ডায়াবেটিস হল ডাক্তারের নানা বারনে জর্জরিত জীবন। শরীরের এমন একটা স্টেজ, যেখানে শরীরের সুগার শরীরের কাজে লাগতে পারে না। সুগার মলিকিউলসকে কাজে লাগিয়ে, শরীরের জন্য এনার্জি তৈরি করতে পারে না। খাবার হাজার ইচ্ছা থাকলেও, খাওয়া প্রায় হয় না বললেই চলে। আর রসনার তৃপ্তি না হলে জীবনটাই বৃথা।
মন খারাপের কোন কারন নেই, আপনার এই সমস্যার সমাধান নিয়ে হাজির আমরা। কারন শেয়ার করছি এমন এক ডায়েট প্ল্যান, যেখানে পেটও ভরবে আবার ডায়াবেটিস থাকবে হাতের মুঠোয়।
• রোজের ডায়েট প্ল্যানের ক্ষেত্রে, ১২০০ থেকে ১৬০০ ক্যালোরি দরকার। ডায়েট চার্ট থেকে উপকারী ফ্যাট বাদ দিলে চলবে না।
• খেতে হবে অল্প পরিমাণে। ডাক্তাররাও সেটাই বলেন। কম চিনি ও নুন যুক্ত খাবার চলতে পারে। তবে অল্প পরিমাণে।
• এছাড়াও প্রোটিন, ভিটামিন, মিনারেল তো থাকবেই ডায়েট প্ল্যানে।
• ডায়াবেটিসের ক্ষেত্রে আরও একটা বিষয় খুব গুরুত্বপূর্ণ সেটা হল ওজন। একটা সঠিক ওজন মেনে চলা খুব দরকারি।
• ওজন বেশী হয়ে গেলে ডায়াবেটিসের ক্ষেত্রে সমস্যা আরও বেড়ে যায়। তাই ডাক্তারের পরামর্শে অবশ্যই ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন।
• সেক্ষেত্রে রোজের ডায়েট চার্ট খুব গুরুত্বপূর্ণ। কেমন হবে রোজের ডায়েট চার্ট দেখে নিন।
সকালে ঘুম থেকে উঠে
একগ্লাস ঈষদুষ্ণ গরমজলে একটু লেবুর রস ফেলে খেতে পারেন অথবা
জলে অ্যাপেল সিডার ভিনিগার দিয়ে অথবা তরমুজ ও লেবু জল অথবা
গ্রীন টি চিনি ছাড়া খেতে পারেন। এবং সাথে দুটো বিস্কুট চলতে পারে।
ব্রেকফাস্ট
• একবাটি চিড়া, দুধ ( চিনি ছাড়া) ও কলা।
• দুটো পাউরুটি, দুধ ও একটি ডিমের সাদা অংশ।
• কনফ্লেক্স ও দুধ।
টিফিন
• একটা যেকোনো ফল। আপেল, বা কমলালেবু বা পেঁপে (যদি ব্রেকফাস্টে ফল না খান)।
• রায়তা বা মাসালা বাটার মিল্ক।
দুপুরের খাবার
• দুটো মিডিয়াম সাইজ রুটি, সবজির তরকারী,( বিশেষ করে সবুজ সবজি) ও একবাটি ডাল।
• বা খান ছোট বাতির একবাটি ভাত, মাছের ঝোল, ও শসা, পেঁয়াজ ও টম্যাটো দিয়ে তৈরি স্যালাড।
সন্ধ্যাবেলার স্নাক্স
• ঝালমুড়ি ও গ্রীন টি।
• গ্রীন টি ও দুটো বিস্কুট।
ডিনার
• দুটো রুটি ও একবাটি ডাল।
• দুটো চাপাটি ও চিকেন সুপ।
• দুটো রুটি এবং সবজির তরকারি।
• দুটো রুটি ও পনির এবং কড়াইশুঁটির তরকারি।
উপকারী ফ্যাট
• ফ্যাট মানেই কিন্তু বাজে নয়, কিছু ফ্যাট শরীরের জন্য দরকার।
• মোনোসাচুরেটেড এবং পলিসাচুরেটেড শরীরের জন্য উপকারী ফ্যাট। যেটা কিন্তু ওজন কমাতেও সাহায্য করে।
• উপকারী ফ্যাটের জন্য মাছ, মাছের তেল, সূর্যমুখী বীজ, কুমড়োর বীজ, আখরোট, পালং শাক, ইত্যাদি খেতে পারেন।
কার্বোহাইড্রেট
• ডায়াবেটিস হয়েছে বলে কার্বোহাইড্রেটেড যুক্ত খাবার একদম বন্ধ করলে কিন্তু চলবে না। আপনার শরীরেও দরকার কার্বোহাইড্রেট।
• যেসব খাবারে ফাইবার আছে সেইসব খাবার খান।
কলা, দুধ, দই, মাংস, ওটস, কিউই ফল, ইত্যাদি খেতে পারেন
শাকসবজি
• প্রায় সব শাকসবজি ভিটামিন, মিনারেল, ফাইবার, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ। যেগুলো শরীরকে সবদিক থেকে সুস্থ রাখতে একান্ত প্রয়োজনীয় ও নিজের ওয়েট কন্ট্রোলে রাখতেও সাহায্য করে।
• কিন্তু কোন কোন সবজি খাবেন বেশী করে দেখুন।
• যেকোনো সবুজ সবজি তো অবশ্যই সাথে বেগুন, টম্যাটো, ব্রকলি, ফুলকপি, পালং শাক, লেটুস পাতা, কপির পাতা ইত্যাদি।
প্রোটিন
• প্রোটিন যুক্ত ডায়েট যখন ঠিক করবেন। এমন কিছু খাবার বেঁছে নেবেন যাতে হাই ফ্যাট বা কার্বোহাইড্রেট না থাকে।
• এক্ষেত্রে ডায়েট চার্টে রাখুন, সয়াবিন, কুমড়ো বীজ, মাছ, মাংস, শিম, টফু ইত্যাদি।
দুধ জাতীয় খাবার
• লো ফ্যাট যুক্ত দুধ বা দুধ জাতীয় যেকোনো খাবার খেতে পারেন। তবে বেশী চিনি না নুন মিশিয়ে খাবেন না।
• এক্ষেত্রে লো ফ্যাট যুক্ত দুধ, ডিম কুসুমটা বাদ দিয়ে, লো ফ্যাট যুক্ত দই ইত্যাদি খেতে পারেন।
• ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে খুব সতর্ক ভাবে ডায়েট চার্ট ঠিক করা দরকার। খাবার থেকে কিন্তু ফ্যাট ও কোলেস্টেরলকে একেবারে বাদ দিলে চলবে না। উপকারী ফ্যাটেরও দরকার আছে শরীরের।
• ডায়াবেটিস রোগীদের একটা সমস্যা প্রায়ই হয়, খিদে মেটেনা। তাই এখানে আমরা খাবারের সময়কে সাতটি ভাগে ভাগ করেছি।
• দিনের শুরুটা করা উচিত একটা ডিটক্স ড্রিঙ্কের সাথে। যেটা কিনা শরীরে জমে থাকা সমস্ত টক্সিন দূর করে দেয়। ফলে হজম হয়,কোষ্ঠকাঠিন্যর মত সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায় এবং এটা স্কিনের জন্যও ভালো।
• সকালের ব্রেকফাস্টটা একটু হেভি করতে হবে। এটা থেকেই মিলবে সারাদিনের শক্তি।
• সবজির তরকারী নাহলে অন্তত দুটো মরশুমি ফল। এবং দুধ রোজ সকালে খেতে হবে। এগুলো সারাদিনের শরীরের ভিটামিন ও মিনারেলের চাহিদা পূরণ করবে।
• আর রাতে শোবার আগে দুধ। যেটা ভালো ঘুমোতে সাহায্য করবে। খাবার হজম করতেও।
• আমাদের দৈনন্দিন লাইফস্টাইল আমাদের শরীররে জন্য ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয়। সঠিক লাইফস্টাইলের অভাবেই কিন্তু যত সমস্যা। তাই……
• সকালে তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে উঠে একটু শরীরচর্চা যোগা করুন। তারপর একটা হেলদি ব্রেকফাস্ট।
• তারপর সঠিক সময়ে লাঞ্চ, ডিনার ও সঠিক সময়ে ঘুম। তারপর সারাদিন পর নিজের জন্য একটু সময় রাখা।
• এগুলো শুধু যে শরীরকে সুস্থ রাখে তা নয়, মনকেও রাখে স্ট্রেস মুক্ত। শরীররে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে।
• নিজের জন্য একটা রুটিন করে নিন। সেই রুটিন অনুযায়ী পর পর কাজ গুলো করুণ। দেখবেন শরীর ও মন দুটোই কেমন ফিট থাকে।
কি কি করবেন
• ডাক্তারের মত আমরাও বলব, চিনি যুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন । তবে সুগার ফ্রী চলতে পারে। কিন্তু খুব বেশী সুগার ফ্রী প্রতিদিন নয়।
• ঘুম থেকে উঠে, ডিটক্স ড্রিঙ্ক। ওপরে দেওয়া আছে।
• প্রতিদিনের ডায়েট চার্টে প্রচুর ফল ও শাকসবজি খান।
• রোজের খিদে ভাবটা মেটান প্রচুর জল, ফলের রস, দুধ খেয়ে।
• ড্রাই ফল খেতে পছন্দ করেন? খান তবে অল্প পরিমাণে।
• প্রতিদিন অবশ্যই শরীরচর্চা, যোগা।
• ডাক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখুন। যাতে নিজের সুগার কন্ট্রোলে থাকে।
কি কি করবেন না
• নুন জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলুন।
• ব্রেকফাস্ট একদিনও বন্ধ করবেন না।
• বেশি তেলের রান্না খাবেন না।
• কেক, পেস্ট্রি এড়িয়ে চলুন যদি সেগুলোতে খুব বেশী মিষ্টি হয়।
• হাই ফ্যাট ও কোলেস্টেরল যুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন।
• খুব বেশী চিন্তা করবেন না। স্ট্রেস মুক্ত থাকুন।
• ডাক্তারকে জিজ্ঞাসা না করে ডায়েট চার্ট করবেন না।
ডায়াবেটিস নিয়ে বেশী চিন্তার কোনও কারন নেই। সঠিক নিয়মের মধ্যে থাকলে, অনেকটাই কন্ট্রোলে আসে।
আজকের দেওয়া এই টিপস গুলো মাথায় রাখুন। এবং নিজের ওয়েট একটু কন্ট্রোলে রাখুন। তাহলেই দেখবেন ডায়াবেটিস কতটা আপনার কন্ট্রোলে থাকছে। আমাদের জানান কেমন লাগলো ডায়াবেটিসের এই স্পেশাল ডায়েট প্ল্যান।
আপনার মুখের রোমকূপ বা পোরসগুলি কি খুবই বড় বড়? আপনি টেকনিক্যালি এইসমস্ত পোর্স ছোট করতে…
পরিষ্কার নিটোল মুখ, অথচ থুঁতনিতে কালো কালো ব্ল্যাকহেডস! কেমন লাগে বলুন তো! সৌন্দর্যটাই নষ্ট হয়ে…
আগেকার দিনে বলা হত, লজ্জা নাকি নারীর ভূষণ। না, আজকের দিনে আমরা ওইসব কথা বলব…
বাড়ির দেয়ালে রকমারী রঙের ছ্বটা অনেকেরই সাধ ও শখের পরিচয় বহন করে। কিন্তু কিছু বছর…
ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা উচিত এই কথাটা আমরা সবাই জানি কম বেশি। কিন্তু কেন? কি উপকার…
প্রাচীনকালে যখন রূপচর্চার এত উপকরণ হাতের কাছে ছিল না, সেই সময় থেকেই রূপচর্চার অন্যতম উপকরণ…