মেয়েরা কি জামাকাপড় পরবে, কেন সেই জামাকাপড় পরবে, সে নিয়ে কিন্তু সমাজের আজও ভারি নজরদারি। ভাবুন তো, আজ আমরা একবিংশ শতকে বাস করছি, গ্লোবালাইজেশনের যুগ। হলিয়ুডের সিনেমা প্রাণপণে পপকর্ণ খেতে খেতে উপভোগ করি, বিলিতি ম্যাগাজিনের কভারে স্বল্পবসনা শ্বেতাঙ্গী সুন্দরীকে প্রাণভরে দেখি, কিন্তু তাও আমাদের সমাজে যেই কোনো মেয়ে ছোট কাপড় পরে রাস্তায় বেরোয়, অমনি ছিছিক্কার শুরু করে দিই। কেন এই বৈপরীত্য? বিদেশী মেয়েরা ছোট কাপড় পরে, কারণ ওরা পরতেই পারে। ওদের সংস্কৃতিতে মেয়েদের ছোট কাপড় পরাটা স্বাভাবিক ব্যাপার। আমাদের সমাজেও আমরা এটা মেনে নিয়েছি। অথচ আমাদের পাশের বাড়ির মেয়েটা যদি বাড়ি থেকে বেরোনোর সময় হটপ্যান্ট পরে বেরোয় তখনই আমাদের অস্বস্তি শুরু হয়ে যায়।
আমাদের ভারতীয় সংস্কৃতিতে মেয়েদের চিরকাল আমরা ঘরের চার দেওয়ালের মধ্যেই দেখে এসছি। দেখে এসছি তারা চিরকাল পুরুষের কথাই মুখ বুজে মেনে চলেছে। হঠাৎ করে এখন দেখছি মেয়েরা ছোট কাপড় পরে যখন খুশি রাস্তায় বেরিয়ে যাচ্ছে, নিজের ইচ্ছে মতো পোশাক পড়ছে, যেখানে খুশি যাচ্ছেও অর্থাৎ তারা ‘স্বাধীন’ হয়ে যাচ্ছে এতেই আসলে আপনাদের আপত্তি হয়।
২০১২ সালের শহর তোলপাড় করা সেই কুখ্যাত ঘটনাটা নিশ্চয়ই মনে আছে আপনাদের? হ্যাঁ। আমরা পার্ক স্ট্রীট ধর্ষণকাণ্ডের কথাই বলছি।
মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী তখন গোটা ঘটনাটি সম্পর্কে মন্তব্য করেছিলেন ‘সাজানো ঘটনা’ বলে। অপর এক মন্ত্রী মন্তব্য করেছিলেন খদ্দেরের সঙ্গে কথা কাটাকাটি বলে। গোটা ঘটনাটিতে ধর্ষিতা মেয়েটি কি পোশাক পরেছিলেন সে নিয়েও অনেকবার কথা উঠেছিল। তাছাড়া কোনো ধর্ষণ হলে বা ইভটিজিং-এর ঘটনা ঘটলেও মেয়েটির পোশাক নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়। সাম্প্রতিক কালের ‘পিঙ্ক’ সিনেমার কথাও নিশ্চয়ই মনে আছে আপনাদের! সেখানেও প্রশ্ন তোলা হয়েছিল মেয়েদের পোশাক নিয়ে। আর ‘পিঙ্ক’এ অমিতাভ বচ্চনের গলায় ‘তু চল’-এর লাইটাও নিশ্চয়ই মনে আছে ‘যো তুঝসে লিপ্টি বেড়িয়া সমঝ না ইনকো বস্ত্র তু’।
আদতে আমাদের সমাজে কিন্তু মেয়েদের জামাকাপড় পরাকে ওভাবেই দেখা হয়েছে—তার শরীরের কতটা অংশকে সে ঢেকে রাখবে আর কতটা অংশ সে অন্য কাউকে দেখাবে। ইদানীং কালের আর একটা গুরুত্বপূর্ণ বিতর্কের কথাও নিশ্চয়ই মনে পড়ছে আপনাদের–শিক্ষিকারা স্কুলে কি পরে যাবেন সে নিয়েও একটা বড় শোরগোল শুরু হয়েছিল, যেখানে বলা হয় স্কুলে সবসময় শাড়ি বা সালোয়ার পরেই যাওয়া যাবে। অর্থাৎ শাড়ি আর সালোয়ার হল ‘ভদ্র’ পোশাক ওটা পরে স্কুলের মতো একটা বিশেষ জায়গায় যাওয়া যায়। আর বাকি জিন্স-টপ হল ‘অভদ্র’ পোশাক, যা পরে স্কুলে যাওয়া যায় না!
ছোট কাপড় পরা আপত্তির নয় কখনই। একটা মেয়ে কি পরবে এটা সম্পূর্ণ তার ব্যক্তিগত ব্যাপার। আমাদের আপত্তিটা আসলে হয় মেয়েটা নিজের পছন্দ মতো পোশাক নিজের ইচ্ছেয় পরছে। পুরুষতান্ত্রিক সমাজ স্বভাবতই এটা মেনে নিতে পারে না।
আর হ্যাঁ, মেয়েরা ছোট কাপড় কেন পরবে না, পরতেই পারে—এই নিয়ে টিভিতে, কাগজে বা আমি-আপনি ঘরে বসে পায়ের ওপর পা তুলে যতই তর্ক করি, নারী স্বাধীনতা নিয়ে যতই প্রশ্ন তুলি বাইরের পরিস্থিতিটা কিন্তু অনেক আলাদা। আজ আমরা যতই আধুনিক হই না কেন, মানসিকতার বদল কিন্তু সহজে আসে না।
পুরুষতান্ত্রিক সমাজ চিরকালই ছোট জামাকাপড় পরা মেয়েদের ‘খারাপ’ ভেবে এসেছে, চোখ-নাক কুঁচকে তাদের কাজের সমালোচনা করেছে, তাদের আলাদা করে রেখেছে, তাই আজও মেয়েদের ছোট কাপড় পরাকে মেনে নিতে পারি না। আর খেয়াল করে দেখবেন শুধু ছেলেরা কিন্তু নয়, মেয়েরাও কিন্তু মেয়েদের এই ছোট কাপড় পরাকে অনেকসময়ই ভালোভাবে নেন না।
তবে হ্যাঁ। এটা অবশ্যই দেখার যে মেয়েটা কোথায় সেই জামাটি পড়ছে। শপিং মলে ওয়ান পিস পরে যাওয়া আর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ওয়ান পিস পরে যাওয়া আলাদা জিনিস। তাই নিজের ইচ্ছেয় জামাকাপড় পরবেন তো ঠিকই। তবে একটু ভেবে পড়ুন যে কোথায় জামাটি পরে যাচ্ছেন!
https://dusbus.com/bn/stoner-jonyo-breast-massage-janen-koto-kaj-dey-janun-kivabe-korben-keno/
আপনার মুখের রোমকূপ বা পোরসগুলি কি খুবই বড় বড়? আপনি টেকনিক্যালি এইসমস্ত পোর্স ছোট করতে…
পরিষ্কার নিটোল মুখ, অথচ থুঁতনিতে কালো কালো ব্ল্যাকহেডস! কেমন লাগে বলুন তো! সৌন্দর্যটাই নষ্ট হয়ে…
আগেকার দিনে বলা হত, লজ্জা নাকি নারীর ভূষণ। না, আজকের দিনে আমরা ওইসব কথা বলব…
বাড়ির দেয়ালে রকমারী রঙের ছ্বটা অনেকেরই সাধ ও শখের পরিচয় বহন করে। কিন্তু কিছু বছর…
ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা উচিত এই কথাটা আমরা সবাই জানি কম বেশি। কিন্তু কেন? কি উপকার…
প্রাচীনকালে যখন রূপচর্চার এত উপকরণ হাতের কাছে ছিল না, সেই সময় থেকেই রূপচর্চার অন্যতম উপকরণ…