পাতাটা ছেঁকে ফেলে দিই আমরা। কিন্তু এই ফেলে দেয়া চা পাতাই হতে পারে আপনার চুল পরা বন্ধের কারন। এই প্যাক তৈরি করতে দরকার হবে জ্বাল দেয়া চা পাতা, ল্যাভেন্ডার অয়েল, অলিভ অয়েল এবং সামান্য অ্যাপেল সিডার ভিনেগার।
চাপাতা জ্বাল দিয়ে ছেঁকে নিন এবং জ্বাল দেয়া চায়ের পানিটা আলাদা ভাবে তুলে রাখুন।। এর সাথে অন্যান্য সব উপকরন মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। এটি চুলের গোড়ায় বিলি কেটে লাগিয়ে নিন। শুকিয়ে যাবার পর শ্যাম্পু করে নিন। শ্যাম্পু করার পর আলাদা করে রাখা চায়ের পানি দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে দুই দিন ব্যবহার করলেই চুল পরা কমে যাবে মাত্র দুই সপ্তাহেই।
আপনার মুখের রোমকূপ বা পোরসগুলি কি খুবই বড় বড়? আপনি টেকনিক্যালি এইসমস্ত পোর্স ছোট করতে…
পরিষ্কার নিটোল মুখ, অথচ থুঁতনিতে কালো কালো ব্ল্যাকহেডস! কেমন লাগে বলুন তো! সৌন্দর্যটাই নষ্ট হয়ে…
আগেকার দিনে বলা হত, লজ্জা নাকি নারীর ভূষণ। না, আজকের দিনে আমরা ওইসব কথা বলব…
বাড়ির দেয়ালে রকমারী রঙের ছ্বটা অনেকেরই সাধ ও শখের পরিচয় বহন করে। কিন্তু কিছু বছর…
ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা উচিত এই কথাটা আমরা সবাই জানি কম বেশি। কিন্তু কেন? কি উপকার…
প্রাচীনকালে যখন রূপচর্চার এত উপকরণ হাতের কাছে ছিল না, সেই সময় থেকেই রূপচর্চার অন্যতম উপকরণ…