গরমে সবচেয়ে বেশি যে সমস্যায় আমরা ভুগি সেটা হল ঘামাচির সমস্যা। দেখুন আমরা তো ঘরে বসে থাকতে পারবো না। তাই রোদে আমাদের বেরোতেই হবে। সঙ্গে থাকবে সূর্যের রোদ, তাপ, গা জ্বালা ভাব এই সব। কিন্তু এর মধ্যেই গোদের উপর বিষফোঁড়ার মতো দেখা দেবে ঘামাচি। আর ঘামাচি মানেই চুলকানি, স্কিন লাল হয়ে যাওয়া আর জ্বালা ভাব। সামনেই যে গরম মানেই আবার ঘামাচি হবে ভেবে নিশ্চয়ই আপনি এখন থেকেই চিন্তিত। কিন্তু চিন্তা সরিয়ে এখন থেকেই যদি যত্ন নেন তাহলে কিন্তু ঘামাচি আর হবে না। আসুন দেখে নিই সেগুলো কী কী।
ঘামাচির সমস্যা হওয়ার সবচেয়ে বড় কারণ হল ঘাম। আরও স্পষ্ট করে বললে ঘাম জমে যাওয়া। আমাদের স্কিনের পোর্সের মুখে যদি সারা দিনের ধুলো, ময়লা জমে যায় ঘামের জন্য, তা থেকেই ঘামাচি হয় মূলত। বিজ্ঞানের ভাষায় একে মিলিয়ারিয়া বলে। এটি তাই বলা যায় মূলত আমাদের ঘর্মগ্রন্থির সমস্যা। যখন ওই ময়লা দিনের পর দিন ধরে ঘর্মগ্রন্থির নিচে জমা হয় আর তা জমে ফুসকুড়ির আকার নেয়, তখনই তাকে আমরা বলি ঘামাচি। যখন খুব স্যাঁতস্যাঁতে পরিবেশ হয়ে যায় তখন ঘামাচির প্রকোপ বাড়ে। কারণ তখন ঘামের সঙ্গে ব্যাকটেরিয়ার প্রভাবও বেড়ে যায়।
ঘামাচি কেন হয় তো বললাম। এবার জানা যাক ঘামাচি থেকে মুক্তির উপায় কী কী।
বরফ কিন্তু ঘামাচি থেকে খুব তাড়াতাড়ি আমাদের উপকার দেয়। ঘামাচি হলে যে জ্বালা ভাব হয় আর গরম হয়ে থাকে জায়গাটা সেটা বরফ ব্যবহার করলে কমে যায়। সঙ্গে বরফ ময়লাও পরিষ্কার করে ভিতর থেকে। বরফ ব্যবহার করাও সেরকম কোনও কঠিন ব্যাপার নয়। শুধু একটি কাপড়ে বরফ নিয়ে সেটা ওই ঘামাচি হওয়া জায়গায় ঘষুন। দেখবেন এতে খুব তাড়াতাড়ি উপকার পাবেন।
ঘামাচি হলেই আপনার প্রধান দায়িত্ব হল ঘামাচির জায়গাটি ঠাণ্ডা রাখা। আর এই ঠাণ্ডা রাখতে পারে মুলতানি মাটি।
উপকরণঃ ১ চামচ মুলতানি মাটি, ৩ চামচ গোলাপ জল।
পদ্ধতিঃ মুলতানি মাটি আর গোলাপ জল এক সঙ্গে মিশিয়ে একটা ঘন পেস্ট তৈরি করুন। তারপর সেই পেস্ট ঘামাচির জায়গায় লাগিয়ে শুকোতে দিন। তারপর জল দিয়ে ধুয়ে নিন। এটি এক দিন ছাড়া ছাড়া করুন।
ঘামাচির প্রধান কারণ হল ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণ। আর ব্যাকটেরিয়ার প্রভাব কম করতে পারে নিমপাতা। তাই ঘামাচির জায়গায় নিমপাতা ব্যবহার করুন।
উপকরণঃ ১০-১২টি নিমপাতা।
পদ্ধতিঃ নিমপাতা আগে ভালো করে ধুয়ে রোদে শুকিয়ে নিন। তারপর সেই পাতা গুঁড়ো করে জলের সঙ্গে মিশিয়ে পেস্ট বানিয়ে নিন। সেই পেস্ট ঘামাচির জায়গায় লাগান। শুকিয়ে গেলে আপনি ঠাণ্ডা জলে ধুয়ে নিন। এটি ব্যবহার করলে দেখবেন খুব সহজেই আপনি ঘামাচির জ্বালা, চুলকানি থেকে মুক্তি পাচ্ছেন।
আদার মধ্যে যে ইনফ্লেমেটরি উপাদান আছে তা কিন্তু অতি সহজেই ঘামাচির হাত থেকে আমাদের রক্ষা করে। আর আদা ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ দূর করতেই সমর্থ।
উপকরণঃ ১টি আদা কুচি।
পদ্ধতিঃ আদা কুচি কুচি করে কেটে ভালো করে ধুয়ে নিন। জলে দিয়ে ভালো করে ফুটিয়ে নিন আর তারপর সেই জল ঠাণ্ডা হতে দিন। এবার জল ঠাণ্ডা হলে একটি কাপড় তাতে ভিজিয়ে ঘামাচির উপর দিন। এটি কিন্তু খুব তাড়াতাড়ি ঘামাচি কমিয়ে দেয়।
ত্বকের যে কোনও সমস্যার একমাত্র সমাধান হল এই অ্যালোভেরা। ত্বকের র্যাএশ বা জ্বালা, চুলকানি থেকে ঘামাচি, সবও কিছুর জন্য উপকারী একমাত্র অ্যালোভেরা।
উপকরণঃ পরিমাণ মতো অ্যালোভেরার জেল।
পদ্ধতিঃ বাড়িতে অ্যালোভেরা গাছ থাকলে তার থেকে রস বের করে নিন। তা না হলে ভালো কোনও ব্র্যান্ডের অ্যালোভেরা জেল কিনে নিন। সেটি নিয়ম করে রোজ ওই ঘামাচির জায়গায় ব্যবহার করুন। শুকিয়ে গেলে তারপর ধুয়ে নিন জল দিয়ে। দেখবেন এতে আপনার ঘামাচি কয়েক সপ্তাহে কমে আসবে।
গরমকালে পাওয়া যাওয়া এই ফলটি খেতে যেমন অনবদ্য, তেমনই কাজেও দারুণ। এর মধ্যে যে ঠাণ্ডা ভাব আছে তা ঘামাচির প্রদাহ কম করে।
উপকরণঃ কয়েক টুকরো তরমুজ।
পদ্ধতিঃ তরমুজ থেকে আগে বীজ বের করে দিন। তারপর তরমুজ পেস্ট করে সেই পেস্ট লাগিয়ে নিন ঘামাচির জায়গায়। ২০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। দেখবেন এটি নিয়ম করে করলে এক সপ্তাহের মধ্যে আপনাদের ঘামাচি দূর হয়ে যাবে। আবার ঘামাচি আসবেও না।
তাহলে আর দেরি না করে আজই এর মধ্যে যেটা মনে হবে সেটা ব্যবহার করা শুরু করুন। আর তারপর উপকার পেয়ে আমাদের জানাতে ভুলবেন না কিন্তু।
আপনার মুখের রোমকূপ বা পোরসগুলি কি খুবই বড় বড়? আপনি টেকনিক্যালি এইসমস্ত পোর্স ছোট করতে…
পরিষ্কার নিটোল মুখ, অথচ থুঁতনিতে কালো কালো ব্ল্যাকহেডস! কেমন লাগে বলুন তো! সৌন্দর্যটাই নষ্ট হয়ে…
আগেকার দিনে বলা হত, লজ্জা নাকি নারীর ভূষণ। না, আজকের দিনে আমরা ওইসব কথা বলব…
বাড়ির দেয়ালে রকমারী রঙের ছ্বটা অনেকেরই সাধ ও শখের পরিচয় বহন করে। কিন্তু কিছু বছর…
ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা উচিত এই কথাটা আমরা সবাই জানি কম বেশি। কিন্তু কেন? কি উপকার…
প্রাচীনকালে যখন রূপচর্চার এত উপকরণ হাতের কাছে ছিল না, সেই সময় থেকেই রূপচর্চার অন্যতম উপকরণ…