বাঙালীর প্রিয় উৎসব দুর্গাপূজা। সারা বছর আমরা এই চার-পাঁচ দিনের জন্য অপেক্ষা করে থাকি। বাইরে থেকে লোকজন বাড়িতে ফেরে, সবার সঙ্গে অনেকদিন পর দেখাসাক্ষাৎ হয়। সব মিলিয়ে এক মিলনকেন্দ্র গড়ে ওঠে। কিন্তু, বাঙালীর এই শ্রেষ্ঠ অনুষ্ঠান কবে থেকে কেন শুরু হল, তার পৌরাণিক উৎস কী, আসুন আজ সেটা জেনে নি।
অকালবোধন
এই শরৎকাল শাস্ত্রমতে দেবদেবীদের নিদ্রা বা বিশ্রামের সময়। তাই এই সময়ে দেবপূজা উপযুক্ত নয়। কিন্তু, এই সময়েই দেবীর পূজা করতে হয়েছিল । কালিকা পুরাণ ও বৃহৎধর্ম পুরাণ অনুসারে আমরা এই কথা জানতে পারি যে রাম-রাবণের যুদ্ধের জন্য ব্রহ্মাকে দেবী দুর্গার পুজো করতে হয়। আবার কৃত্তিবাসী রামায়ণে আমরা দেখি যে স্বয়ং রাম নিজে দেবীর পুজো করছেন।
রাবণের লঙ্কাপুরী ও স্বয়ং রাবণ নিজে দেবী ভদ্রকালী দ্বারা রক্ষিত ছিলেন। তাছাড়া রাবণ যুদ্ধের আগে দেবীর উপাসনা করে দেবীর থেকে এই বর প্রাপ্ত হন যে দেবী যুদ্ধের সময়ে তাঁর রথের সম্মুখে থাকবেন। অর্থাৎ রাবণকে পরাজিত করা প্রায় অসম্ভব হয়ে যায়। তাই রামকেও দেবীর আরাধনা করতে বলা হয়। রাম পুজো করলেও দেবীর দর্শন পেলেন না। তাই বিভীষণের পরামর্শে তিনি ১০৮ পদ্ম দিয়ে দেবীর পুজো করবেন বলে সঙ্কল্প নেন। তাঁর নির্দেশে হনুমান যান দেবীদহে ১০৮ নীলপদ্ম আনতে। ফুল আনার পর রাম পুজো করতে করতে দেখেন যে ১ টি পদ্ম নেই। আসলে দেবী নিজেই রামের পরীক্ষা নেবার জন্য একটি ফুল লুকিয়ে রাখেন। তখন তিনি তাঁর পদ্মসদৃশ চোখ দেবীকে অর্পণ করবেন বলে স্থির করেন। যখনই তিনি এই কাজ করতে যান তখনই দেবী আবির্ভূত হন ও রামকে যুদ্ধ জয়ের আশীর্বাদ দিয়ে তাঁর অস্ত্রে প্রবেশ করেন। অবশেষে রাম যুদ্ধে জয়ীও হন। এই হল শরৎকালে দেবীর অকালবোধনের কাহিনী। তবে বাল্মিকী রামায়ণে রামের দুর্গা পুজোর এই কাহিনী নেই।
রাজা সুরথের কাহিনী আমরা পাই শ্রী শ্রী চন্ডীতে। রাজা সুরথ যুদ্ধে পরাজিত হলে তাঁর মন্ত্রী ও কিছু সভাসদ বিশ্বাসঘাতকতা করে তাঁর রাজত্ব ও সেনাবাহিনী সব নিয়ে নেন। তখন তিনি রাজ্য থেকে চলে এসে বনে বনে ঘুরে বেড়ান। তখন তাঁর মেধা নামে এক মুনির সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়। মেধা মুনি রাজাকে তার আশ্রমে নিয়ে যান। এরপর রাজার সঙ্গে একদিন দেখা হয় সমাধি নামে এক বৈশ্যর। তাঁর থেকে সব কিছু কেড়ে নিয়ে তাঁর স্ত্রী ও পুত্ররা তাকে বিতাড়িত করেন। সুরথ ও সমাধি দুজনেই মেধা মুনির কাছে তাঁদের মনঃকষ্টের কারন জানতে চাইলে তিনি দেবী মহামায়ার কথা বলেন ও তাদের দেবীর পূজা করতে বলেন।
তখন দুজনেই দেবী দুর্গার আরাধনা করেন ও দেবী সুরথকে তাঁর রাজ্য এবং সমাধিকে বোধি দান করেন।
এই হল দুর্গা পূজা শুরুর মূল দুই কাহিনী। তবে অন্যান্য দেবদেবীরাও নানা সময়ে দেবীর পূজা করেন, তাঁর বিবরণ পাই ব্রহ্মবৈবর্ত্য পুরাণে। সেখান থেকে জানতে পারি যে প্রথম নাকি দুর্গার পূজা করেন কৃষ্ণ। দ্বিতীয়বার পূজা করেন ব্রহ্মা মধু ও কৈটভ নিধনের সময়। তৃতীয়বার দেবীর পূজা করেন শিব ত্রিপুর নামে অসুরের সঙ্গে যুদ্ধ করতে গিয়ে। আর চতুর্থবার দেবী পূজা করেন ইন্দ্র দুর্বাশা মুনির অভিশাপে লক্ষ্মীকে হারিয়ে। তবে যেহেতু পুরাণ কাহিনী তাই এই নিয়ে মতভেদ থাকতেই পারে।
এইভাবেই মর্ত্যধামে দেবী দুর্গার পূজা প্রচলিত হয়। আসুন আমরা সবাই এই বছর আবার দুর্গাপুজোয় মেতে উঠি।
https://dusbus.com/bn/kumari-pujor-satkahon/
আপনার মুখের রোমকূপ বা পোরসগুলি কি খুবই বড় বড়? আপনি টেকনিক্যালি এইসমস্ত পোর্স ছোট করতে…
পরিষ্কার নিটোল মুখ, অথচ থুঁতনিতে কালো কালো ব্ল্যাকহেডস! কেমন লাগে বলুন তো! সৌন্দর্যটাই নষ্ট হয়ে…
আগেকার দিনে বলা হত, লজ্জা নাকি নারীর ভূষণ। না, আজকের দিনে আমরা ওইসব কথা বলব…
বাড়ির দেয়ালে রকমারী রঙের ছ্বটা অনেকেরই সাধ ও শখের পরিচয় বহন করে। কিন্তু কিছু বছর…
ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা উচিত এই কথাটা আমরা সবাই জানি কম বেশি। কিন্তু কেন? কি উপকার…
প্রাচীনকালে যখন রূপচর্চার এত উপকরণ হাতের কাছে ছিল না, সেই সময় থেকেই রূপচর্চার অন্যতম উপকরণ…