সন্ধ্যেবেলা রোজ সিরিয়াল দেখেন তো? জানি দেখেন। ভাতঘুম দিয়ে উঠে চায়ের কাপ হাতে সিরিয়াল দেখার বিকল্প কিছু হতেই পারে না। তা শাশুড়িমায়েরা, আপনাদের বলছি, অনেকদিনই তো বসে বসে ভেবেছেন যদি আপনার ঘরের বউমাটিও কনকের মতো হত, বা উশষীর মতো! দুর্গার মতোও হতে পারতো। আসুন না, একবার দেখেনি বাংলা সিরিয়ালের সেরা পাঁচ বউমা কারা! হলফ করে বলতে পারি, আপনি এদের মতো একজনকেই আপনার ছেলের পাশে চেয়েছিলেন।
এক অত্যন্ত সাধারণ মেয়ের অসাধারণ হয়ে ওঠার কাহিনী আছে ‘বধূবরণ’ সিরিয়ালে। লেখা পড়া করতে না জানা, ভালো করে কথা বলতে না পারা, ভয়ে গুটিসুটি মেরে থাকা এক মেয়ে কনকের পরবর্তীকালে গোটা চৌধুরী পরিবারের দায়িত্ব নেওয়া, এমনকি এক সময়ে নিজের শাশুড়িমা ইন্দিরা চৌধুরীকেও, যিনি কিনা কনককে কনক বা বউরাণী বানিয়েছিলেন, তাকে বিপদের হাত থেকে বাঁচিয়ে আনা এই সবই তাকে সেরা বউমা হওয়ার দিকে অনেকটা এগিয়ে দিয়েছে। পরিবারের প্রতি কর্তব্য, দায়িত্ববোধ, সবাইকে ভালোবাসা, ভালো রাখার চেষ্টা এই সবই তো একজন বউমার মধ্যে সবাই চায়। এই দিক থেকে তো বটেই, রাঁধার পাশে চুল বাঁধাতেও কিন্তু কনক যথেষ্ট এক্সপার্ট ছিল।
একটা বড় সময় জুড়ে চৌধুরী পরিবারের স্বচ্ছলতার যে মূল ভিত্তি, চৌধুরী গ্রুপ অফ কোম্পানী, তার দায়িত্ব নিয়েছিল। আমার তো এই সিরিয়ালের একটা সিন সবচেয়ে ভালো লেগেছিল, যে সিনে দেখিয়েছিল ওদের সবচেয়ে বড় শত্রু অরুণেশ চ্যাটার্জীকে পায়ের নীচে ফেলে কনক দুর্গার মতো বধ করতে যাচ্ছে। সবচেয়ে বড় কথা, শাশুড়ি-বউমার চিরন্তন লড়াই যেখানে বাংলা সিরিয়ালকে একঘেয়ে করে দিচ্ছিল, সেখানে ইন্দিরা আর কনকের কেমিস্ট্রি আপনাদের সম্পর্ক বিষয়টাকে নতুনভাবে ভাবতে শেখাবে। তাই কনকের মতো বউমা পেতে হলে কিন্তু আপনাকেও ইন্দিরার মতো শাশুড়ি হতে হবে।
আজকের দিনে দাঁড়িয়েও অনেকসময় এমন কথা শুনতে হয় যে ঘরের বউ কেন বাইরে কাজ করবে! সে শুধু সংসার করবে, বাড়ির দায়িত্ব পালন করবে। কিন্তু, বাড়ির দায়িত্ব পালন করেও যদিও বা কোনো কোনো বউমা অধিকার পান বাইরে কাজ করার, তা নিদেনপক্ষে শিক্ষকতা বা নার্স, বা যেখানে শারীরিক শক্তি বেশী লাগে না। কিন্তু, ভাবুন তো আপনার ঘরের বউমাটি যদি পুলিশ হয়! ‘তোমায় আমায় মিলে’র উশষী এমনই ছিল। পুলিশে চাকরি করা ছিল তার জীবনের লক্ষ্য, যদিও তার জন্য সংসার সামলাতে তার সমস্যা হয়নি।
প্রথমে অসুবিধা হলেও পরে জাঁদরেল শাশুড়ি ভবানীর মনও সে জয় করেছে। শুধু ঘর গড়া না, ঘরটাকে বিপদ থেকে আক্ষরিক অর্থে কীভাবে বাঁচাতে হয় উশষী তা আমাদের শিখিয়েছিল। আমার তো এখনও সেই সিনটা চোখে ভাসে যেদিন পুলিশের ইউনিফর্মে উশষী আমাদের সামনে আসে। আজকে যেখানে মেয়েরা প্রতিমূহুর্তে নির্যাতিত হচ্ছে, ধর্ষিত হচ্ছে, সেখানে স্বাবলম্বী হয়ে নিজের শক্তিতে প্রতিবাদের ভাষা আমাদের শিখিয়েছে উশষী। তাই বলছি, আপনার বাড়ির বউমাটি পুলিশ হতে চাইলে তাকে আটকাবেন না। বিশ্বাস করুন, সেও পারবে তুলসীতলায় সন্ধ্যা প্রদীপ জ্বালাতে, যেমন করেছিল উশষী।
জি-বাঙ্গলায় ‘আমার দুর্গা’ সিরিয়ালটা দেখতেন না এমন বাঙ্গালী বোধহয় কমই ছিলেন। গ্রামের মেয়ের সত্যিকারের দুর্গা হয়ে ওঠার যাত্রা পাই এই সিরিয়ালে। লড়াইটা সহজ ছিল না দুর্গার। প্রতিপক্ষ নিজের শ্বশুর, মন্ত্রী অভিরূপ মুখোপাধ্যায়। রাজনীতি ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত একজনের সঙ্গে রাজনীতির মঞ্চে সরাসরি লড়াইতে নামতে এই প্রথম বোধহয় আমরা দুর্গাকেই দেখলাম। ঘর থেকেই লড়াইটা শুরু করেছিল দুর্গা। দিদির ওপর হওয়া অন্যায়, শাশুড়ির ওপর শ্বশুরের করা অন্যায় সবের বিরুদ্ধে লড়াই করতে করতে দুর্গা আমাদের দেখায় জীবনে লড়াইটাই আসল, জীবনটা বড় অর্থে রাজনীতি ছাড়া কিছু না। মুখ্যমন্ত্রী হওয়া সেই রাজনীতির পথে সফলতার এক অঙ্গ মাত্র। সেই রাজনীতিতে দুর্গার হাত ধরে আমাদের ঘরের বউমারাও এগিয়ে যাবে এই আশা আমরা রাখি।
শান্ত-শিষ্ট বউমা তো অনেক দেখলাম আমরা, কিন্তু, যদি আপনি চান বউমাটি একটু দুষ্টু হোক, তাহলে ‘কুসুমদোলা’র ইমনের কিন্তু জুড়ি মেলা ভার। মেয়ে চায় ডাক্তার হতে, পাশে আছে স্বামী রণ। রূপকথার সঙ্গে রণ’র বন্ধুত্ব, সে নিয়ে সমস্যা এই সবের মধ্যে নিজের জায়গা তৈরি করে নেওয়া তো বটেই, তার থেকেও বড় কথা, তাকে সেরা বউমাদের মধ্যে রাখব তার মিষ্টি স্বভাব আর তার সঙ্গে শাসনের অদ্ভূত মেলবন্ধনের জন্য। পরিবারকে ধরে রাখে তো অনেক বউমাই, কিন্তু, কটা বউমা তার শ্বশুর-শাশুড়ির মধ্যেকার সম্পর্ককে ভালো করার জন্য উদ্যোগ নেয়? ইমন নিয়েছিল। সারল্য ও তার সঙ্গে জেদ, এইটাই ইমন চরিত্রটাকে ইউনিক বানিয়েছে।
আমি নিশ্চিত ‘কে আপন কে পর’ সিরিয়ালের জবা আপনাদের কাঙ্ক্ষিত বউমা হবার লিস্টে আছেই। ফ্যাশন নিয়ে আমাদের মধ্যে একটা দ্বিধা, একটা ঢাকঢাক গুরগুর ভাব তো থাকেই। তাই আমরা চাই না আমাদের বাড়ির মেয়েরা ফ্যাশনে যাক। এইদিক থেকে জবা কিন্তু ব্যতিক্রমী। মাথা নীচু করে থাকা ‘কাজের মেয়ে’ থেকে মাথা উঁচু করা বাড়ির ছোটবউ জবা র্যাম্পেও সমান পারদর্শী। আবার এই জবাই স্বামী পরমকে যেভাবে বাঁচায় ষড়যন্ত্র থেকে, বা বুদ্ধি করে বড় বউ তন্দ্রার থেকে বাড়ি ফেরত নেয়, তা আমাদের মুগ্ধ করে। দুপুরের রান্না কী হবে থেকে আইনের পড়ুয়া, সব দিক সামলে জবা যেন সত্যিই দশভূজা।
ওপরে যে কটা চরিত্রের কথা বললাম, তারা সবাই কোনো না কোনো ভাবে আমাদের দেখিয়ে দিয়েছে ঘর ও বাইরের টানাপোড়েন আজ আর মেয়েদের আটকে রাখতে পারে না। দু’টোকে ব্যালেন্স করাই তাদের ইউএসপি। প্যানপ্যানে কূটকাচালি থেকে আমাদের ভিন্ন স্বাদ দিয়েছে এই বউমারাই। আপনিও তো আপনার বউমার মধ্যে এই বউমাদের ইউএসপি-ই দেখতে চান, তাই না!
আপনার মুখের রোমকূপ বা পোরসগুলি কি খুবই বড় বড়? আপনি টেকনিক্যালি এইসমস্ত পোর্স ছোট করতে…
পরিষ্কার নিটোল মুখ, অথচ থুঁতনিতে কালো কালো ব্ল্যাকহেডস! কেমন লাগে বলুন তো! সৌন্দর্যটাই নষ্ট হয়ে…
আগেকার দিনে বলা হত, লজ্জা নাকি নারীর ভূষণ। না, আজকের দিনে আমরা ওইসব কথা বলব…
বাড়ির দেয়ালে রকমারী রঙের ছ্বটা অনেকেরই সাধ ও শখের পরিচয় বহন করে। কিন্তু কিছু বছর…
ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা উচিত এই কথাটা আমরা সবাই জানি কম বেশি। কিন্তু কেন? কি উপকার…
প্রাচীনকালে যখন রূপচর্চার এত উপকরণ হাতের কাছে ছিল না, সেই সময় থেকেই রূপচর্চার অন্যতম উপকরণ…