অনেক দিন হল আমরা কোথাও ঘুরতে যেতে পারছি না। নাইট কার্ফু, হরেক বিধিনিষেধ মেনে আমরা ঘরেই বন্দি। কিন্তু ঘুরতে যেতে তো আমাদের মন চায়। আবার ঘুরতে যাওয়ার সময়ে মনে আসে কিছু জিনিস। খুব দূরে যাওয়া যাবে না, বাজেট ঠিক রাখতে হবে, এমন জায়গায় যেতে হবে যেখানে লোক কম যায়, যাতে সংক্রমণের ভয় না থাকে। এই সব কথা মাথায় রেখেই বলছি, বাঁকুড়া গেলে কেমন হয়?
কোথাও যাওয়ার থাকলে আমরা আগে একটা প্ল্যান করে নিই। কি কি দেখব, কোথায় কোথায় ঘুরব এই সব প্ল্যান হাতের কাছে করা থাকলে সময় অনেক বেঁচে যায়। তাই এই তিন দিন আপনারা বাঁকুড়ায় ঠিক কি কি দেখতে পারেন তার একটা হিসেবনিকেশ করা যেতেই পারে।
কলকাতা থেকে ২৪৯ কিমি দূরে এই বিহারিনাথ পাহাড় হল বাঁকুড়ার সর্বোচ্চ পাহাড়। এর একদিনে পুরুলিয়া আর আরেক দিকে দামোদর নদ। এখানে হীরক রাজার দেশে সিনেমার শুটিং হয়েছিল। এখানে সবথেকে বেশি আকর্ষণীয় হল বিহারিনাথ ড্যাম। বিকেলের দিকে এখান থেকে সূর্যাস্ত দেখতে অসাধারণ লাগে। এখানে আপনি নানা রকমের পাখি দেখতে পারেন। আপনার ইচ্ছে হলে ট্র্যাকিং করতে পারেন।
সামনেই আছে বিহারিনাথ মন্দির, সেখানে প্রথম দিন পুজো দিতেও পারেন। এখান থেকেই কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই আপনি পৌঁছে যেতে পারেন মাইথন বা পাঞ্চেতে। এখানে জাওয়ায় খুব সহজ। নিজের গাড়ি থাকলে দুর্গাপুর হাইওয়ে ধরে যেতে পারেন।
ট্রেনে যেতে হলে আসানসোল যাওয়ার ট্রেন নিতে পারেন। আসানসোল বিহারিনাথ থেকে ৪৬ কিমি। আপনি ট্রেনে রানিগঞ্জ পৌঁছে সেখান থেকেও যেতে পারেন। এটা বেশি সহজ কারণ এখান থেকে বিহারিনাথের দূরত্ব ২২ কিমি মাত্র।
নামটা হয়তো খুব একটা শোনা নয়, কিন্তু অসাধারণ জায়গা। কংসাবতী নদীর তীরে এটি একটি সুন্দর গ্রাম। এখানকার মন্দিরে টেরাকোটা আর ডোকরার কাজ খুব বিখ্যাত। কংসাবতী নদীতে বোটিং করতে পারেন। এখান থেকে ৪ কিমি দূরে অম্বিকানগরে আছে পরেশনাথ পাহাড়। আপনি এখানকার রিসোর্টে থাকতেও পারেন।
আপনি বিহারিনাথ থেকে এখানে চলে এসে রাতে বরং এখানেই থেকে নিন। এখানকার রিসোর্টে কিন্তু এসি থেকে শুরু করে গিজার, সব আছে। আপনি কলকাতা থেকে আগে এখানে যেতেই পারেন। কলকাতা থেকে হাইওয়ে ধরলে ২৬০ কিমি। দুর্গাপুর হাইওয়ে ধরে চলে যান সহজে। এছাড়া বাঁকুড়া জংশন থেকে এই জায়গা মাত্র ৫০ কিমি।
পরের দিন সকালে চলে আসুন এখানে। অনেকেই শুধু পিকনিক করোটে এখানে আসেন। কলকাতা থেকে এটি মাত্র ১৭০ কিমি দূরে। প্রচুর গাছ, পাখি, হরিণ, হরেক ফুল আর প্রকৃতির মনোরম শোভা আপনার মন ভাল করে দেবেই। এখানে একটা পার্ক আছে যেখানে বাচ্চাদের খেলার জিনিস আছে। সুতরাং সঙ্গে বাচ্চা থাকলে তাদের ভাল লাগবে। আপনি এখানে এসে থাকতে পারেন এটা গোটা দিন ফরেস্ট বাংলোতে।
এখানে থাকলে আপনি সাধারণ আদিবাসী মানুষদের হাতে তৈরি খাবার খেতে পারবেন। তার স্বাদ কিন্তু একদম আলাদা। এখান থেই আপনি বিষ্ণুপুর শহরে যেতে পারবেন। সেখান থেকে কিছু কিনতে হলে তাও পারবেন। এছাড়া বিষ্ণুপুরে গিয়েও খানিক আনন্দ করে আসতে পারেন। বিষ্ণুপুর এখান থেকে মাত্র ১৯ কিমি দূরে।
পরের দিনের আমাদের প্ল্যন জয়পুর ফরেস্ট। এখানে একটি টেরাকোটার মন্দির আছে। জয়পুর ফরেস্টের কাছেই রিসোর্ট আছে, সেখানে থাকতে পারবেন। এটি ১২০ স্কোয়ার কিমির একটি ঘন জঙ্গল। এর মধ্যে একটি ওয়াচ টাওয়ার আছে যেখান থেকে গোটা জঙ্গল দেখা যায়।
অপেক্ষা করতে পারলে হাতি, স্পটেড ডিয়ার দেখতে পেতে পারেন। জঙ্গল ঘোরা হয়ে গেলেই কিছু দূরে মল্ল রাজাদের তৈরি ১৭০০ শতকের মন্দির দেখে আসুন। পঞ্চরত্ন মন্দির, লালজী মন্দির, নন্দলাল মন্দির আপনাকে মুগ্ধ করবেই। কলকাতা থেকে যদি জয়পুর ফরেস্ট যেতে চান তাহলে ৪.৫ কিমির দূরত্ব কলকাতা থেকে। ধর্মতলা থেকে বাসে করে যেতে পারেন এখানে।
এখানে মোটামুটি সকলেই যান। খুব পরিচিত একটি নাম। আপনিও আপনার ঘোরার শেষ বেলা এখানে চলে আসতে পারেন। এখানে আছে কংসাবতী আর কুমারী নদীর মোহনা। আপনি ইচ্ছে করলে বোটিং করতে পারেন। এখান থেকে রিক্সা করে বনপুকুরিয়া ডিয়ার পার্ক যেতে পারেন। এখানে একটি অনেক বড় ড্যাম আছে। সেটি অবশ্যই দেখবেন। কিন্তু আপনি যদি অন্য কিছু নাও করেন, শুধু যদি এখানে চুপ করে বসে থাকেন তাহলেও আপনি মুগ্ধ হবেন।
অনেক পাখি আর তার সঙ্গে প্রকৃতির স্নিগ্ধতা, আপনার মন জুড়িয়ে যাবেই। আপনি এখানকার রিসর্টে থাকতে পারেন। খুব ভাল আধুনিক ব্যবস্থা আছে। ট্রেনে করে মুকুটমণিপুর যেতে চাইলে বাঁকুড়া স্টেশন নামতে পারেন। সেখান থেকে এই জায়গা ৪৫ কিমি। ধর্মতলা থেকে বাসে করে যেতে চলে ৭ ঘণ্টা সময় লাগে।
তাহলে এমন কিছু জায়গায় কথা আপনাদের জানালাম যেখানে আপনি জঙ্গল পাবেন, পাহাড় পাবেন, সমুদ্র পাবেন, মন্দির পাবেন, পার্ক পাবেন। আর কি চাই বলুন তিন দিনের মধ্যে। সবচেয়ে ভাল হয় নিজের গাড়ি থাকলে।
তাহলে নিজের মতো করে ঘুরে নিতে পারবেন। আর খুব একটা যে খরচ হয় তাও নয়। আপনাকে একটু গেস্ট হাউস বা ফরেস্ট বাংলোয় ফোন করে জানতে হবে এই মুহূর্তে কত চার্জ নেওয়া হচ্ছে। সব জেনে তাড়াতাড়ি ব্যাগ গুছিয়ে রওনা দিন।
আপনার মুখের রোমকূপ বা পোরসগুলি কি খুবই বড় বড়? আপনি টেকনিক্যালি এইসমস্ত পোর্স ছোট করতে…
পরিষ্কার নিটোল মুখ, অথচ থুঁতনিতে কালো কালো ব্ল্যাকহেডস! কেমন লাগে বলুন তো! সৌন্দর্যটাই নষ্ট হয়ে…
আগেকার দিনে বলা হত, লজ্জা নাকি নারীর ভূষণ। না, আজকের দিনে আমরা ওইসব কথা বলব…
বাড়ির দেয়ালে রকমারী রঙের ছ্বটা অনেকেরই সাধ ও শখের পরিচয় বহন করে। কিন্তু কিছু বছর…
ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা উচিত এই কথাটা আমরা সবাই জানি কম বেশি। কিন্তু কেন? কি উপকার…
প্রাচীনকালে যখন রূপচর্চার এত উপকরণ হাতের কাছে ছিল না, সেই সময় থেকেই রূপচর্চার অন্যতম উপকরণ…