কোচবিহার পশ্চিমবঙ্গের একটি জেলা। ঐতিহাসিক গুরুত্ব সম্পন্ন এই শহর কিন্তু বেশ প্রাচীন এবং বেশ সুন্দর সাজানো গোছানো। কুচবিহার কোচ রাজত্বের অতর্ভুক্ত ছিল এবং সেই সাক্ষ্য বহন করে কোচবিহার রাজবাড়ি। জয়পুরের রাজমাতা গায়েত্রী দেবী ছিলেন এই রাজবংশের কন্যা। প্রকৃতির কোলে অবস্থিত এই শহর কিন্তু বেশ ছিমছাম এবং সুন্দর। তাই শহরের ইঁদুর দৌড়, আওয়াজ এবং ব্যস্ততা থেকে যদি দু-চার দিনের জন্য ছুটি পেতে চান তাহলে কিন্তু ঘুরে আসতেই পারেন কোচবিহার, পরিবারের সকলের সাথে বা বন্ধুদের সাথে বা নিছক যদি একাই থাকতে চান ক’টা দিন তাহলে কিন্তু বেড়িয়ে আসতেই পারেন। তবে ট্যুর গাইডের কাজটা কিন্তু করবে ‘দাশবাস’।
মূলত ট্রেন আপনাকে কোচবিহার পৌঁছতে সাহায্য করবে। শিয়ালদা থেকে আপনি বেশ কয়েকটি ট্রেন যেমন তিস্তা তোর্সা, কামরূপ, উত্তরবঙ্গ ট্রেন তো পাবেনই। এছাড়া মোটামুটি সমস্ত গুয়াহাটি গামী ট্রেনগুলি কোচবিহারের ওপর দিয়েই যায়। এছাড়া আপনি যদি প্লেনে আসতে চান তাহলে বাগডোগরাতে নেমে আপনাকে গাড়ি বুক করে বা বাসে করে কোচবিহার পৌঁছতে হবে।
কোচবিহারে থাকার জন্য আপনি প্রচুর প্রাইভেট হোটেল পেয়ে যাবেন। এছাড়া গভর্নমেন্টের গেস্ট হাউস পেয়ে যাবেন। এগুলি ছাড়াও থাকার ভালো জায়গা হিসেবে জেলা পরিষদের অতিথি নিবাস এবং বেনফিশ দ্বারা চালিত টুরিস্ট কমপ্লেক্সও বেশ ভালো অপশন। এগুলি আগে থেকেই অনলাইনে বুক করে ফেলতে পারবেন আপনি। মোটামুটি ৬০০ থেকে ১০০০ টাকার মধ্যে থাকার মত ভালো হোটেল আপনি পেয়ে যাবেন। তবে এর থেকেও বেশী রেঞ্জের হোটেল বা টুরিস্ট লজও আপনি পেয়ে যাবেন।
কোচবিহারে দেখার বেশ অনেক গুলি ভালো জায়গা আছে, যা আপনাদের নিশ্চিত ভালো লাগবে।
কোচবিহার জেলার মূল আকর্ষণ কিন্তু এই রাজবাড়ি। ইংল্যান্ডের বাকিংহাম প্যালেসের অনুকরণে তৈরী এই বিশাল রাজবাড়ি কিন্তু আজও রাজবাড়ির জাঁকজমকের সাক্ষ্য বহন করে। মহারাজা নৃপেন্দ্র নারায়ণের আমলে এই রাজপ্রাসাদ তৈরী হয়। এটি পুরোপুরি ঘুরে দেখতে কিন্তু অন্তত ২-৩ ঘন্টা সময় লাগবে। এর সাথে লাগোয়া মিউজিয়াম কিন্তু মিস করা চলবে না। এছাড়া সন্ধ্যে বেলায় বেশ সুন্দর একটি লাইট অ্যান্ড সাউন্ড প্রোগ্রামের আয়োজন করা হয়।
মহারাজা হীরেন্দ্র নারায়ণের আমলে তৈরী এই দীঘি। এই স্থানটিও বেশ মনোরম।
মদনমোহন মন্দির কোচবিহার জেলার একটি প্রসিদ্ধ পীঠস্থান। রাজা নৃপেন্দ্র নারায়ণ এই মন্দির তৈরী করেন। এর পূজ্য দেবতা হলেন মদনমোহন বা গোপাল বা বাল কৃষ্ণ। এই মন্দির খুবই জাগ্রত। রাস মেলার সময় কিন্তু এই মন্দির জুড়ে নানা উৎসব ও মেলার আয়োজন করা হয়। এই মন্দির দর্শন করলে মনের কামনা পূর্ণ হয় বলে কথিত আছে।
কোচবিহার জেলার আরেকটি আকর্ষণ হলো বানেশ্বর মন্দির। এই মন্দিরের গর্ভগৃহে যে শিবলিঙ্গটিকে পূজা করা হয় তা প্রায় ১০ ফিট মাটির নীচে অবস্থিত। এছাড়া এই মন্দিরে একটি অর্ধনারীশ্বর মূর্তিও আছে।
কোচবিহার শহরটি ১ দিন বা ১/২ দিনের মধ্যেই আপনি ঘুরে ফেলতে পারবেন। আর হাতে যদি আর একটু সময় থাকে তাহলে কিন্তু অনায়াসে ঘুরে আসতে পারেন জলদাপাড়া জঙ্গল বা রাজাভাতখাওয়া জঙ্গল। আর চাইলে একরাত কিন্তু জঙ্গলেও কাটাতে পারেন। এর সাথে কিন্তু করে ফেলতে পারেন বেশ রোমাঞ্চকর জঙ্গল সাফারি, তাও আবার হাতির পিঠে চড়ে।
এই দুটি জায়গাতেই কিন্তু আপনি অজস্র টুরিস্ট লজ এবং জঙ্গলের ভেতরে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের টুরিস্ট লজ আছে যা আপনি অনলাইনে সহজেই বুক করে ফেলতে পারবেন। এবং সেখানেই আপনি এলিফ্যান্ট সাফারির জন্যও বুকিং করে ফেলতে পারবেন। মোটামুটি ৬০০ টাকা লাগবে একেক জনের জন্য এলিফ্যান্ট সাফারিতে। আর জীপ্ সাফারি করতে চাইলে পার জীপ ১০০০ টাকা থেকে ১৫০০ টাকার মত লাগবে।
থাকার খরচ কিন্তু মোটামুটি ১০০০ টাকা থেকে শুরু করে ৩০০০ বা ৪০০০ টাকা মত লাগবে এক এক দিনের। যা আপনার হোটেল বা টুরিস্ট লজের ওপর নির্ভর করবে। মোটামুটি ভাবে ২ জনের থাকা খাওয়া মিলে ১৫-২০ হাজার টাকা খরচা হবে ট্রেন ভাড়া সমেত। তবে এর থেকে বেশী বা কম দুটিই হতে পারে।
সব মিলিয়ে আপনার এই ছোট্ট ট্যুর কিন্তু বেশ জমজমাট হবে। সবুজ অরণ্য এবং সুন্দর শান্ত ছোট্ট একটি শহর কিন্তু আপনাকে হতাশ করবে না। তাই চটপট ব্যাগপ্যাক রেডি করে ফেলুন বেড়িয়ে পড়ার জন্য।
আপনার মুখের রোমকূপ বা পোরসগুলি কি খুবই বড় বড়? আপনি টেকনিক্যালি এইসমস্ত পোর্স ছোট করতে…
পরিষ্কার নিটোল মুখ, অথচ থুঁতনিতে কালো কালো ব্ল্যাকহেডস! কেমন লাগে বলুন তো! সৌন্দর্যটাই নষ্ট হয়ে…
আগেকার দিনে বলা হত, লজ্জা নাকি নারীর ভূষণ। না, আজকের দিনে আমরা ওইসব কথা বলব…
বাড়ির দেয়ালে রকমারী রঙের ছ্বটা অনেকেরই সাধ ও শখের পরিচয় বহন করে। কিন্তু কিছু বছর…
ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা উচিত এই কথাটা আমরা সবাই জানি কম বেশি। কিন্তু কেন? কি উপকার…
প্রাচীনকালে যখন রূপচর্চার এত উপকরণ হাতের কাছে ছিল না, সেই সময় থেকেই রূপচর্চার অন্যতম উপকরণ…