ভাবুন তো যদি বাংলা ভাগ না হত তাহলে কেমন হত! অবাক লাগছে? তবে সত্যি বাংলা ভাগ না হলে বেশ মজাই হত। আর কিছু না হোক পদ্মার ইলিশ খেতে পারতেন পেটপুরে। আরও অনেক কিছুই ঘটতে পারতো। ইলিশের কথাটা নিছক মজা করে বললাম।
যদি এপার বাংলা ও ওপার বাংলা একই থাকতো, তাহলে কেমন হত! বাংলা ভাগ না হলে অতি অবশ্যই সবার আগে যেটা বলার সেটা হল বাঙালী ভাগ হত না। ভাগ হত না বাঙালা সংস্কৃতি। আমরা এক সাথে একই জাতীয় সঙ্গীত গাইতাম গলা মিলিয়ে।
হাজার হাজার মানুষ ঘর ছেড়ে প্রানের দায়ে উদ্বাস্তু হত না। খান সেনাদের হাতে ধর্ষণ হতে হত না মা বোনেদের। আজ আমাদের বাংলা দেশের মধ্যে ঠিক কোন জায়গায় আছে? একদিন বলা হত যা বাংলা আগে ভাববে, সেটা সমগ্র দেশ পরে ভাববে। অর্থাৎ বাংলা ও বাঙালীর চিন্তন, মননকে এভাবেই সম্মান জানানো হত। আজ সেই বাংলা ভাষাই কেউ ভালো করে পড়তে চায় না। আমরা অভিভাবকদের সগর্বে বলতে শুনি যে তার সন্তানটি বেঙ্গলী সাবজেক্টটা ঠিক ভালো পারে না। এটা হয়েছে আমরা আমাদের মাতৃভাষা ভুলে সর্বভারতীয় হয়ে উঠতে চাইছি বলে ও যা যা করলে শুধুমাত্র ভালো চাকরি পাওয়া যায় সেই ব্যবস্থাই করছি। কোথাও গিয়ে কী মনে হয় না যে বাংলা আজ ভারতের পূর্বদিকে এক প্রান্তে হয়ে আছে, এক ঘরে হয়ে থাকার মতো? আমার তো মনে হয়। কিন্তু, যদি আজ বাংলাদেশের ওই সুবৃহৎ অঞ্চলও আমাদের সঙ্গে যুক্ত থাকত তাহলে বোধহয় এটা হত না।
বাংলাদেশের মানুষের বাংলা ভাষার প্রতি টান, একাত্মতা আমাদের থেকে অনেক বেশি। তার কারণ অবশ্য এটা যে তারা লড়াই করে, রক্তের মাধ্যমে এই ভাষাকে পেয়েছে। কিন্তু, আরেকটা দিকও আমাদের ভেবে দেখার। যদি বাংলা ভাগ না হত, যদি পূর্ব পাকিস্তান না তৈরি হত ও তাদের মধ্যে স্বাধীনতার আকাঙ্খা না জাগতো তাহলে কী কখনও আমরা বাঙালীকে লড়াকু জাতি হিসাবে মান্যতা দিতাম? সেই কবে থেকে বঙ্কিমচন্দ্র ও সেই সময়ের অন্যান্যরা বাঙালীর সাহসহীনতা, বাহুবলহীনতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন, যার প্রমাণ উনিশ শতকের বাংলা সাহিত্যে ভরপুর। এই নিয়ে নানা তাত্ত্বিক আলোচনাও আছে কিন্তু, সে প্রসঙ্গ থাক। যেটা বলার সেটা হল বাঙালীর শক্তিহীনতার দিকে যে অভিযোগ, তা এই মুক্তিযুদ্ধে নস্যাৎ হয়ে গেছে। কেউ বলতেই পারেন যে সূর্য সেন, বিনয়-বাদল-দীনেশ প্রমুখ তো লড়াই করেছেন। শক্তিমত্তার প্রমাণ তো দিয়েছে বাঙালী। কিন্তু, ব্রিটিশের বিরুদ্ধে লড়াই ছিল সর্বভারতীয়, আর বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ছিল শুধুমাত্র বাঙালীর দ্বারা সংঘঠিত। আমাদের এই দুই দিকই দেখতে হবে বিচার করে।
এবার অন্য এক প্রসঙ্গে আসা যাক। দেশভাগ বহু আলোচিত একটি বিষয়। বর্তমানে এটা একটা তাত্ত্বিক প্রস্থান হিসাবেও বিবেচ্য হয়েছে। অনেক মানুষকে নিজের ভিটে মাটি ছেড়ে এক বস্ত্রে আসতে হয়েছে উদ্বাস্তু হয়ে। এক ধাক্কায় তারা জানতে পারলেন যে এতদিন যা তাদের ছিল আজ থেকে তা আর তাদের নেই। এই সব হারানোর ব্যাথা পেতে হত না যদি বাংলা ভাগ না হত। যদি বাংলা ভাগ না হত তাহলে উদ্বাস্তু শব্দটা আমাদের শুনতে হত না। যদি বাংলা ভাগ না হত তাহলে কলোনী শব্দটার সঙ্গে আমাদের হয়তো পরিচিত হতে হত না। কিছু কিছু পরিচয় সুখের হয় না। এই দুই শব্দও অভিধানে, আমাদের জীবনে আজও দগদগে ঘায়ের মতো হয়ে আছে।
ষাটের দশকে পশ্চিমবঙ্গে খাদ্য আন্দোলন হত না খাবারের কমতির জন্য আর তার জন্য উড়ে এসে জুড়ে বসা বাঙ্গালদের কথা শুনতে হত না। সবচেয়ে বড় কথা, বাংলা ভাগ না হলে ছিটমহলের মানুষগুলোকে এতদিন নিজভূমে পরবাসীর মতো থাকতে হত না। অবশ্য নিজ ভূমিটাই তো তারা এই সেদিন পেল। এই ব্যাথার হিসেব ১৯৪৭ সালে বাঁটোয়ারা করার সময় কেউ পাননি।
বাঙলাকে বলা হয় নদীমাতৃক অঞ্চল। কিন্তু, আমরা যদি আমাদের পশ্চিমবাংলার দিকে তাকাই তাহলে কী এই কথাটা আজও আর বলা যায়? আমরা যদি বাংলাদেশের দিকে দেখি তাহলে বুঝবো নদীমাতৃক বলতে আসলে কী বুঝি। যদি বাংলা ভাগ না হত তাহলে আমরা ঢাকা, খুলনা, যশোর, ময়মনসিংহের মতো জায়গা হারাতাম না। অন্যদিকে আমরা পেলাম বীরভূম, বাঁকুড়ার মতো রুক্ষ অঞ্চল। না, এই অঞ্চলগুলো পেয়েছি বলে দুঃখের নেই কিছু। কারণ এখানেই আছে শান্তিনিকেতন। তবে কবির জীবনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ যে স্থান ছিল সেই শিলাইদহ, পতিসর এই স্থানগুলো যদি আমরা একসঙ্গে পেতাম তাহলে বোধহয় ভালো হত।
এছাড়াও যদি লাভের দিক থেকেও দেখতে হয় তাহলে আমরা বিস্তীর্ন ধানক্ষেত আরও পেতাম। আমাদের রসনা তৃপ্তির জন্য বাংলাদেশের ইলিশের ওপর নির্ভর করতে হত না বর্ষাকালে। আমরা প্রায়শই ইলিশ পেতাম। তাছাড়া, নদীর পাড়ে যে বিস্তীর্ন পাটকল গড়ে উঠতে পারতো তা হল না। আমরা জানি আমাদের দেশে পাটশিল্পের কী হাল! তাহলে আর এই অবস্থা হত না।
সবচেয়ে বড় কথা হল, পূর্ব বাংলা তো অনেকদিন আগেই বাংলাদেশ হয়ে গেছে। আমাদের পশ্চিমবঙ্গ নাম নিয়ে এক ভাঙ্গনের ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে এতো দিন থাকতে হত না।
https://dusbus.com/bn/kochu-saker-notun-tinti-recipe-aji-try-korun/
আপনার মুখের রোমকূপ বা পোরসগুলি কি খুবই বড় বড়? আপনি টেকনিক্যালি এইসমস্ত পোর্স ছোট করতে…
পরিষ্কার নিটোল মুখ, অথচ থুঁতনিতে কালো কালো ব্ল্যাকহেডস! কেমন লাগে বলুন তো! সৌন্দর্যটাই নষ্ট হয়ে…
আগেকার দিনে বলা হত, লজ্জা নাকি নারীর ভূষণ। না, আজকের দিনে আমরা ওইসব কথা বলব…
বাড়ির দেয়ালে রকমারী রঙের ছ্বটা অনেকেরই সাধ ও শখের পরিচয় বহন করে। কিন্তু কিছু বছর…
ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা উচিত এই কথাটা আমরা সবাই জানি কম বেশি। কিন্তু কেন? কি উপকার…
প্রাচীনকালে যখন রূপচর্চার এত উপকরণ হাতের কাছে ছিল না, সেই সময় থেকেই রূপচর্চার অন্যতম উপকরণ…