সামনেই আসছে দুর্গা পুজো আর এই দুর্গা পুজোতে অবশ্যই নিজেকে সুন্দর দেখাতে হবে। নিজেকে সুন্দর দেখাবার জন্য অনেকেই পার্লারে গিয়ে বিভিন্ন রকম ফেসিয়াল করেন। কিন্তু পার্লারে গিয়ে মুখের যেকোনো ফেসিয়াল করাতে গেলে প্রচুর সময় লাগে।
অষ্টমীর দিন সকালে এমনিতেই অঞ্জলি দেওয়ার তাড়াহুড়ো থাকে তার ওপর শাড়ি পরে তৈরি হতে হয়, সে ক্ষেত্রে পার্লারে গিয়ে নিজেকে তৈরি করতে গেলে প্রচুর সময় লেগে যাবে। শেষকালে হয়তো অঞ্জলি আর দেওয়া হবে না! তাহলে উপায়? উপায় আছে হাতের কাছেই।
আজ আমি আপনাদের বলবো ঘরোয়া পদ্ধতিতে তৈরি এমন ছয়টি ফেসপ্যাকের কথা যার মধ্যে যেকোনো একটি ব্যবহার করলেই আপনার মুখ হবে উজ্জ্বল, উপরন্তু আপনার সময় ও পয়সা দুটোই বেচে যাবে।
চন্দনের অ্যান্টিসেপটিক গুণের কথা তো আমরা সবাই জানি, আর ত্বকের যেকোনো ব্রন ও ফুসকুড়িতে অ্যালোভেরা ভীষণভাবে কাজে আসে। ফেসপ্যাকের ক্ষেত্রে এই দুটি উপাদানের ব্যবহার আপনার ত্বককে কিছুক্ষণের মধ্যেই উজ্জ্বল বানিয়ে তুলবে।
চন্দন ও অ্যালোভেরার ফেসপ্যাক কীভাবে ব্যবহার করবেনঃ এই ফেসপ্যাকটি তৈরি করবার জন্য একটি পাত্রে এক চামচ চন্দন গুঁড়ো নিন ও তার সাথে এক চামচ অ্যালোভেরা জেল রস দিয়ে দিন। এইবার দুটিকে একত্রে মিশিয়ে একটি ফেস প্যাক তৈরি করুন। এই ফেসপ্যাকটি এইবার আপনার মুখ ও ঘাড়, হাত সমস্ত জায়গায় লাগিয়ে নিন। মিনিট পনেরো রেখে জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন, তাহলেই আপনার মুখ, ঘাড় ও হাতের সমস্ত কালচে দাগ দূর হয়ে যাবে। এইবার আয়নায় তাকিয়ে দেখুন মুখে কেমন গ্লো দিচ্ছে।
প্রাচীনকাল থেকে ত্বকের পরিচর্যায় গোলাপ জল ব্যবহার হয়ে আসছে আর চন্দনের গুণের কথা তো কম বেশি সবাই জানেন। এই দুটি উপাদান দিয়ে যদি একটি ফেসপ্যাক তৈরি করেন, তাহলে তা আপনার মুখের জেল্লা ফিরিয়ে আনবে।
কীভাবে ব্যবহার করবেনঃ চন্দনের গুঁড়ো ও ৫ ফোঁটা গোলাপজল একটি পাত্রে একসাথে মিশিয়ে নিন। এরপর এই প্যাকটি আপনার মুখ, গলা, ঘাড় ও হাতে ব্যবহার করুন। খানিকক্ষণ রেখে জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
হলুদ যেমন অ্যান্টিসেপটিক হিসেবে ব্যবহার করা হয়, তেমন রূপচর্চাতেও হলুদের ব্যবহার হয়। হলুদের অসাধারণ গুণের জন্য বিভিন্ন রকম ফেস ওয়াশ থেকে ফেসপ্যাক সবকিছুতেই হলুদের ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়। ঘরোয়া উপায়ে তৈরি ফেসপ্যাকে যদি হলুদ মেশাতে পারেন তবে তা উজ্জলতা ফেরাবে।
একটি পাত্রে কিছুটা টক দই, একটু হলুদ গুঁড়ো ও একটু চন্দন গুঁড়ো মিশিয়ে একটি ফেসপ্যাক তৈরি করুন। এটি সারা মুখে লাগিয়ে ১৫ মিনিট রেখে দিয়ে জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এতে মুখের উজ্জ্বলতা ফিরে আসবে ও মুখের দাগছোপ দূর হয়ে যাবে।
অনেকেই চোখের নীচে ডার্ক সার্কেল হলে কাঁচা দুধ লাগিয়ে নেন। আসলে কাঁচা দুধ কালো দাগ ছোপ দূর করে ত্বককে জেল্লাদার বানিয়ে দেয়। তাই আপনার ফেসপ্যাকে আপনি যদি দুধের ব্যবহার করেন, তাহলে আপনাকে অনেক বেশি তরুণ ও সুন্দর লাগবে।
একটি পাত্রে এক কাপ দুধ নিন ও তার সাথে এক চা-চামচ চন্দন বাটা নিন। এই দুটি মিশিয়ে একসাথে ফেসপ্যাক তৈরি করুন। এই ফেসপ্যাকটি ঘাড়ে, গলায়, মুখে ও হাতে লাগিয়ে রাখুন। মিনিট পনেরো রেখে ঠান্ডা জল দিয়ে ধুয়ে দিন। এই ফেসপ্যাকটি সপ্তাহে মাত্র দুইবার ব্যবহার করলে চেহারার উজ্জ্বলতা চোখে পড়বে। অষ্টমীর দিন বাইরে বেরোনোর আগে এই ফেসপ্যাকটি ও ব্যবহার করতে পারেন। আপনার যদি মধুতে এলার্জি না হয়, তাহলে এই ফেসপ্যাক এর সাথে একটু মধু মিশিয়ে নিতে পারেন।
যে কোনো কাটাছেঁড়ায় নিম ব্যবহার করলে যেমন উপকার হয়, তেমনি ত্বকের ক্ষেত্রেও নিমের ব্যবহার করলে ত্বকের যেকোনো দাগ, যেকোনো স্কিন ইনফেকশন ভালো হয়ে যায়। চন্দন ও নিম অনেক ক্রিমেই ব্যবহার করা হয়, বিশেষত ত্বকের দাগ এবং ব্রণও কমানোর ক্রিম গুলিতে চন্দন ও নিমের ব্যবহার দেখা যায়।
এই ফেসপ্যাকটি যদি রাত্রে ব্যবহার করেন তাহলে সব থেকে ভালো হয়। অষ্টমীর আগের দিন অর্থাৎ সপ্তমীর দিন রাত্রে ঘুমানোর আগে এই ফেসপ্যাকটি ব্যবহার করলে অষ্টমীর দিন সকাল বেলায় উঠে দেখবেন মুখের মধ্যে একটা তরতাজা ভাব রয়েছে। আবার সময়ের অসুবিধা হলে অষ্টমীর দিন বাইরে বেরোনোর আগে ও ব্যবহার করতে পারেন।
কীভাবে এই ফেসপ্যাকটি তৈরি করবেনঃ একটি পাত্রে ১ চা-চামচ চন্দনগুঁড়ো ও ১ চা-চামচ নিমপাতা বাটা একসাথে মিশিয়ে নিন। এর মধ্যে একটু ব্যাসন দিতে পারেন। তিনটি উপাদান একত্রে মিশিয়ে এইবার মুখে, ঘাড়ে ও দুই হাতে লাগিয়ে নিন। এরপর চুপচাপ বসে থাকুন যতক্ষণ না অবধি এই ফেসপ্যাকটি শুকিয়ে যায়। এরপর একটু ঠান্ডা জল দিয়ে এই ফেসপ্যাকটি ধুয়ে ফেলুন। দেখবেন ব্রণ, ফুসকুড়ি ও ত্বকের যাবতীয় দাগছোপ কেমন কমে গেছে আর ত্বক কেমন উজ্জ্বল লাগছে!
রূপচর্চায় এই তিন উপাদান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও কার্যকরী। হাতের কাছে কিছু না থাকলে একটু কলা চটকে মেখে নিলেও মুখ কেমন উজ্জ্বল হয়ে যায় আর কাঁচা দুধ আর টমেটো তো রূপচর্চার ক্ষেত্রে ব্যবহার হয়ই।
একটি পাত্রে অল্প একটু কলা চটকে মেখে নিন, তার মধ্যে একটু টমেটো পেস্ট, একটু কাঁচা দুধ দিয়ে দিন, একটু ব্যাসনও এর মধ্যে দিয়ে দিন। এইবার এই তিন উপাদান মিশিয়ে নিয়ে মুখে, গলায়, ঘাড়ে ও হাতে মেখে নিন। মিনিট কুড়ি রেখে ঠান্ডা জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। তারপর দেখুন ম্যাজিক।
উপরিউক্ত এই ছয়টি ফেসপ্যাক এর মধ্যে যেকোনো একটি ফেসপ্যাক ব্যবহার করলেই হাতেনাতে ফল পাবেন। তাই অষ্টমীর দিন অঞ্জলি দিতে বেরোনোর আগে আর নো টেনশন, রান্নাঘরের উপাদান দিয়েই বানিয়ে ফেলুন ফেসপ্যাক।
আপনার মুখের রোমকূপ বা পোরসগুলি কি খুবই বড় বড়? আপনি টেকনিক্যালি এইসমস্ত পোর্স ছোট করতে…
পরিষ্কার নিটোল মুখ, অথচ থুঁতনিতে কালো কালো ব্ল্যাকহেডস! কেমন লাগে বলুন তো! সৌন্দর্যটাই নষ্ট হয়ে…
আগেকার দিনে বলা হত, লজ্জা নাকি নারীর ভূষণ। না, আজকের দিনে আমরা ওইসব কথা বলব…
বাড়ির দেয়ালে রকমারী রঙের ছ্বটা অনেকেরই সাধ ও শখের পরিচয় বহন করে। কিন্তু কিছু বছর…
ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা উচিত এই কথাটা আমরা সবাই জানি কম বেশি। কিন্তু কেন? কি উপকার…
প্রাচীনকালে যখন রূপচর্চার এত উপকরণ হাতের কাছে ছিল না, সেই সময় থেকেই রূপচর্চার অন্যতম উপকরণ…