প্রতিদিন যদি ঘুম ভাঙে প্রকৃতির ছোঁয়ায়? কিংবা দিনের শুরুটা যদি হয় সবুজের মাঝে একরাশ সতেজতা পজেটিভিটি নিয়ে? তাহলে নিশ্চয়ই খুব ভালো লাগবে? অনেকের শোয়ার ঘরের জানলা দিয়ে সবুজ দেখার সুযোগ থাকলেও, অনেকেরই আবার সে সুযোগ নেই। ঘুম ভেঙেই চোখে পড়ে সেই কংক্রিটের দেওয়াল। তাহলে উপায় কি? উপায় হল, শোয়ার ঘরকেই করে তুলতে পারেন সবুজ।
ভাবুন তো চারিদিকে যেখানে কংক্রিটের দেওয়াল, দূষণ সেখানে আপনার ঘরে প্রকৃতির ছোঁয়া। ভাবছেন গাছ ঘরের ভিতর সেটা কীভাবে সম্ভব? সম্ভব কারণ এমন অনেক গাছ যেগুলো ঘরের ভেতর রাখার জন্যই হয়। যেগুলোকে আমরা বলে থাকি ইনডর প্ল্যান্ট। এগুলো শুধু যে ঘরের শোভা বাড়ায় তাই নয়। ঘরের ভেতর কেও রাখে দূষণ মুক্ত। এছাড়াও শরীর মন দুইই ভালো রাখতে সাহায্য করে এই গাছগুলি। তাহলে চলুন দেখে নেওয়া যাক কি কি গাছ রাখতে পারেন ঘরের ভেতর।
অ্যালোভেরা শুধু রূপচর্চায় লাগে না, অ্যালোভেরার রয়েছে আরও অনেক গুণ। আপনাকে সুন্দর রাখার পাশাপাশি ঘরের ভেতরটাও সুন্দর রাখতে সাহায্য করে এই গাছ। কারণ এই গাছের আরও একটি বড় ভূমিকা আছে। সেটা হল বায়ু পরিশোধন করা।
এটি বাতাসে মিশে থাকা ক্ষতিকর গ্যাস যেমন বেনজেন , ফর্মালডিহাইডের মত কেমিক্যালের দূষণ কমায়। রাতে ভালোভাবে ঘুমোতেও সাহায্য করে। কারণ এই গাছ আপনার ঘরের বাতাসকে বিশুদ্ধ রাখতে সাহায্য করে। পাশাপাশি এই গাছ বাড়িতে থাকলে রূপচর্চা তো হবেই। স্কিন চুল এবং শরীরও ভালো থাকবে আবার বাড়ির এয়ার কোয়ালিটিও ভালো রাখবে অ্যালোভেরা।
এই গাছ বেশি জল সহ্য করতে পারে না। তাই টবের ড্রেনেজ সিস্টেম ভালো রাখতে হবে। আর মাটির সাথে বালি মিশিয়ে নেবেন। মাটির অর্ধেক পরিমাণ বালি। যাতে জল না দাঁড়ায় মাটিতে। সাথে ভার্মি কমপোষ্ট বা গোবর সার, হাড়ের গুড়ো মিশিয়ে নিতে পারেন। গাছ ভালো থাকবে।
খুব বেশি জল দেবেন না। মাটি শুকিয়ে গেলে তবেই জল দেবেন। আর তীব্র রোদে রাখবেন না। এটি ইনডর ও আউটডর প্ল্যান্ট দুটো হিসাবেই রাখতে পারেন। তবে বাইরে রাখলে তীব্র রোদে রাখবেন না। ছায়ায় রাখবেন। ইনডরে রাখলে বারান্দায় রাখুন যেখানে ভালো আলো আসে।
নাম শুনে বেশ অন্যরকম লাগছে? আসলে এই গাছের পাতাগুলো অনেকটা সাপের মত লম্বা হয়। আর সেরকমই এঁকেবেঁকে ওঠে তাই এর নাম স্নেক প্ল্যান্ট। তবে গুণ আছে বিস্তর। শোয়ার ঘরে নির্বিঘ্নে এই গাছ রাখতে পারেন।
শোয়ার ঘর যেমন সুন্দর লাগবে দেখতে তেমনই ভালো থাকবে বাতাসের গুণমান।কারণ এই গাছ রাত্রিবেলা অক্সিজেন ছাড়ে।বাতাসে মিশে থাকা ক্ষতিকর উপাদান যেমন বেনজেম, ফর্মালডিহাইড, কার্বন ডাই অক্সাইড ও আরও ক্ষতিকর উপাদান শোষণ করে।বেশি পরিমাণে অক্সিজেন ছাড়ার কারণে, ফ্রেশ লাগে ঘুম ভালো হয়। মাথা ধরা, চোখে ক্লান্তি, শরীরের ক্লান্তি এইসব নিয়ন্তনে রাখে এই গাছ।
গাছ বসানোর আগে মাটি তৈরি করে নিন। যেকোনো মাটির সাথে বালি মিশিয়ে নেবেন। যতটা মাটি তার অর্ধেক বালি। সাথে একটু গোবর সার বা ভার্মি কমপোষ্ট মিশিয়ে নিতে পারেন। সব উপকরণ ভালো করে মিশিয়ে টবে রাখুন।
আগেই বললাম শোয়ার ঘরে অনায়াসে রাখতে পারেন। কারণ এর আলো রোদ ততটাও লাগে না।
জলও তেমন লাগে না। ঘনঘন জল দেবার দরকার নেই। মাটি শুকিয়ে গেলে তবেই জল দিন।
অতিরিক্ত জল বেড়িয়ে যাবার ব্যবস্থা যেন থাকে। গাছের গোঁড়ায় জল জমতে দেবেন না। একদম প্রখর সূর্যের তাপে রাখবেন না। ঘরের জানলার সামনে যেখানে অল্প রোদ আসে সেখানে রাখুন। অল্প রোদ আলোই যথেষ্ট। সরাসরি রোদের নীচে রাখবেন না।
ঘরের ভেতরের বাতাসকে বিশুদ্ধ পরিষ্কার রাখতে এটি খুবই একটি উপকারী গাছ। এটি ঘরে থাকলে ঘরের ভেতরের এবং বাইরের বাতাসের মধ্যে পার্থক্য থাকবে।
কার্বন মনোক্সাইডের মত ক্ষতিকর উপাদান বাতাস থেকে শোষণ করে নেয়। এছাড়াও আরও অন্যান্য ক্ষতিকর উপাদান পরিষ্কার করে দেয়। এছাড়াও ক্যান্সার সৃষ্টিকারী বিভিন্ন উপাদান বাতাস থেকে পরিষ্কার করে দেয়। আপনার ঘর থেকে প্রায় ৯৫% টক্সিন বাতাস থেকে পরিষ্কার করে দেবে এই গাছ। এছাড়াও এটিও বেশ ভালো পরিমাণে অক্সিজেন ছাড়ে। আপনি পাবেন বিশুদ্ধ অক্সিজেন।
আর বিশুদ্ধ অক্সিজেন পাওয়ার ফলে অনেক শারীরিক সমস্যা থেকেই দূরে থাকতে পারবেন সহজে। যেমন যদি আপনার ডাস্ট অ্যালার্জি থাকে, তাহলে এই গাছ আপনার জন্য উপযুক্ত। এছাড়াও স্ট্রেস কমাতে বেশ সাহায্য করে এই গাছ। ফলে ঘুম ভালো হয়। এই গাছ বাড়িতে থাকলে আপনি বেশ এনার্জি পাবেন।
গাছ বসানোর আগে মাটি তৈরি করে নিন। যেকোনো মাটির সাথে একটু বালি মিশিয়ে নিন। মানে তিনভাগ মাটি হলে ১ভাগ বালি মিশিয়ে নিন। যাতে মাটিতে জল না দাঁড়ায়। এইসব গাছের ক্ষেত্রে জল জমলে হবে না। এছাড়াও ভার্মি কমপোষ্ট বা গোবর সার মিশিয়ে নিতে পারেন। এতে গাছ ভালো থাকবে। অনেকে মাটির বদলে কোকোপিট ও ব্যবহার করেন।
এই গাছেও বেশি জল দিতে লাগে না। একবার জল দেবার পর মাটি শুকিয়ে যা যাওয়া অবধি জল দেবেন না। খুব বেশি জল এইসব গাছ পছন্দ করে না। এবং সরাসরি রোদের নীচে এই গাছ রাখবেন না। বারান্দায় বা ঘরের জানলার সামনে যেখানে আলো বেশি আসে সেখানে রাখবেন।
এটিও খুব ভালো একটি ইনডর প্ল্যান্ট। যেটি ঘরের বাতাস শুদ্ধ রাখতে বেশ সাহায্য করে। বাতাস থেকে ক্ষতিকর উপাদান শোষণ করে বাতাসকে রাখে বিশুদ্ধ। ক্যান্সার সৃষ্টিকারী বিভিন্ন উপাদান বাতাস থেকে দূর করে দেয়। এছাড়াও আদ্রতার পরিমাণ ঠিক রাখে। অতিরিক্ত আদ্রতা শুষে নেয়। যাদের অল্পেই ঠাণ্ডা লাগে তাদের জন্য এই গাছ উপকারী।
এই গাছের মাটিও একইভাবে তৈরি করে নিতে পারেন। মানে মাটির সাথে বালি, কমপোষ্ট মিশিয়ে নিন। সাথে চাইলে একটু কোকোপিট মিশিয়ে নিতে পারেন। জল দেবার ক্ষেত্রে ও একই নিয়ম। তবে এক্ষেত্রে মাটি একদম শুকিয়ে যাবার আগেই জল দেবেন। মানে মাটি অল্প শুকনো হলে জল দিন। আর সরাসরি রোদে রাখবেন না। তবে একটু বেশি আলোর দরকার এই গাছের।
লিলিফুল ঘরে রাখা নাকি খুব শুভ বলা হয়। এই গাছে সাদা রঙের ফুল হয়। সাদা রঙ যে শান্তির প্রতীক সেটা তো সবাই জানি। সাদা নেগেটিভ এনার্জি দূর করে পজেটিভিটি আনে। তাই এই গাছ আপনার বাড়ির জন্য বেশ ভালোই হবে।
নাম শুনেই একটা শান্তির আভাস পাওয়া যাচ্ছে। হ্যাঁ এই গাছ শান্তিতে ঘুমতে সাহায্য করে। আপনার ঘরের প্রায় ৬০% দূষণ কমিয়ে ঘরের বাতাসকে শ্বাস প্রশ্বাসের জন্য উপযুক্ত করে তোলে। আপনি একটা পজেটিভ এনার্জি অনুভব করতে পারবেন।
এই গাছের ক্ষেত্রেও মাটি একইরকম ভাবে তৈরি করে নিতে পারেন। এবং জলের ক্ষেত্রে খুব বেশি জল দেবেন না। খেয়াল রাখবেন মাটিতে যেন জল না দাঁড়ায়। মাটি একটু শুকিয়ে গেলে জল দেবেন। এই গাছও একদম সরাসরি রোদে রাখবেন না। বেশি রোদ সহ্য করতে পারে না। বারান্দায় বা জানলার সামনে যেখানে বেশি আলো আসে সেখানে রাখতে পারেন।
আপনার মুখের রোমকূপ বা পোরসগুলি কি খুবই বড় বড়? আপনি টেকনিক্যালি এইসমস্ত পোর্স ছোট করতে…
পরিষ্কার নিটোল মুখ, অথচ থুঁতনিতে কালো কালো ব্ল্যাকহেডস! কেমন লাগে বলুন তো! সৌন্দর্যটাই নষ্ট হয়ে…
আগেকার দিনে বলা হত, লজ্জা নাকি নারীর ভূষণ। না, আজকের দিনে আমরা ওইসব কথা বলব…
বাড়ির দেয়ালে রকমারী রঙের ছ্বটা অনেকেরই সাধ ও শখের পরিচয় বহন করে। কিন্তু কিছু বছর…
ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা উচিত এই কথাটা আমরা সবাই জানি কম বেশি। কিন্তু কেন? কি উপকার…
প্রাচীনকালে যখন রূপচর্চার এত উপকরণ হাতের কাছে ছিল না, সেই সময় থেকেই রূপচর্চার অন্যতম উপকরণ…