শরীরের জন্য ঘি যে খুব ভালো, আর এটি যে খুবই সহজপাচ্য এটা কিন্তু আমরা সকলেই জানি। কিন্তু ঘি যে আমাদের চুল আর ত্বকের যত্নের জন্যও খুব ভালো তা কি আপনারা জানেন? ঘি কিন্তু সব ধরণের স্কিন হাইড্রেট করতে পারে। এর মধ্যে আছে জরুরী ফ্যাটি অ্যাসিড যা স্কিন সেলকে হাইড্রেট করে। এর ফলে ত্বকের ময়েশ্চার থাকে অনেক ক্ষণ। আবার চুলের ক্ষেত্রে ঘি চুলকে ময়েশ্চারাইজড করে, শুষ্ক-নির্জীব চুল করে তোলে নরম। আর এই এতো উপকারের জন্যই কিন্তু ঘি আয়ুর্বেদের কাছে খুব গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে সমাদৃত হয়েছে। কিন্তু ঘি ব্যবহার করার বিশেষ পদ্ধতিও আছে। আসুন দেখে নিই কী সেই পদ্ধতি।
আমরা যে পদ্ধতির কথা বলছি তাকে আয়ুর্বেদে বলা হয়েছে শত ধৌত ঘৃত। অর্থাৎ নামেই বুঝতে পারছি যে শত বার ঘি ধৌত করার মাধ্যমে তৈরি হয় এই ঘি। আসুন ব্যাপারটা ভালো করে বুঝে নেওয়া যাক। এটি তৈরি করার জন্য আপনার লাগবে দশ আউন্স মতো ঘি আর জল।
ক. সম পরিমাণ জলে ঘি মেশান আর ভালো করে নাড়ুন ৫ মিনিট ধরে। তারপর জল বের করে দিন।
খ. আবারও জল মেশান ওই ঘি’র মধ্যে আর নাড়ুন। আবার জল ফেলে দিন।
গ. এই পদ্ধতি আপনি যত বেশি বার পারেন করে যান।
আয়ুর্বেদ যদিও ১০০ বার এই পদ্ধতি করতে বলেছে, কিন্তু এখন যেহেতু সেটা সম্ভব নয়, তাই আপনি অন্তত ২০ থেকে ৩০ মিনিট পর্যন্ত এই কাজটি করুন। এবার আপনি যদি দেখেন ভালো করে, দেখতে পাবেন ঘি অনেক বেশি নরম হয়ে গেছে, রঙ খানিক পালটে গিয়েছে আর একটা মাখনের মতো টেক্সচার এসেছে। আগের থেকে একটু ঠাণ্ডাও লাগবে আপনার এই ঘি ধরে।
আপনার যদি অনেক দিনের পুরনো কাটার দাগ থাকে, তাহলেই এই ঘি সেই দাগ সরিয়ে দেবে। চিকেন পক্সের দাগ সহজে যায় না। কিন্তু এই ঘি সেই দাগও তুলে দেবে। এর পাশাপাশি যদি আপনার ত্বক পুড়ে গিয়ে কোনও ক্ষত বা দাগ হয়, সেই দাগও তুলে দেয় এই ঘি।
এই ঘি কিন্তু ন্যাচারাল ময়েশ্চারাইজার হিসেবেও ভালো কাজ করে। রোজ ত্বকে ১৫ মিনিট মতো রেখে দিন আর তারপর ঠাণ্ডা জল দিয়ে ধুয়ে নিন। নিয়মিত এটি করুন।
আয়ুর্বেদে লিচ থেরাপি বা জলৌকাচরণ বলে একটি চিকিৎসা আছে ত্বকের জন্য। চরক এই পদ্ধতির কথা বলেছেন। মূলত অশুদ্ধ রক্ত জোঁকের মাধ্যমে শুষে নেওয়ার মানই হল লিচ থেরাপি। এটি করলে তো বেশ জ্বালা করে। এই জ্বালা কিন্তু কমায় এই ঘি। শুধু যে জায়গায় জ্বালা হচ্ছে সেখানে এই ঘি দিয়ে রাখুন। দেখবেন আরাম লাগছে।
স্কিনের একটি খুব বাজে সমস্যা হল হার্প। এটি হলে চামড়া উঠে লাল হয়ে গিয়ে খুব খারাপ দেখতে লাগে। সঙ্গে জ্বালাও করে। এই পরিশুদ্ধ ঘি কিন্তু এই সমস্যা থেকেও আপনাকে রক্ষা করবে। শুধু হার্প হওয়া জায়গায় কিছু ক্ষণ রেখে দিন। এটি নিয়মিত ব্যবহার করুন।
যেহেতু এই ঘি’র মধ্যে জল মেশানো আছে, তাই এটি ৫ মাসের বেশি রাখা ঠিক হবে না। আর যেহেতু এটি বারবার বাতাসের মধ্যে আনতা হচ্ছে তাই বাজে গন্ধ হয়ে যাওয়ার সুযোগ থাকে। তাই এয়ার টাইট বোতলে রাখুন এই ঘি। মাঝে মাঝে রোদে দিতে পারেন।
উপরে যে ভাবে বলা হল সে ভাবে ব্যবহার না করেও কিন্তু ঘি’র উপকার পাওয়া যায়। আসুন দেখে নিই কীভাবে ঘি ব্যবহার করে আপনি উজ্জ্বল ত্বক পেতে পারেন।
উপকরণঃ ২ চামচ বেসন, ২ চামচ ঘি, জল।
পদ্ধতিঃ সবকটি উপকরণ নিয়ে ভালো করে মেশান। এর পর এটি মুখে ১৫ মিনিট মতো রেখে দিন। একটু শুকিয়ে আসলে ঠাণ্ডা জল দিয়ে ধুয়ে নিন। এটা যদি আপনি নিয়মিত করেন তাহলে আপনার ত্বক অসাধারণ ভাবে উজ্জ্বল আর সুন্দর হয়ে উঠবে।
তাহলে দেখলেন তো, ঘি কিন্তু শুধু খেতেই ভালো নয়। আপনি আপনার ত্বকের জত্নেও ঘি খুব সুন্দর ভাবে ব্যবহার করে ফল পেতে পারেন।
আপনার মুখের রোমকূপ বা পোরসগুলি কি খুবই বড় বড়? আপনি টেকনিক্যালি এইসমস্ত পোর্স ছোট করতে…
পরিষ্কার নিটোল মুখ, অথচ থুঁতনিতে কালো কালো ব্ল্যাকহেডস! কেমন লাগে বলুন তো! সৌন্দর্যটাই নষ্ট হয়ে…
আগেকার দিনে বলা হত, লজ্জা নাকি নারীর ভূষণ। না, আজকের দিনে আমরা ওইসব কথা বলব…
বাড়ির দেয়ালে রকমারী রঙের ছ্বটা অনেকেরই সাধ ও শখের পরিচয় বহন করে। কিন্তু কিছু বছর…
ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা উচিত এই কথাটা আমরা সবাই জানি কম বেশি। কিন্তু কেন? কি উপকার…
প্রাচীনকালে যখন রূপচর্চার এত উপকরণ হাতের কাছে ছিল না, সেই সময় থেকেই রূপচর্চার অন্যতম উপকরণ…