বৈজ্ঞানিক যুক্তিতে, প্রতিদিন ৮০ থেকে ১০০ টা চুল ঝরে পড়া স্বাভাবিক ব্যাপার। পড়ে যাওয়া চুল আবার নতুন করে গজায়, তাই প্রতিদিন এই পরিমাণ চুল পড়া কোনরকম আতঙ্কের সৃষ্টি করে না। কিন্তু ঝামেলা তখনই হয় যখন চুল নতুন করে গজানোর নাম করেনা কিন্তু অবিরাম ঝরতে থাকে। ঘরোয়া পদ্ধতিতে সবসময় চুল ঝরে পড়া আটকানো সম্ভব হয় না।
চুল পড়ার পিছনে অনেকগুলো কারণ কাজ করে। বৃদ্ধ বয়স ছাড়াও ডায়াবেটিস জাতীয় রোগে শরীরের অভ্যন্তরীণ স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যহত হয় বলে চুল পড়তে থাকে অস্বাভাবিকভাবে। তাছাড়া দীর্ঘদিন ধরে অসুখে ভুগলে বা কঠিন কোন রোগে ভুগলেও চুল ঝরে যায়৷ এছাড়াও শরীরে পুষ্টির অভাব, বংশগত, অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা, চিকিৎসা জনিত কারণেও (যেমন কেমোথেরাপি বা ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া) চুল পড়ে যায় এবং নতুন করে গজায় না।
পুরুষ এবং মহিলাদের মাথায় চুল পড়ার ধরণ বিভিন্ন হয়। এরকম পরিস্থিতিতে নতুন করে চুল গজানোর জন্য মিনোক্সিডিল, ফিন্যাস্টেরাইড নামের বিভিন্ন রকমের ওষুধ আছে। আবার হেয়ার ট্রান্সপ্লান্ট সার্জারি, লেজার হেয়ার থেরাপির মত চিকিৎসাও আছে। আজকের প্রতিবেদনে থাকছে লেজার হেয়ার থেরাপি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা। জানতে পারবেন হেয়ার থেরাপি কি, এটি চুলের যত্নে সত্যি কি কার্যকরী না বিপদ বাড়িয়ে দেয় ইত্যাদি।
হেয়ার থেরাপিকে অনেকে লেজার হেয়ার খেরাপি, রেড লাইট থেরাপি, কোল্ড লেজার থেরাপি, লো-লেভেল লেজার হেয়ার থেরাপি বা লো-লেভেল হেয়ার থেরাপি নামে চিনে থাকেন। বর্তমান চিকিৎসা বিশ্বে লেজার হেয়ার থেরাপির কদর ক্রমশই বাড়ছে। এই ধরণের চিকিৎসা হেয়ার ট্রান্সপ্ল্যান্ট সার্জারির চাইতে একদম আলাদা এবং নিরাপদ। এই থেরাপি চুলের গোড়া শক্ত করে, চুল পড়া কমায়, চুলকে মোটা ও সুন্দর করে।
যাদের চুল অনবরত পড়ে যাচ্ছে তারা হেয়ার থেরাপি নিতে পারেন। পুরুষের মাথায় একটি বিশেষ প্যাটার্নে চুল ঝরে টাক পড়ে যায়। ডিহাইড্রোটেস্টস্টেরন বা ডিএইচটি হরমোনের কারণে চুলের ফলিকল দুর্বল হতে শুরু করে, চুল গজানো বন্ধ হয়ে যায়, চুল পাতলা হয়, এবং সবশেষে পড়ে যায়। যারা বংশগতভাবে এরকম ‘মেইল প্যাটার্ন ব্যাল্ডনেসে’ চুল হারাচ্ছেন তারাও হেয়ার থেরাপি নিতে পারবেন। নারী ও পুরুষ সবার জন্যই এই থেরাপি সমানভাবে কার্যকর।
হেয়ার থেরাপিতে বিভিন্ন ধরণের জিনিস ব্যবহার করা হয়। রিগ্রোথ ক্যাপ, লেজার ব্যান্ড-চিরুনি-হেলমেট ইত্যাদি দিয়ে এক্সপার্টরা থেরাপি দিয়ে থাকেন। এগুলো ছাড়াও আরো ডিভাইস আছে, ওষুধ আছে, আবার বিশেষ ধরণের শ্যাম্পুও আছে হেয়ার থেরাপির অংশ হিসেবে।
হেয়ার থেরাপিতে লেজার লাইট নিম্ন মাত্রায় ব্যবহার করা হয় এবং আলো থেকে নিঃসৃত ফোটন স্ক্যাল্পের কোষগুলোতে বিকিরণ করা হয়। মাথার ত্বকের দুর্বল কোষগুলো ফোটনগুলো গ্রহণ করে শক্তি ফিরে পায়, পুনরায় কাজ করতে শুরু করে, এবং চুল গজাতে সাহায্য করে। ডিএইচটি-র মত ক্ষতিকারক অ্যান্ড্রোজিন হরমোনকেও ব্লক করে দেয় এই ফোটন।
লেজার হেয়ার থেরাপি স্ক্যাল্পে রক্ত চলাচল বাড়িয়ে নতুন চুলের জন্মকে ত্বরান্বিত করে। মিনোক্সিডিল নামক ওষুধও রক্ত সঞ্চালনের কাজটি করে থাকে। তাই লেজার হেয়ার থেরাপিকে অনেকে মিনোক্সিডিলের বিকল্প হিসেবে ব্যাখ্যা দেন।
তবে হেয়ার থেরাপি শুধু একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত কাজ করে, সবসময় না। যারা চুল পড়া সমস্যার প্রাথমিক ধাপে আছেন শুধুমাত্র তাদের ক্ষেত্রেই এটি সুদূরপ্রসারী ফলাফল এনে দেয়। একটি গবেষণায় দেখা গেছে, ১৮ থেকে ৪৮ বছর বয়সী নারী-পুরুষ যাদের চুলের গ্রোথ ৪০ শতাংশের কম, তারা হেয়ার থেরাপি ব্যবহার করে ভালো ফল পেয়েছেন।
এবারে আমরা জানব হেয়ার থেরাপির উপকারিতা এবং অপকারিতা সম্বন্ধে।
হেয়ার থেরাপি চুল পড়া রোধ করার অন্যান্য চিকিৎসার চাইতে তুলনামূলকভাবে নিরাপদ। আপনি যদি হেয়ার থেরাপি নিতে আগ্রহী হন, অবশ্যই চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করতে ভুলবেন না। আপনার চিকিৎসক আপনার শারীরিক অবস্থা, দৈনন্দিন জীবনযাপন, চুল পড়ার ধরণ, চুলের গ্রোথ রেট, বংশ ইতিহাস, খাদ্যাভাস ইত্যাদি পর্যাপ্ত পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত নিবেন আপনার স্ক্যাল্প থেরাপি নেয়ার জন্য প্রস্তুত কিনা এবং নিলে কতটুকু সফল হবে। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পরে হয়তো দেখা যাবে আপনার থেরাপির দরকার নেই বা সার্জারি করতে হবে। আপনি যে ট্রিটমেন্টই নিন না কেন, সঠিকভাবে কোর্স কমপ্লিট করলে অবশ্যই চুলের হারানো সৌন্দর্য ফিরে পাবেন।
আপনার মুখের রোমকূপ বা পোরসগুলি কি খুবই বড় বড়? আপনি টেকনিক্যালি এইসমস্ত পোর্স ছোট করতে…
পরিষ্কার নিটোল মুখ, অথচ থুঁতনিতে কালো কালো ব্ল্যাকহেডস! কেমন লাগে বলুন তো! সৌন্দর্যটাই নষ্ট হয়ে…
আগেকার দিনে বলা হত, লজ্জা নাকি নারীর ভূষণ। না, আজকের দিনে আমরা ওইসব কথা বলব…
বাড়ির দেয়ালে রকমারী রঙের ছ্বটা অনেকেরই সাধ ও শখের পরিচয় বহন করে। কিন্তু কিছু বছর…
ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা উচিত এই কথাটা আমরা সবাই জানি কম বেশি। কিন্তু কেন? কি উপকার…
প্রাচীনকালে যখন রূপচর্চার এত উপকরণ হাতের কাছে ছিল না, সেই সময় থেকেই রূপচর্চার অন্যতম উপকরণ…