রান্নায় আদার ব্যবহার তো আমাদের কাছে অনিবার্য। কিন্তু আদার উপকারিতা আমরা দেখতে পাই মূলত আমাদের যখন সর্দি-কাশি হয়। মুখে আদার কুচি রাখা বাঁ আদার চা খাওয়া, এই সবই কিন্তু খুব আরাম দেয় তখন। তা শরীরের ক্ষেত্রে যখন আদা এতো উপকারী, তাহলে আমাদের ত্বক আর চুলের যত্নে আমরা আদা কেন ব্যবহার করব না? অবশ্যই করবো।
আমরা খুব একটা এখনও পর্যন্ত যে আদাকে এভাবে ব্যবহার করেছি তা নয়। কিন্তু আজ আপনাদের এমন কিছু ফেস আর হেয়ার প্যাকের কথা জানাবো যা ব্যবহার করে আপনারা উপকৃত হবেনই।
চুলের যত্ন নিতে আদার হেয়ার প্যাক অবশ্যই ব্যবহার করবেন। কিভাবে হেয়ার প্যাক বানাবেন ও চুলে অ্যাপ্লাই করবেন জেনে নিন স্টেপ বাই স্টেপ।
আদার মধ্যে থাকা ম্যাগনেসিয়াম, পটাশিয়াম, ফসফরাস চুলকে মজবুত করার জন্য খুব দরকারি। আর চুল মজবুত হলেই চুল ভাঙা, চুল পড়া এই সব সমস্যা দূর হয়। এর সঙ্গে যখন অলিভ যুক্ত হচ্ছে তখন তো সোনায় সোহাগা।
উপকরণঃ ২ চামচ আদার পেস্ট, ১ চামচ অলিভ অয়েল
পদ্ধতিঃ আদা ভালো করে পেস্ট করে নিন। এর মধ্যে এবার অলিভ তেল দিয়ে ভালো করে মেশান আর স্ক্যাল্পে লাগান। তারপর হাল্কা হাতে ম্যাসাজ করুন আর ৩০ মিনিট অপেক্ষা করুন। তারপর ভালো কোনও শ্যাম্পু দিয়ে শ্যাম্পু করে নিন। এটি সপ্তাহে দু দিন করুন।
মাথায় খুবই খুশকির সমস্যা? কিছু করেই সমস্যা মিটছে না? তাহলে আদা ব্যবহার করুন। আদায় থাকা আদায় থাকা অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল প্রপার্টি খুশকির সমস্যা দূর করে। সঙ্গে যদি লেবুর রস ব্যবহার করতে পারেন তো খুবই ভালো। আর তিলের তেল স্ক্যাল্প রাখবে আর্দ্র।
উপকরণঃ ২ চামচ আদার পেস্ট, ৩ চামচ তিলের তেল, হাফ চামচ লেবুর রস।
পদ্ধতিঃ সবকটি উপকরণ খুব ভালো করে মিশিয়ে নিন। তারপর মিশ্রণটি স্ক্যাল্পে আর চুলে লাগিয়ে ৩০ মিনিট অপেক্ষা করুন। তারপর মাইল্ড শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে নিন। এটিও সপ্তাহে দু দিন করলে উপকার পাবেন।
কী, রসুন শুনেই মুখ সরিয়ে নিলেন তো? কিন্তু সেটা একদম করবেন না। রান্নায় যেমন আদা আর রসুন একসঙ্গে জাস্ট ফাটাফাটি, আপনার চুলের ক্ষেত্রেও কিন্তু তাই। চুল পড়া, চুলের অতিরিক্ত ঘাম হওয়া, এই সবই দূর হবে এই প্যাক ব্যবহার করলে।
উপকরণঃ ৩ চামচ আদার কুচি, ৫ টি রসুনের কোয়া, ১ টেবিল চামচ নারকেল তেল
পদ্ধতিঃ আদা ছোট ছোট টুকরো করে বেটে নিন। এই বাটার মধ্যে এবার রসুনের কোয়া থেকে রস বের করে মিশিয়ে নিন। তাঁর সঙ্গে নিন নারকেল তেল। এই সব উপকরণ এবার একসঙ্গে মিশিয়ে চুলে ব্যবহার করুন। ২০ মিনিট মতো রেখে শ্যাম্পু করে নিন চুলে। সপ্তাহে তিন দিন করতে পারেন এটি।
ত্বকের যত্ন নিতে আদার ফেস প্যাক কিভাবে ব্যবহার কবেন তা জেনে নিন বিস্তারিত।
ব্রণ আমাদের ত্বকের সবচেয়ে কমন আর বড় সমস্যা। আর তাঁর সঙ্গে আছে ব্রণর দাগ। কিছু করেই কমে না এটি। কিন্তু আজকের বলা প্যাক ব্রণ থেকে আপনাকে রেহাই দেবেই। আদার মধ্যে থাকা অ্যান্ট ব্যাকটেরিয়াল আর অ্যান্টি ইনিফ্লেমেটরি উপাদান ব্রণ হতে দেয় না।
উপকরণঃ ২ চামচ আদার পেস্ট, ১ চামচ মধু, কয়েক ফোঁটা লেবুর রস
পদ্ধতিঃ সব উপকরণ এক পাত্রে নিয়ে ভালো করে মেশান। ব্রণ যেখানে হয়েছে সেখানে বেশি করে দিয়ে রাখুন আর সারা মুখে ব্যবহার করুন। ৩০ মিনিট রাখুন আর তারপর ঠাণ্ডা জল দিয়ে মুখ ধুয়ে নিন। সপ্তাহে ১ দিন করুন।
আমাদের গায়ের রঙ ফর্সা হোক কি শ্যামলা, উজ্জ্বলতা আমরা সবাই চাই। আর এর জন্য কোনও বাইরের প্রোডাক্ট নয়, এবার থেকে ব্যবহার করুন আদাকে।
উপকরণঃ ১ চা চামচ আদার রস, ২ চামচ গোলাপ জল, ২ চা চামচ মধু।
পদ্ধতিঃ এই সব উপকরণ ভালো করে মিশিয়ে মুখে আর গলায় লাগিয়ে রাখুন। আগে হাল্কা হাতে ৫ মিনিট মতো ঘষুন মুখ। তারপর ২০ মিনিট রেখে দিন। ঠাণ্ডা জল দিয়ে মুখ ধুয়ে নিন। সপ্তাহে তিন দিন করলে উপকার পাবেনই।
স্কিন সুন্দর রাখতে গেলে মুখ নিয়মিত স্ক্রাব করা দরকার। স্ক্রাব করলে মরা কোষ যেমন দূর হয়, তেমনই রক্ত সঞ্চালন বাড়ে। তাই আদা দিয়েই এবার মুখের স্ক্রাবিং করে নিন।
উপকরণঃ ২ চামচ আদা কুচি, খানিক চিনি, ১ চামচ অলিভ তেল
পদ্ধতিঃ একটি পাত্রে সব উপকরণ মিশিয়ে মুখে লাগিয়ে নিন। তারপর ৫ থেকে ৭ মিনিট হাল্কা হাতে মুখ ঘষুন। এবার ঠাণ্ডা জলে মুখ ধুয়ে নিন। এটা পারলে আপনি রোজই করতে পারেন। কথা দিচ্ছি, উপকার পাবেনই।
এই রইল আপনাদের জন্য আদার কয়েকটি বেস্ট প্যাক। আশা করি এগুলো আপনারা ব্যবহার করবেন আর উপকার পেয়ে আমাদের অবশ্যই জানাবেন।
আপনার মুখের রোমকূপ বা পোরসগুলি কি খুবই বড় বড়? আপনি টেকনিক্যালি এইসমস্ত পোর্স ছোট করতে…
পরিষ্কার নিটোল মুখ, অথচ থুঁতনিতে কালো কালো ব্ল্যাকহেডস! কেমন লাগে বলুন তো! সৌন্দর্যটাই নষ্ট হয়ে…
আগেকার দিনে বলা হত, লজ্জা নাকি নারীর ভূষণ। না, আজকের দিনে আমরা ওইসব কথা বলব…
বাড়ির দেয়ালে রকমারী রঙের ছ্বটা অনেকেরই সাধ ও শখের পরিচয় বহন করে। কিন্তু কিছু বছর…
ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা উচিত এই কথাটা আমরা সবাই জানি কম বেশি। কিন্তু কেন? কি উপকার…
প্রাচীনকালে যখন রূপচর্চার এত উপকরণ হাতের কাছে ছিল না, সেই সময় থেকেই রূপচর্চার অন্যতম উপকরণ…