ফেসিয়াল করলে ত্বক হবে স্থায়ীভাবে ফর্সা, উজ্জ্বল, এবং আকর্ষণীয়। এটি ত্বক থেকে যেকোন দাগ, ব্রণ, ধুলো-ময়লা, ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া, মৃত কোষ, বলিরেখা ইত্যাদি দূর করে ত্বককে বানায় কোমল ও মসৃণ।
গোল্ড ফেসিয়াল নিয়ে এই পর্বে থাকছে ঘরোয়া ও প্রফেশনাল গোল্ড ফেসিয়াল নিয়ে বিস্তারিত। জানবেন কিভাবে ঘরে বসে এই গোল্ড ফেসিয়াল করলে ১ ঘন্টায় মুখে উজ্জ্বলতা আসবে, সাথে প্রফেশনাল ফেসিয়াল কিট ব্যবহারের পদ্ধতি। ঘরোয়া পদ্ধতিতে গোল্ড ফেসিয়াল করলে মাসে একবার করতে হবে। আর প্রফেশনাল কিট ব্যবহার করলে মাসে সর্বোচ্চ দুইবার ফেসিয়াল করতে পারবেন।
প্রথমে জেনে নিন ঘরোয়া ভাবে গোল্ড ফেসিয়াল করার পদ্ধতি স্টেপ বাই স্টেপ।
গোল্ড ফেসিয়ালের জন্য ক্লিনজিং সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ। মুখ ভিতর থেকে পরিষ্কার না হলে ফেসিয়াল মুখে ঠিকভাবে বসবেনা, আর স্বর্ণের মতো উজ্জ্বলতা পাওয়াও মুশকিল হয়ে যাবে। তাই সবার আগে ত্বকের সাথে মানানসই ফেসওয়াশ দিয়ে মুখ ধুয়ে নিবেন।
তারপরে পাকা টমেটোর একটি স্লাইস দিয়ে পুরো মুখটা ঘষে ঠান্ডা পানিতে ধুয়ে ফেলবেন। এবারে কাঁচা তরল দুধে তুলা ভিজিয়ে মুখ ২-৩ মিনিট ধরে মাসাজ করুন। ১০ মিনিট পরে ধুয়ে ফেলুন, এটি লোমকূপের ময়লা তুলে ফেলতে কাজ করে। আপনার চেহারা এখন গোল্ড ফেসিয়ালের জন্য প্রস্তুত।
দ্বিতীয় ধাপ অর্থাৎ স্ক্রাবিং ত্বকের জেদি দাগ হালকা করবে, ত্বক নরম করবে, এবং ব্লাড সার্কুলেশন বাড়িয়ে দিবে। ফলে মুখের ত্বক দেখাবে ন্যাচারালি উজ্জ্বল এবং প্রাণবন্ত। স্ক্রাবারও ঘরে থাকা উপকরণ দিয়ে বানাতে পারবেন।
১ টেবিল চামচ চিনি, ১ টেবিল চামচ লেবুর রস, এবং ১ টেবিল চামচ মধু একসাথে মিশিয়ে নিন। এই মিশ্রণটি মুখে ৫ মিনিট ধরে মাসাজ করে ১০ মিনিট রেখে এরপরে ঠান্ডা পানিতে ধুয়ে ফেলুন। চাইলে চিনি, পরিমাণমতো পানি, আর চাক চাক করে কাটা কাঁচা হলুদ দিয়েও স্ক্রাবার বানাতে পারেন। হলুদের টুকরাতে পানি মেশানো চিনি লাগিয়ে স্ক্রাব করবেন।
এই ধাপে কুসুম গরম পানির ভাপ মুখে নিতে হবে। আপনি দুইভাবে স্টিমিং করতে পারেন মুখে। উষ্ণ পানিতে তোয়ালে ভিজিয়ে পানি নিংড়ে ৩ মিনিট মুখে হালকা রাব করে মুছে নিবেন, এভাবে ৫ বার করতে হবে। অথবা ফুটন্ত গরম পানির উপর মুখ রেখে বড় তোয়ালে দিয়ে মাথা ঢেকে ১০-১৫ মিনিট সরাসরি ভাপ নিতে পারেন, যেভাবে ঠান্ডা লাগলে করে থাকেন। সরাসরি স্টিমিং করাটা তুলনামূলকভাবে বেশি কার্যকরী কারণ ভাপটা মুখের সাথে সাথে মস্তিষ্কের স্নায়ুতে চলে যায়। এতে স্নায়ুর চাপ প্রশমিত হয়, স্নায়ু তৎপর থাকে, এবং মুখের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে সাহায্য করে৷
গোল্ড ফেসিয়ালের সর্বশেষ ধাপ হচ্ছে গোল্ড ফেসপ্যাক ব্যবহার করা। এই প্যাকটিও দুইভাবে প্রস্তুত করতে পারেন।
যেকোন একটি পদ্ধতির উপকরণগুলো একসাথে ভালো করে মিশিয়ে মুখে ৫ মিনিট ধরে মাসাজ করুন। তারপর ২০-৩০ মিনিট রেখে এরপর স্বাভাবিক পানিতে মুখ ধুয়ে নিন। সবশেষে তোয়ালে দিয়ে আলতো করে মুখ মুছে নিন। গোল্ড ফেসপ্যাকে ব্যবহৃত প্রতিটি উপাদানই ত্বকের উজ্জ্বলতা ন্যাচারালি বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করে। ফলে স্কিন দেখায় স্বর্ণের মতো চকচকে।
বাজারের গোল্ড ফেসিয়াল কিট দিয়েও ১ ঘন্টায় পেতে পারেন উজ্জ্বল ও সুন্দর ত্বক। সংক্ষেপে জেনে নিন কিভাবে এই কিট ব্যবহার করবেন। তবে কিট ব্যবহারের আগে ত্বককে প্রস্তুত করার জন্য নিচের দুইটি ধাপ অনুসরণ করুন।
ক্লিনজিং মিল্ক বা ক্লিনজার সারা মুখে আর গলায় লাগিয়ে নিন। আঙুলের ডগা দিয়ে ৫-৭ মিনিট মাসাজ করে পরিষ্কার তুলা বা ব্রাশ দিয়ে মুছে নিন।
গরম পানির উপর মুখ রেখে এবং তোয়ালে দিয়ে ঢেকে সরাসরি স্টিমিং করুন ৫ মিনিট। এরপর তুলা দিয়ে গলা ও মুখ মুছে নিন, এতে করে লোমকূপের ময়লা পরিষ্কার হয়ে যাবে। প্রস্তুতিপর্ব শেষ, এবারে গোল্ড ফেসিয়ালের স্টেপগুলো অনুসরণ করুন।
প্রথমে কিট থেকে গোল্ড ক্লিনজার বের করে অল্প পরিমাণে মুখে আর গলায় সার্কুলার মোশনে ৫ মিনিট মাসাজ করুন। এরপরে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন অথবা তুলা দিয়ে মুছে ফেলুন।
অল্প পরিমাণে গোল্ড স্ক্রাব নিয়ে পুরো মুখে বৃত্তাকারে স্ক্রাব করুন, অবশ্যই চোখের গোলাকার অংশ বাদ রাখবেন। ৫ মিনিট স্ক্রাব করে পানিতে মুখ ধুয়ে ফেলুন।
পরিমাণমতো গোল্ড ক্রিম নিয়ে মুখে আর গলায় লাগিয়ে ৫-৭ মিনিট বৃত্তাকারে মাসাজ করুন। পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন অথবা তুলা ভিজিয়ে মুছে ফেলুন।
এরপরে গোল্ড ফেসিয়াল জেল নিয়ে মুখে আর গলায় ৫ মিনিট ধরে মাসাজ করুন এবং পানি অথবা ভেজা তুলা দিয়ে মুছে ফেলুন। এই জেল ত্বকে শীতল অনুভূতি এনে দিবে।
এই স্টেপে ফেসিয়াল কিটে থাকা ট্রিটমেন্ট প্যাকটি বের করে পরিমাণমতো নিয়ে মুখে (চোখ আর ঠোঁটের অংশ বাদে) আর গলায় লাগিয়ে নিন। শুকিয়ে যাওয়া পর্যন্ত চুপচাপ শুয়ে অপেক্ষা করুন। শুকিয়ে আসলে ভেজা আঙুল দিয়ে আস্তে করে রগড়ে প্যাকটি তুলে ফেলুন। অথবা পিল-অফ মাস্ক হলে একটু একটু করে টেনে তুলুন। তারপর ঠান্ডা পানিতে মুখ আর গলা ধুয়ে ফেলবেন।
সবশেষে অয়েল ফ্রি ময়েশ্চারাইজার দিয়ে পুরো মুখ আর গলা মাসাজ করে নিন।
গোল্ড ফেসিয়াল করার সময় চোখে, ঠোঁটে, কিংবা মুখের ভিতরে যাতে কোন উপাদান না যায় সেদিকে খেয়াল রাখবেন। আর ফেসিয়ালের সময় মুখে আলতো করে মাসাজ করবেন। গোল্ড ফেসপ্যাক লাগিয়ে রোদে বা ধুলার ভিতরে যাবেন না, এমনকি ফেসিয়ালের পরে ৩-৪ দিন ঘরে থাকার চেষ্টা করবেন। নাহলে বাইরের রোদ এবং ধুলাবালি স্কিনে আটকে ক্ষতি হবে।
আপনার মুখের রোমকূপ বা পোরসগুলি কি খুবই বড় বড়? আপনি টেকনিক্যালি এইসমস্ত পোর্স ছোট করতে…
পরিষ্কার নিটোল মুখ, অথচ থুঁতনিতে কালো কালো ব্ল্যাকহেডস! কেমন লাগে বলুন তো! সৌন্দর্যটাই নষ্ট হয়ে…
আগেকার দিনে বলা হত, লজ্জা নাকি নারীর ভূষণ। না, আজকের দিনে আমরা ওইসব কথা বলব…
বাড়ির দেয়ালে রকমারী রঙের ছ্বটা অনেকেরই সাধ ও শখের পরিচয় বহন করে। কিন্তু কিছু বছর…
ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা উচিত এই কথাটা আমরা সবাই জানি কম বেশি। কিন্তু কেন? কি উপকার…
প্রাচীনকালে যখন রূপচর্চার এত উপকরণ হাতের কাছে ছিল না, সেই সময় থেকেই রূপচর্চার অন্যতম উপকরণ…