সারা দেশজুড়ে করোনা আতঙ্কে জারি রয়েছে লকডাউন। সবথেকে সমস্যার কাজ হল জামা-কাপড় এবং অন্যান্য জিনিসপত্র কাচা। তার ওপর যে পরিচারিকা এইসব কাজ আরও সহজ করে দেন, তিনিও এখন অনুপস্থিত।
অনেকের বাড়িতেই কাপড় কাচার জন্য ওয়াশিং মেশিন থাকে না। কিন্তু জামা-কাপড় হোক বা বিছানার চাদর বা বালিশের কভার সবই জমছে। কিন্তু জমিয়ে না রেখে কেচে ফেলুন।
আজ আপনাদের বলবো মেশিন ছাড়া কাপড় কাচার কিছু সহজ উপায়, যা মেনে চললে আপনি খুব সহজেই কাপড় কেচে ফেলতে পারবেন এবং আপনার পরিশ্রমও অনেকটাই কম হবে।
সহজ কৌশল
জামা কাপড় উল্টো করে তা ডিটারজেন্টে ভিজিয়ে রাখুন, এতে ময়লা জলদি উঠে যাবে।
কাপড় জামা ধোয়ার সময় লিক্যুইড ডিটারজেন্ট ব্যবহার করবেন। খুব জলদি এটা পরিস্কার করতে কাজ করে।
পাশাপাশি এতে ফেনা কম হয় তাই দুবার জলে ভালো করে ধুলেই পরিস্কার হয়ে যায়।
রোজকার জামা কাপড় রোজ ধুয়ে নিন এভাবে তাতে কাপড় জমার সমস্যা থেকে দূরে থাকবেন।
যেহেতু ঘরে আছেন তাই দুটো জামা কাপড়ের সেট পরার জন্য ব্যবহার করুন, এতে কাজ কমবে।
গরমকাল তাই সুতির কাপড় পরুন ঘরে। পরিস্কার করা সহজ ও জলদি শুকিয়েও যায়, সাথে ফ্রি আরাম।
কাপড় ধুয়ে জল না চেপে মেলে দিন এতে কাজ কমে ও গরমকালের ফলে জলদি শুকিয়েও যায়।
কাপড় কাচার ক্ষেত্রে যে বিষয়টি মনে রাখবেন
ফ্রেব্রিকের ধরণ কী? ফেব্রিকটি যদি সুতির হয় তাহলে তা জলের মধ্যে সামান্য নুন মিশিয়ে ভিজিয়ে রেখে দিন। এরপর নুন জল থেকে তুলে তা ডিটারজেন্ট দিয়ে ধুয়ে নিন।
কিছু কিছু সুতির কাপড়ের কোয়ালিটি এমন হয় যে তা থেকে রঙ উঠতে পারে। সেজন্য কাপড় ধোয়ার সময়ে বেকিং সোডা ব্যবহার করুন
সাদা কাপড় ধোয়ার ক্ষেত্রে কিন্তু একটু বিশেষ সাবধানী হওয়া প্রয়োজন।
সাদা পোশাক বা বিছানার চাদরের ঔজ্জ্বল্য যদি হারিয়ে যায় তাহলে এক বালতি জলে আধ কাপ ভিনিগার মিশিয়ে তাতে ২ টেবিল চামচ মতো বেকিং সোডা দিয়ে দিন।
এই জলে সাদা কাপড় ভিজিয়ে রেখে ধুলে সাদা কাপড়ের ঔজ্জ্বল্য কয়েক গুণ বেড়ে যায়।
অনেকে মনে করেন সুতির জিনিস জলে অনেকক্ষণ ভিজিয়ে রাখলে ভালো ধোয়া হয়। কিন্তু জেনে রাখুন এই ধারণা কিন্তু একে বারে ভুল। এতে করে কিন্তু জামা-কাপড়ের সুতো নরম হয়ে যেতে পারে, ফলে সহজে ছিঁড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই যেকোনও পোশাকই আধ ঘণ্টা ডিটারজেন্টে ভিজিয়ে রেখে কেচে নেওয়াই ভালো।
যদি রঙিন কাপড় কাচার হয়, তাহলে লিক্যুইড ডিটারজেন্ট দিয়ে কাচুন। লিক্যুইড ডিটারজেন্ট রঙিন কাপড়ের ঔজ্জ্বল্য ধরে রাখতে বিশেষ কার্যকরী।
ডিটারজেন্টের ব্যবহার
ডিটারজেন্ট নির্বাচনের আগে যে বিষয়টি দেখে নেবেন, তা হল ডিটারজেন্টটি ক্ষারযুক্ত কিনা।
কারণ অতিরিক্ত ক্ষারযুক্ত ডিটারজেন্ট ব্যবহারে জামা-কাপড়ের রঙ ফিকে হয়ে যেতে পারে ফলে নতুন জামাও রাতারাতি খারাপ হয়ে যেতে পারে।
মনে রাখবেন সব ডিটারজেন্ট কিন্তু এক রকমের হয় না। খুব ভালো হয় যদি মাল্টিপারপাস ডিটারজেন্ট কিনতে পারেন।
যাতে করে জামাকাপড়ের ময়লাও দূর হবে সেইসঙ্গে পোশাকের রঙও অটুট থাকবে।
সেইসঙ্গে খেয়াল রাখতে হবে ডিটারজেন্ট-এর পরিমাণের ওপর। কতটা ডিটারজেন্ট দেবেন তার ওপরেও নির্ভর করে পোশাক কত ভালো পরিষ্কার হবে।
অনেকে মনে করেন বেশি ডিটারজেন্ট দিলে জামা-কাপড় বেশি পরিষ্কার হয়। অনেকসময়ে ডিটারজেন্টে ব্লিচ ব্যবহার করা হয়। এর ফলে তা বেশি পরিমাণে ব্যবহার করলে জামাকাপড়ের রঙের ওপর তা প্রভাব ফেলতে পারে।
তাই কাপড়টি কী রকম অর্থাৎ, টি-শার্ট, নাকি, শাড়ি, না জিন্স না পর্দার কাপড়-সেই অনুসারে ডিটারজেন্ট নিন।
যে রঙের পোশাক থেকে বেশি রঙ উঠতে পারে (যেমন- কালো, গাঢ় নীল, কালচে সবুজ), সেইসব পোশাক উল্টো করে নিয়ে তারপর কাচুন।
এবার আসা যাক সিল্কের পোশাকে। সিল্কের পোশাক পাউডার ডিটারজেন্ট-এর তুলনায় লিক্যুইড ডিটারজেন্টে ধোয়া ভালো। বা খুব ভালো হয় যদি মাইল্ড শ্যাম্পু জলে ভিজিয়ে রেখে ধুতে পারেন। তাহলে তাড়াতাড়ি ধোয়া যাবে।
এখন যেহেতু প্রতিদিন বাইরে বেরোনো হচ্ছে না, তাই হাতে অতিরিক্ত প্রেসার দিয়ে কাপড় কাচার প্রয়োজন নেই। আগে থেকে একটু ভিজিয়ে রেখে কাচুন, দেখবেন কাজটা সহজ হবে।
যদি কাপড়ে দাগ লেগে থাকে, এমন কাপড় বেশিক্ষণ না রেখে সঙ্গে সঙ্গে কেচে নেওয়াই ভালো। নইলে পরে দাগ বসে যেতে পারে এবং কাচার সময়ে দাগ তুলতে সমস্যা হতে পারে।