দুর্গা মানেই শক্তিরূপেন সংস্থিতা। শক্তি যা এই সময়ে আমাদের সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন। আর্থিক অনটন, রোগ, মৃত্যু, অনিশ্চয়তা এই সবের মূল যে করোনা, তার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতেই তো দরকার শক্তির, যার প্রতিভূ দেবী দুর্গা। আর সেই শক্তিতে বলীয়ান হয়েই সম্মুখ সমরে লড়াই করে যাচ্ছেন একদল মানুষ। দুর্গাপুজোয় এবার তাই কলকাতা দেখবে সেই সব যোদ্ধাদের, মা দুর্গার সঙ্গে।
সাবেকি প্রতিমা, মন্ডপের পাশাপাশি কলকাতা অনেক বছর ধরে দেখে আসছে থিমের পুজো। মন্দির, মিউজিয়াম, প্যাগোডা থেকে শুরু করে সৃষ্টিশীল কাজ, এই সবের সাক্ষী থেকেছে কলকাতার পুজো। সব থিমই উঠে এসেছে আমাদের সমাজ থেকেই। এবার আমরা গোটা বিশ্বের মানুষ যখন করোনার প্রকোপে আক্রান্ত, তখন সেই করোনার থেকে মুক্ত হতেই তো দেবী দুর্গার শরণে যাব আমরা। থিমে তাই দুর্গা কখনও পরিযায়ী, কখনও তিনি ডাক্তার।
এই যেমন ধরুন বরিষা ক্লাবের কথা। শিল্পী পল্লব ভৌমিক ফুটিয়ে তুলেছেন তার অনবদ্য সৃষ্টি, যেখানে দুর্গা একজন পরিযায়ী মা, সঙ্গে তাঁর সন্তানেরা। আরও বেশ কিছু মন্ডপে এরকম পরিযায়ী শ্রমিকদের কথা মাথায় রেখে থিম হিসেবে আনা হয়েছে তাদেরই। সেখানে দেবীর কাঁধে গণেশ, আর দেবী পরিযায়ী মা, ট্রলি টেনে নিয়ে যাচ্ছেন, যে ট্রলির ওপর শুয়ে আছে ক্লান্ত কার্ত্তিক। এর থেকে বাস্তব থিম আর কি হয়!
শাস্ত্রে আমরা দেখি, সকল দেবতা দেবী দুর্গাকে যুদ্ধে যাওয়ার জন্য তৈরি করছেন। ত্রিশূল, গদা, শঙ্খ, অন্য আয়ুধ, বর্ম সব দিয়ে সাজাচ্ছেন দেবীকে। সেই সব তো মহিষাসুরের জন্য। কিন্তু করোনা অসুরের জন্য? হ্যাঁ, আমরা দেবীকে যে এবার করোনা অসুরের সঙ্গে লড়াই করার জন্য তৈরি করেছি। এই যেমন ধরুন একটি মন্ডপে মা দুর্গাকে ডাক্তার হিসেবে তৈরি করা হয়েছে।
তিনি ডাক্তারের পোশাক পরে আছেন আর নিচে অসুরের মুখ করা হয়েছে করোনার মতো। একটি বড় সিরিঞ্জ দিয়ে দেবী তাঁকে বধ করছেন। দেবীর সঙ্গে আছেন পুলিশকর্মী রূপে গণেশ, নার্সের পোশাকে লক্ষ্মী, সাংবাদিকের ভূমিকায় সরস্বতী আর সাফাইকর্মী হিসেবে কার্ত্তিক। ভেবে দেখুন, এমন সব চরিত্রে দেবতারা আছেন এখানে যেই চরিত্রগুলি মূলত এসেনশিয়াল সার্ভিসের মধ্যে পড়ে বা যারা অনবরত কাজ চালিয়ে গেছেন এই লকডাউনেও। এবার পুজোয় সমাজের এই মানুষদের সম্মান দেব না, তা কি হয়! এবারের দুর্গাপুজো তাই সম্মান জানানোর, কৃতজ্ঞতা স্বীকার করার উৎসব। শিলিগুড়িতে তৈরি হওয়া এই প্রতিমার প্রশংসা করেছেন কংগ্রেস নেতা তথা সাংসদ শশী থারুর।
হ্যাঁ, এবারের পুজো দেবীর মানবায়নের পুজো। আমরা তো দেবতা তাঁকেই বলি যিনি আমাদের ত্রাণ করেন, রক্ষা করেন। এই করোনার সময়ে চিকিৎসক, পুলিশ, ব্যাঙ্কার, সাংবাদিক এই সকল পেশার মানুষ যেভাবে আমাদের পাশে ছিলেন, তাতে তাঁরাই আজ আমাদের ঈশ্বর। নিজেদের বিপদের আশঙ্কা না করে আমাদের তো তাঁরাই বাঁচিয়ে রেখেছিলেন। তাই দুর্গা এবার আমাদের সঙ্গেই আমাদের অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে লড়াই করছেন আমাদেরই একজন হয়ে। এটাই তো চিরকালীন থিম।
শ্রীশ্রী চণ্ডীতে ‘নারায়ণীস্তুতি’ অংশে আছে, “রূপৈরনেকৈর্বহুধাত্মমূর্তিং…”, অর্থাৎ দেবী বহু প্রকারে প্রকটিত হয়ে মহাসুরদের বধ করেন। যেখানে লড়াই, যেখানে শক্তি, সেখানেই দুর্গা। এই পুজোয় আমরা প্রত্যেকেই তো লড়াই করছি নিজেদের মতো করে। এবারের পুজোয় তাই আমরা সকলেই দুর্গা। এই মহাষষ্ঠীতে তাই বোধন হোক আমাদের অন্তরের যোদ্ধার, অন্তরের দুর্গার।
আপনার মুখের রোমকূপ বা পোরসগুলি কি খুবই বড় বড়? আপনি টেকনিক্যালি এইসমস্ত পোর্স ছোট করতে…
পরিষ্কার নিটোল মুখ, অথচ থুঁতনিতে কালো কালো ব্ল্যাকহেডস! কেমন লাগে বলুন তো! সৌন্দর্যটাই নষ্ট হয়ে…
আগেকার দিনে বলা হত, লজ্জা নাকি নারীর ভূষণ। না, আজকের দিনে আমরা ওইসব কথা বলব…
বাড়ির দেয়ালে রকমারী রঙের ছ্বটা অনেকেরই সাধ ও শখের পরিচয় বহন করে। কিন্তু কিছু বছর…
ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা উচিত এই কথাটা আমরা সবাই জানি কম বেশি। কিন্তু কেন? কি উপকার…
প্রাচীনকালে যখন রূপচর্চার এত উপকরণ হাতের কাছে ছিল না, সেই সময় থেকেই রূপচর্চার অন্যতম উপকরণ…