ইন্টারনেটের দৌলতে গ্লাস স্কিন মেকআপের বিষয়টি কারোর কাছেই আর তেমন অজানা নয়। বিশেষত যারা মেকআপ নিয়ে চর্চা করতে চান তাদের কাছে তো একেবারেই নয়। কোরিয়ার বিশেষ এই মেকআপটি এখন এদেশেও যথেষ্ট জনপ্রিয়।
গ্লাস স্কিন মেকআপের একটি বৈশিষ্ট্য হল, এই মেকআপ অ্যাপ্লাই করার পর একেবারে কাঁচের মতো স্বচ্ছ একটা লুক আসে। তবে এর জন্য খুব পরিশ্রম বা অর্থ খরচের দরকার নেই, বাড়ি বসে খুব সহজেই করে নিতে পারেন গ্লাস স্কিন মেকআপ। দেখে নিন কীভাবে।
১) ডাবল ক্লিনজিং
- ত্বকের যত্নে সাধারণ ক্লিনজিং করা হয়ে থাকে, তবে গ্লাস স্কিন পেতে কিন্তু ডবল ক্লিনজিং করতে হবে।
- আপনার ত্বকে যদি অ্যাকনে বা ব্রণর সমস্যা থাকে এবং আপনার ত্বক যদি খুব তৈলাক্ত হয়, তাহলে ক্লিনজার হিসাবে ব্যবহার করুন শসার রস।
- কিন্তু আপনি যদি শুষ্ক বা নর্মাল ত্বকের অধিকারি হন তাহলে ক্লিনজিং করুন কাঁচা দুধ দিয়ে।
- মুখ ভাল করে পরিষ্কার করার পর ঈষদ-উষ্ণ জলে মুখ ধুয়ে নিন।
২) স্ক্রাবিং
- স্ক্রাবিং কিন্তু এই পদ্ধতির একটা গুরুত্বপূর্ণ দিক। এর জন্য প্রথমে একটা কাঁচে পাত্রে ২ টেবিল চামচ মধু নিন।
- এবার তাতে মেশান অর্ধেকটা টমেটোর রস। দুটি উপাদানকে ভালো করে মিশিয়ে নিয়ে মিশ্রণটি ত্বকের ওপর ভালো করে স্ক্রাব করুন।
- টমেটোর রস আপনার ত্বকের ওপেন পোরসগুলিকে মিটিয়ে দিতে সাহায্য করে।
- মধু আনইভেন ত্বককে জেল্লাদার বানানোর জন্য আদর্শ। এইভাবে স্ক্রাবিং-এর ফলে ত্বকের ওপর থেকে মৃত কোষগুলিও সহজে দূর হয়ে যাবে।
৩) এসেন্স
- ত্বকে এসেন্স অ্যাপ্লাই করা গ্লাস স্কিনের জন্য একটা গুরুত্বপূর্ণ উপকরণ।
- এই এসেন্স ত্বককে ডিহাইড্রেটেড রাখতে সাহায্য করে।
- এসেন্স তৈরি করতে ২ চামচ অ্যালোভেরা জেল, ২-৩ ফোঁটা গ্লিসারিন ভাল করে মিশিয়ে নিন।
- এই এসেন্স হাতে করে সামান্য পরিমাণ নিয়ে সারা মুখে ভালোভাবে অ্যাপ্লাই করুন। সলিউশনটি ত্বকে মিশে যেতে দিন।
৪) সিরাম
- চুলের জন্য সিরাম তো ব্যবহার করেন, কিন্তু কাঁচের মতো স্বচ্ছ স্কিন পেতে ব্যবহার করুন এই হাইড্রেটিং সিরাম।
- এর জন্য লাগবে- ৩ চামচ অ্যালোভেরা জেল, ২ চামচ আমন্ড অয়েল, ৩টি ভিটামিন ই ক্যাপসুল, আধ চামচ গ্লিসারিন, ২ চামচ গোলাপ জল- একসঙ্গে ভালো করে মিশিয়ে নিন।
- আপনার ত্বক যদি অতিরিক্ত মাত্রায় রুক্ষ ও শুষ্ক হয়, তাহলে ১ চামচ নারকেল তেল যোগ করুন।
- উপকরণগুলি একসঙ্গে মিশিয়ে একটি ছোট কাঁচের পাত্রে ভরে রেখে দিন।
- এবার এই সিরাম সারা মুখে লাগান। চাইলে এটি কিন্তু আপনি প্রতিদিনই ব্যবহার করতে পারেন।
৫) ময়েশ্চারাইজার
- ময়েশ্চারাইজার ছাড়া এমনিতেই স্কিন কেয়ার রুটিন অসম্পূর্ণ।
- গ্লাস স্কিনের ক্ষেত্রেও ময়েশ্চারাইজার বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ।
- এক্ষেত্রে ময়েশ্চারাইজিং-এর জন্য় ব্যবহার করতে পারেন যেকোনও ফেসিয়াল অয়েল।
- কয়েক ফোঁটা হাতে নিয়ে সারা ত্বকে ভালকরে অ্যাপ্লাই করতে পারেন। আর একটা প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজার হল অ্যালোভেরা জেল।
- অ্যালোভেরা জেলের সঙ্গে সামান্য একটু গোলাপ জল মিশিয়ে ভালো করে সারা স্কিনে অ্যাপ্লাই করতে থাকুন।
- এটি সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক এবং নির্ভেজাল উপাদান আর এতে কোনও সাইড এফেক্টও নেই।
৬) ফাউন্ডেশন
- এতক্ষণ তো গেল ত্বকের পুষ্টির কথা। তবে এবার লাগিয়ে নিতে হবে মেকআপের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপাদান ফাউন্ডেশন।
- ফাউন্ডেশন বাছার সময় কখনওই ম্যাট ফাউন্ডেশন বাছবেন না, তাহলে এতক্ষণ ধরে যা যা করলেন, তার কোনও গুণই থাকবে না।
- ম্যাট ফাউন্ডেশনের পরিবর্তে বেছে নিন, হালকা, জেল-বেসড এবং ত্বকের সঙ্গে সহজে মিশে যায় এমন ফাউন্ডেশন।
- এই ধরণের ফাউন্ডেশন গ্লাস স্কিন পাওয়ার ক্ষেত্রে আদর্শ।
৭) হাইলাইটিং লোশন
- গ্লাস স্কিন মেকআপের শেষ ধাপ হল হাইলাইটিং লোশন।
- হাইলাইটিং লোশন আপনার ত্বকে একটা সুক্ষ আভা এনে দেবে এবং আপনার ত্বককে করে তুলবে ক্রিস্টাল ক্লিয়ার, যাকে বলে স্ফটিকের মতো স্বচ্ছ।
খেয়াল রাখার বিষয়
- এই লুকের সঙ্গে উজ্জ্বল আই মেকআপ কিন্তু একেববারেই বেমানান। তাই সেক্ষেত্রে ন্যুড শেডেপ আইশ্যাডো বাছুন।
- ভ্রুযুগল আঁকতে গিয়ে একেবারেই মোটা করে ফেলবেন না। তাহলে মোটেই ভালোলাগবে না।
- ব্লাশ অ্যাপ্লাই করার হলে পিচ পিঙ্ক বা গোলাপী আভাযুক্ত ব্লাশ লাগান।
- ঠোঁটের জন্যও কখনওই ডার্ক শেডের লিপস্টিক বাছবেন না। সামান্য লিপ গ্লস লাগিয়ে নিতে পারেন।
ত্বকের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ফুটিয়ে তুলতে অবশ্যই এই পদ্ধতিগুলি মেনে চলুন।
View Comments
Khub valo laglo
I want to saw the result