“আশ্বিনের মাঝামাঝি উঠিল বাজনা বাজি ,পুজোর সময় এলো কাছে “—সত্যি পুজো একেবারে প্রায় চলেই এসেছে। পুজোর প্রস্তুতি পর্ব মানে নতুন জামা কাপড় কেনাকাটা ,কবে কোন দিন কোথায় ঘুরতে যাওয়া বা কোথায় কোথায় কোথায় কি কি খাওয়া দাওয়া হবে ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা নিশ্চই শুরু হয়ে গিয়েছে। কৈলাসেও কিন্তু একই পরিস্থিতি। প্রতি বছরের মতো এবারও যে দেবী দুর্গার মর্তে আগমনের দিন এগিয়ে আসছে। তাই কৈলাসেও প্রস্তুতি তুঙ্গে। মজার কথা হলো আমাদের মতো আগমন বা গমনের যানবাহন বা তার টিকিট কাটা নিয়ে কিন্তু মা দুর্গার কোনো চিন্তা নেই। শুধু মনের মতো বাহনটিতে উঠে বসলেই হলো। আবার স্বর্গে ফিরে যাবার সময়ও ইচ্ছে মতো বাহনটি ঠিক সময়ে উপস্থিত হয়। বাহনগুলি আমরা সবাই জানি। হাতি, নৌকা, পালকি এবং ঘোড়া। এই চারটি বাহনেই দেবী দুর্গার এই ধরাধামে আগমন ও প্রত্যাগমন হয়ে থাকে।
এবছর দেবী আসছেন নৌকাতে ও ফিরছেন ঘোড়াতে। কি কি হতে পারে জানেন কি? চলুন দেখে নি।
প্রতিবছর এই চারটি বাহনের মধ্যে কোনো একটিতে দেবীর আগমন ঘটে আবার ফিরে যাওয়ার সময় বাহনটি পরিবর্তিত হয়। যেমন যদি নৌকো করে আসেন তাহলে হাতি করে যাবেন বা যদি ঘোড়ায় আসেন তাহলে ফেরার সময় হয়তো নৌকো করে ফিরবেন। এভাবেই এক একবার দেবী যে কোনো দুটি বাহন ব্যবহার করেন যাতায়াতের জন্য। যেমন এইবছর দেবী নৌকো করে মর্তে আসবেন এবং ঘোড়ায় করে ফেরত যাবেন। এই প্রত্যেকটি বাহন অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। আসুন কিছু জেনেনি এই বাহনগুলি সম্পর্কে।
দেবী দুর্গার এই বাহনগুলি তৎকালীন সময়োপযোগী। কথিত আছে রাজা রামচন্দ্র রাবনকে বধ করার জন্য যাত্রা শুরুর আগে আশ্বিন মাসে দেবী দুর্গার অকাল বোধন করেছিলেন। তবে থেকেই এই সময় প্রতিবছর দূর্গা পুজো করা হয়। যেহেতু দেবী তার সন্তান সন্ততি নিয়ে স্বর্গ থেকেমর্তে আসবেন তাই বাহন তো প্রয়োজন। রাজা রামচন্দ্র যেহেতু এই পুজো শুরু করেন তাই সেই সময়কার কথা যদি আমরা চিন্তা করে থাকি তখন যাতায়াতের মাধ্যম হিসেবে রেলগাড়ি বা জাহাজ বা উড়োজাহাজ তো ছিলো না, ছিল বড় বজরা বা নৌকো, ঘোড়া, হাতি এবং পালকি। দেবী দুর্গার বাহন হিসেবে এগুলি নিশ্চিৎ হয়।
দেবী দুর্গা আগমন প্রত্যাগমের বাহন তিথি, নক্ষত্র এর বিচারে নিৰ্দিষ্ট হয়। পুরাণ ও শাস্ত্র অনুযায়ী সোমবার ও রবিবার দেবীর আগমন বা প্রত্যাগমনের বাহন হিসেবে ব্যবহৃত হয় হাতি, শনি ও মঙ্গলে ব্যবহৃত হয় ঘোড়া। বুধে যান হিসেবে ব্যবহৃত হয় নৌকো এবং বৃহস্পতি এবং শুক্রে ব্যবহৃত হয় পালকি বা দোলা। এই প্রত্যেকটি বাহনের সাথে জড়িয়ে আছে কিছু শুভ ও অশুভ সংকেত। যেমন হস্তী গমন এবং আগমন দুটি ক্ষেত্রেই শুভ। এর দ্বারা বোঝা যায় যে আমাদের ধরা সুজলা সুফলা হয়ে উঠবে। নৌকো করে আগমনের দ্বারা বোঝানো হয় যে দেবী প্রচুর আশীর্বাদ, ধান, ধন সম্পত্তি নিয়ে মর্তে আসবেন ।
কিন্তু নৌকো করে ফেরত যাওয়া বন্যা ও ক্ষয় ক্ষতিকে নির্দেশিত করে। ঘোড়ায় আগমন ও প্রত্যাগমন দুটি মড়ক, ফসলের ক্ষয় ক্ষতি, যুদ্ধ, রাজনৈতিক অস্থিরতাকে নির্দেশিত করে। পালকি বাহনটিও ভূমিকম্প, মহামারী ইত্যাদি ক্ষয় ক্ষতির ইঙ্গিত বহন করে। এবছর দেবীর আগমন নৌকোতে অর্থাৎ দেবীর আগমনের সময়টি আর্থিক ও সামাজিক উন্নতির ইঙ্গিত বহন করছে। কিন্তু যেহেতু দেবী ফেরত যাবেন ঘোড়ায় তাই তা ইঙ্গিত করছে অর্থনৈতিক ক্ষয় ক্ষতি রাজনৈতিক অস্থিরতাকে।
একটু ভেবে দেখলে আমরা দেখতে পাই যে এই বাহনগুলি প্রত্যেকটি কিন্তু আসন্ন সামাজিক প্রাকৃতিক এবং রাজনৈতিক শুভ বা অশুভ অবস্থাকে নির্দেশিত করছে। দুর্গাপূজা যেহেতু সবথেকে বড় সামাজিক উৎসব বা পূজা তাই প্রাচীন কালে দেব দেবীর সাথে সাথে পশুপাখি, যানবাহন, ফসল ইত্যাদি সবকিছুর উদ্দেশ্যেই তর্পন করা হতো। তাই দেবী দুর্গার বাহন হিসেবে হাতি, ঘোড়া, নৌকো বা পালকি এগুলিকে বেছে নেবার উদ্দেশ্যে এগুলিকেও সমান গুরুত্ব ও সামাজিক স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে।
আপনার মুখের রোমকূপ বা পোরসগুলি কি খুবই বড় বড়? আপনি টেকনিক্যালি এইসমস্ত পোর্স ছোট করতে…
পরিষ্কার নিটোল মুখ, অথচ থুঁতনিতে কালো কালো ব্ল্যাকহেডস! কেমন লাগে বলুন তো! সৌন্দর্যটাই নষ্ট হয়ে…
আগেকার দিনে বলা হত, লজ্জা নাকি নারীর ভূষণ। না, আজকের দিনে আমরা ওইসব কথা বলব…
বাড়ির দেয়ালে রকমারী রঙের ছ্বটা অনেকেরই সাধ ও শখের পরিচয় বহন করে। কিন্তু কিছু বছর…
ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা উচিত এই কথাটা আমরা সবাই জানি কম বেশি। কিন্তু কেন? কি উপকার…
প্রাচীনকালে যখন রূপচর্চার এত উপকরণ হাতের কাছে ছিল না, সেই সময় থেকেই রূপচর্চার অন্যতম উপকরণ…