‘বন্ধু’ কাকে বলে বা ‘বন্ধুত্ব’ আসলে ঠিক কি—এ নিয়ে জিজ্ঞাসা করলে অবধারিত ভাবেই নানা জন নানা কথা বলবেন। ঠিকই, বন্ধুত্বকে তো আর কোনো নির্দিষ্ট মাপকাঠিতে ফেলা যায় না! আপনাদের কারোর কাছে বাবা বা মা-ই হয়তো আপনার প্রিয় বন্ধু, আবার কেউ বা ছেলে বা মেয়ের কাছে হয়ে উঠতে চান তার বেস্ট ফ্রেন্ড! কারোর কাছে হয়তো বা বন্ধুত্বের সংজ্ঞাটাই আলাদা। আসলে ‘বন্ধু’ হল আমাদের জীবনে সেই বিশেষ মানুষ, যাদের অনেকসময় চোখ বুজে বিশ্বাস করা যায়, বলে ফেলা যায় এমন অনেক কথা যা আপনি চাইলেও আর কাউকেই বলতে পারবেন না। বন্ধুত্বের এই বিশেষ সম্পর্ককে উদযাপন করার জন্যই ক্যালেন্ডারে দাগিয়ে দেওয়া হয়েছে একটি বিশেষ দিনকে—যাকে চিহ্নিত করা হয়েছে ‘ফ্রেন্ডশিপ ডে’ বা ‘বন্ধুত্ব দিবস’ হিসেবে। ফ্রেন্ডশিপ ডে’র এই অভিনব ধারণার সুত্রপাত ঠিক কোন সময় থেকে, কেনই বা একটা দিনকে শুধুমাত্র বন্ধুদের জন্য বলে ভাবা হল আসুন তা দেখে নেওয়া যাক।
মানব সভ্যতার ইতিহাসে কবে যে প্রথম বন্ধুত্বকে উদযাপন করা শুরু হয়েছিল সে সম্পর্কে ইতিহাস নীরব। তবে বছরের বিশেষ একটা দিনে বন্ধুর বাড়িতে সবথেকে ভালো রুটি ও পানীয় পাঠানোর কথা আমরা যীশুখ্রিস্টের সময়তেও পাই। তবে সেই দিনটাকে কিন্তু ফ্রেন্ডশিপ ডে কোনোদিনই বলা হয়নি। বিভিন্ন পৌরাণিক কাহিনীতেও এহেন আলাদা করে বন্ধুত্বের দিন উদযাপনের কিছু কাহিনী পাই, যেখানে দেখি বন্ধু পাবার আশায় ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করা হচ্ছে। তবে প্রথম ‘ফ্রেন্ডশিপ ডে’ পালন করার কথা মাথায় এসেছিল বোধহয় হলমার্ক কার্ড নির্মাতা জয়েস হলের মাথা থেকে।
সালটা ১৯১৯, প্রথম বিশ্বযুদ্ধ সবে শেষ হয়েছে, গোটা পৃথিবী জুড়ে তখন এক জঘন্য আবহ। ‘হল’ ঠিক সেইসময়ই ঘোষণা করলেন অগাস্ট মাসের প্রথম রবিবার ফ্রেন্ডশিপ ডে পালনের কথা। কার্ড, উপহার বিনিময় হল, যুদ্ধের ওই থমথমে পরিবেশে শুরু হল ফ্রেন্ডশিপ ডে’র জয়যাত্রা! ১৯৩৫ সালে মার্কিন কংগ্রেসে স্বীকৃতি দেওয়া হল দিনটাকে। ১৯৫৮ সালে প্রথম প্রায় সারা পৃথিবী জুড়ে পালিত হল ‘ইন্টারন্যাশানাল ফ্রেন্ডশিপ ডে’। সেই শুরু। তারপর যত দিন গেছে নতুন মাত্রা পেয়েছে দিনটা ক্রমাগত। কিন্তু তার মূল বিষয়টা এখন একই রকম থেকে গেছে—তা হল বন্ধুকে মনে করা, তাকে নানা উপহার দেওয়া।
প্রিয় বন্ধু যাতে আমাকে মনে রাখে সেকথা ভেবে তাকে নানা উপহার দেওয়ার রেওয়াজ আজও আছে। কিন্তু ফ্রেন্ডশিপ ডে-তে বন্ধুকে দেবার জন্য যে জিনিসটি চল সবথেকে বেশী, তা হল—ফ্রেন্ডশিপ ব্যান্ড, যাকে বলা যেতে পারে বন্ধুত্বের স্মারক। বন্ধুর হাতে বেঁধে দেওয়া হয় সেটি। অনেকটা প্রায় আমাদের রাখিরই মতো। কেন এই বিশেষ ফ্রেন্ডশিপ ব্যান্ড?
ব্যান্ডগুলো খেয়াল করলে দেখবেন ওগুলো কিন্তু বিশেষ বিনুনি করার সুতোর নকশায় তৈরি। এই নকশার প্রচলন আদতে ছিল আমেরিকার আদিম জনজাতিগুলোর মধ্যে। নিজের হাতে নকশাওয়ালা ব্যান্ড তৈরি করে প্রিয় বন্ধুকে পরাতো ওরা। সেই থেকেই এসেছে ফ্রেন্ডশিপ ব্যান্ডের ধারণা। ফ্রেন্ডশিপ ব্যান্ড নিজে থেকে খুলে ফেলা মানে যে আড়ি করা, আমেরিকার ওই আদিম জনজাতির মানুষগুলোর মতো আজও আমরা একথায় বিশ্বাস করি, বিশ্বাস করি ওই ব্যান্ডের মধ্যে বন্ধু আসলে তার ইচ্ছাকে পুরে দেয়।
ফ্রেন্ডশিপ ডে নিয়ে এত মাতামাতির মধ্যে রাষ্ট্রপুঞ্জ ২০১১ সালে ৩০ জুলাই দিনটিকে ফ্রেন্ডশিপ দিন বলে ঘোষণা করেছে, তবে এখনও বন্ধু দিবস বলতে কিন্তু আগস্টের প্রথম রবিবারটিকেই বোঝানো হয়ে থাকে। পৃথিবীর বেশ কিছু দেশে অন্যান্য দিনেও বন্ধুত্বের উদযাপন করা হয়। যেমন আলাদা করে মেয়েদের ফ্রেন্ডশিপ ডে পালন করা হয় আগস্ট মাসের তিন নম্বর রবিবারে।
কিন্তু বন্ধুত্বের উদযাপন তো যেকোনো দিনই করা যায়। কেনই বা একটা বিশেষ দিনকে বেছে নেওয়া? আসলে নিছক মজা, আনন্দের পাশাপাশি একটা গোটা দিন বন্ধুর সাথে কাটানোর মজাই আলাদা। আর রবিবার—কারণ তা ছুটির দিন। সামনের রবিবার, ৬ তারিখ আসছে ফ্রেন্ডশিপ ডে। আপনিও আপনার প্রিয় বন্ধুর সাথে বন্ধুত্বের উদযাপন করুন, তার হাতে ব্যান্ড পরিয়ে দিন! আর পৃথিবী জুড়ে যখন দেখছিই সম্পর্কগুলো এক এক করে ভেঙ্গে যাচ্ছে, গণ্ডীগুলো ছোট থেকে আরও ছোট হচ্ছে, তখন কি আমরা একসাথে গাইতে পারি না “শোনো আমরা কি সবাই বন্ধু হতে পারি না?” তাই বন্ধু হন, বন্ধুত্ব বজায় থাকুক। উদযাপন করুন একসাথে, বন্ধুর সাথে।
আপনার মুখের রোমকূপ বা পোরসগুলি কি খুবই বড় বড়? আপনি টেকনিক্যালি এইসমস্ত পোর্স ছোট করতে…
পরিষ্কার নিটোল মুখ, অথচ থুঁতনিতে কালো কালো ব্ল্যাকহেডস! কেমন লাগে বলুন তো! সৌন্দর্যটাই নষ্ট হয়ে…
আগেকার দিনে বলা হত, লজ্জা নাকি নারীর ভূষণ। না, আজকের দিনে আমরা ওইসব কথা বলব…
বাড়ির দেয়ালে রকমারী রঙের ছ্বটা অনেকেরই সাধ ও শখের পরিচয় বহন করে। কিন্তু কিছু বছর…
ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা উচিত এই কথাটা আমরা সবাই জানি কম বেশি। কিন্তু কেন? কি উপকার…
প্রাচীনকালে যখন রূপচর্চার এত উপকরণ হাতের কাছে ছিল না, সেই সময় থেকেই রূপচর্চার অন্যতম উপকরণ…